বাংলাদেশ দারুণ দেশ: নিউ ইয়র্ক স্টেট সিনেটের প্রতিনিধি দল
‘গুড উইল ভিজিট’-এ বাংলাদেশ সফর শেষে নিউ ইয়র্ক ফিরেছেন পাঁচজন স্টেট সিনেটরের প্রতিনিধি দলের চারজন। আমিরাত এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তাদের দলনেতা লুইস সেপুলভেদাসহ তিনজন রোববার সকালে নিউইয়র্ক পৌঁছান। অপর দুজন হলেন স্টেট সিনেটর জেমস স্কুফিস, স্টেট সিনেটর লিরয় কমরি। এই প্রতিনিধি দলের অপর সদস্য সিনেটর জন সি ল্যু গত শনিবার নিউইয়র্ক ফিরে আসেন।
আরেক সদস্য সিনেটর কেভিন এ পার্কার বাংলাদেশ সফল শেষে জাতিসংঘের অপর এক কর্মসূচিতে অংশ নিতে ভারত সফর করছেন বলে জানা গেছে। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সিনেটরদের আরও তিনজন স্টাফও বাংলাদেশ সফর করেন।
নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটি বিশেষ করে ব্রঙ্কসবাসী বাংলাদেশিদের কাছে ‘লুইস ভাই’ হিসেবে পরিচিত স্টেট সিনেটর লুইস সেপুলভেদা বাংলাদেশ সফর শেষে নিউ ইয়র্কে পৌঁছার পর জেএফকে-তে এই প্রতিনিধির সঙ্গে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলেন- বাংলাদেশ দারুণ দেশ, সিলেট খুব সুন্দর (ওহ, বাংলাদেশ অ্যামেইজিং কাউন্ট্রি, সিলেট ভেরি বিউটিফুল)।
সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় তিনি তার প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে তুলে ধরে বলেন, কেবল শুরু (জাস্ট বিগিনিং)। তিনি বলেন, আগামী দিনে আমাদের সফর অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ সফর, দেশের আতিথেয়তা তার খুব ভালো লাগলেও ঢাকার যানজট প্রকট হিসেবেই দেখেছেন।
লুইস সেপুলভেদা বললেন- ঢাকায় অনেক ট্র্যাফিক। এয়ারপোর্ট থেকে হোটেলে যেতে দুই ঘণ্টা লেগেছে। (ওহ, টুমাচ ট্রাফিক ইন ঢাকা সিটি। উই স্পেন্ড ২ আওয়ার ফ্রম এয়ারপোর্ট (শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) টু হোটেল’। তিনি বলেন, এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
সিনেটর সেপুলভেদার মতো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সিনেটর জেমস স্কুফিস বলেন, বাংলাদেশ সুন্দর দেশ, আমরা উপভোগ করেছি, মানুষজন খুব বন্ধুত্বপূর্ণ (বাংলাদেশ নাইস কান্টি, উই এজনয়, পিপল আর ফ্রেন্ডলি)। জেএফকে থেকে বের হয়ে সিনেটর লিরয় কমরি সরাসরি বের হয়ে যাওয়ায় তার প্রতিক্রিয়া নেয়া সম্ভব হয়নি।
নিউ ইয়র্ক স্টেট সিনেটর যথাক্রমে লুইস সেপুলভেদা, জেমস স্কুফিস ও লিরয় কমরি রোববার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে আমিরাত এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান এসময় প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি তাদেরকে ‘ওয়েলকাম ব্যাক’ বলে অভিনন্দন জানান এবং ফুলের তোড়া দিয়ে লুইস সেপুলভেদা ও জেমস স্কুফিস-কে শুভেচ্ছা জানান।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক স্টেটের পাঁচজন স্টেট সিনেটর গত ১৮ অক্টোবর ঢাকার উদ্দেশে নিউ ইয়র্ক ত্যাগ করেন। তারা বাংলাদেশে এক সপ্তাহের মতো অবস্থান করেন। সিনেটরদের মধ্যে লিরয় কমরি ওইদিন সকালের ফ্লাইটে আর বাকি চারজন রাতের ফ্লাইটে নিউ ইয়র্ক ত্যাগ করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিথি হিসেবে স্টেট সিনেটরগণ এই সফরকালীন সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন পরিদর্শন ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি ও জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব) ফারুক খান এমপি’র সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়াও ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল জাদুঘর পরিদর্শন, সিলেট চেম্বার অ্যান্ড কমার্স আয়োজিত মতবিনিময় সভায় যোগদান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন, পর্যটন জেলা কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত ও নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্ট শিল্প পরিদর্শন, ঢাকাস্থ আমেরিকান ক্লাবে যোগদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আরও উল্লেখ্য, স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী চলতি বছরের প্রথম দিকে নিউ ইয়র্ক সফরকালীন সময়ে স্টেট সিনেটর লুইস সেপুলভেদা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তখন স্পিকার তাদেরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তারই প্রেক্ষিতে স্টেট সিনেটরগণ বাংলাদেশ সরকারের পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিথি হয়ে বাংলাদেশ সফর করেন।
অপরদিকে স্টেট সিনেটরদের ‘গুড উইল ভিজিট’-এর পাশাপাশি তাদের সফরকালীন সময়ে নিউ ইয়র্ক প্রবাসী কমিউনিটির বিশিষ্ট বাংলাদেশিদের মধ্যে মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কুইন্স ডিসট্রিক্ট অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুর রহীম হাওলাদার, আইটি স্পেশালিস্ট শেখ গালিব প্রমুখ নিজ নিজ উদ্যোগেই বাংলাদেশ সফর করেন এবং তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এ
মন্তব্য করুন