• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
‘দুষ্কৃতকারীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে’
নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো ৪৪৭ বন্দির আত্মসমর্পণ
নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ কারাবন্দির মধ্যে ৪৪৭ জন বন্দি নরসিংদী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। এ ছাড়া পুলিশ ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে সর্বমোট ৪৭৭ জন কারাবন্দিকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘২২ জুলাই ৫ জন, ২৩ জুলাই ১২৯জন, ২৪ জুলাই ১৮৩ জন এবং ২৫ জুলাই ১৩০ জন কারাবন্দি আত্মসমর্পণ করেছেন। এ ছাড়া ২৩ জুলাই ১৯ জন, ২৪ জুলাই বুধবার ৭ জন এবং ২৫ জুলাই ৪ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে সর্বমোট ৪৭৭ জন বন্দিকে উদ্ধার করা হয়েছে। যা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া কারাবন্দি আসামিদের ৫৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়ে গেছে।’ এ দিকে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম বলেন, ‘কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া কারাবন্দিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৪৭ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। লুট হওয়া ৮৫টি অস্ত্রের মধ্যে ৪১টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।’ উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মধ্যে ১৯ জুলাই বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নরসিংদী জেলা কারাগারে দলবেঁধে হামলা হয়। হামলাকারীরা মূল কারাগারের ভেতরে ঢুকে সেলগুলো শাবল ও লোহার জিনিসপত্র দিয়ে ভেঙে কয়েদিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। কিছু কারারক্ষীর কাছ থেকে চাবি নিয়েও সেলের তালা খোলা হয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কয়েদিরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো ২ নারী জঙ্গি গ্রেপ্তার
৮২৬ কারাবন্দির পলায়ন, ১৩৬ জনের আত্মসমর্পণ
নরসিংদী কারাগারের জেল সুপার ও জেলার বরখাস্ত
নরসিংদীতে শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষে আরও ১ জন নিহত
বিবেকের তাড়নায় ২ ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিবেকের তাড়নায় ও দেশের মানুষের স্বার্থে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নরসিংদীর দুই ছাত্রলীগ নেতা পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই)  রাতে তাদের নিজ নিজ ফেসবুকে আইডি থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে তারাএ ঘোষণা দেন। ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারদিন ইসলাম ইফতি এবং রাইয়াফ করিম সরকার। ফারদিন ইসলাম ইফতি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমি ফারদিন ইসলাম ইফতি। সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক; নরসিংদী শহর ছাত্রলীগ। বিবেকের তাড়নায় ও দেশের মানুষের স্বার্থে আমার নিজ পদবি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম।’ রাইয়াফ করিম সরকার তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমি নরসিংদী সদর উপজেলা প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান মরহুম হাবিবুর রহমান হান্নান সরকার সাহেবের নাতি রাইয়াফ করিম সরকার। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক; নরসিংদী শহর ছাত্রলীগ। বিবেকের তাড়নায় ও দেশের মানুষের স্বার্থে আমার নিজ পদবি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম।’ এ বিষয়ে কথা হয় অব্যাহতি নেওয়া রাইয়াফ করিম সরকার বলেন, ‘মা-বোনদের ওপর হাত তোলা হয়েছে, এটা অন্যায়। আমরা আওয়ামী লীগকে ভালোবাসি। বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি, শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে আপাতত রাজনীতি করার ইচ্ছে নেই। আমার পরিবার আগে থেকেই আওয়ামী রাজনীতিতে যুক্ত। আমি জানি কখন কি করা লাগবে।’ অপরদিকে, আরেক ছাত্রলীগ নেতা ফারদিন ইসলাম ইফতির সঙ্গে মেসেঞ্জার এবং মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।  নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল আহমেদ শাওন দুই নেতার পদত্যাগের বিষয়ে বলেন, ‘ফেসবুক থেকে বিষয়টি জেনেছি। তবে, তাদের বিষয়ে পরবর্তীতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আসলে আন্দোলনকে ঘোলাটে করছে একটা চক্র এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝানো হচ্ছে।’  
নরসিংদীতে সিএনজি-কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষ, শিশুসহ নিহত ২
নরসিংদীর পাঁচদোনায় কাভার্ডভ্যানের ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক শিশুসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন সিএনজির আরও চার যাত্রী।   রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে সদর উপজেলার পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নগর পাঁচদোনা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।  নিহতরা হলেন, শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা মুনসেফের চর এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে এনামুল হক (৬০) এবং টাঙ্গাইলের আবুল কালামের ছেলে জারিফ (৪)।  ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান। পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, বিকেলে সিএনজি অটোরিকশাটি ইটাখোলা থেকে যাত্রী নিয়ে টঙ্গীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পরে ঘোড়াশাল পাঁচদোনা মহাসড়কের নগর পাঁচদোনা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই শিশু জারিফসহ এনামুল হকের মৃত্যু হয়। আহত হয় সিএনজিতে থাকা আরও চার যাত্রী। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।  মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।’ 
জানা গেল মেয়েসহ সাবিনার ট্রেনে কাটা পড়ার কারণ
নরসিংদীতে ছবি তুলতে গিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে সাবিনা বেগম (২৮) ও তার কোলে থাকা ছোট শিশু মাইমুনার (৩)  মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় সাবিনার বড় মেয়ে সিনহাকে (৪) চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নরসিংদী রেলস্টেশনের পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।  পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নরসিংদী বাজারে কেনাকাটা শেষে ৩ ও ৪ বছরের দুই মেয়ে শিশুসন্তানসহ নরসিংদী রেলস্টেশনে আসেন মা সাবিনা বেগম। শিশুদের ঘোরাঘুরি ও খেলা করার একপর্যায়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে রেললাইনের পাশে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ছবি তুলছিলেন মা সাবিনা বেগম। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের হর্নের শব্দ শুনে দৌড় দেয় সিনহা। তাকে বাঁচাতে কোলে থাকা মাইমুনাকে নিয়ে এগিয়ে যান সাবিনা বেগম। এসময় ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মা সাবিনা বেগম ও মাইমুনা। গুরুতর আহত হয় অপর সন্তান সিনহা। এদিন রাতেই ময়নাতদন্ত শেষে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মুন্সেফেরচর এলাকার জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী সাবিনা বেগম ও তার কন্যা শিশু মাইমুনার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আহত সিনহাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‌‘অসচেতনতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে রেললাইনের পাশে ছবি তুলছিল। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’    
এক মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে আরেক মেয়েকে নিয়ে ট্রেনে কাটা পড়লেন মা
নরসিংদীতে ট্রেনে কাটাপড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে তার আরেক মেয়ে। শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।  নিহতরা হলো শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা মুনসেফের চরের জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী সাবিনা বেগম (৩০) ও তার ২ বছর বয়সী মেয়ে মাইমুনা আক্তার।  এ সময় গুরুতর আহত হয় তার বড় মেয়ে সিনহা আক্তার (৪)। প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, সাবিনা বেগম তার ২ মেয়েকে নিয়ে নরসিংদীতে শপিং করতে আসেন। শপিং শেষে বাড়ি ফেরার সময় শিশুদের ট্রেন দেখাতে স্টেশন এলাকায় অবস্থান করেন। এ সময় মোবাইল ফোনে মা ছবি তুলতে মগ্ন থাকায় রেললাইনে চলে যান সিনহা আক্তার। পরে কোলে থাকা মাইমুনাকে সঙ্গে নিয়েই সিনহাকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মা সাবিনা বেগম।  এ সময় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস নিচে কাঁটাপড়ে ঘটনাস্থলেই মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বড় মেয়ে সিনহাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করেন।   নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস কাটাপড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আহত বড় মেয়েকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।’ 
রেললাইনে ছিন্নভিন্ন ৫ মরদেহ, মৃত্যু নিয়ে রহস্য
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কমলপুর এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়া ছিন্নবিচ্ছিন্ন পাঁচ মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। সোমবার (৮ জুলাই) ভোরে উদ্ধার হওয়া এসব মরদেহের পরিচয় না মেলায় রাতে ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করেছে রেলওয়ে পুলিশ। এ ঘটনায় ভৈরব থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই, সিআইডি ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) পর্যন্ত ঘটনাটি  কোন সময়ের, কোন ট্রেনে কাটা পড়েছে নাকি হত্যা করে মরদেহ এখানে ফেলে দেওয়া হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। ঘটনাটি নিয়ে জনমনে রহস্য দানা বাঁধছে। আলোচনা চলছে গোটা জেলা ছাড়িয়ে দেশজুড়ে। এদিকে পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে, সব মরদেহই পুরুষের। তাদের বয়স আনুমানিক ১৫ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হবে। স্টেশনে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। ভোরে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মেইল ট্রেনটি মেথিকান্দা স্টেশন অতিক্রম করার সময় সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ট্রেনটির ছাদে কয়েকজন যাত্রী ছিলেন। এই যাত্রীরাই মারা গেছেন কি না সেটি নিশ্চিত হতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রায়পুরা মেথিকান্দা স্টেশন থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে কমলাপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। চারদিকে ঝোঁপঝাড়, আধা কিলোমিটারের মধ্যে কোনো জনবসতি নেই। রাস্তা পারাপারের প্রসঙ্গ নেই ঘটনাস্থলে, ফলে রেললাইন পার হতে গিয়ে কেটে মারা যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এই এলাকায় মানুষের চলাচলও হাতেগোনা। ফলে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ওই ৫ তরুণের পোশাক দেখে টোকাই শ্রেণির মনে হয়েছে। ট্রেনের ছাদে বা ইঞ্জিনে বসে তারা হয়তো যাচ্ছিলেন। ফলে দুই বগির মাঝখানে বা ইঞ্জিন থেকে পড়ে গিয়ে কাটা পড়ে মারা গেছেন। তবে এভাবে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক। কেউ কেউ বলছেন, হত্যার পর তাদের লাশ এখানে ফেলে যাওয়া হয়েছে। ভ্যানচালক রফিক হায়দার বলেন, আগে কখনো এত মানুষের এমন মৃত্যু দেখিনি। তারা কীভাবে মারা গেছে বুঝতে পারছি না। সকালে উঠে লাশ দেখতে পাই। মনে হচ্ছে, হত্যার পর তাদের লাশ কেউ এই জায়গায় ফেলে গেছে। স্থানীয় বারিক আলী বলেন, সকালে রেললাইনের পাশে লোকজনের ভিড় দেখে এগিয়ে আসি। এসে দেখি রেললাইনে মানুষের শরীরের বিচ্ছিন্ন কিছু অংশ ও রক্ত। একটু সামনে এগুতেই একটি মরদেহ দেখা যায়। পরে আরেকটু সামনে গেলে আরও চারটি লাশ দেখা যায়। এটি পারাপারের কোনো রাস্তা নয়। তাই এই মৃত্যুগুলো রহস্যজনক মনে হচ্ছে।   মেথিকান্দা রেলস্টেশন মাস্টার আশরাফ আলী বলেন, ভোর ৫টা ২২ মিনিটে উপবন, ৫টা ৪৮ মিনিটে ঢাকা মেইল ও সাড়ে ৬টায় তিতাস ঢাকার উদ্দেশ্যে মেথিকান্দা স্টেশন পার হয়েছে। এরমধ্যে কোনো ট্রেনে কাটা পড়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে। তারা ট্রেনের ছাদ থেকে পিছলে পড়ে কাটা পড়েছেন, নাকি রেললাইনে বসে থাকা অবস্থায় কাটা পড়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নিহত ব্যক্তিরা স্থানীয় কেউ নন বলে জানা গেছে। মরদেহ উদ্ধারের আগে ওই রেললাইন দিয়ে আরও তিনটি ট্রেন চলাচল করেছে। নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, পিবিআই হাতের ছাপ সংগ্রহ করলেও তদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। আমরা মরদেহগুলোর ডিএনএ ও ভিসেরা সংগ্রহ করেছি। এগুলো ঢাকার মালিবাগের সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হবে। ডিএনএ পরিচয় শনাক্তে ও ভিসেরা মাধ্যমে তারা কোনো নেশা করেছিল কি না শনাক্ত করা যাবে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত শেষে রেলওয়ে কবরস্থানে সিরিয়ালভাবে দাফন করা হয়েছে। আর এটি হত্যা না দুর্ঘটনা সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই বলা যাবে। রেলওয়ের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, লাশের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টায় আঙুলের ছাপ নিয়েছে পিবিআই। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এরা ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের ধারণা, ছাদ থেকে পড়ে মরদেহ এভাবে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয় না। আমরা সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করছি। ঘটনার সময় চলাচলকারী ট্রেন, টিটি ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুতই রহস্য উদঘাটন করা যাবে।
নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পাঁচ মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন
নরসিংদীর রায়পুরায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত পাঁচজনের মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করেছে রেলওয়ে পুলিশ। এ ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। সোমবার (৮ জুলাই) রাত ১২টায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে রেলস্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ে কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। এর আগে সোমবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথের রায়পুরা উপজেলার কমলপুর এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়া ছিন্নবিচ্ছিন্ন পাঁচমরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথের রায়পুরা উপজেলার মেথিকান্দার রেলগেইট এলাকায় পলাশতলী ইউনিয়নের কমলপুরে রেললাইনে ছিন্নবিচ্ছিন্ন ৫টি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ, পিবিআই, রায়পুরা ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে নিহতদের মরদেহ উদ্ধারে কাজ শুরু করেন। নিহত সকলেই পুরুষ। তাদের বয়স আনুমানিক ১৫ থেকে ২৫ এর মধ্যে হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পরিচয় শনাক্ত করতে মরদেহের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ। তবে জাতীয় সার্ভারে ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলায় তাদের পরিচয় শনাক্ত সম্ভব হয়নি। এমনকি রাত পর্যন্ত কোনো স্বজন পরিচয় শনাক্ত করেনি। এ ঘটনায় রায়পুরা উপজেলার মেথিকান্দা স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আশরাফ আলী বাদী হয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, পিবিআই হাতের ছাপ সংগ্রহ করলেও তদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে তাদের কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। আমরা মরদেহগুলোর ডিএনএ ও ভিসেরা সংগ্রহ করেছি। এগুলো ঢাকার মালিবাগের সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হবে। ডিএনএ পরিচয় শনাক্তে ও ভিসেরা মাধ্যমে তারা কোনো নেশা করেছিল কি না শনাক্ত করা যাবে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত শেষে রেলওয়ে কবরস্থানে সিরিয়ালভাবে দাফন করা হয়েছে। আর এটি হত্যা না দূর্ঘটনা সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই বলা যবে।