• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে যাওয়ায় প্রেমিকের আত্মহত্যা
শ্রীপুরে সিএনজিকে লরির ধাক্কায় নিহত ১
গাজীপুরের শ্রীপুরে বিড়ালকে বাঁচাতে গিয়ে মাটি বহনকারী লরির ধাক্কায় সিএনজি থেকে সিটকে পড়ে সিএনজি যাত্রী পোশাক শ্রমিক মফিজুল ইসলাম (৩২) নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের শিশু ছেলে মাহিদ (৭) এবং সিএনজি চালক মোস্তফা কামাল (৩৮) আহত হয়েছে।  শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় কাওরাইদ ইউনিয়নের সোনাব গ্রামের (চৌধুরী ঘাট) ব্রিজের পশ্চিম পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের স্থানীয়রা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। নিহত মফিজুল ইসলাম ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাসিল গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে। সে ওই উপজেলার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। আহত শিশু মাহিদ নিহতের ছেলে। আহত সিএনজিচালক মোস্তফা কামাল উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বিধাই গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে।  শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানান, মফিজুল ইসলাম তার স্ত্রী ও সাত বছরের শিশু ছেলেকে নিয়ে শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদে শশুর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিল। জৈনা বাজার-কাওরাইদ সড়কের সোনাব এলাকার চৌধুরী ঘাট ব্রীজের কাছে পৌঁছালে একটি বিড়াল সড়ক পার হচ্ছিল। এ সময় বিড়ালকে বাঁচাতে গিয়ে দ্রুত গতির সিএনজি ব্রেক করলে পেছনে থাকা মাটি বহনকারী লরির ধাক্কা লাগে। এতে সিএনজি থেকে ছিটকে পড়ে পোশাক শ্রমিক যাত্রী মফিজুল ইসলাম পাকা সড়কে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। দুর্ঘটনায় সিএনজি চালক মোস্তফা কামাল এবং নিহতের শিশু ছেলে মাহিদ গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর লরি চালক পালিয়ে গেছে। পুলিশ লরি ও দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি জব্দ করেছে।
শ্রীপুরে ট্রাকচাপায় তুলা গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তা নিহত
চাচার মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ি যাওয়ার পথে প্রাণ গেল ভাতিজার
শ্রীপুরে প্রস্তুতি সভা থেকে বিএনপির ৪ নেতাকর্মী আটক
স্ত্রীকে হত্যার পর মায়ের কাছে ছেলের চিঠি, খতিয়ে দেখবে পুলিশ
‘আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবে সে, তাই মাইরা ফেললাম’
‘নিজে একাই মইরা যাইতাম। কিন্তু এরে (স্ত্রী) যদি বাঁচাইয়া রাইখা যাই, সে আরও অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করবে। তাই মাইরা ফেললাম। অনেক স্বপ্ন ছিল রাসুলের সব সুন্নাহগুলো আমার জীবনে বাস্তবায়িত করমু। কিন্তু পারলাম না।’ স্ত্রী মীম আক্তারকে (১৭) শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মরদেহের পাশে চিরকুট রেখে দরজায় তালা দিয়ে চলে যান স্বামী আল-আমিন (২৪)।  বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তর পাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মীম আক্তার সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার মুলকান্দি (ছোট বেড়া খারুয়া) গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। স্বামী আল-আমিন টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার কালাই গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আব্দুস সামাদের বাসার তিন তলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে স্থানীয় সাদ টেক্সটাইল কারখানায় চাকরি করতেন। খবর পেয়ে বিকেলে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালা ভেঙে মীম আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী পলাতক রয়েছে। মীম আক্তার এবং আল-আমিন আপন চাচাতো ভাই-বোন। গত ৯ মাস আগে তাদের বিবাহ হয়। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এস আই) আব্দুল কুদ্দুছ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, গত তিন মাস আগে আল-আমিন তার স্ত্রী মীম আক্তারকে নিয়ে ওই বাড়ির তিন তলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বুধবার দুপর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে সে তার স্ত্রীকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে দরজায় তালা মেরে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর তিনি তার অফিসের সহকর্মী আরিফকে ফোনে করে জানান স্ত্রী মীম আক্তারকে হত্যা করে লাশ ঘরে রেখে তালা দিয়ে চলে এসেছেন। দেয়ালে তার (স্ত্রীর) নানার নাম্বার লেখা আছে। তাদেরকে খবর দিয়ে যেন মরদেহ দিয়ে দেয়।  তবে কি কারণে তিনি তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন, তা কেউ জানাতে পারেনি। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। র‌্যাব, ডিবি এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আঠাবিহীন কাঁঠাল চাষে সাড়া ফেলেছে সবুজ, ৩ মাসে ফলন
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের যুবক মাহমুদুল হাসান সবুজের বাগানে বারোমাসি আঠাবিহীন কাঁঠাল দেখতে হাজারও মানুষ ভিড় করছেন। নানা ধরনের ফলজ গাছের ফাঁকে ফাঁকে আঠাবিহীন কাঁঠাল গাছ রোপণ করে তিনি সাড়া জাগিয়েছেন। একদিকে বছরজুড়ে কাঁঠাল পেড়ে খাচ্ছেন, অন্যদিকে এলাকায় রসালো ফল আঠাবিহীন কাঁঠালের চাষি হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসান সবুজ জানান, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হন আঠাবিহীন কাঁঠাল চাষে। কিন্তু কাঁঠালের চারা সংগ্রহে সংকটে পড়েন। পরে এক বন্ধুর সহায়তায় ভারত থেকে আঠাবিহীন কাঁঠালের চারা আমদানি করেন। রোপণের তিন মাসের মাথায় ফলন আসতে শুরু করে। এখন একের পর এক গাছ থেকে কাঁঠাল নামিয়ে স্বজন ও প্রতিবেশীদের বিলিয়ে দিচ্ছেন। সবুজের আঠাবিহীন কাঁঠাল চাষ দেখে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন। বাড়ির চারপাশে নানা ধরনের ফলজ গাছের ফাঁকে ফাঁকে ৪৪টি চারা রোপণ করেছেন তিনি। একটি গাছও মরেনি। সবগুলো গাছ বড় হয়েছে। সেগুলোতে এখন ফল ধরেছে। ইতোমধ্যে পাকা ফলও খেয়েছেন। যেগুলো পেকেছে সেগুলো নিজে খেয়েছেন, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের দিয়েছেন। কাঁঠালের ভেতরের কোষগুলো রসালো এবং খুব মিষ্টি। তবে আঠা নেই। বাগান দেখতে আসা শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকার একটি পোশাক কারখানায় স্টোর ম্যানেজার ফজলুল হক বলেন, ‘বারোমাসি কাঁঠালের বাগান ও তার পরিচর্যা দেখার জন্য এসেছি। চারা সংগ্রহ ও পরিচর্যার নিয়মকানুন সম্পর্কে জেনেছি। আমি নিজেও রোপণ করবো। এতে আমিও লাভবান হবো এবং দেশেও এ কাঁঠালের চাষ বাড়বে।’ হাজী ছোট কলিম উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও মুলাইদ গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত এক বছর যাবৎ সবুজ বারোমাসি কাঁঠালের পরিচর্যা করে আসছেন। গাছে প্রচুর কাঁঠাল আসছে। কিছু কাঁঠাল ঝরে পড়েছে। কাঁঠালগুলো খুব সুন্দর এবং ফলন ভালো।  নিজেরা এ কাঁঠাল গাছ রোপণ করলেও লাভবান হবো। তার কাঁঠাল চাষ দেখে বাগান মালিক ও চাষিরা উদ্বুদ্ধ হবে।’ শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাঁঠালের একটি ছোট চারার মধ্যে বারোমাসি কাঁঠাল ফলে। এটা সাধারণত ভিয়েতনামের জাত। খুব মিষ্টি এবং সুস্বাদু। বারোমাসি কাঁঠালের চাষে আমাদের দেশের কাঁঠালের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও একসময় রপ্তানি করা সম্ভব হবে।’ নয়নপুর এলাকার স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আতাউর রহমান সোহেল বলেন, ‘গাজীপুর কাঁঠালের জন্য বিখ্যাত। নির্দিষ্ট মৌসুম ছাড়া এটি পাওয়া যায় না। চাষি সবুজ বারোমাসি আঠাবিহীন ৪০টি কাঁঠালের গাছ রোপণ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। আমাদের এলাকায় দ্রুত শিল্পায়ন হওয়ায় দেশি কাঁঠালের জাত কমে যাচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য আমরা বারোমাসি আঠাবিহীন কাঁঠাল চাষ করে সবুজের মতো সমৃদ্ধ হতে পারব।’ শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদি সুমাইয়া সুলতানা বলেন, ‘আমাদের দেশীয় জাতের কাঁঠালের প্রচুর আঠা থাকে। এটি বছরে একবার ফলন দেয়। কিন্তু নতুন যে ভ্যারাইটি ডেভেলপ করা হয়েছে সেটা বারোমাস ফলন দেয় এবং আঠাবিহীন। কৃষকেরাও এটি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এবং আমরাও পরামর্শ দিচ্ছি বারোমাসি এ কাঁঠালের আবাদ করার জন্য।’ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কাঁঠাল গবেষক ড. মো. জিল্লুর রহমান এ পদ্ধতির উদ্ভাবক। তিনি দেশে কাঁঠাল চাষ সম্প্রসারণে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিভিন্ন অমৌসুমি জাতের কাঁঠালের জাত সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের কাঁঠাল উৎপাদিত হয়। এলাকাভেদে এর স্বাদেরও ভিন্নতা রয়েছে। বীজ থেকে চারা উৎপাদনে গুণাগুণ ঠিক থাকে না। গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করলে শতভাগ গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। এ বিষয়ে ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমাদের জাতীয় এই ফল একসময় অবহেলায় ছিল। আর এখন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহারের পথ খুলেছে। কাঁঠাল ঘিরেই উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। নানা বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কাঁঠালের গ্রাফটিং পদ্ধতির দিকে কৃষকদের উৎসাহ তৈরি করতে হবে। এ পদ্ধতির ফলে রোপণের কিছুদিনের মধ্যেই ফল পাওয়া যাবে।’ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) ফল বিভাগ ও উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, দেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টির ব্যবহার নিশ্চিতে বিভিন্ন ফল ও ফসলের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে সরকার জোর দিয়েছে। একই সঙ্গে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বল্প সময়ে ভালো ফলনের প্রতিও। বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ গবেষণার ফসল হচ্ছে এ গ্রাফটিং পদ্ধতি। এর আগে আম ও লিচুর ক্ষেত্রে এ গ্রাফটিং পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়েছে। আর এখন শুরু হয়েছে কাঁঠালে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার বলেন, নতুন উদ্ভাবিত কাঁঠালের নতুন জাতটি রোপণ করে মাঠ পর্যায়ে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। নতুন জাতের কাঁঠাল খেতে সুস্বাদু, মিষ্টি এবং ঘ্রাণ ভালো।
‘কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে’
গাজীপুরের শ্রীপুরে তিনদিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি এমপি মেলার উদ্বোধন করেন।  রোববার (২৩ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টায় শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ মেলার উদ্বোধন করেন।  মেলায় বিভিন্ন কৃষি পণ্যের সরকারি বে-সরকারি ১৫টি স্টল স্থান পেয়েছে। সমন্বিত কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ‘কন্দাল ফসল’ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি প্রযুক্তি মেলার আয়োজন করে। প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি বলেন, ‘বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। কৃষিতে দেশ আজ সমৃদ্ধ। কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে কৃষিতে সব ধরনের চাষ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষিতে যতো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ততো বেশি উৎপাদন বাড়বে।’ এ সময় শ্রীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা, সাবেক ভিপি আহসান উল্লাহ, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির হিমু, গাজীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন জর্জ, শ্রীপুর উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন, শ্রীপুর আঞ্চলিক শাখা শ্রমিক লীগের সভাপতি জালাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথি সকলকে নিয়ে মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। মেলায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন, খামার যন্ত্রপাতি, কন্দাল ফসল, ধানের আধুনিক জাত, কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাত, ফারজানা নার্সারি, ব্র্যাক নার্সারি, ইস্পাহানি এগ্রো লিমিটেড, স্কয়ার ক্রপ কেয়ার ডিভিশনসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫টি স্টল কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে। আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত মেলা চলবে।
সড়কে ছিটকে মারা গেলেন মা, বেঁচে গেল কোলে থাকা সন্তান
ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি রওনা দিয়েছিলেন সুবর্ণা আক্তার (৩৫) নামে এক গৃহবধূ। তার সঙ্গে ছিল ৩ সন্তান। কিন্তু বাবার বাড়ি পৌঁছানোর আগেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে ছিটকে পড়ে মারা যান তিনি।  শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি-লিচুবাগান সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।  স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দুর্ঘটনায় সুবর্ণা আক্তার মারা গেলেও তার আড়াই বছর বয়সের সন্তান রাইসাসহ ৩ সন্তান বেঁচে যায়। নিহত সুবর্ণা আক্তার শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হকের মেয়ে ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের নিগুয়ারি গ্রামের মো. শামীমের স্ত্রী। শনিবার রাত ১১টায় রাজধানীর গ্রিনলাইফ হাসপাতালে সুবর্ণার মৃত্যু হয়। একই হাসপাতালে তার মেয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে সুবর্ণার পরিবারের লোকজন জানান, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা করে সুবর্ণা বাবার বাড়ি আসার সময় এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ সময় আড়াই বছর বয়সী মেয়ে মোসা. রাইসা তার কোলে ছিল। হঠাৎ তাদের বহন করা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটি সামনের আরেকটি অটোরিকশাকে পাশ কাটাতে প্রচণ্ড গতিতে মোড় নেয়। এতে সুবর্ণা তার কোলের সন্তানসহ রাস্তায় ছিটকে পড়েন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি অটোরিকশা তাকে চাপা দেয়। এতে তার মাথায় আঘাত লাগে। সুবর্ণার কোলের সন্তানটিও আহত হয়। যদিও ভাগ্যক্রমে অটোরিকশায় থাকা তার অপর দুই সন্তানের কোনো ক্ষতি হয়নি। পরে স্থানীয়রা সুবর্ণা ও তার কোলে থাকা সন্তানকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তার আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজধানীর গ্রিনলাইফ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ১১টার দিকে সুবর্ণা মারা যান। সুবর্ণার অপর ২ সন্তান শ্রীপুরে নানা বাড়িতে আছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে শ্রীপুর থানায় কেউ এখনও অবগত করেনি বলে জানিয়েছেন এসআই কুদ্দুস মিয়া। তিনি বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়ে কেউ থানাকে অবগত করেনি। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।’
ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ঈদের ছুটিতে মাদরাসা থেকে বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় গাজীপুরের শ্রীপুরে কাওরাইদ ইউনিয়নের মোড়লপাড়া গ্রামের কাইয়ুমের পুকুরে পড়ে তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।  দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুস ছামাদ। নিহতরা হলেন- কাওরাইদ ইউনিয়ের মোড়লপাড়া গ্রামের কালু মিয়া ছেলে জাহিদ (১০) এবং কাইয়ুমের ছেলে নাসির (১০)।  তারা দুজনই কাওরাইদ স্টেশন সংলগ্ন দারুল উলুম মাদরাসার হেফ্জ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। শ্রীপুর থানার এসআই আব্দুস ছামাদ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাহিদ ও নাসিরের মাদরাসা ঈদের বন্ধ দেয়। ওইদিন তারা একসঙ্গে বাড়িতে আসে। শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে নাসিরের বাড়িতে তার সহপাঠী জাহিদ খেলা করতে আসে। তারা নাসিরদের পুকুর পাড়ে বসে খেলা করছিল। বৃষ্টিতে পুকুর পাড় ভিজে মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় তারা পাড় ভেঙে পুকুরে পড়ে ডুবে যায়। তাদের দুজনকে অনেকক্ষণ দেখতে না পেয়ে শিশু নাসিরের মা তাদেরকে খোঁজতে থাকেন। জাহিদের মা বাড়ির পাশের পুকুরে তাদের একজনের জুতা ভাসতে দেখে তিনি পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।  এসআই আব্দুস ছামাদ আরও জানান, পরিবারের লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। উভয় শিশুদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে তাদের স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
গাজীপুরে এক রাতে ২ কৃষকের ৮ গরু চুরি
গাজীপুরের শ্রীপুর ও কাপাসিয়ায় কৃষকের গাভিসহ ৮টি গরু চুরি হয়েছে। রোববার (৯ জুন) ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে চোরেরা গোয়াল ঘর থেকে গরু নিয়ে যায়। শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ গ্রামের বিউটি আক্তারের তিনটি এবং কাপাসিয়ার বামনখলা গ্রামের হারুন মিয়ার গোয়ালঘর থেকে পাঁচটি গরু চুরি হয়। এতে ওই দুই কৃষকের প্রায় ৬ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।  সোমবার (১০ জুন) ক্ষতিগ্রস্ত দুই কৃষক তাদের গরু চুরির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে বামনখলা গ্রামের চান মিয়ার ছেলে হারুন বলেন, রোববার ভোরে গোয়াল ঘর থেকে পাঁচটি গরু চুরি হয়েছে। গরুগুলো আমি কোরবানির ঈদের বাজারে বিক্রি করার জন্য পালন করে আসছি। আগের দিন সন্ধ্যায় খাবার দিয়েছি। রাত আড়াইটার দিকে গরুগুলোকে খাবার দিয়ে আমি ঘুমাতে যাই। ভোরে উঠে দেখি গোয়াল ঘরে থেকে গরু চুরি হয়েছে। আমার ৫টি গরুর মূল্য বর্তমান বাজারে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা হবে। প্রতিবেশী জামাল সিকদার ও রশিদ সিকদার বলেন, আমাদের গরুও চুরি করে পিকআপ ভ্যানে উঠাচ্ছিল চোরেরা। এ সময় খোঁজ পেয়ে ধাওয়া দিলে চোর গরু রেখে পিকআপ নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া বলেন, গরু চুরির ঘটনায় পুলিশ কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেছে। রাতে পুলিশি টহল আরও বাড়ানো হবে। এ দিকে শ্রীপুরে এক নারীর শেষ সম্বল গাভিসহ তিনটি গরু চুরির হয়েছে। ভোর রাতে চোরেরা গোয়াল ঘরের তালা কেটে গরু নিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত নারী বিউটি আক্তার শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ এলাকার মৃত সাহাব উদ্দিনের মেয়ে। বিউটি আক্তার জানান, তিনি শনিবার রাত ১১টার দিকে গোয়াল ঘরে গরুগুলো বেঁধে দরজায় তালা দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়েন। রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরের তালা কাটা দেখে প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করেন। পরে গোয়াল ঘরে গিয়ে গরু দেখতে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন। কোথাও না পেয়ে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বিউটি আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ওই তিনটি গরুই আমার শেষ সম্বল ছিল। চুরি হওয়া তিনটি গরুর মধ্যে একটি গাভি ২ কেজি দুধ দিতো। সিন্ধী গাভি পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিল। ছাই রঙের দুধের গাভির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা, সিন্ধী লাল রঙের গাভির মূল্য এক লাখ টাকা এবং ষাঁড় বাছুরের মূল্য ৪০ হাজার টাকা। এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকরা বলেন, একই রাতে প্রতিবেশী তিন বাড়িতে চোরেরা হানা দিয়ে গরু চুরি করার চেষ্ট করেছে। গরু চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা রাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুমাতে পারে না। ধারণা করা হচ্ছে, চোরেরা গভীর রাতের কোনো এক সময় গোয়াল ঘরের তালা কেটে পিকআপভ্যানে করে তিনটি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফজাল হোসেন বলেন, গরু চুরির ঘটনায় এক নারী সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। গরু চুরি রোধে পুলিশ সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।