যাত্রাবাড়ীতে দীর্ঘ যানজট, চরম ভোগান্তি
পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র একদিন বাকি। বড় ছুটিকে উপলক্ষ্য করে রাজধানী ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ। সবার চোখে-মুখে আপনজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আনন্দ। কিন্তু প্রতিবছরই এই আনন্দের আড়ালে মিশে থাকে ঘরে ফেরার পথে চরম ভোগান্তির গল্প। সেই চিত্র আবার ফিরেছে রাজধানীর বুকে। যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষদেরকে। পথে গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।
ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ ও বহির্মুখ যাত্রাবাড়ী। পাঁচদিক থেকে পাঁচটি সড়ক মিলেছে এই এক মোড়ে। ঢাকা থেকে নরসিংদী হয়ে সিলেট বিভাগে, নারায়ণগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রাম বিভাগে এবং পদ্মাসেতু হয়ে দক্ষিণবঙ্গে যেতে হলে ব্যবহার করতে হয় এ মোড়। অর্থাৎ রাজধানীর জীবননির্ভর দেশের বড় একটা অংশের যাতায়াত করতে হয় এ অংশ দিয়ে। ফলে চাপও বেশি। রমজানের শেষ পর্যায়ে এসে এ চাপ বেড়েছে আরও কয়েক গুণ। যে কয়টি সড়ক যাত্রাবাড়ীর এ মোড়টিতে মিলেছে, তার সবগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। গতকাল বিকেল থেকে যানজট শুরু হলেও মূলত মঙ্গলবার সকালে এসে প্রকট আকার ধারণ করেছে তা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গিয়ে দেখা যায়, যানবাহনের দীর্ঘ সারি চলে গেছে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, কাজলা থেকে শনির আখড়া, রায়েরবাগ ছাড়িয়ে মাতুয়াইল মেডিকেল পর্যন্ত। অন্যদিকে বাসাবো, কমলাপুর থেকে যানজট শুরু হয়ে যাত্রাবাড়ী মোড় পর্যন্ত ঠেকেছে। আবার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সড়কেও আছে যানজট। যাত্রাবাড়ী থেকে এপারে ঢাকার মধ্যে যানজট থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গাড়ি প্রবেশেও ব্যাঘাত ঘটছে। এজন্য মহাসড়কের ওই অংশেও যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
একই সঙ্গে শনির আখড়া বা রায়েরবাগ এলাকা থেকে গুলিস্তানে চলাচল করা লোকাল গাড়ির সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। পথে পথে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। এ ছাড়া গুলিস্তানসহ রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য শত শত মানুষকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। মানুষের এ দুর্ভোগের সুযোগে ভাড়া কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। ২০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা।
শনির আখড়ার দনিয়া কলেজের সামনে সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেশ কয়েকজন লোক। গুলিস্তান যাবেন তারা। জাকির হোসেন নামে তাদের মধ্য থেকে একজন বলেন, এত যানজট, অথচ গুলিস্তানের গাড়ি পচ্ছি না। দু-একটা গাড়ি আসছে তা-ও সিটিং। ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে।
কথা হয় গুলিস্তান-রায়েরবাগ রুটে চলাচলকারী শ্রাবণ পরিবহনের একজন কর্মীর সঙ্গে। তিনি জানান, ঈদের কারণে লোকাল গাড়িগুলো দূরের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী নিয়ে গেছে, তাই গাড়ি কম।
এদিকে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে ঢাকা ছাড়তে পোস্তগোলা সড়কেও দেখা গেছে ভোগান্তির চিত্র। সড়কের জট ছড়িয়ে পড়েছে ফ্লাইওভারেও। পোস্তগোলা সড়কে যেতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরে দেখা গেছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।
প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বুধবার বা বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।
মন্তব্য করুন