• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিচার ছাড়া হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি বিশিষ্টজনদের 

আরটিভি নিউজ

  ০৭ আগস্ট ২০২০, ২১:৩৯
Prominent people demanded an end to the killings without trial
সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ ও অধ্যাপক জিয়া রহমান

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় ফের আলোচনায় এসেছে ‘ক্রসফায়ার’ বা তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধ’। অবশ্য, দুই বছর আগে টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামকে একইভাবে হত্যার পরও দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। তাই, বিচার ছাড়া হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানান অপরাধ বিশেষজ্ঞ ডক্টর জিয়া রহমান। অপরদিকে, মানবাধিকার রক্ষায় ক্রসফায়ার বন্ধ করা জরুরি বলে মত দিয়েছেন সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ২০০৪ সালে র্যা ব গঠনের পর সন্ত্রাস দমনের নামে শুরু হয় ক্রসফায়ারে হত্যাকাণ্ড। একের পর এক মারা পড়ে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী। এরপর সময়ের পরিক্রমায় পুলিশের অন্যান্য শাখাগুলোও এতে জড়িয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি করা ‘ক্রসফায়ার, ‘বন্দুকযুদ্ধ’, ‘গুলিবিনিময়’, ‘এনকাউন্টারে’প্রতি বছর প্রাণ হারাচ্ছেন শত শত মানুষ।

‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রে’র তথ্যমতে, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২০১৬ সালে ১৭৭ জন, ২০১৭ সালে ১৪১, ২০১৮ সালে ৪২১ ও ২০১৯ সালে ৩৬১ জন নিহত হয়েছেন। চলতি বছর এ সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠনটি।

২০১৮ সালের মে মাসে দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলে, ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধ’র সংখ্যা বেড়ে যায়। ওই বছরের ৪ মে থেকে থেকে এ পর্যন্ত অভিযানে, দেশজুড়ে প্রায় সাড়ে তিনশ অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ‘বন্দুকযুদ্ধে’নিহত হন। এর মধ্যে ৩০ জুলাই পর্যন্ত কেবল কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র্যা বের ‘বন্দুকযুদ্ধ’র নিহত হয়েছেন ২৮৭ জন।

সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনেক নিরীহ মানুষও বিচারবহির্ভূত এমন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। সবশেষ টেকনাফে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনার হত্যাকাণ্ডে বিষয়টি আরও জোরালো হলো।

এমন হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সব সময়ই সোচ্চার মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তারা বলছে, বিনা বিচারে হত্যা মানেই মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ আরটিভি নিউজ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ হলো যদি কেউ অপরাধ করে থাকে অথবা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সমর্পণ করা। কিন্তু সেটা না করে যেখানে-সেখানে রাস্তাঘাটে অথবা বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এইভাবে হত্যা করা হচ্ছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য অপরাধ প্রবণতায় জড়িয়ে পড়ছে। যেটা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, ‘ক্রসফায়ার’র নামে হত্যা করে অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার সামাজিক সচেতনতা ও মূল্যবোধের চর্চা করা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান আরটিভি নিউজকে বলেন, যে কোনো বিচারেই ক্রসফায়ার যুক্তিযুক্ত কোনো সমাধান নয়। সেই কারণে আমরা বলছি যে, দীর্ঘ পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আমাদের প্রিমিয়াম জাস্টিস সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করতে পারি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রিজমটাকে যদি একটা কারেকশন সেন্টারে রূপান্তরিত করতে পারি। এটা একদিনে হবে না কিন্তু আমরা ধীরে ধীরে ক্রসফায়ার নামক বীভৎস পথ থেকে মুক্তি পেতে পারি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের এমন হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে সরকারকে কঠোর হওয়ার পাশাপাশি আইনের শাসনকে জোরদার করার আহ্বান জানান তারা।
এনএম/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • অপরাধ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আল-কাহতানির দাবি সত্যি হলো, বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে সৌদি
মুক্তিযোদ্ধার কুশপুত্তলিকা দাহ, মেয়রের বিচারের দাবি 
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন
জয়ের স্ত্রীর দাবি, সালমান শাহর মতোই তার স্বামীকে টার্গেট করা হলো
X
Fresh