ম্যানচেস্টারে ব্যর্থতার কারণ জানালেন ডি মারিয়া
২০০৭ সালে আর্জেন্টাইন ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রাল থেকে বেনফিকায় যোগ দেন অ্যাঞ্জেলো ডি মারিয়া। পর্তুগালের দলটি থেকে তিন বছর পর ২৫ মিলিয়ন ইউরোতে রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমান এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। ২০১১-১২ মৌসুমে রিয়ালের লা লিগা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন ডি মারিয়া।
পরের মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে পৌঁছায় লস ব্লাঙ্কোসরা। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর ফাইনালে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের তিন জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল প্রায় দিয়েই দিয়েছিলেন! সেসময়কার অ্যাথলেটিকোর বেলজিয়ান গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া বলটি ঠেকিয়ে দেন। যদিও শেষ পর্যন্ত রিয়াল ফরোয়ার্ড গ্যারাথ বেল গোলটি আদায় করে নিয়ে ২-১ এ জয় এনে দেন। আগের লেগে ২-০তে এগিয়ে থাকায় শেষ পর্যন্ত ৪-১ এ ম্যাচটি জিতে নেয় সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর দলটি। ম্যাচ শেষে সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছিলেন ডি মারিয়া।
২০১৪ সালের আগস্টে স্পেন ছেড়ে জার্সি গায়ে জড়ান ম্যানচেস্টার ইউনাইডের। ৫৯.৭ মিলিয়ন পাউন্ডে রেড ডেভিলসদের দলে যোগ দিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে দলবদলের রেকর্ড গড়েন। ঐতিহাসিক দলটির মর্যাদার প্রতীক ‘সাত’ নম্বর জার্সিটি এই আর্জেন্টাইনের হাতে তুলে দেয়া হয়। ইউনাইটেডের জর্জ বেস্ট, এরিক কান্তোনা, ডেভিড বেকহ্যাম ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো কিংবদন্তিরা এই জার্সিটি পরেই নিজেদের নিয়ে গেয়িছিলেন অনন্য উচ্চতায়।
প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডে খেলতে এসে শুরুটা দুর্দান্ত ছিল ফিডিও খ্যাত এই তারকার। সেপ্টেম্বর জুড়ে ভাল পারফরম্যান্সের কারণে মাসের সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন তিনি। তবে নভেম্বরের শেষ দিকে এসে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে ছিটকে পড়েন মাঠ থেকে। প্রায় দুই মাস মাঠের বাইরে থাকার পর তৎকালীন কোচ লুই ভন গাল ডি মারিয়াকে নতুন পজিশনে খেলান। তবে বিপত্তি বাধে মাঝ মাঠ থেকে ফরোয়ার্ড হিসেবে নিজেকে মানিয়ে নিতে।
শেষ পর্যন্ত ম্যানচেস্টারে ডি মারিয়ার যাত্রাটা শুভ ছিল না। আর তাই পাঁচ বছরের এই চুক্তিটি শেষ হয়ে যায় এক বছরেই। এতে পরের মৌসুমে ৪৪ মিলিয়ন পাউন্ডে যোগ দেন প্যারিস সেন্ট জামের্ইতে (পিএসজি)। সেসময় ফুটবল বোদ্ধারা মৌসুমের সবচেয়ে বাজে ট্রান্সফার হিসেবে উল্লেখ করেছিল এটিকে।
২০১৫ থেকে এই পর্যন্ত ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের হয়েই মাঠ মাতাচ্ছেন তিনি। কখনও অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কখনও আবার ফরোয়ার্ড হিসেবে নেইমার-কাভানি-এমবাপেদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলেছেন।
আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে ম্যানইউ’র মুখোমুখি হচ্ছে পিএসজি। এই ম্যাচের আগে ফ্রান্সের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ডি মারিয়া।
মুখ খুলেছেন ম্যানচেস্টারে নিজের ব্যর্থতার কারণ। ৩০ বছর বয়সী এই তারকার দাবি, নেদারল্যান্ডস ও ম্যানইউ’র সাবেক কোচ ভন গালের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণেই পর্বটি ব্যর্থ ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ডি মারিয়া বলেন, সেখানে মাত্র এক বছরই ছিলাম। আমার ক্যারিয়ারের এই অধ্যায়টি ভাল কাটাতে পারিনি। নিঃসন্দেহে আমাকে ভাল কাটাতে দেয়া হয়নি।
পিএসজির হয়ে গেল তিন বছরে ৫৭টি গোল করেছেন, করিয়েছেন ৬৬টি। এর মধ্যে দলীয় ভাবে জিতেছেন বেশ কয়েকটি শিরোপাও।
ভন গালের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়টি নিয়ে এই আর্জেন্টাইন বলেন, তৎকালীন কোচের সঙ্গে ঝামেলা ছিল। ধন্যবাদ সৃষ্টিকর্তাকে। আমি পিএসজিতে যোগ দিতে পেরেছিলাম। আবার দেখিয়ে দিতে পেরেছি, আমি কি ছিলাম।
ওয়াই
মন্তব্য করুন