• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রাবাদার তোপে সিরিজে সমতা আনলো প্রোটিয়ারা

স্পোর্টস ডেস্ক

  ১২ মার্চ ২০১৮, ২২:০৫

প্রথম টেস্ট দেখে মনেই হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের মাঠে খেলছে! তবে ডারবান টেস্টের ব্যর্থতা ভুলে দ্বিতীয় টেস্টেই ঘুরে দাঁড়ালো প্রোটিয়ারা। আফ্রিকার কাগিসো রাবাদার বোলিং তোপে সাড়ে তিন দিনেই শেষ হলো পোর্ট এলিজাবেথ টেস্ট। এই ম্যাচে সফরকারী অস্ট্রেলিয়াকে ছয় উইকেটে হারালো দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১১৮ রানে জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সুতরাং, সিরিজে এখন ১-১ সমতা বিরাজ করছে। আগামী ২২ মার্চ কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে শুরু হবে তৃতীয় টেস্ট।

সেন্ট জর্জস পার্কে চতুর্থ দিনে ১০১ রান তাড়া করে জেতা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য কঠিন কিছু ছিল না। কঠিন ছিল ম্যাচসেরা বাছাই করা! প্রথম ইনিংসে ডি ভিলিয়ার্সের অপরাজিত ১২৬ রান শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৩৯ রানের লিডই এনে দেয়নি, সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা ইনিংসও এটি। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ২৬ বলে ২৮ রান করে দলকে এনে দিলেন জয়। ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে একাই অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দিয়েছেন রাবাদা।

দিনটা শুরু করেছিলেন রাবাদা। আগের দিন অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ উইকেটের তিনটিই নিয়েছিলেন ডানহাতি এই পেসার। ৫ উইকেটে ১৮০ রান নিয়ে আজ চতুর্থ দিন শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ৫ উইকেট হাতে রেখে অসিরা এগিয়ে তখন ৪১ রানে। চতুর্থ ইনিংসে ২০০-প্লাস রান তাড়া করা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য কঠিন হতো। অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ছয় ব্যাটসম্যানের শেষ সদস্য হয়ে টিকে ছিলেন মিচেল মার্শ। ৩৯ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিলেন তিনি। তবে রাবাদা মার্শকে টিকতে দেননি এক ওভারও। দিনের প্রথম ওভারেই মার্শকে (৪৫) বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান প্রোটিয়া পেসার।

এরপর প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ককেও নিজের শিকারে পরিণত করেছেন রাবাদা। গালিতে থিউনিস ডি ব্রুইনকে ক্যাচ দেওয়া কামিন্স করেছেন ৫ রান। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়া স্টার্কের ব্যাট থেকে আসে ১ রান। নাথান লায়নকে (৫) কুইন্টন ডি ককের ক্যাচ বানিয়েছেন আরেক পেসার লুঙ্গি এনগিডি। অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ৯ উইকেটে ২১১। লিড মাত্র ৭২ রানের!

শেষ উইকেটে টিম পাইন ও জশ হ্যাজেলউডের ২৮ রানের জুটি অস্ট্রেলিয়াকে এনে দেয় শতরানের লিড। হ্যাজেলউডকে (১৭) ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ইতি টানেন স্পিনার কেশব মহারাজ। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ২৩৯ রানে। ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন পাইন।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট, আর ম্যাচে ১৫০ রানে ১১ উইকেট নিয়েছেন রাবাদা। মাত্র তৃতীয় দক্ষিণ আফ্রিকান বোলার হিসেবে কমপক্ষে চারবার ম্যাচে দশ উইকেট নিলেন তিনি। ডেল স্টেইন পাঁচবার দশ উইকেট নিয়েছেন ৮৬ টেস্টে। মাখায়া এনটিনির ১০১ টেস্টের ক্যারিয়ারে দশ উইকেট-কীর্তি চারবার। সেখানে রাবাদার চারবার মাত্র ২৮ টেস্টেই, বয়স তো কেবল ২২!

জিততে হলে বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ‘মিরাকল’ কিছু করে দেখাতে হতো। তেমন কিছুর সম্ভাবনাও জেগেছিল। এইডেন মার্করাম ফিরতে পারতেন ৭ রানেই। কিন্তু হ্যাজেলউডের বলে প্রথম স্লিপে মার্করামের ক্যাচ ছাড়েন মিচেল মার্শ। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডিন এলগার (৫) ফিরেছেন দলকে ২২ রানে রেখে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান লায়নের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন, অনেকটা ডারবান টেস্টের প্রথম ইনিংসের ‘কার্বন-কপি’। স্কোরবোর্ডে আর ১০ রান যোগ হতেই হ্যাজেলউডের বলে দ্বিতীয় স্লিপে স্টিভ স্মিথকে ক্যাচ দিয়েছেন মার্করাম (২১)।

মার্করামের বিদায়ের পরই উইকেটে আসেন ডি ভিলিয়ার্স। ৩২ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়া যদি কিছুটা আশা দেখে থাকে, ডি ভিলিয়ার্সের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সেটি হতাশায় পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি! ২৬ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ডি ভিলিয়ার্স করেন ২৮ রান। হাশিম আমলার সঙ্গে তার ৪৯ রানের জুটি দক্ষিণ আফ্রিকাকে পৌঁছে দেয় জয় থেকে ২০ রানের দূরত্বে। দলের স্কোর ৮১ রেখে আমলা (২৭) ও ডি ভিলিয়ার্স ফিরে গেলেও অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি (২*) ও ডি ব্রুইন (১৫*) দলকে পৌঁছে দেন কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়।

গত ৯ মার্চ শুরু হয় সিরিজের প্রথম ম্যাচ। শুক্রবার টস জিতে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে তারা ২৪৩ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায়। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন ডেভিড ওয়ার্নার। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে কাগিসো রাবাদা ৫টি, লুঙ্গি এনগিদি ৩টি ও ভারনন ফিল্যান্ডার ২টি করে উইকেট নেন।

পরে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রথম ইনিংসের ব্যাট করতে নেমে ৩৮২ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়। দলের পক্ষে সেঞ্চুরি করেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ১২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে এটি তার ২২তম সেঞ্চুরি। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে মিচেল স্টার্ক ১টি, জস হ্যাজলেউড ২টি, প্যাট কামিন্স ৩টি, নাথান লায়ন ১টি ও মিচেল মার্শ ২টি করে উইকেট নেন।

প্রথম ইনিংস শেষে ১৩৯ রানে পিছিয়ে থেকে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নামে। ২৩৯ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায় তারা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন উসমান খাজা। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে কাগিসো রাবাদা ৬টি, কেশব মহারাজ ২টি ও লুঙ্গি এনগিদি ২টি করে উইকেট নেন।

ম্যাচটিতে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০১ রান। সোমবার চার উইকেট হারিয়ে তারা জয় তুলে নেয়। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে জস হ্যাজলেউড ১টি, নাথান লায়ন ২টি ও প্যাট কামিন্স ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন কাগিসো রাবাদা।

আরও পড়ুন:

এএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক
০ রানে ৭ উইকেট, অভিষেকেই বিশ্বরেকর্ড রোহমালিয়ার
তীরে এসে তরী ডুবলো পাকিস্তানের, সিরিজে এক হাত নিউজিল্যান্ডের
প্রস্তুতি ক্যাম্পে যোগ দিতে চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন ক্রিকেটাররা
X
Fresh