• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo
গোসল ফরজ হলে কি সেহরি খাওয়া যাবে
চলছে পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস, সংযমের মাস ও ত্যাগের মাস রমজান। এটি ইবাদত-বন্দেগির মাস। এ জন্য এই মাসে পবিত্রতার বিষয়ে সবাই বেশ সতর্ক থাকেন। কিন্তু কখনো রাতে স্বপ্নদোষ বা সহবাসের কারণে গোসল ফরজ হয়ে যায়, তখন কি সেহরি খাওয়া যাবে, এ নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকে। রাসুল (সা.) থেকে এ বিষয়ে দুভাবে বর্ণিত আছে— গোসল ফরজ হওয়ার পর খাওয়াদাওয়া ও অন্যান্য কাজের আগে পবিত্র হওয়া উত্তম। তবে তা জরুরি নয়। গোসল ছাড়াও খাওয়া যায়। তাই গোসল ফরজ হলেও সেহরি খেতে পারবেন। এদিকে ফকিহবিদদের মত অনুযায়ী, গোসল ফরজ হওয়ার পর গোসল না করে সেহরি করে রোজা রাখলেও রোজা সহিহ হবে। তবে ফজরের ওয়াক্ত থাকা সময়েই গোসল সম্পন্ন করে সময়মতো নামাজ পড়তে হবে। অন্যদিকে, মুসলিম শরিফের ২৫৯২ নম্বর হাদিসে আছে, গোসল ফরজ হওয়ার পরও কোনো কারণ ছাড়াই গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় পার করা মারাত্মক গোনাহ। ইসলামী বিশ্লেষকরা বলেছেন, স্বপ্নদোষ হলে গোসল ফরজ হয়। আর গোসল ফরজ অবস্থায় নামাজ, তাওয়াফ, কুরআন তেলাওয়াত ও স্পর্শ করা এবং মসজিদে প্রবেশ করা ছাড়া অন্যান্য সবধরনের কাজ করা যায়। -(বুখারী ২৭৯), সুতরাং সেহরিও খাওয়া যাবে। আলেমরা বলেন, তবে মনে রাখতে হবে, গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও কোনো কারণ ছাড়া অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়া মারাত্মক গোনাহ। সুতরাং, ফজর নামাজের আগেই গোসল করে নামাজ আদায় করতে হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, যার নামাজ কাজা হয়ে গেল, যেন তার পরিবার ও সম্পদ সবই ধ্বংস হয়ে গেল। (মুসনাদে আহমাদ ২৩৬৪২)।   
২৪ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৮

প্রচণ্ড শীতে ফরজ গোসল, অপারগতায় ইসলামের যে বিধান
এখন ভরা শীতের মৌসুম। প্রচণ্ড শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। এই শীতে অনেকেরই ওজু ও আবশ্যক গোসলে সমস্যা হয়। যারা ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছে, তাদের জন্য নিয়মিত গোসল করা রীতিমতো বিপদের। যদি কারও নিয়মিত আবশ্যক ওজু-গোসলে সমস্যা হয়, তার জন্য ইসলামের বিধান কী? কীভাবে তিনি এই সমস্যার মধ্যে নামাজ-রোজা পালন করবেন। এ ক্ষেত্রে ইসলাম বলছে, গরম পানি কিংবা অন্য যেভাবে শরিয়তের বিধান মোতাবেক ওজু করা যায় সেটা করা। যদি আপনি অপারগ হন এবং ঠান্ডা অতি তীব্র হয়, পানি ব্যবহারে বিপদ ঘটার আশঙ্কা থাকে, পানি গরম করা বা আশপাশে কারও থেকে গরম পানি কেনার কোন উপায় না থাকে সেক্ষেত্রে আপনার ওজর গ্রহণযোগ্য এবং তায়াম্মুম করাই আপনার জন্য যথেষ্ট। আরবে অন্তরীণ শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদের কাছে এক ব্যক্তি জানতে চেয়েছিল, ‘প্রচণ্ড শীতের দিনে গোসল ফরজ হলে আমি কি তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারি? উল্লেখ্য, যে সরঞ্জামাদি থাকলে আমি অবিলম্বে পবিত্র হতে পারি সেগুলো আমার কাছে নেই। তাছাড়া আমি ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত; আমার পিঠ রোগাগ্রস্ত, আমাকে সাংঘাতিক কষ্ট দিচ্ছে।’ উত্তরে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, যে ব্যক্তির উপর গোসল ফরজ হয়েছে সে ব্যক্তি নামায পড়তে চাইলে তার উপর ফরয হচ্ছে, পানি দিয়ে গোসল করে নেওয়া। দলিল হচ্ছে- ‘আর তোমরা জুনুবি (অপবিত্র) হলে প্রকৃষ্টভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে (সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬)। তাই কেউ যদি পানি ব্যবহারে অক্ষম হয়, পানি না-থাকার কারণে কিংবা পানি থাকলেও এর ব্যবহারে রোগের ক্ষতি হতে পারে কিংবা তীব্র ঠান্ডার কারণে (তার কাছে পানি গরম করার মত কিছু না থাকলে); তাহলে সে ব্যক্তি পানি দিয়ে গোসল করার পরিবর্তে মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করতে পারেন। এর দলিল হচ্ছে আল্লাহ্‌র বাণী: “আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ মলত্যাগ করে আসে বা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)।  এ আয়াতে দলিল রয়েছে যে, অসুস্থ ব্যক্তি পানি ব্যবহার করার ফলে যদি তার মৃত্যু ঘটা, কিংবা রোগ বেড়ে যাওয়া কিংবা আরোগ্য লাভ বিলম্ব হওয়ার আশংকা থাকে সেক্ষেত্রে তিনি তায়াম্মুম করবেন। আল্লাহ্‌ তাআলা তায়াম্মুমের পদ্ধতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তা দ্বারা মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ করবে (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৬)।    আমর বিন আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘জুতুস সালাসিল’-এর অভিযানে এক ঠান্ডার রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়ে গেল। আমি আশঙ্কা করলাম, আমি যদি গোসল করি তাহলে ধ্বংস হয়ে যাব। তাই আমি তায়াম্মুম করলাম। এরপর আমার সাথিদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলাম। আমার সাথিরা বিষয়টি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেন, হে আমর! তুমি কি জুনুবি (গোসল ফরজ হওয়া) অবস্থায় তোমার সাথিদের নিয়ে নামাজ পড়েছ? তখন আমি তাকে জানালাম কী কারণে আমি গোসল করিনি এবং আমি আরও বললাম, আমি শুনেছি আল্লাহ্‌ বলেন: ‘তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তোমাদের প্রতি দয়ালু (সূরা নিসা, আয়াত: ২৯)। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেসে দিলেন, কোন কিছু বললেন না।  শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহ.) বলেন, যদি আপনার পক্ষে গরম পানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয় কিংবা আপনি গরম করতে পারেন কিংবা প্রতিবেশী বা অন্য কারো থেকে কিনে নিতে পারেন তাহলে সেটা করা আপনার উপর আবশ্যকীয়। কেননা আল্লাহ্‌ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যানুযায়ী আল্লাহ্‌কে ভয় করো (সুরা তাগাবুন, আয়াত: ১৬)। তাই আপনার কর্তব্য হচ্ছে ।  তথ্য সূত্র : ইমাম বাতায়ন
২১ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:১৮
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়