• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
যে কারণে আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দেন
জাকাত মানে পবিত্রতা ও প্রবৃদ্ধি। যা ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের একটি। আল-কোরআনে নামাজের নির্দেশ যেমন ৮২ বার রয়েছে, অনুরূপ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাকাতের নির্দেশনাও রয়েছে ৮২ বার। জাকাত আদায় না করলে আল্লাহর কঠিন শাস্তি রয়েছে। এটি আদায়ে গড়িমসি করলেও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। হযরত আবদুল্লাহ বিন উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেন, হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসীবত আর জাকাত আদায় না করলে তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তার রসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযীলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪০১৯)   পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! পণ্ডিত ও সংসারবিরাগীদের অনেকে লোকদের মালামাল অন্যায়ভাবে ভোগ করে চলছে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রাখছে। আর যারা স্বর্ণ ও রুপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর আজাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন। (সুরা: তাওবাহ, আয়াত: ৩৪) সেদিন জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে (সেদিন বলা হবে), এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা রেখেছিলে, সুতরাং এক্ষণে আস্বাদ গ্রহণ কর জমা করে রাখার। (সূরা তাওবা, আয়াত ৩৫) তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। চলমান এই অবস্থা আরও তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর, ‘হিট অ্যালার্ট’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার সময় আরও তিন দিন বাড়িয়েছে। দেশের নানান জায়গায় ইসতিসকা বা বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ আদায় করা হচ্ছে। 
১৯ ঘণ্টা আগে

মহান আল্লাহ যাদের দোয়া ফিরিয়ে দেন না
পবিত্র মাহে রমজানে প্রতিটি ইবাদতের প্রতিদান যেমন বহুগুণে বেড়ে যায়। এই মাস কল্যাণময় মাস। দোয়া প্রত্যেকটি মুমিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম এটি। যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহ তা’য়লার কাছে দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য চায়, তিনি (আল্লাহ) তাদের ওপর খুশি হন। রাসুল (সা.) বলেছেন, দোয়া ছাড়া অন্য কিছুই ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কিছু বয়স বাড়াতে পারে না। (তিরমিজি, ২১৩৯, তারগীব, ১৬৩৯) রমজান মাসে মুমিনকে যেসব বিষয়ের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে তম্মধ্যে অন্যতম একটি হলও দোয়া কবুল। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। ন্যায়পরায়ণ বার্ডস, রোজা পালনকারী যতক্ষণ না সে ইফতার করে এবং মজলুম।’ (তিরমিজি, হাদিস, ৩৫৯৮) পবিত্র রমজান মাসে প্রতিটি মুমিন বেশি বেশি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারে। বিশেষ করে ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে দোয়া করলে নিশ্চয়ই দয়াময় আল্লাহ তা’য়লা কোন বান্দাকে খালি হাতে ফেরাবেন না।  দোয়া প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে আমাদের সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, আমাকে কে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব; আমাকে কে কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করব; আমার কাছে কে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করব। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪৫)
২৪ মার্চ ২০২৪, ১০:৩৪

যে দোয়া পাঠকারীকে আল্লাহ সন্তুষ্ট করবেন
ইসলামের পরিভাষায়, দোয়া শব্দটির আক্ষরিক অর্থ আহ্বান, ডাকা, চাওয়া বা আবদার করা; যা ইসলামে একটি বিশুদ্ধ মিনতি প্রক্রিয়া। এই শব্দটি এসেছে একটি আরবি শব্দ থেকে যার বাংলায় অনুবাদ ডাক বা তলব করা, মুসলমানরা একে ইসলামি আইন হিসেবে এবং সওয়াব বিবেচনা করে পালন করে থাকে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ইবাদতের সারাংশ।’ আর আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কোরআন মাজিদে বলেছেন, ‘তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা শিগগিরই জাহান্নামে দাখিল হবে, এবং লাঞ্ছিত হবে (সুরা আল-মুমিন, আয়াত ৬০)।’ আর এমন একটি দোয়া আছে, যা সকালে ও সন্ধ্যায় ৩ বার পাঠকারীকে আল্লাহ সন্তুষ্ট করবেন।  দোয়াটি : র দ্বী-তু বিল্লাহি রব্বান অবিল ইসলামি দ্বীনান ও বি মুহাম্মাদীন নাবিয়্যা ও রসু-লা। অর্থ: আমি সন্তুষ্ট আল্লাহ তায়ালার প্রতি রব হিসেবে, ইসলামের প্রতি দীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি নবী ও রাসুল হিসেবে।   রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা এ দু’আটি পাঠ করবে আল্লাহ তা’আলা তাকে অবশ্যই সন্তুষ্ট করবেন।
১০ মার্চ ২০২৪, ১০:১৬

অনৈতিকভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ালে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ। তরতর করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। আর প্রতি বছরই রমজান ঘনিয়ে এলে তা কয়েকগুণে বেড়ে যায়। এতে সেহরি ও ইফতারে বিশেষ বিড়ম্বনায় পড়তে হয় রোজাদারদের। এ মাসে এমন পরিবেশ তৈরি করা উচিত যেন মানুষ সব ঝামেলা থেকে মুক্ত থেকে বেশি বেশি ইবাদত করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে রোজা এলেই মানুষকে ভাবনায় পড়তে হয় দ্রব্যমূল্যের বাড়তি দাম নিয়ে। আর এই দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ মজুতদারি। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ বুঝে বেশি লাভের আশায় অবৈধভাবে পণ্য মজুত করে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ক্রেতাদের সংকটে ফেলেন তারা। অথচ অধিক মুনাফার প্রত্যাশায় পণ্য মজুত করা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, হারাম। ভোক্তাদের জিম্মি করে অর্থ উপার্জন সামাজিকতা ও মানবিকতা বিবর্জিত। উপরন্তু এতে উপার্জিত অর্থ হারাম হওয়ার কারণে নামাজ, রোজা, হজ, দান-সদকা কিছুই কবুল হবে না। এসব কাজ জাহান্নামে যাওয়ার প্রধান কারণ হবে। উপরন্তু এতে উপার্জিত অর্থ হারাম হওয়ার কারণে নামাজ, রোজা, হজ, দান-সদকা কিছুই কবুল হবে না। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি খাদ্য গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, আল্লাহ তাকে দুরারোগ্য ব্যাধি ও দারিদ্র্য দ্বারা শাস্তি দেন।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২২৩৮) রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ৪০ দিনের খাবার মজুত রাখে, সে আল্লাহ-প্রদত্ত নিরাপত্তা থেকে বেরিয়ে যায়।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ২০৩৯৬) ভোক্তাদের জিম্মি করা জায়েজ নয়। কেউ তা করে ‘বিত্তশালী’ হয়ে গেলেও লাভ নেই। তার অবৈধ সম্পদ জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হবে। দুনিয়ার জীবনও তার জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে।  অন্যদিকে, মজুতদারি না করে স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা করল, এ ব্যবসা পরিণত হবে ইবাদতে। তার উপার্জন আল্লাহ তা’আলা বরকতময় করে দেবেন। তাকে অপ্রত্যাশিত রিজিক প্রদান করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘খাঁটি ব্যবসায়ী রিজিকপ্রাপ্ত হয়, আর পণ্য মজুতদকারী অভিশপ্ত হয়।’ (ইবনে মাজাহ : ২/৭২৮) কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রাখে। এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবন নাজেহাল হয়ে ওঠে। এদিকে ইসলামে খাদ্য মজুদ করার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।  হজরত মামার ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে ফাজালা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘পাপাচারী ছাড়া অন্য কেউ মজুদদারি করে না’ (তিরমিজি)। অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ৪০ রাত পর্যন্ত খাদ্যদ্রব্য মজুদ রাখে, আল্লাহর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক থাকে না।’ মজুদদার ও অধিক মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে হাদিসে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে এদের পাপী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘পণ্যদ্রব্য মজুদ করে অধিক মূল্যে বিক্রয়কারী অবশ্যই পাপী।’ (মিশকাত) অত্যধিক মুনাফা লাভের আশায় পণ্যদ্রব্য মজুদ করা, সরিয়ে রাখা, অতিরিক্ত পণ্য ধ্বংস করা শরিয়ত গর্হিত কাজ। এই মর্মে রাসুল (সা.) ভীতি প্রদর্শন করে বলেছেন, ‘কেউ যদি মুসলমানদের থেকে নিজেদের খাদ্যশস্য আটকে রাখে, তবে আল্লাহ তায়ালা তার ওপর মহামারি ও দারিদ্র্য চাপিয়ে দেবেন’ (ইবনে মাজা, বায়হাকি)।  নবী করিম (সা.) আরও বলেছেন, ‘মজুদদার খুবই নিকৃষ্টতম ব্যক্তি, যদি জিনিসপত্রের দাম হ্রাস পায় তা হলে সে চিন্তিত হয়ে পড়ে আর যদি দাম বেড়ে যায় তা হলে আনন্দিত হয়।’ (মিশকাত) এমনিভাবে দালালি বা মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে দ্রব্যের দাম বাড়ানোর জন্য হাদিসে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মূল্যবৃদ্ধির অসদুদ্দেশ্যে মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপ করে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে আগুনের হাঁড়িতে বসিয়ে শাস্তি দেবেন’ (তাবরানি : ৮/২১০)।  নবী কারিম (স.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন ব্যবসায়ীরা মহা অপরাধী হিসেবে উত্থিত হবে। তবে যারা আল্লাহকে ভয় করবে, নেকভাবে সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে ব্যবসা করবে তারা ব্যতীত’ (তিরমিজি: ১২১০) আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! নিশ্চয় পণ্ডিত ও সংসার বিরাগীদের অনেকেই মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে। আর তারা আল্লাহর পথে বাধা দেয় এবং যারা সোনা ও রুপা জমা করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। সেদিন জাহান্নামের আগুনে ওগুলোকে উত্তপ্ত করা হবে। অতঃপর ওগুলো দিয়ে তাদের ললাটে, পার্শ্বদেশে এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেয়া হবে, আর বলা হবে- এটি হচ্ছে ওটাই, যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চয় করে রেখেছিলে। সুতরাং এখন নিজেদের সঞ্চয়ের স্বাদ গ্রহণ কর।’ (সূরা তওবা, ৩৪-৩৫)। 
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৪৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়