• ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
logo
৩ মে : ইতিহাসে আজকের এই দিনে
আজ শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪।  এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়। ঘটনাবলি: ১৪৯৪ - কলম্বাস জ্যামাইকা আবিষ্কার করেন। ১৫১৫ - পর্তুগীজ নৌসেনারা ইরানের হরমুজ দ্বিপ দখল করে। ১৭৬৫ - বাংলার গভর্নর পদে নিযুক্ত হয়ে রবার্ট ক্লাইভ কলকাতায় উপনীত হন। ১৭৬৫ - ব্রিটিশদের সঙ্গে মারাঠাদের তুমুল সংঘর্ষ হয়। ১৭৮৮ - লন্ডনে প্রথম সান্ধ্য দৈনিক ‘দি স্টার’ প্রকাশিত হয়। ১৮৩৭ - অ্যাথেন্স বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় গ্রীসে। ১৯৩৭ - মার্গারেট মিচেল তার “Gone with the Wind.” এর জন্য পুলিৎজার পুরুস্কার পান। ১৯৩৯ - সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেস ত্যাগ করে ফরওয়ার্ড ব্লক গঠন করেন। ১৯৬০ - অ্যান ফ্রাঙ্ক হাউস উদ্বোধন করা হয় আমস্ট্রাডামে। ১৯৬৮ - ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৭১ - পিরোজপুর পতন হয় এবং পাক হানাদার বাহিনী ৬২ জনকে হত্যা করে। ১৯৭৬ - বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৮ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হয় এবং সংশোধনে বলা হয়, বাংলাদেশে ধর্ম ভিত্তিক দল গঠন করা যাবে। ১৯৭৯ - রক্ষণশীল দলের মার্গারেট থ্যাচার বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন ইউরোপের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। ২০০১ - যুক্তরাষ্ট্র প্রথম জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের পদ হারায়। ২০০২ - পাকিস্তান নিউজিল্যান্ডকে গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ইনিংস ও ৩২৪ রানে পরাজিত করে। জন্ম: ১৪৬৯ - ইতালিয়ান দার্শনিক নিকোলো ম্যাকিয়াভ্যালি ১৮৯২ - নোবেলজয়ী (১৯৩৭) ইংরেজ পদার্থবিদ জর্জ টমসন। ১৯০২ - ফ্রান্সের পদার্থবিদ, নোবেল বিজয়ী আলফ্রেড ক্যাস্টলার। ১৯২৯ - জাহানারা ইমাম, বাংলাদেশী লেখিকা। ১৯৩৩ - স্টিভেন ভেইনবার্গ, একজন মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী। ১৯৫২ - লিওনিদ খাচিয়ান, আর্মেনীয়-বংশোদ্ভুত রুশ গণিতবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী। মৃত্যু: ১৯৬৯ - ভারতের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি জাকির হুসেন। ১৯৮৮ - কবি ও কথাসাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্র। ১৯৭১ - মুক্তিযোদ্ধা সাইফ মিজানুর রহমান (২০১৪ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত)। ১৯৭১ - ফায়জুর রহমান আহমেদ (কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের পিতা)। ১৯৯৯ - ইংলিশ উইকেটরক্ষক টমাস ইভান। ২০০৫ - লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিত সিং অরোরা। ২০০৯ - ভারতের মারাঠি লেখক রাম শেখর। দিবস: বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস
৫ ঘণ্টা আগে

৯ মে পর্যন্ত চলবে সংসদ অধিবেশন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ৯ মে পর্যন্ত। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেল ৫টায় সংসদ ভবনে এ অধিবেশন শুরু হয়। এর আগে, এদিন বিকেল ৪টায় সংসদের কার্য-উপদেষ্টা কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চলতি অধিবেশন ৯ মে পর্যন্ত চলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রতিদিন এই অধিবেশন বসবে। এ ছাড়া অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মনোনয়ন দেন।  এবারের অধিবেশনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন আওয়ামী লীগের এম এ মান্নান, আসাদুজ্জামান নূর, শফিকুল ইসলাম শিমুল, জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং সংরক্ষিত আসনের ফজিলাতুন্নেছা। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অগ্রবর্তিতার ভিত্তিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা সংসদ পরিচালনা করবেন।  
১৭ ঘণ্টা আগে

উত্তপ্ত এপ্রিলের পর কেমন কাটবে মে মাস, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
সদ্যই শেষ হলো মৌসুমের সবচেয়ে উত্তপ্ত মাস এপ্রিল। মাসের প্রথম থেকেই সূর্যের রোষ টের পেয়েছে দেশবাসী। দিন যত গড়িয়েছে সেই রোষের তীব্রতায় পুড়েছে প্রকৃতি। শেষদিকে তাপদাহ ছাড়িয়েছে সহনীয় সীমা। ৭২ বছরে প্রথমবারের মতো ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার সাক্ষীও হয়েছে দেশের মানুষ। উত্তপ্ত এই এপ্রিল পেরিয়ে এখন মে মাস। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ দেশবাসীর মনে একটাই প্রশ্ন, কবে নামবে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি, আর তাতে স্নান করে শীতল হবে প্রকৃতি। সবকিছু বিশ্লেষণ করে এবার পুরো মে মাসের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (২ মে) দেওয়া এ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিই হতে পারে। তবে এর মাঝেও দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে তিনটি মৃদু ও মাঝারি এবং এক থেকে দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ফলে এ মাসেও দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার সম্ভাবনা বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। মে মাসের তাপমাত্রা এপ্রিল মাসের চেয়ে কিছুটা কম থাকবে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হলেও তাপমাত্রা একটু বেশি থাকতে পারে। তবে তা এপ্রিলের মতো অবস্থায় যাবে না। তাপপ্রবাহ এত দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে না। মে মাসে তিন থেকে পাঁচ দিন হালকা ধরনের কালবৈশাখী হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আর দুই থেকে তিনদিন বজ্র–শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি ও তীব্র কালবৈশাখী হতে পারে। এদিকে এ মাসেই দেশের উত্তরাঞ্চল বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের (সিলেটসহ হাওর অঞ্চলে) নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। কিছু কিছু জায়গায় তা অতিক্রম করতে পারে বিপৎসীমাও।  
১৯ ঘণ্টা আগে

২ মে : ইতিহাসে আজকের এই দিনে
আজ বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়। ঘটনাবলি: ১১১২ – চীনা জ্যোতির্বিদরা সূর্যের অভ্যন্তরে কালো বায়বীয় বস্তুর অস্তিত্ব লক্ষ্য করেন। ১৯৪৫ – সোভিয়েত বাহিনী বার্লিন দখল করে নেয়। বার্লিন জার্মানির রাজধানী এবং ইউরোপ মহাদেশের একটি ঐতিহাসিক শহর। বার্লিন শহরে ৩৪ লাখেরও বেশি লোক বাস করেন। ১৯৪৫ – ইতালিতে মোতায়েন প্রায় ১০ লাখ জার্মান সেনা নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। ১৯৫৯ – ভারতের প্রথম বিজ্ঞান সংগ্রহশালা, বিড়লা শিল্প ও কারিগরি সংগ্রহশালা কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৪ – তৎকালীন সায়গন বন্দরে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রে নৌবাহিনীর জাহাজ ইউএসএনএস কাড বিস্ফোরণে ডুবে যায়। ১৯৭২ – দক্ষিণ আমেরিকার দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দেয় কলম্বিয়া, কোস্টারিকা এবং ভেনেজুয়েলা। জন্ম: ১৭২৯ – রাশিয়ার দ্বিতীয় ক্যাথেরিন। ১৭৭২ – নোভালিশ, জার্মান লেখক এবং কবি। ১৮৬০ – থিওডোর হের্জল, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির একজন ইহুদি সাংবাদিক ও লেখক। ১৯০১ – বব ওয়াট, ইংলিশ ক্রিকেটার। ১৯২১ – সত্যজিৎ রায়, বাংলা সাহিত্যিক, সঙ্গীতজ্ঞ, চিত্রকর ও চলচ্চিত্র পরিচালক| ১৯২৮ – ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ। ১৯২৯ – এদুয়ার বালাদুর, ফ্রান্সের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। জিগমে দর্জি ওয়াংচুক, ভূটানের তৃতীয় ড্রূক গ্যালাপ (রাজা)। ১৯৩১ – পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথিতযশা ভারতীয় বাঙালি গীতিকার ও সুরকার। ১৯৩৫ – দ্বিতীয় ফয়সাল, ইরাকের তৃতীয় ও শেষ বাদশাহ। ১৯৩৯ – সুমিও ইজিমা, জাপানি পদার্থবিদ, প্রায়শই কার্বন ন্যানোটিউব আবিষ্কারের জন্য যাকে স্মরণ করা হয়। ১৯৪২ – জ্যাকুয়েস রগ, বেলজিয়ামের ক্রীড়া অধিকর্তা। ১৯৫৮ – ডেভিড ও’লিয়ারি, আয়ারল্যান্ডীয় পেশাদার ফুটবলার এবং ম্যানেজার। ১৯৬০ – স্টিভেন ডাল্ড্রি, ইংরেজ পরিচালক ও প্রযোজক। ১৯৬৯ – ব্রায়ান লারা, ত্রিনিদাদিয়ান ক্রিকেটার। ১৯৭২ – ডোয়েইন জনসন, মার্কিন-কানাডীয় অভিনেতা, প্রযোজক এবং পেশাদার কুস্তিগির। ১৯৭৫ – ডেভিড বেকহ্যাম, ইংরেজ ফুটবলার। ১৯৮২ – যোহান বোথা, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার। ১৯৯৬ – জুলিয়ান ব্র্যান্ড, জার্মান ফুটবলার। ২০১৫ – প্রিন্সেস শার্লট অব কেমব্রিজ, প্রিন্স উইলিয়াম, ডিউক অব কেমব্রিজ, এবং ক্যাথরিন, ডাচেস অফ কেমব্রিজের কনিষ্ঠতম এবং একমাত্র কন্যা। মৃত্যু: ১৫১৯ – লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, ইতালীয় রেনেসাঁসের কালজয়ী চিত্রশিল্পী। ১৮৫৭ – ঊনবিংশ শতাব্দির বিখ্যাত কবি ও লেখক আলফ্রেড ডি মুসেট। ১৯০৮ – প্রফুল্ল চাকী, ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপ্লবী। ১৯৫৭ – জোসেফ ম্যাকার্থি, মার্কিন রাজনীতিবিদ। ১৯৭২ – জে. এডগার হুভার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই প্রথম পরিচালক এবং মার্কিন আইন প্রণয়নকারী কর্মকর্তা। ১৯৭৭ – মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, বাঙালি কবি। ১৯৭৯ – জুলিও নাত্তা, ইতালীয় রসায়নবিজ্ঞানী। ১৯৮০ – ক্ল্যারি গ্রিমেট, বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার। ১৯৯৯ – অলিভার রিড, ইংলিশ অভিনেতা। ২০১০ – লিন রেডগ্রেভ, ইংলিশ-আমেরিকান অভিনেত্রী এবং গায়ক। ২০১১ – ওসামা বিন লাদেন, সন্ত্রাসবাদী গেরিলা যোদ্ধা এবং আল-কায়দার প্রতিষ্ঠাতা।
০২ মে ২০২৪, ০১:২৭

মে দিবসের কর্মসূচিতে গিয়ে হিট স্ট্রোকে শ্রমিকের মৃত্যু
মে দিবসের কর্মসূচিতে গিয়ে তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে সাজু মিয়া (৫৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১ মে) দুপুর দেড়টার দিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সাজু মিয়া উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের ছোটবোনের পাড়া গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি বাসচালকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করতেন। গাইবান্ধা জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোম্যাক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। বেতকাপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, বুধবার সকাল ১০টায় মে দিবস উপলক্ষে সংগঠন আয়োজিত র‌্যালিতে অংশ নেয় সাজু। র‌্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ টাউন হলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বের হয়ে পরিষদের গেটের সামনে এসে তিনি হিট স্ট্রোক করেন। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান বলেন, তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
০২ মে ২০২৪, ০৮:৫০

‘পহেলা মে রক্ত ঝরেছিল শিকাগোর রাজপথে’
পহেলা মে আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। বুধবার (১ মে) এক যুক্ত বিবৃতিতে এ শ্রদ্ধা জানান তারা। বিবৃতিতে তারা বলেন, আজকের এই দিনে আমরা পৃথিবীর সব মেহনতি মানুষদের অভিনন্দন ও তাদের সাথে সংহতি জানাই। আগে শ্রমজীবী মানুষকে যেখানে প্রতিদিনই কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হতো, কাজের অনুপাতে পারিশ্রমিক ছিল যেখানে অত্যন্ত নগণ্য, সে অবস্থায় সন্তানদেরসহ মানবেতর জীবন-যাপন ছাড়া তাদের আর কোনো গত্যন্তর ছিল না। ১৮৮৪ সালে শ্রমজীবী মানুষেরা যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে বিরাট সমাবেশ করে মালিক পক্ষকে কাজের সময় কমিয়ে দৈনিক ৮ ঘণ্টা করা ও সাপ্তাহিক ১ দিন ছুটি দেয়ার দাবি করে। কিন্তু মালিক বা সরকার কেউ এ দাবি মেনে নেয়নি। শ্রমজীবীরাও মরণপণ আন্দোলন শুরু করে। ১৮৮৬ সালের মে মাসে শিকাগোর হে মার্কেট এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিরাট সমাবেশে পুলিশ গুলি করে। পরপর কয়েকদিন ধরে শ্রমিকদের মিছিলে পুলিশ বারবার গুলিবর্ষণ করে। আন্দোলন করার ‘অপরাধে’ ৬ জন শ্রমিক নেতাকে ফাঁসি দেয়া হয়। কয়েকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। দুঃখে-অপমানে-অত্যাচারে একজন নেতা জেলের ভেতর আত্মহত্যা করে। এভাবে অত্যন্ত নৃশংসভাবে শ্রমজীবীদের এই আন্দোলনকে দমন করা হয়।  কিন্তু এই যৌক্তিক মানবিক আন্দোলন কালক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং এই দাবি সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের দাবিতে কমন দাবিতে পরিণত হয়। ১৮৮৯ সালে প্যারিসে ফরাসী বিপ্লবের ১০০ বছর পূর্তি উৎসবে শ্রমজীবী মানুষেরা শিকাগোর শ্রমিকদের আত্মত্যাগের স্মৃতিতে বিশ্ববাসীর কাছে ১৮৯০ সালের ১লা মে থেকে এই দিনটিকে ‘মে ডে’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করার প্রস্তাব করে। ১৮৯১ সালে এই প্রস্তাবটি আন্তর্জাতিক রূপ পায় এবং এর পর থেকে দিনটি সারা বিশ্বের মেহনতি মানুষের কাছে সংগ্রামের, কৃতজ্ঞতার ও শ্রদ্ধার একটি পবিত্র দিন হিসেবে পালিত হতে থাকে। শিকাগো ও পরবর্তীকালের সেই আন্দোলনের কারণেই আজ আমরা অশিক্ষিত ও শিক্ষিত শ্রমিক (যাদেরকে বলে ‘ব্লু কলার’ ও ‘হোয়াইট কলার’ ওয়ার্কার) নির্বিশেষে সবাই দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ও একদিন সাপ্তাহিক ছুটির অধিকার পেয়েছি, মেহনতি মানুষকে ‘মানুষ’ বলে গণ্য করার ‘নিয়ম’ পেয়েছি। ১৯২৩ সাল থেকে ভারতবর্ষে এই দিনটি পালিত হয়। বাংলাদেশেও এই দিনটি দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই রাষ্ট্রীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শুধু তাই নয়। আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে পৃথিবীর সব শোষিত মানুষের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণের কারণে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালেই জাতিসঙ্ঘের অঙ্গসংগঠন ‘আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা আই এল ও’- এর সদস্যপদ লাভ করে। বঙ্গবন্ধু সরকার শ্রমজীবীদের স্বার্থরক্ষায় এই সংস্থার ৬টি ভিত্তি নীতিমালার এবং ২৯টি সনদের সবগুলোতে স্বাক্ষর করে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ দেশ শ্রমজীবীদের অধিকার বিষয়ক এই সনদগুলোতে স্বাক্ষর করেছে।
০১ মে ২০২৪, ২৩:৩২

মহান মে দিবসে মেহনতি মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১ মে) ‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন ‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি। বাণীতে ১৮৮৬ সালের পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আত্মাহুতি দেওয়া বীর শ্রমিকদের প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় শ্রমনীতি প্রণয়ন করেন এবং প্রথম মহান মে দিবসকে শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের স্বীকৃতি দেন। জাতির পিতা মে দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন।   শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭২ সালে মহান মে দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেই ভাষণে তিনি শ্রমিকদের মজুরির হার বৃদ্ধি এবং যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত শ্রমিকদের এডহক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেন। জাতির পিতার উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সদস্যপদ লাভ করে। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এরপর বলেন, মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল থেকে যে কোনো শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্যও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন।   তিনি বলেন, আমরা রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা দিতে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করেছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। এ শিল্পের কর্মহীন এবং দুস্থ শ্রমিকদের সর্বোচ্চ তিন মাসের নগদ আর্থিক সহায়তা দিয়ে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সব সেক্টরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা, স্বাস্থ্য ও সেইফটি নিশ্চিতকল্পে জাতীয় শ্রমনীতি-২০১২, জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা-২০১৩, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এবং গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে আমরা শ্রম পরিদপ্তরকে সম্প্রতি অধিদপ্তরে রূপান্তর করেছি। শ্রমিক ভাই-বোনদের যে কোনো সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক টোল ফ্রি হেল্প লাইন (১৬৩৫৭) চালু করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ পরিদর্শন ও মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক-মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিত হবেন। মে দিবসের চেতনায় দেশের শ্রমিক-মালিক ঐক্য জোরদার করে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব, এটাই হোক আমাদের মে দিবসের অঙ্গীকার।
০১ মে ২০২৪, ১১:০২

পহেলা মে যেভাবে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হলো
বিশ্বের অনেক দেশেই ‘মে ডে’ পরিচিত প্রাচীন এক বসন্তের উৎসব হিসেবে। কিন্তু বর্তমানে এটা বেশি পরিচিত শ্রম দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে। বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের ঐতিহাসিক সংগ্রাম ও অর্জনের কথা মনে করিয়ে দিতেই দিনটি পালিত হয়ে থাকে। প্রতি বছর কাজের পরিবেশ আরও ভালো করা এবং ট্রেড ইউনিয়নকে আরও শক্তিশালী করার দাবিতে বিশ্বজুড়ে এদিন নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি হতে দেখা যায়। শুরুর দিকে এই দিবসটি বিভিন্ন সামাজিক ও সমাজতান্ত্রিক সংস্থা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো পালন করতো। যদিও এই দিবসের পেছনের আসল প্রতিবাদটি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে, কিন্তু সেখানে এটি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার পালন করা হয়ে থাকে। কীভাবে এর শুরু? ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ সমাজ সংস্কারক রবার্ট ওয়েনের এক চিন্তা থেকে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রেড ইউনিয়নগুলো দিনে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে এক বিরাট প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করে। রবার্ট ওয়েন ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পূরণে স্লোগান ঠিক করেন, ‘আট ঘণ্টা কাজ, আট ঘণ্টা বিনোদন এবং আট ঘণ্টা বিশ্রাম’। সবচেয়ে বড় আন্দোলনটা হয় পহেলা মে শিকাগোতে, যেখানে প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক সমবেত হন। সে সময় কারখানায় কোন নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা বা বিশ্রাম ছাড়াই টানা কাজ করে যাওয়াটা স্বাভাবিক ছিল। আর সেসময় শিকাগো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পকারখানা ও ইউনিয়ন সংগঠনগুলোর কেন্দ্র। পরবর্তী কয়েক দিনে এই আন্দোলনকে ব্যবসায়ী ও রাজনীতি মহল পছন্দ না করলেও, আরও হাজার হাজার ক্ষুব্ধ শ্রমিক ও আন্দোলনকারী এতে উক্ত হতে থাকেন। এ সময় কিছু নৈরাজ্যবাদীও এতে যোগ দেন যারা কোন রকম নিয়ম ও আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সামাজিক কাঠামো স্বীকার করেন না। উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে, পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদর মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দেয়, একজন মারা যায় ও অনেকে আহত হয়। পুলিশি নিষ্ঠুরতায় ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত বিক্ষোভকারী এবং শ্রমিক নেতারা পরদিন ৪ই মে শিকাগোর বিখ্যাত হেমার্কেট স্কয়ারে কর্মসূচির ডাক দেয়। এ সময় আজও পরিচয় জানতে না পারা এক ব্যক্তি পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়েন। ওই বিস্ফোরণের ফলে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, সাতজন পুলিশ সদস্য নিহত হয় এবং ৬৭ জন কর্মকর্তা আহত হয়। চারজন বিক্ষোভকারীও নিহত হয় এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়। এই ঘটনা পরে পরিচিতি পায় হে মার্কেট ম্যাসাকার হিসেবে। পরবর্তীতে আট জন নৈরাজ্যবাদী খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত হন এবং তাদের দোষ ঠিকভাবে প্রমাণের আগেই তাদের অনেককে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এই ঘটনাগুলোর স্মরণে, ১৮৮৯ সালে ২০ দেশের সমাজকর্মী, শ্রমিক নেতা ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর এক আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে পহেলা মে তারিখ 'মে দিবস' পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অন্যান্য দেশও মে দিবস পালনে যোগ দেয় শিকাগোর এই সংঘাত পরবর্তী কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন বামপন্থী দলগুলোর জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করতে থাকে। দক্ষিণ ইউরোপে প্রথম মে দিবস পালনে এগিয়ে আসে স্লোভেনিয়ান এবং ক্রোয়াটরা, যারা সেসময় অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কাজের নিচু পরিবেশ, অল্প বেতন এবং দীর্ঘ কর্মঘণ্টার প্রতিবাদে ১৮৯৩ সালে সার্বিয়ার শ্রমিকরা এক মে দিবস র‍্যালি বের করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যখন দ্রুত শিল্প কারখানায় উন্নতি ঘটতে থাকে, তখন রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পরও বিশ্বজুড়ে শ্রমিকরা মৌলিক চাহিদা পূরণে সংগ্রাম করতে থাকে। জার্মানিতে ১৯৩৩ সালে নাৎসি পার্টি ক্ষমতায় আসার পর শ্রমিক দিবসের দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। একইসাথে এই ছুটি ঘোষণার সাথে সাথে ফ্রি ইউনিয়ন তুলে দেয়া হয় এবং জার্মান শ্রমিক আন্দোলনও থামিয়ে দেয়া হয় (যদিও ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর আবারও ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়)। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির জয়ের পর বৈশ্বিক মানচিত্র বদলে যায়। বিশ্বে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিভক্তি বেশি করে চোখে পড়তে থাকে। বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক দেশ যেমন কিউবা, সে সময়ের সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীনে বছরের পর শ্রমিক দিবস পালিত হয়ে এসেছে এবং এ দিনের ছুটিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। সাধারণত এদিন বিরাট সমাবেশের আয়োজন করা হত, যেমনটা মস্কোর রেড স্কয়ারে দেখা যেত। সেই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তিরা যোগ দিতেন। এদিন একইসাথে সোভিয়েত সামরিক বাহিনীর শক্তিমত্তাও প্রদর্শন করা হত। সমাজতান্ত্রিক নেতারা বিশ্বাস করতেন এই নতুন ঘোষিত ছুটি ও উৎসব ইউরোপ এবং আমেরিকার শ্রমিক শ্রেণীকেও উদ্বুদ্ধ করবে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়াইয়ে। সমাজতান্ত্রিক ফেডারেল রিপাবলিক অফ যুগোশ্লাভিয়ার গল্পটাও ছিল একই রকম। সেখানে ১৯৪৫ সাল থেকে মে দিবসের দিন সরকারি ছুটি পালিত হয়ে আসছে। দিনটি উদযাপনে মিছিল ও সামরিক র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয় এবং একইসাথে রাষ্ট্রীয় প্রচারণার জন্য বেছে নেয়া হয় দিনটিকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে শ্রমিক ও ইউনিয়নগুলি আরও ভালো কাজের পরিবেশের দাবিতে মে দিবস ঘিরে র‍্যালি ও সমাবেশ করে। বেকারত্ব ও দারিদ্র্যতার সাথে লড়াইয়ে শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি এখনো গুরুত্বের সাথে দেখা হয়ে থাকে। বেকারত্ব কমলেও এবং কাজের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আসলেও, আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন – আইএলও তাদের ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে বলছে, বেশিরভাগ জি-২০ দেশে গত বছরের মুদ্রাস্ফীতির সাথে তাল রেখে মূল বেতন ভাতা দিতে পারে নি। আইএলও বলছে, গত বছর ক্রয়ক্ষমতা (পিপিপি) অনুযায়ী চরম দারিদ্রসীমায় থাকা শ্রমিক যাদের আয় দিনে ২.১৫ ডলারেরও কম, তাদের সংখ্যা বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ লাখ বেড়ে গিয়েছে। আর সহনীয় দারিদ্র্য সীমায় থাকা শ্রমিকের সংখ্যা (ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী যারা দিনে ৩.৬৫ ডলারের কম আয় করেন) বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮৪ লাখ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে আইএলও। -বিবিসি।
০১ মে ২০২৪, ০৯:২৩

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন আজ
বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পালন করা হয় মে দিবস। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিকেরা আটঘণ্টা কর্মদিবসের দাবিতে নিজেদের রক্ত দিয়েছিলেন। এরপর থেকে দিনটি ‘মে দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু যাদের নিয়ে এই দিবস, তারা এ সম্পর্কে কতটা অবগত? অনেক শ্রমিক জানেনই না এর ইতিহাস। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে এ দিবস পালনের এত বছর পরও শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরির দাবি এখনও উপেক্ষিত, এখনও তাদের বিরাট অংশ মৌলিক মানবাধিকার থেকেও বঞ্চিত। ১৮৮২ সালের ৫ সেপ্টেম্বরেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক তাদের অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে নিউইয়র্কে শহরে সমাবেশ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলন ও হতাহতের ঘটনা ঘটলেও শ্রমিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে, সেটা ১৮৮৯ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক কংগ্রেসে। বিশ্বের ৯০টি দেশে সরকারিভাবে মে মাসের প্রথম দিনটিকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের উৎপত্তি হলেও যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কর্মরত। প্রতিটি তৈরি পোশাক কারখানায় আট ঘণ্টার বেশি কাজ হয় প্রতিদিন। ওভারটাইম করতে আগ্রহী না থাকলেও বাধ্য হয়ে তা করতে হয়। সেই ওভারটাইমের টাকাও ঠিকমতো পাওয়া যায় না বা দিতে নানান ছলচাতুরী করে মালিকপক্ষ। শুধু গার্মেন্ট শিল্প নয়, অধিকাংশ খাতে এমন পরিস্থিতি আমরা দেখতে পাই। কর্মক্ষেত্রে নিহত, আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের কর্মদিবসের আয় অনুযায়ী আর্থিক বা দৈহিক ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। সামর্থ্যের বাইরে শ্রমিকদের ওপর কাজের বোঝা চাপানো যাবে না এবং তাদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সদাচরণ করতে হবে। অথচ বাস্তব জীবনে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও স্থায়ী পঙ্গুত্ব যেন শ্রমিকের নিয়তি! অগ্নিকাণ্ড বা মর্মান্তিক কোনো দুর্ঘটনার পর নিহত শ্রমিকের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা যেন আরেক ট্র্যাজেডি! বর্তমান বাজার অনুযায়ী একটি শ্রমজীবী পরিবারের জীবনযাপনের সাধারণ মানের কথা বিবেচনায় রেখে শ্রমিকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা উচিত। আজীবনের জন্য যে শ্রমিকের পুরো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো এবং সারা জীবনে তিনি কত আয় করতেন, এসব দিক বিশেষভাবে মানবিক বিবেচনায় রাখতে হবে। শ্রমিকের অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন অনুসারে জাতীয়ভাবে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে। আর দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মালিকপক্ষগুলোকে শ্রমিকদের এ ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করতে হবে। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে অথবা যথাসময় এমন মজুরি দেবে, যাতে তাদের প্রয়োজন মিটে যায়। তাতে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের দূরত্ব অনেকখানি লাঘব হবে। এর মাধ্যমে গড়ে উঠবে একটি বৈষম্যহীন শ্রমিক সংঘ।  
০১ মে ২০২৪, ১১:০৬

সাংবাদিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠাই হোক মে দিবসের অঙ্গীকার
মহান মে দিবস উপলক্ষে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এক বিবৃতি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠাই হোক মে দিবসের অঙ্গীকার।’ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বিবৃতিতে এ দাবি ব্যক্ত করেন।    বিবৃতিতে নেতারা বলেন, আগামীকাল মহান মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এদিন তাদের আত্মদানের মধ্যদিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে মে দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। যদিও আমাদের দেশে অন্যান্য পেশাজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়লেও সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা বর্তমান বাজারের তুলনায় অনেক কম ও অনিয়মিত। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাতেও সাংবাদিকরা পিছিয়ে আছেন উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকারের স্বাধীন সংবাদমাধ্যম নীতি থাকলেও তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট অনেকের অনীহা দেখা গেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা শোষণ-বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা বিষয়গুলো জানলেও এসব ক্ষেত্রে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে মে দিবসের চেতনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। একইসঙ্গে নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সকল আইনসঙ্গত অধিকার বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার জন্য গণমাধ্যম মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, এখনও গণমাধ্যমে অনৈতিক ও আইন বহির্ভূতভাবে ছাঁটাই করা হচ্ছে। অবিলম্বে ছাঁটাই বন্ধ ও সাংবাদিকদের পাওনা টাকা দ্রুত পরিশোধের দাবি জানান।
৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৫০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়