• ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
logo
এপ্রিলে প্রবাসী আয় প্রায় সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রবাসীরা ২০৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে যার পরিমাণ ২২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মধ্যে দৈনিক গড়ে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ৭৪৮ কোটি টাকা এসেছে। এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১০ কোটি ডলার, ফেব্রুয়া‌রি‌তে ২১৬ কো‌টি ৬০ লাখ ডলার এবং মার্চে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রবাসীরা ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ডলার, মার্চে ২০২ কোটি, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি, মে মাসে ১৬৯ কোটি, জুনে ২২০ কোটি, জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি, নভেম্বর ১৯৩ কোটি ডলার এবং ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স। উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।
০২ মে ২০২৪, ১৬:৫১

‌‘দেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না’
দেশের ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বরিশালের একটি হোটেলে আয়োজিত পুষ্টিখাতে অর্থায়ন শীর্ষক সংলাপে এ কথা জানান তিনি। নাসিরুজ্জামান আরও বলেন, জরিপ বলছে দেশের ৩৬ শতাংশ মানুষ খর্বাকার। ৭৩ শতাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না। পুষ্টি বলতে সাধারণত মানুষ বুঝে থাকে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমকে। কিন্তু শাকসবজিতেও যে পুষ্টি রয়েছে তার ধারণা নেই।  তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। এতে অনেকেরই ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। আমরা যদি নিজেদের পুষ্টির উৎপাদন ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে বেশি মূল্যে বাজার থেকে পুষ্টিকর খাবার কিনতে হবে না। বিকল্প হিসেবে পারিবারিক পুষ্টি কৃষির মডেল তৈরি করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার উৎপাদনে নিজেদের পতিত জমিতে পুষ্টিকর সবজি চাষ করা গুরুত্বপূর্ণ। নয়তো ভবিষ্যতে আমাদের জন্য দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে। কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মোট কৃষকের ৪৮ শতাংশ বর্গা চাষি। তারা সাধারণত জমিতে কৃষি বলতে ধান চাষ আর কলাগাছ রোপনকে বোঝেন। এর পাশাপাশি পুষ্টিকর সবজি উৎপাদনে জোর দিতে হবে। পুষ্টি কৃষিতে সরকারের চেয়ে বেসরকারি বিনিয়োগ কার্যকর উল্লেখ করে এরপর তিনি বলেন, খাদ্যাভাব পূরণে মানুষ সবচেয়ে বেশি ঋণ গ্রহণ করেন উন্নয়ন সংস্থা থেকে। এটা সরকারি ব্যাংকের ব্যর্থতা। সরকারি ব্যাংকে কৃষক ঋণ নিতে গেলে তার জামানত আছে কি না, কি কি কাগজপত্র আছে তা চায়। এতে কৃষক নিরুৎসাহিত হন। এসব বিবেচনা করে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করছে কৃষি ব্যাংক। ১০ টাকার কৃষক অ্যাকাউন্ট চালু করে একজন কৃষক তার বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষের জন্য এই ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। ১২ মাসে তিনি ঋণ পরিশোধ করবেন। ঋণ নিতে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্রই যথেষ্ট। পুষ্টিখাতের অগ্রগতির জন্য হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. জিয়াকুন শি। তিনি বলেন, পুষ্টি নিরাপত্তায় ১৯৭৬ সাল থেকে আমরা কাজ করছি। পুষ্টি উন্নয়নে ইতোমধ্যে ২৫০টিরও বেশি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘ পুষ্টির বিষয়ে সবসময়ে সচেতন ও সহায়ক মানসিকতার। জাতিসংঘের খাদ্যসংস্থা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুর মতো কাজ করছে। শুধু সরকার নয়, আমরা সবাই যদি পুষ্টি নিশ্চিতে এগিয়ে আসি তাহলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কারিগরি সহায়তা সমন্বয়কারী ইমানুন নবী খান। তার বক্তব্যে তিনি পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের মার্চ মাসের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, দেশের ২২ শতাংশ মানুষ মাঝারি থেকে শুরু করে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন। আর যাদের মূল পেশা কৃষি তাদের মধ্যে ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় আছে। এ ছাড়া শতকরা ২৫ দশমিক ৫ ভাগ পরিবারকে দৈনন্দিন খাবার কিনতে ঋণ করতে হচ্ছে। খাদ্যের অনিশ্চয়তার ভয়াবহ চিত্র ফুটে ওঠে নাগরিকদের রক্ত স্বল্পতার প্রতিবেদনেও। ২০১২ সালে রক্তস্বল্পতায় ভুগতো ৩৫ দশমিক ৭০ ভাগ মানুষ। ২০১৯ সালে তা ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৭০ শতাংশে। বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা উইংয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল হক পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় সংলাপে আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, ডাচ বাংলা ব্যাংকের সিএসআর রিসার্চ প্রোগ্রাম কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. মঞ্জুরুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শহীদ রেজা, সারাবাংলা কৃষক সোসাইটির সভাপতি রিতা ব্রাহ্ম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রোগ্রাম প্রতিনিধি নূর আহমেদ খন্দকার। সংলাপ শেষে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ৩০টি উৎপাদরকারী সংগঠনের নারী কৃষকদের হাতে জামানতমুক্ত ১০ হাজার টাকার ঋণ চেক এবং পুষ্টিকর সবজি উৎপাদনের জন্য বীজ তুলে দেন অতিথিরা।
৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪৬

১ মাসে ইসলামী ব্যাংকগুলোর সম্পদ কমেছে ১৩ হাজার কোটি টাকা
এক মাসের ব্যবধানে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদ কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি। এর আগে, গত ২৩ এপ্রিল নিলামের মাধ্যমে ৩২টি ব্যাংক ও চারটি এনবিএফআই রেপো ও তারল্য সহায়তা সুবিধার আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ১৩ হাজার ২০ কোটি টাকা ধার নেয়। তারল্য সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া অব্যাহত রেখেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। ওই সময় জানা যায়, নিলামের মাধ্যমে ১৮টি ব্যাংক ও চারটি এনবিএফআই সাত দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার মাধ্যমে ৭ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা ধার নেয়। আর একদিনের তারল্য সহায়তা সুবিধার মাধ্যমে ৫ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা ধার নিয়েছে ১৪টি ব্যাংক। সুদের হার ছিল যথাক্রমে ৮ দশমি ১০ শতাংশ ও ৮ শতাংশ।
৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:৫১

নারী আম্পায়ারে আপত্তি, আসলে কী ঘটেছিল মোহামেডান বনাম প্রাইম ব্যাংক ম্যাচে?
মোহামেডান-প্রাইম ব্যাংক ম্যাচ নিয়ে বিতর্ক যেন শেষই হচ্ছে না। মুশফিকুর রহিমের আউট নিয়ে সমালোচনার ইতি না ঘটতেই শুরু হয়ে গেছে আম্পায়ার-বিতর্ক। খবর ছড়িয়ে পড়েছে, আইসিসির স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নারী আম্পায়ার সাথিরা জাকির জেসির অধীনে ম্যাচ খেলতে চাননি প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ক্রিকেটাররা। এ নিয়ে দেশের ক্রিকেট মহলে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সুপার লিগের প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে মনিরুজ্জামানের সঙ্গে ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। নারী আম্পায়ারকে দেখে মাঠেই ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করেন দুই দলের ক্রিকেটার ও অফিসিয়ালরা। যার ফলে নির্ধারিত সময়ে শুরু করা যায়নি ম্যাচ। এ সময় আম্পায়ার পরিবর্তন চেয়ে নাকি ফোনও করা হয়েছিল বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যানকে। অবশ্য ১৫ মিনিট অপেক্ষার পর জেসিকে নিয়েই শুরু হয় খেলা। পরে বেসরকারি একটি গণমাধ্যমকে বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, দুই দল এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল, কিন্তু পরে মেনে নিয়েছে। জেসি একজন আইসিসির অফিশিয়াল আন্তর্জাতিক আম্পায়ার। তাকে যেহেতু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, অবশ্যই মূল্যায়ন করে দেওয়া হয়েছে। এখন এটা না মানলে তো আমরা বৈষম্য করছি। বিসিবি পরিচালক ও আম্পায়ার্স কমিটি চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যে স্পষ্টতই মনে হচ্ছে যে, জেসি নারী বলেই মোহামেডান আর প্রাইম ব্যাংকের আপত্তি। কিন্তু আসলে কি ঘটনাটা তেমন? মোহামেডান আর প্রাইম ব্যাংক কি সত্যিই নারী আম্পায়ারের অধীনে খেলতে চায়নি? মোহামেডান আর প্রাইম ব্যাংক দুই শিবিরেই কথা বলে জানা গেছে, তারা জেসির বিপক্ষে অফিসিয়াল কোনো অভিযোগ করেননি।  বৃহস্পতিবার মোহামেডান বনাম প্রাইম ব্যাংক ম্যাচের ম্যাচ রেফারি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান বলেন, ‘আমার কাছে লিখিত কোনো আপত্তি দেয়নি দুই দলের কেউ। আর সেটা আমার কাছে দেওয়ার কথাও না। আম্পায়ারের ব্যাপারে আপত্তি থাকলে সেটা জানাতে হয় বিসিবি আম্পায়ার্স কমিটিতে যারা ম্যাচ আম্পায়ার ও স্কোরার নিয়োগ দেন তাদের কাছে।’  বিসিবি আম্পায়ার্স অ্যালটমেন্ট কমিটির ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করছেন তৌহিদ। তিনি শনিবার রাতে একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘এ সম্পর্কে কিছুই জানি না আমি। আমার কাছে কোনো দল আনুষ্ঠানিকভাবে কোনোরকম আপত্তি জানায়নি।’  তৌহিদ জানান, প্রতি ম্যাচের আগের দিনই আম্পায়ার ও অফিসিয়াল এবং ডিএল ও অন্যান্য স্কোরার নিয়োগ চূড়ান্ত হয়ে যায়। সেটা আম্পায়ার্স কমিটি সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে জানিয়েও দেয়। কোনো দলের এক বা দুজন আম্পায়ারের বিপক্ষে আপত্তি থাকলে সেটা আম্পায়ার্স নিয়োগ কমিটি যাচাই বাছাই করে তারপর অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু জেসির ক্ষেত্রে কোনোরকম আনুষ্ঠানিক আপত্তি আসেনি।  
২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৬

বিদ্যুৎ ও গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না
এখন থেকে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ঋণ নিতে হলে লাগবে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র। সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এই নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ (ডিএফআইএম)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলো হলো- ইকোনমিক জোন বা সরকার নির্ধারিত শিল্প এলাকা ছাড়া অন্য কোনো স্থানে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ প্রদান না করা। এ ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার আগে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে।    এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ঋণ, লিজ বা বিনিয়োগ সুবিধা প্রদানের আগে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র গ্রহণের জন্য দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা প্রদান করা হলো।   ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩-এর ৪১(২)(ঘ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা বাংলাদেশে কার্যরত সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।    এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংককেও একই নির্দেশনা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।  
২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৫

দাফনের ১৫ দিন পর ব্যাংক কর্মকর্তার মরদেহ উত্তোলন
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে আদালতের নির্দেশে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৫ দিন পর কবর থেকে আজম খান (৪৬) নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তার মরদেহ তুলেছে পুলিশ।  বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পারিবারিক কবরস্থান থেকে আজম খানের মরদেহ তোলে মীরসরাই থানা পুলিশের নিজামপুর তদন্তকেন্দ্রের কর্মকর্তারা। আজম খান মীরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের মধ্যম মায়ানী এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, আজম খান ফেনী শহরে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল রাতে বাসায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে একটি বেসরকারি হাসপাতালের ছাড়পত্র নিয়ে তড়িঘড়ি মরদেহ দাফন করে ফেলেন আজম খানের স্ত্রী কামরুন নাহার ও তার পক্ষের আত্মীয়রা। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে মৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড অভিযোগ করে ফেনী সদর কোর্টের সিআর আমলি আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন আজম খানের বোন নারগিছ আক্তার। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ফেনী সদর মডেল থানাকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপর গত ১৮ এপ্রিল ব্যাংক কর্মকর্তা আজম খানের বোন নারগিছ আক্তার বাদী হয়ে ফেনী সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। নির্যাতন করে ভাইকে হত্যার অভিযোগে আজম খানের স্ত্রী কামরুন নাহারকে প্রধান আসামি ও তার পক্ষের আরও তিন আত্মীয়কে মামলায় আসামি করা হয়। মামলার পর ২১ এপ্রিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রধান আসামি কামরুন নাহারকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও ময়নাতদন্ত করতে আদালতের নির্দেশে বুধবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে আজম খানের মরদেহ উত্তোলন করেন মীরসরাই থানার নিজামপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে মরদেহ উত্তোলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিজামপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. মাসুদ খান বলেন, আদালতের নির্দেশ পেয়ে বুধবার দুপুরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আমরা ব্যাংক কর্মকর্তা আজম খানের মরদেহ কবর থেকে তুলে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছি। এরপর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মরদেহ উত্তোলনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা মীরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে ব্যাংক কর্মকর্তার মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের বিষয়টি তদারক করেছি।
২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৭

খেলাপি ঋণ ও ভর্তুকি কমানোর পদক্ষেপ জানতে চায় আইএমএফ
দেশের ব্যাংক খাত ভুগছে নানা সংকটে। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ ছাড়ে রিজার্ভের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য পূরণে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন পরিস্থিতিতে ঋণের শর্তগুলো নিয়ে বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে ঢাকা সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল। আইএমএফ’র দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলোই পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রা বিনিময়ে চাপিয়ে দেওয়া দরের কারণেই দেশের আর্থিক হিসাব ঋণাত্মক ও রিজার্ভে পতন অব্যহত রয়েছে বলে মনে করে আইএমএফ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে আইএমএফ। এছাড়া বাজার ভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার ও সুদের হার বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়েও জানতে চেয়েছে সংস্থাটি। বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর গড় খেলাপি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পদক্ষেপেরে বিষয়ে জানকে চেয়েছে সংস্থাটি।  ইতোমধ্যে আইএমএফের ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড়ে রিজার্ভের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বারবার ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে সুদের হার বাস্তবায়ন, রাজস্ব আয় বাড়ানো ও বাজার ভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় চালু করার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মুদ্রা বিনিময় ও ক্রলিং পেগ বাস্তবায়ন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ায় ক্রলিং পেগ বাস্তবায়ন নিয়ে আপাতত কোনো পরামর্শ দেয়নি বাংলাদেশে অবস্থানরত আইএমএফের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আর্থিক খাত সংস্কার, খেলাপি ঋণ, সুদের হার বাস্তবায়ন, মুদ্রানীতি, মূল্যস্ফীতি, বিদেশি বাণিজ্যের ভারসাম্য ও আউটলুক, মুদ্রা বাজার ও তারল্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করেছে আইএমএফ। তিনি আরও বলেন, আইএমএফের মিশনের সঙ্গে বুধবার (২৪ এপ্রিল) আমাদের বৈঠক শুরু হয়েছে। এখন সংস্থাটি আমাদের কাছ থেকে বিশ্লেষণ করার জন্য তথ্যগুলো সংগ্রহ করছে। এরপর হয়তো বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেবে। বৈঠকে উপস্থিত অর্থ বিভাগের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শুধু আইএমএফের শর্ত পূরণই নয় দেশের সার্বিক উন্নয়নে রাজস্ব বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। বিষয়টি নিয়ে অনেক বছর থেকে আলোচনা হলেও তেমন উন্নতি হয় নি। বরং ২০১৫ সালের তুলনায় কিছুটা কমে গত কয়েক বছর কর জিডিপির অনুপাত ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এ জন্য করনীতি  এবং কর আহরণ কর্তৃপক্ষ আলাদা করার পুরনো আলোচনাও পুনরায় উঠে এসেছে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আগামীতে সহজ শর্তের এবং কম সুদের বৈদেশিক ঋণ কমে যাবে। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর ঋণের সুদহার বেড়েছে।  আগামী আরও বাড়বে । বাজেট সহায়তা নিলে বিভিন্ন ধরনের শর্ত বিষয় আসে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বাড়ানো গেলে বাজেট সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।  এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার আরও বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি কিছুটা বাড়ায় ইতোমধ্যে চলতি হিসাবে বেশ উন্নতি হয়েছে। তবে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি রয়েই গেছে।  চলতি হিসাবে স্থিতিশীলতা রক্ষার পাশাপাশি আর্থিক ঘাটতি কাঠিয়ে উঠার তাগিদ দেওয়া হয়। সার্বিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর ওপর বাড়তি নজর দিতে বলা হয়েছে। আইএমএফ গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। ইতোমধ্যে দুই কিস্তিতে ১১৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাস নাগাদ তৃতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ডলার ছাড় করা হতে পারে। 
২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৫

রোববার যেসব এলাকায় ব্যাংক বন্ধ থাকবে 
দেশের ২টি পৌরসভার উপনির্বাচন, ২৫টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ ও উপনির্বাচন উপলক্ষে আগামী রোববার (২৮ এপ্রিল) সংশ্লিষ্ট এলাকায় তফসিলি ব্যাংক এবং এর শাখা ও উপশাখা বন্ধ থাকবে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন (ডিওএস)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত ২৩ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক আগামী ২৮ এপ্রিল নীলফামারী জেলার জলঢাকা ও রাজশাহী জেলার কাটাখালী পৌরসভার মেয়রের শূন্যপদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পটুয়াখালী, বরগুনা, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজার জেলার ১৯ ইউনিয়নে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রংপুর, বাগেরহাট, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মুন্সিগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলার ৬ ইউনিয়নের শূন্য চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।   এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয়সহ সব শাখা বা উপশাখা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।   এ ছাড়া এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে দেশে কার্যত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২৪ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৩৩

জোরপূর্বক ব্যাংক একীভূতকরণ দায়মুক্তির নতুন মুখোশ: টিআইবি
তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক একীভূতকরণকে ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ বলে মন্তব্য করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ব্যাংক একীভূতকরণের নামে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। টিআইবি মনে করে, প্রস্তাবিত একীভূতকরণের মাধ্যমে খেলাপি ঋণে জর্জরিত দুর্বল ব্যাংকের মন্দ ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং জবাবদিহিসংক্রান্ত বিষয়গুলোতে যে ধরনের অস্পষ্টতা তৈরি করা হয়েছে, তা সংকটের মূল সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে ঋণ খেলাপি ও জালিয়াতির জন্য দায়ী মহলকে ‘দায়মুক্তি’ প্রদানের নামান্তর। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই মতামত প্রকাশ করেছে টিআইবি। টিআইবি বলছে, ব্যাংকিং খাতের দুর্বল ব্যাংকগুলো রক্ষার নামে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একীভূতকরণের পথে হাঁটতে শুরু করেছে, যা আর্থিক খাতে সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিবেচিত হওয়ার কথা। কিন্তু সংবেদনশীল ও জটিল এই কাজটি করতে আন্তর্জাতিকভাবে অনুসৃত মানদণ্ড ও রীতিনীতি, এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজের ঘোষিত নীতিমালা না মেনে তড়িঘড়ি করা হচ্ছে। স্বেচ্ছাচারীভাবে চাপিয়ে দেওয়া কয়েকটি ব্যাংক একীভূতকরণের ঘোষণা এবং এ প্রক্রিয়ায় থাকা ভালো ব্যাংকগুলোর অস্বস্তি, একীভূত হতে কোনো কোনো দুর্বল ব্যাংকের অনীহা, সব মিলিয়ে ব্যাংকিং খাতে শঙ্কা, অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা গভীরতর করেছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, একটি দুর্বল ব্যাংক ছাড়া কোনো ব্যাংকই নিজ উদ্যোগে একীভূত হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি, আবার এ প্রক্রিয়ায় নাম আসা সবল ব্যাংকগুলো স্বীয় উদ্যোগে স্বেচ্ছায় ও সজ্ঞানে এতে যুক্ত হতে সম্মত হয়েছে তাও নয়। অর্থাৎ, পুরো প্রক্রিয়াটি প্রথম থেকেই স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা ঘোষিত নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তা ছাড়া, দুর্বল ব্যাংকের সম্পদ ও দায়-দেনার পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন ছাড়া আপাত সবল ব্যাংকের ঘাড়ে একীভূতকরণের নামে ঋণখেলাপি ও জালিয়াতির বোঝা চাপিয়ে দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক ও ন্যায়সংগত? অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, যা ঘটছে তা ক্যান্সার চিকিৎসায় প্যারাসিটামল প্রয়োগের নামান্তর। তিনি বলেন, একীভূতকরণের নামে একদিকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ও জালিয়াতির জন্য যারা দায়ী তাদের যেমন সুরক্ষা দিয়ে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতিকে গভীরতর করা হচ্ছে, অন্যদিকে সবল ব্যাংকগুলোর সাফল্যের পরিণামে খারাপ ব্যাংক হজম করিয়ে দেওয়ার জোর প্রচেষ্টা চলছে। যা অস্বস্তি ও শঙ্কার নতুন বাতাবরণ ছড়িয়ে দিয়েছে পুরো খাতে। দুর্বল ব্যাংককে বাঁচানোর এই প্রক্রিয়া হিতে বিপরীত হবে কি-না আশঙ্কা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, একীভূতকরণের আলোচনায় সরকারি-সরকারি, বেসরকারি-সরকারি এবং বেসরকারি-বেসরকারি তিন ধরনের ব্যাংকই রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোন বিবেচনায় এই ব্যাংকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে একীভূত করার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে, কিংবা কোন সবল ব্যাংকের সঙ্গে কোন দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে, তা কিভাবে ঠিক করা হয়েছে- তাও স্পষ্ট নয়। ‘আবার, একীভূত হওয়ার আলোচনার বাইরে থাকা বেশ কয়েকটি ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, দুর্বল দুটি ব্যাংকের দায়িত্ব নিতে যাওয়া সবল বলে পরিচিত সরকারি দুটি ব্যাংকের নিজেদের খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেশ বড়। এমন বাস্তবতায় ব্যাংকিং খাতের মূল সমস্যা মোকাবিলায় কার্যকর জবাবদিহি-ভিত্তিক সুশাসন নিশ্চিত করা ছাড়া, শুধু একীভূত করলেই সংকট মোকাবিলা করা যাবে বা গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা পাবে কিংবা খেলাপি ঋণ কমে আসবে- এমন ভাবনা সত্যিই অলীক,’ বলেন তিনি। একীভূতকরণ নীতিমালায় দুর্বল ব্যাংকের পরিচালকদের পাঁচ বছর পর পুনরায় একীভূত হওয়া ব্যাংকের পর্ষদে ফেরত আসা ও ব্যবস্থাপনায় জড়িত শীর্ষ কর্মকর্তাদের পুনঃনিয়োগের সুযোগ রাখার বিধানের সমালোচনা করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এ বিধান দুর্বল ব্যাংকের সংকটের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির বদলে পুরস্কৃত করা এবং এক ধরনের দায়মুক্তি দেওয়ার বিধান। পাশাপাশি, দুর্বল ব্যাংকের নিরীক্ষাকালে নতুন কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির চিত্র উঠে এলে সে বিষয় গোপন রাখার যে বিধান নীতিমালায় রাখা হয়েছে, তা শুধু আর্থিক অনিয়মের চিত্রকেই ধামাচাপা দেবে না, একই সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির মুখোমুখি করার প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি মন্তব্য করেন, একীভূতকরণের নামে যা ঘটছে, তা হতাশাজনক এবং ঋণ খেলাপিদের হাতে ব্যাংকিং খাতের অব্যাহত জিম্মিদশার পরিচায়ক। টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নীতিমালা অনুযায়ী একীভূত দুর্বল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ রাষ্ট্রীয় মালিকানার একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি কিনে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে জনগণের অর্থে ঋণ খেলাপিদের আরও এক দফা দায়মুক্তি দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ব্যাংক খাতের বিশাল ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা ও জন অস্বস্তি বিবেচনায় টিআইবি মনে করে, প্রত্যাশিত ফল পেতে সংশ্লিষ্ট খাতে সুখ্যাতিসম্পন্ন নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞগণের মতামতের ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক মানদ ও অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যাংক একীভূতকরণ নীতিমালায় প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ জরুরি। পাশাপাশি, ইতোমধ্যে একীভূতকরণের নামে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন স্থগিত করার আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।  
২৩ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:৫১

ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে যা জানাল বাংলাদেশ ব্যাংক
সংকটে পড়া ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারই অংশ এই একীভূতকরণ। এ নিয়ে বেশ ‍কিছু গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত তথ্যনির্ভর নয় বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার ফলে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।  মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্যাংক একীভূতকরণ বিষয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্রকার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত তথ্যনির্ভর নয়। ফলে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। মূলত দুইটি উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ব্যাংক একীভূতকরণ’ নিয়ে কাজ করছে- ১) ২০২৬ সালে একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ। ফলে উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে কার্যকর ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য দেশে অধিক সক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হবে যাতে করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনরূপ বাধার সৃষ্টি না হয়। ২) অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকের বিদ্যমান সমস্যা সমাধান এবং একইসঙ্গে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের কার্যক্রম উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করা; যাতে করে জনস্বার্থে একীভূত ব্যাংক-কোম্পানি অধিকতর সেবা প্রদান করতে পারে। জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করতে ব্যাংক একীভূতকরণের উদ্দেশ্য ও ফলাফল বিষয়ে সবার জ্ঞাতার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক জানাচ্ছে যে, ক) একীভূতকরণের প্রক্রিয়াধীন ব্যাংকগুলোতে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের জমা করা আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকবে। একীভূতকরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরও স্ব স্ব ব্যাংকের হিসাবধারীদের বর্তমান হিসাব আগের মতোই চলমান থাকবে। খ) একীভূতকরণের আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালক, বর্তমান পর্ষদ ও সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতির ভিত্তিতেই একীভূতকরণের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। গ) বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ৪ এপ্রিল জারি করা বিআরপিডি সার্কুলার নম্বর ৮ এ বর্ণিত নীতিমালা অনুসরণ করেই একীভূতকরণের সব কার্যক্রম সম্পাদন হবে।
২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়