দেশে মোবাইল ফোনের বাজার ৮ হাজার কোটি টাকা
বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোনের বাজার ৮ হাজার কোটি টাকার। এই চাহিদা পূরণ করতে বিপুল সংখ্যক মোবাইল আমদানি করতে হয়। এই অর্থের সমপরিমাণ বৈদেশিক মূদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে। জানালেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
আজ সংসদে সরকারি দলের সদস্য বজলুল হক হারুনের টেবিলে উপস্থাপিত তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, মোবাইল ফোনের অবৈধ আমদানি বন্ধ করতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতায় টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) মাধ্যমে সরকার মোবাইল ফোন উৎপাদন ও বিপণনের উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে এ ব্যাপারে ওকে মোবাইল লিমিটেড ও টেশিসের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক টেশিসে মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার মোবাইল ফোন এবং ৮০০ ট্যাব উৎপাদন ও সংযোজন করে বাজারজাত করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ১৩ কোটি ৫৯ লাখ ৮২ হাজার মোবাইল গ্রাহক রয়েছে এবং দিন দিন গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয়, সুদক্ষ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল সৃষ্টি, এ খাতে কাঙ্খিত বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ, দেশে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, অবৈধ আমদানি বন্ধ, দেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন ক্ষেত্র তৈরি, প্রান্তিক পর্যায়ে সকল গ্রাহকের হাতে স্মার্টফোন সরবরাহ নিশ্চিত করে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ানোর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন, সংযোজন ও বিপণনে উৎসাহ প্রদান করা হয়।
তারানা হালিম বলেন, মোবাইল ফোন সংযোজন ও উৎপাদনের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে সরকার এক শতাংশ আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করেছে।
এসআর
মন্তব্য করুন
ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের আদলে বাংলাদেশি যুবকের ‘সোশ্যাল জলি’
বর্তমানে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট নেই এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। সোশ্যাল এসব সাইটের মাধ্যমেই এখন পুরো বিশ্বের তথ্য জানা যাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় ‘সোশ্যাল জলি’ নামে নতুন একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তৈরি করেছেন পাবনার যুবক মিঠু ইসলাম।
অ্যাপটি তৈরি করতে ২০২৩ সালের আগস্টে ভারতের একটি ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেন মিঠু। পরে তারাই ‘সোশ্যাল জলি’ নামে অ্যাপটি তৈরি করে দেয়।
গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ইনস্টল করার পর রেজিস্ট্রেশন করে যে কেউ ব্যবহার করতে পারবেন। অ্যাপটিতে টেলিভিশন, চ্যাটজিপিটি, পডকাস্ট, রিলস, ভিডিও, হাইলাইট, কম্পিটিশন, ক্লাব, স্টোরি, শপসহ বিভিন্ন ফিচার রয়েছে।
এ বিষয়ে মিঠু ইসলাম বলেন, এটি কোনো জুয়ার সাইট নয়। এটি একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতোই অ্যাপটি ব্যবহার করা যাবে। অ্যাপটি চালু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ভালোই সাড়া পাচ্ছি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রথমেই অ্যাপটি ভেরিফাইড করতে হবে। এরপর লাইসেন্স নিতে হবে। যখন এটি বড় একটি প্লাটফর্ম হবে, তখন এখানে জনবল নিয়োগ হবে, অনেক যুবকের কর্মসংস্থান ব্যবস্থা হবে।
উল্লেখ্য, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মারজানী গ্রামের কৃষক তক্কেল আলী ও মিনারা খাতুন দম্পতির ছেলে মিঠু ইসলাম। দুই ভাইয়ের মধ্যে মিঠু বড়।
২০১২ সালে এসএসসি পাস করেন মিঠু। এরপর ২০১৬ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রোসাটম কোম্পানিতে কর্মরত আছেন তিনি।
বাংলাদেশের ৭৫ লাখ ৯৯ হাজার ভিডিও সরিয়েছে টিকটক
বাংলাদেশে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘনের জন্য ৭৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪৯টি ভিডিও অপসারণ করেছে টিকটক। সম্প্রতি কমিউনিটি গাইডলাইনস এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টিকটক। ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২৩) সময়ের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ভুল তথ্যের প্রচাররোধে এবং অনলাইনে নিরাপত্তা বজায় রাখতে টিকটকের অবস্থান প্রতিবেদনটিতে উঠে আসে।
কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘনের দায়ে টিকটক ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে বিশ্বজুড়ে প্ল্যাটফর্মটি থেকে মোট ১৭ কোটি ৬৪ লাখ ৬১ হাজার ৯৬৩টি ভিডিও সরিয়েছে, যা প্ল্যাটফর্মটিতে আপলোড করা সকল ভিডিও’র প্রায় ১.০ শতাংশ। এর মধ্যে ১২ কোটি ৮৩ লাখ ৫৮৪টি ভিডিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপসারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, ৮০ লাখ ৩৮ হাজার ১০৬টি ভিডিও যাচাই-বাছাই করে প্ল্যাটফর্মে পুনরায় রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘনের জন্য ৭৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪৯টি ভিডিও অপসারণ করেছে টিকটক। কমিউনিটি গাইডলাইন রক্ষা করার পাশাপাশি টিকটক সক্রিয়ভাবে স্প্যাম অ্যাকাউন্ট এবং সংশ্লিষ্ট কনটেন্টগুলোর উপর লক্ষ রাখে। একইসাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হওয়া স্প্যাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে বাংলাদেশে যেসব ভিডিও সরানো হয়েছে, তার মধ্যে ৯৫.৩ শতাংশ ভিডিও সরানো হয়েছে কেবল একদিনের মধ্যেই। এই প্রান্তিকে ভিডিও অপসারণের হার ছিল ৯৯.৫ শতাংশ। এ ছাড়া ১৩ বছরের কম বয়সী প্ল্যাটফর্ম ইউজার হওয়ার সন্দেহে এবং তরুণদের নিরাপত্তার জন্য অ্যাকাউন্ট সরিয়েছে টিকটক। বিশ্বজুড়ে এমন অ্যাকাউন্ট সরানো হয়েছে মোট ১ কোটি ৯৮ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫৫টি।
প্ল্যাটফর্মের সকল ব্যবহারকারীদের নিরাপদ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অকৃত্রিম অভিজ্ঞতা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে টিকটকের কমিউনিটি গাইডলাইনটি। প্রত্যেক প্ল্যাটফর্ম ইউজার এবং প্রতিটি কনটেন্টের জন্য সমানভাবে এই নীতিমালা প্রযোজ্য। এই নীতিগুলো প্রয়োগের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় থাকে প্ল্যাটফর্মটি।
বিটিসিএল ডোমেইন সার্ভারে ত্রুটি, বহু ওয়েবসাইট বন্ধ!
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) নিয়ন্ত্রিত তিনটি ডোমেইন সার্ভারে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এর ফলে এসব ডোমেইন সার্ভার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারীরা প্রবেশ করতে পারছে না।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা ৪০ মিনিট থেকে কারিগরি ত্রুটি দেখা দিয়েছে। তবে ডট বাংলা ডোমেইন সার্ভিস যথারীতি চালু আছে।
এ বিষয়ে বিটিসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ ও প্রকাশনা) মীর মোহাম্মদ মোরশেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, বিটিসিএল-এর ডটবিডি ডোমেইন সার্ভিস বুধবার সকাল ৮টা ৪০মিনিট থেকে কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ আছে। তবে ডট বাংলা ডোমেইন সার্ভিস যথারীতি চালু আছে। ত্রুটি নিরসনের জন্য কারিগরি টিম কাজ করছে। আশা করা যায় সার্ভিসটি খুব দ্রুতই চালু করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম (ডোমেইন) আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘হঠাৎ করেই পরিষেবায় বিভ্রাট দেখা দিয়েছে আমরা জলদি বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করছি। প্রস্তুত হলেই পুনরায় সচল হবে সব ওয়েবসাইট।’
দুঃখ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, কী কারণে এমন হলো এখনও আমরা খুঁজে বের করতে পারিনি। তবে এখন আমরা সমস্যা খোঁজার থেকে বিকল্পভাবে সচল করছি। কেন না, এখন পর্যন্ত আমাদের সব কিছু সচল দেখছি। কোনো সমস্যা খুঁজে পাইনি। মূল সমস্যা খুঁজে পাওয়া সময়সাপেক্ষ। তবু আমরা খুব দ্রুতই সমাধান করে গ্রাহক সেবা দিতে পারব।
ডোমেইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশের ভার্চুয়াল জাতীয় পরিচয়ের রুট ডোমেইন নেটওয়ার্ক সিস্টেমে (ডিএনএস) ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ফলে ডট গভ ডট বিডি, ডট কম ডট বিডি এবং ডট বাংলা এই তিন ডোমেইনে থাকা সরকারি-বেসরকারি ওয়েবসাইটগুলো অনলাইনে ‘আন অ্যাভেইলেবেল’ দেখাচ্ছে। তবে সকাল থেকে পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হতে শুরু করেছে।
বিএসসিএলের টিআরপি সেবা উদ্বোধন করলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সেবার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে বিএসসিএল-এর প্রধান কার্যালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে সাথে নিয়ে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বিএসসিএলের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ, একাত্তর মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং বিএসসিসিএল-এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)-এর টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সেবার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধনের মাধ্যমে অত্যন্ত চমৎকার একটি কাজের সূচনা হয়েছে। সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ বিষয়টি অত্যন্ত গর্বের। প্রযুক্তিটি আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। এ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, সরকার বেসরকারি খাত বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করতে পারে যেটি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করা সম্ভব। এটিই আমাদের জন্য ব্যাপক অর্জন।
এ কার্যক্রমের জন্য সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের উদ্যোগ ও সহযোগিতা ছাড়া বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সহযোগিতা ছাড়া এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন সম্ভব হতো না।
সামনের দিনগুলোতে নিজেদের প্রচেষ্টায় নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে আরও বড় উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলেও এ সময় জানান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের উদ্যোগে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহযোগিতায় টিআরপি সিস্টেমের মতো দেশে এ ধরনের আরও বড় কাজ হবে, যেগুলো বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে এবং যার উপযোগিতা থাকবে।
পরে প্রতিমন্ত্রী বিএসসিএলের প্রধান কার্যালয়ে টিআরপি সিস্টেমের কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।
উল্লেখ্য, টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) হলো টেলিভিশন চ্যানেল অথবা টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তা নির্ধারনের পরিমাপক। বিএসসিএল টিআরপি সিস্টেম একটি বিজ্ঞান ও পরিসংখ্যানভিত্তিক মাধ্যম যা টেলিভিশন চ্যানেল অথবা টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তা নির্ণয়ের পাশাপাশি কোন এলাকায়, কখন, কতজন, কোন বয়সের মানুষ, নারী কিংবা পুরুষ কে, কতক্ষণ কোন চ্যানেলে কোন অনুষ্ঠান দেখেছেন তার সকল তথ্য সংগ্রহ করে। এই সকল তথ্যাদি বিএসসিএল কর্তৃক রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্পূর্ন সুরক্ষিত থাকবে এবং সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহিতাগণ তথা টেলিভিশন চ্যানেল এবং বিজ্ঞাপন সংস্থা তা সরাসরি বিএসসিএল টিআরপি সিস্টেম সেবা হতে গ্রহণ করতে পারবে।
৮ হাজারের বেশি ওয়েবসাইট ডাউন, যা জানাল বিটিসিএল
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) নিয়ন্ত্রিত ডট বিডি ডোমেইন সার্ভারে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ডোমেইন সার্ভার নিয়ন্ত্রিত ৮ হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারীরা প্রবেশ করতে পারছেন না।
বুধবার (৩ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কারিগরি ত্রুটির বিষয়টি স্বীকার করেছে সংস্থাটি। রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ত্রুটি সমাধান সম্ভব হয়নি।
এতে বলা হয়, ডট বিডি ডোমেইন সার্ভিস বুধবার (৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা ৪০ মিনিট থেকে কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ আছে। তবে ডট বাংলা ডোমেইন সার্ভিস যথারীতি চালু আছে। ত্রুটি নিরসনের জন্য কারিগরি টিম কাজ করছে। আশা করা যায়, সার্ভিসটি খুব দ্রুতই চালু করা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের ভার্চুয়াল জাতীয় পরিচয়ের রুট ডোমেইন নেটওয়ার্ক সিস্টেমে (ডিএনএস) ত্রুটির কারণে গতকাল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত থেকে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ‘আন অ্যাভেইলেবল’ দেখাতে শুরু করে। তবে সকাল থেকে কিছুটা শিথিল হয়েছে। মাঝে মাঝে কিছু ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে।
ডট বিডি ডোমেইন সার্ভিস বন্ধের ফলে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ওয়েবসাইটের কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করেছে।
বিটিসিএলের জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখার জেনারেল ম্যানেজার মীর মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, ‘আমাদের প্রকৌশলীরা এখনো কাজ করছেন। রাতের মধ্যেই সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছি। প্রায় ৮–১০ হাজার ওয়েবসাইট ডাউন রয়েছে।
সংস্থাটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) আনসার আলী বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির সম্পূর্ণ সমাধান এখনো সম্ভব হয়নি। আমাদের ইঞ্জিনিয়ারেরা এখনো কাজ করছেন। ডট বিডি ডোমেইনে ত্রুটি দেখা দিলেও বিটিসিএলের আরেকটি ডোমেইন ডট বাংলা যথাযথভাবে কাজ করছে।
ফের হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রাম বিভ্রাটের অভিযোগ
জনপ্রিয় মেসেজিং ও আইপি সেবা প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ কাজ করছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো গ্রাহক। বুধবার (৩ এপ্রিল) তারা এই সমস্যায় পড়েন বলে অভিযোগ করেছেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টার দিকে অনলাইনে বিভিন্ন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার ওপর নজরদারি করা সংস্থা ডাউন ডিটেক্টরের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
ডাউন ডিটেক্টর জানায়, হোয়াটঅ্যাপ ব্যবহারে সমস্যায় পড়েছেন এমন অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১২ হাজার ব্যবহারকারী। এছাড়া ভারতের ২০ হাজারের বেশি, যুক্তরাজ্যের প্রায় ৪৬ হাজার এবং ব্রাজিলের ৪২ হাজারের বেশি ব্যবহারকারী হোয়াটঅ্যাপ ডাউনের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে হোয়াটসঅ্যাপের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় চার হাজার ৮০০ ব্যবহারকারী ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে সমস্যার মুখোমুখী হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
তবে রয়টার্সের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্ল্যাটফর্মের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
এর আগে গত ৫ মার্চ ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও ইনস্টাগ্রামে বিভ্রাট দেখা দেয়। বাংলাদেশ সময় ওইদিন রাত সোয়া ৯টার দিকে এসব প্ল্যাটফর্মে বিভ্রাট দেখা দেয়। এক ঘণ্টা পর ব্যবহারকারীরা পুনরায় ঢুকতে পারেন।
মস্তিষ্কে চিপ বসিয়ে ডিভাইস নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা
এতকাল শরীরে পেসমেকার বা কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বসিয়ে জীবনযাত্রার মানের উন্নতির চেষ্টা হয়েছে৷ ইলন মাস্ক মানুষের মস্তিষ্কে চিপ বসিয়ে যন্ত্রের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের বিতর্কিত প্রযুক্তি চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছেন৷
টেলিপ্যাথি নামের এক ওয়্যারলেস চিপ সফলভাবে এক মানুষের মস্তিষ্কে বসানো হয়েছে৷ মার্কিন কোটিপতি মাস্ক কমপক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এমনটাই ঘোষণা করেছেন৷ মোটকথা মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটার সংযুক্ত করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য৷ সে ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা শুধু চিন্তার মাধ্যমে ডিজিটাল পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন৷ শুনতে খুবই ভবিষ্যতধর্মী হলেও বাস্তবে সেটা সত্যি কতটা যুগান্তকারী? তথাকথিত বিসিআই নামের ডিভাইসগুলি মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পরিমাপ করে সেই সংকেত ডিজিটাল কমান্ডে রূপান্তরিত করতে পারে৷ এমন ডিভাইস ব্যবহার করলে নীতিগতভাবে কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের সঙ্গে একেবারে নতুন ও বিরামহীন উপায়ে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়৷ মাস্কের ভাষায় টেলিপ্যাথি ফোন বা কম্পিউটারের উপর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব করবে৷ শুধু চিন্তাশক্তির বলে সেগুলির মাধ্যমে প্রায় যে কোনো ডিভাইস চালনা করা যাবে৷
শুনে মনে কৌতূহল জাগছে? কিন্তু এর এক বড় ঘাটতিও রয়েছে৷ কারণ মাস্কের চিপ মস্তিষ্কে ইমপ্লান্ট করতে হবে৷ এক রোবট সেই অপারেশন করবে৷ মানুষের চুলের থেকে বেশি চিকন ৬৪টি নমনীয় সুতা চিপ থেকে মস্তিষ্কে যোগাযোগ স্থাপন করবে৷ রোগগ্রস্ত বা প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য এমন অস্ত্রোপচার হয়তো উপকারও বয়ে আনতে পারে৷ যেমন কারো মৃগী রোগ থাকলে বিসিআই আগে থেকেই সম্ভাব্য খিঁচুনি শনাক্ত করে সেটি এড়িয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে৷ মাস্ক নিজেই অন্যান্য সম্ভাবনার উল্লেখ করেছেন৷ তাঁর বার্তা অনুযায়ী যারা নিজেদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবহার করতে পারেন না, তাঁরাই প্রাথমিক ব্যবহারকারী হবেন৷ ভেবে দেখুন, স্টিফেন হকিং যদি স্পিড টাইপিস্ট বা নিলামকারীর তুলনায় দ্রুত ভাবের আদানপ্রদান করতে পারতেন, তাহলে কী হতো? তিনি খুব সম্ভবত সেই প্রযুক্তি পছন্দ করতেন এবং সেটা থেকে উপকারও পেতেন৷
চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে বিসিআই-এর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷ স্টিফেন হকিং এএলএস নামের দুরারোগ্য মোটর নিউরন রোগে ভুগছিলেন৷ এই রোগ হলে স্নায়ুর কোষগুলির ক্ষয় হতে থাকে৷ রোগীরা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন৷ বিসিআই হয়তো হকিং-কে চিন্তার মাধ্যমে টেক্সট টাইপ করার ক্ষমতা দিতে পারতো৷ কিন্তু নিউরালিংক সে রকম কিছু উদ্ভাবন করেনি৷ তবে অন্যান্য কিছু কোম্পানি মানুষের উপর সফলভাবে পরীক্ষা চালিয়েছে৷
যেমন সিনক্রোন নামে অস্ট্রেলিয়ার স্টার্ট-আপ কোম্পানি এ ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে৷ অন্যান্য গবেষকরা এমনকি ব্রেন ইমপ্লান্ট ও পেশির মধ্যে নতুন সংযোগ গড়ে তুলছেন৷ ২০২৩ সালের মে মাসে সুইজারল্যান্ডের নিউরোরিস্টোর নামের কোম্পানি এমন এক ব্যক্তিকে আবার হাঁটার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে, যিনি দুর্ঘটনার কারণে পঙ্গু হয়ে পড়েছিলেন৷ নিউরালিংক মডেলের তুলনায় এই দুই দৃষ্টান্তের একটা বড় সুবিধা রয়েছে৷ সেগুলিও রোগীর মাথায় ইমপ্লান্ট করতে হলেও সেই অপারেশন অনেক কম জটিল৷
তা সত্ত্বেও মাস্কের নিউরালিংক-কে ঘিরে কেন এত আলোড়ন চলছে? সত্যি কথা বলতে গেলে উল্লিখিত কোম্পানিগুলির মধ্যে কোনোটিই বিসিআই উদ্ভাবন করেনি৷ সেই ১৯৯৮ সালেই মস্তিষ্কে প্রথম চিপ বসানো হয়েছিল৷ কিন্তু এখনো পর্যন্ত মাস্কের মতো কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি সেই প্রযুক্তির উন্নতির জন্য চাপ দেননি৷ এমনকি জনসংযোগের ইভেন্টকেও তিনি প্রাণীর উপর পরীক্ষা চালানোর মঞ্চে পরিণত করতে দ্বিধা করেননি৷
২০২০ সালে মাস্ক বিশ্বের সঙ্গে গ্যারট্রুড নামের এক শুকরের পরিচয় করিয়ে দেন, যেটির মধ্যে নিউরালিংক চিপ বসানো হয়েছে৷ ২০২১ সালে তিনি ঢাকঢোল পিটিয়ে পেজার নামের এক বানরকে তুলে ধরেছিলেন, যে চিপ ইমপ্লান্টের মাধ্যমে পং নামের ভিডিও গেম খেলতে পারে৷ সে সব ছাড়াও ইলন মাস্ক সেই প্রযুক্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে বেশ কিছু বড়সড় পূর্বাভাস দিয়েছিলেন৷
যেমন ২০২০ সালে নিউরালিংকের এক ইভেন্টে তিনি বলেন, আমরা স্মৃতি ধরে রেখে রিপ্লে করতে পারি৷ ভবিষ্যৎ বেশ অদ্ভুত হতে চলেছে৷ মনে হচ্ছে, মাস্ক আমাদের ব্রেন হ্যাক করতে বদ্ধপরিকর৷ তাঁর বিশ্বাস, বিসিআই মানুষের মধ্যে উন্নতি আনতে পারে৷ সেই উন্নতি শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে না৷
কিন্তু প্রশ্ন হলো, আপনি কি মাস্কের কোনো কোম্পানির হাতে নিজের মস্তিষ্ক তুলে দিতে প্রস্তুত? ভেবে দেখুন, আপনার চিন্তাভাবনার জগতে উঁকি মেরে কত সংবেদনশীল তথ্য রেকর্ড করা হতে পারে!