ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা করলো আরব আমিরাত
মুসলমানদের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার সম্ভব্য তারিখ ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র। এক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক মুসলিম দেশে ২০ জুলাই ঈদুল আজহা পালিত হবে।
১০ জুলাই শনিবার ১৪৪২ হিজরি জিলহজ মাস শুরু হচ্ছে। আর আগামী ১৯ জুলাই আরাফার দিন এবং ২০ জুলাই ঈদুল আজহা পালিত হবে। এ হিসেব করেই তারিখ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। তবে সবকিছুই চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবারও বিদেশিদের জন্য হজ পালন বাতিল করেছে সৌদি আরব। দেশটিতে এই মুহূর্তে যারা বসবাস করছেন তারাই এবার হজ পালন করতে পারবেন। সূত্র: খালিস টাইমস
জেএইচ/পি
মন্তব্য করুন
বুধবার ঈদ কি না, জানা যাবে সন্ধ্যায়
পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখতে আজ সন্ধ্যায় বৈঠকে বসছে ‘জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি’। দেশের আকাশে আজ চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল বুধবার পালিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর না দেখা গেলে বুধবার ৩০ রোজা পূর্ণ করতে হবে। আর ঈদ হবে আগামী বৃহস্পতিবার।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক। এতে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি এবং ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
সোমবার (৮ এপ্রিল) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা করে ঈদুল ফিতর উদযাপনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। রোজা শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।
মঙ্গলবার দেশের আকাশে শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর বাংলাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা না গেলে বুধবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে ঈদ উদযাপিত হবে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল)।
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬ ও ০২-৪১০৫০৯১৭ টেলিফোন নম্বরে ফোন করে এবং ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১ নম্বরে ফ্যাক্স করে বা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) জানানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
নতুন চাঁদ দেখার পর যে দোয়া পড়বেন
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এরই মাঝে সবার মনে প্রশ্ন ঈদ কবে? আর এ জন্য নতুন চাঁদ দেখা নিয়ে চলছে গবেষণা। চাঁদ দেখে যেমন রোজা শুরুর কথা হাদিসে এসেছে, তেমনি চাঁদ দেখা না গেলে শাবান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ করার কথাও উল্লেখ রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তোমরা চাঁদ দেখে সিয়াম (রোজা) আরম্ভ করবে এবং চাঁদ দেখে ইফতার করবে। আকাশ যদি মেঘে ঢাকা থাকে তাহলে শাবানের গণনা ত্রিশ পুরা করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯০৯)
আরবি দশম মাস শাওয়ালের ১ তারিখ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়ে থাকে। দীর্ঘ এক মাস রোজা থাকার পর আকাশে শাওয়ালের নতুন চাঁদের উকি যেন সর্বত্রই খুশির বার্তা ছড়িয়ে দেয়। তবে নতুন চাঁদ দেখতে পেলে বিশেষ দোয়া পড়ার কথা এসেছে হাদিসে।
হজরত তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন নতুন চাঁদ দেখতেন তখন বলতেন-
উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াসসালামাতি ওয়াল ইসলামি ওয়াত্তাওফিকি লিমা তুহিব্বু ওয়া তারদা রাব্বুনা ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহ মহান, হে আল্লাহ! এ নতুন চাঁদকে আমাদের নিরাপত্তা, ইমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদয় কর। আর তুমি যা ভালোবাস এবং যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও, সেটাই আমাদের তৌফিক দাও। আল্লাহ তোমাদের এবং আমাদের প্রতিপালক।’ (তিরমিজি, মিশকাত)
নতুন চাঁদকে আরবিতে বলে ‘হিলাল’। ‘হিলাল’ হচ্ছে এক থেকে তিন তারিখের চাঁদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো, চাঁদ দেখে রোজা ছাড়ো, ইফতার করো বা ঈদ করো।’ যে সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখা যায়, সে রাত হলো ‘চাঁদরাত’। আরবি চান্দ্র বছরের নবম মাস রমজান এবং দশম মাস শাওয়াল।
এ ছাড়াও রমজানের চাঁদ দেখার খবর শুনে দোয়া করা হয়।
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সাল্লিমনি লিরমাদান, ওয়া সাল্লিম রামাদানা লি, ওয়া তাসলিমাহু মিন্নি মুতাক্বাব্বিলা। (তাবারানি)
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে শান্তিময় রমজান দান করুন। রমজানকে আমার জন্য শান্তিময় করুন। রমজানের শান্তিও আমার জন্য কবুল করুন।
বৈঠকে বসেছে চাঁদ দেখা কমিটি
পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখতে বৈঠকে বসছে ‘জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি’।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে এ বৈঠক শুর হয়।
জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি ও ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা করে ঈদুল ফিতর উদযাপনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এক মাস রমজানের রোজা শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।
এক মাস রমজানের রোজা শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। আজ দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর চাঁদ দেখা না গেলে বুধবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে ঈদ উদযাপিত হবে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল)।
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও চাঁদ দেখা গেলে তা ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬ ও ০২-৪১০৫০৯১৭ টেলিফোন নম্বরে ফোন করে এবং ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১ নম্বরে ফ্যাক্স করে বা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানোর অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
একমাত্র মুসলিম দেশ হিসেবে বৃহস্পতিবার যে দেশে ঈদ
বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় বুধবার (১০ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে। এদিকে বিশ্বের সব মুসলিম দেশে বুধবার পালিত হলেও একমাত্র বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ঈদ পালিত হবে।
জানা গেছে, সৌদি আবরসহ মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশ, পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ দেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তান ও ভারতের তিন অঞ্চলে বুধবার (১০ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হবে। তবে ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চল ও বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার ঈদ পালন করা হবে।
এক নজরে দেখে নিন মুসলিম দেশগুলোতে কতটা রোজা হয়েছে এবং কবে ঈদ পালিত হচ্ছে-
পাকিস্তান : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ২৯টি।
মালয়েশিয়া : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ২৯টি।
ফিলিস্তিন : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ৩০টি।
ইন্দোনেশিয়া : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ২৯টি।
সৌদি আরব : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ৩০ টি।
আরব আমিরাত : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ৩০টি।
কাতার : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা, ৩০টি।
ইয়েমেন : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ৩০ টি।
ওমান : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ২৯ টি।
জর্দান : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ২৯টি।
মিশর : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ৩০টি।
তিউনিসিয়া : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ৩০টি।
মরক্কো : ১০ এপ্রিল, বুধবার, রোযা ২৯টি।
সবার আগে যে দুই দেশে পালিত হলো ঈদ
সৌদি আরবসহ মধ্যপাচ্যের বিভিন্ন দেশ সোমবার মুসলিমদের চাঁদ দেখার আহ্বান জানিয়েছে। তবে সেসব দেশে চাঁদ দেখা না গেলেও দুটি মুসলিম দেশে চাঁদ দেখা গেছে। ফলে ওই দুই দেশে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে চাঁদ দেখা না গেলেও সোমবার (৮ এপ্রিল) আফ্রিকার দুই দেশে চাঁদ দেখা গেছে। দেশ দুটি হলো মালি ও নাইজার। ফলে দেশ দুটিতে মঙ্গলবার পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয়েছে। দেশে দুটিতে ২৯টি রোজা পালিত হয়েছে।
চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নাইজারের চাঁদ দেখা কমিটি রুয়েত-ই-হিলাল। দেশটির পাঁচটি রাজ্যে চাঁদ দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এছাড়া সোমবার চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মালির ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, আফ্রিকার অন্যান্য দেশে চাঁদ দেখা না যাওয়ায় মঙ্গলবার রোজা থাকবেন সেখান নাগরিকরা। এসব দেশে ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে বুধবার।
প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আরবি মাসের গণণা শুরু এবং শেষ করা হয়। সারাবিশ্বে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রোজা শুরু এবং ঈদ উদযাপন করেন মুসলিমরা। তাই চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঈদ পালনের পার্থক্য দেখা দেয়।
ঈদ সালামি কি জায়েজ?
ঈদ আরবি শব্দ। যার অর্থ খুশি, আনন্দ, ফিরে আসা ইত্যাদি। যেহেতু প্রতি বছর দিনটি ফিরে আসে তাই, একে ঈদ বলা হয়। ঈদ আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ। আনন্দ ও খুশির মধ্যে শিশু-কিশোরদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে ঈদি বা ঈদ সালামি। বড়দের পক্ষ থেকে পাওয়া এই সালামি শিশুদের আনন্দ বাড়িয়ে দেয়।
একটি সুস্থ ও সুন্দর সামাজিক রীতি ঈদ সালামি। ইসলামের দৃষ্টিতে ঈদ সালামি দেওয়ার এ প্রচলনে কোনো আপত্তি বা ধর্মীয় বাধা-নিষেধ নেই। বরং এর মাধ্যমে ছোটদের প্রতি স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এতে পারস্পারিক বন্ধন সুদৃঢ় হয়। তা ছাড়া ইসলামে উপহার দেওয়া-নেওয়ার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য (কাউকে কিছু) দেয়, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই দেয়া থেকে বিরত থাকে; আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই যে ভালোবাসে আর আল্লাহর জন্যই যে ঘৃণা করে, সে তার ইমান পূর্ণ করল।’ (তিরমিজি: ২৫২১)
অন্য হাদিসে আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, নবিজি (সা.) বলেছেন, ‘পরস্পর হাদিয়া দাও, মহব্বত বৃদ্ধি পাবে।’ (আল আদাবুল মুফরাদ: ৫৯৪)
তবে ছোটদের কল্যাণে ঈদ সালামি দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষ রাখা দরকার। সেগুলো হলো-
সেলামি দেওয়ার সময় ছোট ভাইবোন ও সন্তানদের কাউকে দেওয়া হবে আর কাউকে বঞ্চিত করা হবে-এমনটি যেন না হয়। এতে কারো মনে আঘাত লাগতে পারে। যা পারস্পরিক মনোমালিন্যেরও কারণ হতে পারে।
সবাইকে সমানভাবে উপহার দেয়া জরুরি নয় বরং বয়স ও অবস্থা অনুযায়ী কমবেশি করা যাবে। যেমন- বড়কে বেশি আর ছোটকে কম, বিবাহিতকে এক রকম অবিবাহিতকে অন্য রকম— এতে কোনো আপত্তি নেই।
আমাদের দেশে ঈদ সালামি পাওয়ার জন্য ছোটরা বড়দের পা ছুঁয়ে সালাম করে। এটি অনৈসলামিক কালচার। এর সম্প্রসারণ রোধ করা জরুরি। কেউ এমনটি করলে তাকে নিষেধ করতে হবে।
অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চারা হাতে টাকা পেয়ে যেন আজেবাজে ও গুনাহের কাজে ব্যয় না করে।
ঈদের দিনে যা করবেন, যা করবেন না
ঈদ আরবি শব্দ। যার অর্থ খুশি, আনন্দ, ফিরে আসা ইত্যাদি। যেহেতু প্রতি বছর দিনটি ফিরে আসে তাই একে ঈদ বলা হয়। প্রতিবছর আরবি শাওয়াল মাসের ১ তারিখে ফিরে আসে অনন্য এ আয়োজন। এটি এমন এক নির্মল দিন, যেদিন মুসলিমরা আত্মশুদ্ধির অনাবিল আনন্দে পরস্পর ভ্রাতৃত্বের ময়দানে কাতারবদ্ধ হন।
ইবাদতময় এই আনন্দ উৎসব থেকে আরও কল্যাণ লাভের জন্য প্রয়োজন হলো মহান আল্লাহর বিধান এবং রাসুল (সা.)-এর সুন্নতের অনুসরণ। রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে ঈদের প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং যেভাবে ঈদ উদ্যাপন করেছেন আমাদের জন্যও করণীয় হলো সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া এবং উদ্যাপন করা।
ঈদুল ফিতরের দিন যা করবেন
ঈদের নামাজের আগে গোসল করা সুন্নত। গোসল করলে শরীর সতেজ থাকে এবং মন ফুরফুরে হয়। এতে ঈদের দিনের আমল এবং আনন্দ উদ্যাপনে বাড়তি ভালো লাগা কাজ করে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন গোসল করতেন। (বোখারি: ১/১৩০)
নতুন ও ভালো পোশাক-পরিচ্ছদ ছাড়া উৎসব হয় নিরানন্দের। ঈদের দিন সাধ্যের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা সুন্নত। হজরত জাবের (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) এর এমন একটি জুব্বা ছিল, যা তিনি দুই ঈদ ও জুমার দিন পরতেন।’ (সহীহ ইবনে খুযাইমা ১৭৬৫)
রাসুল (সা.) সুগন্ধি খুব পছন্দ করতেন। তিনি নিজে সুগন্ধি ব্যবহার করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও সুগন্ধি ব্যবহারের উপদেশ দিতেন। ঈদের দিনের সুন্নতগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সুগন্ধি ব্যবহার করা। (মুসতাদরাকে হাকিম: ৭৫৬০, দররুল মুখতার: ২/১৬৮)
ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার আগে এবং ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহ থেকে ফেরার পর কিছু খাওয়া সুন্নত। হজরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবি করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের আগে কিছু খেতেন না। (তিরমিজি শরিফ : ৫৪৫)।
ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। হজরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সুন্নত হলো ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া’। (তিরমিজি শরিফ : ৫৩৩)।
এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যাওয়া আর অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসা সুন্নত। হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে, নবি করিম (সা.) ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন। (সহিহ বুখারি : ৯৮৬)।
ঈদের নামাজ শেষে খুতবা শ্রবণ করা ওয়াজিব। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সায়েব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবি করিম (সা.)-এর সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের নামাজ শেষ করলেন, বললেন, আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভালো লাগে সে যেন বসে আর যে চলে যেতে চায় সে যেতে পারে। (আবু দাউদ শরিফ : ১১৫৭)।
রমজান মাসে রোজার যে ত্রুটি হয়েছে তা পূরণ করতে অভাবগ্রস্ত আর গরিবদের যে খাদ্যসামগ্রী দান করা হয় তাকেই সাদাকাতুল ফিতর বলে। হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) ঈদগাহে যাওয়ার আগে ফিতরা আদায় করার আদেশ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি : ১৫০৩)।
খোলা মাঠে ঈদের নামাজ পড়া সুন্নত। শরয়ী ওজর ব্যতীত ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করলে সুন্নতের খেলাফ হবে। (দুররুল মুখতার: ২/১৬৯)
ঈদের দিন একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে শুভেচ্ছা বিনিময় করা সুন্নত। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) এর সাহাবোয়ে কেরাম ঈদের দিন পরস্পর সাক্ষাৎ হলে বলতেন ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ অর্থাৎ আল্লাহ আমার এবং আপনার যাবতীয় ভালো কাজ কবুল করুন। (ফাতহুল কাদির: ২/৫১৭)
ঈদের দিন যা করবেন না
ঈদের দিন এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়, যা করতে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন।
ঈদের দিন বাদ্যযন্ত্র বাজানো, নাচানাচি করা, পটকা ফুটানো বা যে কোনো আতশবাজি সম্পূর্ণ বর্জন করা আবশ্যক।
ঈদের আনন্দের নামে নারীদের বেপর্দায় বাইরে বের হওয়া বর্জনীয় কাজ।
আনন্দ করতে গিয়ে অমুসলিমদের আদর্শ ও সংস্কৃতি মুসলমানদের জন্য গ্রহণ করা উচিত নয়।
যে কোনো ধরনের অশ্লীল কাজ-কর্ম বর্জন করা মুমিন মুসলমানের জন্য আবশ্যক।
যে কোনো প্রকারের অশালীন খোলামেলা পোশাক পরা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
নারী-পুরুষের বেশ বা পোশাক পরা এবং পুরুষ-নারীর বেশ বা পোশাক পরা নিষিদ্ধ।