• ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

শরীফ থেকে শরীফা ইস্যু : সেই শিক্ষক ক্লাসে ফিরছেন

আরটিভি নিউজ

  ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৮
ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ (সংগৃহীত ছবি)

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাবের পর সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘শরীফা গল্প’ নিয়ে প্রতিবাদ করায় ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (আইইউবি) শিক্ষক অধ্যাপক ড. সরোয়ার হোসেনকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সরিয়ে রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক সরোয়ারকে ক্লাসে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইইউবি।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ক্যাম্পাসের ভেতরে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

জানা গেছে, সোমবার (২৯ জানুয়ারি) থেকে অধ্যাপক ড. সরোয়ার হোসেন ক্লাসে ফিরবেন বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার বেলা ১১টায় আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অফিস থেকে কর্মকর্তারা এসে ওই শিক্ষককে ক্লাসে ফেরানোর আশ্বাস দেন। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কর্মসূচি তুলে নেন তারা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্বাসে আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করেছি। তবে তাদের কথায় কোন পরিবর্তন হলে আবারও আন্দোলনে নামবো আমরা।

ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক অধ্যাপক ড. সরোয়ার হোসেন। গত ১৯ জানুয়ারি এক সেমিনারে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ্যবইয়ের শরীফ থেকে শরীফা হওয়ার গল্পের অংশটুকু নিয়ে প্রতিবাদ করেন তিনি। তার এ প্রতিবাদের ভিডিও ভাইরাল হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাকে আর ক্লাসে না যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ওই সেমিনারে অধ্যাপক সারোয়ার বলেন, ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে আপনাদের যদি ভেঙে ভেঙে বুঝাইতাম তাহলে আপনারা রাতে ঘুমাইতে পারবেন না। ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু মারাত্মক ইস্যু। আমি এ বিষয়ে ছয় বছর পিএইচডি করেছি।

‘ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়কে আমার সন্দেহ হয়েছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই কারণে চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম। ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু বুঝতে হলে জনস্বাস্থ্য বুঝতে হবে। তাহলে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুটা বুঝতে পারবেন। সমকামিতা কোনো আলোচনার বিষয় না। এর কারণে কওমে লূত ধ্বংস হয়েছে। সব ধর্মে নিষিদ্ধ এ সমকামিতা। গতকাল শুনলাম আমার প্রতিষ্ঠান আমার জন্য পলিসি তৈরি করেছে। যেন চাকরি খেয়ে দিতে পারে। ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে যে কথা বলবে তার চাকরি খেয়ে দিতে পারবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। সপ্তম শ্রেণির বইতে শরীফ থেকে শরীফার গল্প আছে। মনে মনে নারী এবং মনে মনে পুরুষ, এটা ভয়ংকর জিনিস।

তিনি বলেন, আমার লাইফ ঝুঁকির মধ্যে, আপনারা কি জানেন? আমার পেছনে অনেক লোক ঘুরছে। আমি বাইরে যেতে পারি না। আমাকে টার্গেট করে ওরা কমপ্লেইন করেছে, চাপে ফেলেছে। আমি বললাম এটা কীভাবে সম্ভব। আমরা জাতি গঠন করি। আমরা চাই সাসটেইনেবল সোসাইটি হোক, আমরা কি চাই অসুস্থ সোসাইটি হোক?’

এর আগে গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে আয়োজিত এক সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের ৮০ টাকা দিয়ে বইটি বাজার থেকে কিনতে বলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব। পরে বইয়ের ট্রান্সজেন্ডারের গল্প থাকা দুটি পাতা ছিঁড়ে আবার দোকানে ফেরত দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। সেমিনারে তিনি সপ্তম শ্রেণির বই নিয়ে সমালোচনাও করেন। আর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করেন। এই ঘটনার পর রোববার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় নিজের ফেসবুকে মাহতাব লেখেন, আমাকে এইমাত্র ফোন করে জানানো হয়েছে যে, আমি যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ক্লাস নিতে না যাই। এপরই এরপর সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এই একই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. সরোয়ার হোসেন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে রোবটিক্স প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
শরীফার গল্প নিয়ে সংসদে যা বললেন চুন্নু
সমকামিতা প্রচারের অভিযোগ নিয়ে যা জানাল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুতির কারণ জানাল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
X
Fresh