রংপুর নর্দান মেডিকেল কলেজের মাইগ্রেশনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন
বিভিন্ন অনিয়মের কারণে নর্দান (প্রা.) মেডিকেল কলেজ রংপুর এর বিএমডিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন বাতিল ও উক্ত কলেজ কর্তৃক প্রতারণার জেরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীবৃন্দকে বিএমডিসি প্রেসিডেন্ট কর্তৃক প্রদত্ত মাইগ্রেশনের মৌখিক আশ্বাস দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন নর্দান (প্রা.) মেডিকেল কলেজের প্রতারিত হওয়া শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে এই সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন ছাড়াই প্রতারণার মাধ্যমে প্রতিবছর শিক্ষার্থী ভর্তি করছে রংপুরের নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ। এতে বিপর্যায়ের মুখে পড়ছে একদল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জীবন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থী আছে কিন্তু শিক্ষক নেই, হাসপাতাল আছে চিকিৎসক ও রোগী নেই। এমনকি অপারেশন থিয়েটার, আইসিইউ ও সিসিইউ নেই। নামমাত্র বিভাগ থাকলেও কোনও বিভাগেরই নেই বিভাগীয় প্রধান, প্রফেসর, সহকারী-সহযোগী অধ্যাপক ও রেজিস্ট্রার। এমনকি বিএমডিসি’র নিবন্ধনও নেই বিশ্ববিদ্যালয়টির।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন বলেন, কলেজটি দীর্ঘদিন তাদের নিবন্ধন নবায়ন করেনি। এমনকি কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের নিয়ম-নীতিও তারা ঠিক মতো মানেনি। কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশের বলে তারা প্রতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। অধিদফতরের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ইতিমধ্যে কলেজের একটি ব্যাচের শিক্ষার্থী এমবিবিএস পরীক্ষায় পাস করেছে। কিন্তু তারা বিএমডিসি’র নিবন্ধিত না থাকায় তারাও বিপাকে পড়েছে। তবে বিশেষ বিবেচনায় এসব শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নের ব্যবস্থা করা হবে।
নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও সংবাদ সম্মেলনের আহবায়ক মো. শিহাব আহমেদ বলেন, ২০০০ সালে গড়ে ওটা এই মেডিকেল কলেজ মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কোন শর্ত পূরণ না করায় ২০০৪ সালে কলেজটির কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। তারপরও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ পর্যন্ত বিএমডিসি’র অনুমোদন নেয়নি। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত থাকলেও পরবর্তীতে সেটিও নবায়ন করেনি।
এছাড়াও শিক্ষার্থীরা জানান, মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত ফি’র থেকে অনেক বেশি টাকা আদায় করা হয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। ভর্তির ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা এবং মাসিক বেতন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয়া হয়। গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষার কোটা থাকলেও তাদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা আদায় করা হতো। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় বিএমডিসির নিবন্ধনের দাবি জানিয়ে আসলে এক পর্যায়ে একটি ভুয়া সনদ দেখিয়ে তাদের শান্ত করে প্রশাসন।
বিএমডিসি’র সদস্য প্রফেসর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ধরনের মেডিকেল কলেজগুলো মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিবন্ধন নেয়। কিন্তু বিএমডিসি’র নিবন্ধন নিতে পারে না। কারণ সব নিয়ম-নীতি না মানায় তাদের নিবন্ধন দেয়া হয় না। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি পূর্ণাঙ্গ টিম করে (বিএমডিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে) পরিদর্শন করতে হবে। নিয়ম না মানলে প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে।
এসআর/
মন্তব্য করুন