হাতির পিঠে চড়ে রাজকীয় বিয়ে ৫২ প্রেমিক জুটির
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতে থাইল্যান্ডে একসঙ্গে ৫২ প্রেমিক জুটি হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করেছেন।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ব্যাংককের পূর্বদিকে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেনে বিয়ের কাজটি সারেন তারা। হাতির র্যা লির সামনেই ছিল নৃত্যশিল্পী ও ব্যান্ড পার্টি। হাতিগুলোর পিঠে ছিলেন প্রেমিক জুটি। বিয়ের কাজটি সারতে পৃথক হাতিতে ছিলেন স্থানীয় এক কর্মকর্তা।
পাটিফাত প্যান্থানন নামে এক বর বলেন, আমি অনেক দিন ধরেই পরিকল্পনা করছিলাম, আমি যদি বিয়ের লাইসেন্সে স্বাক্ষর করতে পারি তাহলে এটি হবে ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান।
হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে অবশ্য থাইল্যান্ডে নতুন কিছু নয়। প্রতি বছর চনবুরি প্রদেশের নং নুচ ট্রপিক্যাল গার্ডেনে এই আয়োজন হয়ে থাকে। অন্য বছর প্রায় ১০০ জুটির বিয়ে হলেও এবার করোনার কারণে সংখ্যা ছিল কম। সূত্র: রয়টার্স
এফএ
মন্তব্য করুন
তাইওয়ানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, কাঁপল চীন-ফিলিপাইন-জাপানও
গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল পূর্ব এশিয়ার তাইওয়ান। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫।
বুধবার (৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকালের দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তাইওয়ানের পাশাপাশি চীন, ফিলিপাইন এবং জাপানেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের পর ৯ দশমিক ৮ ফুট উচ্চতার সুনামির সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানায়, জাপানের স্থানীয় সময় সকাল ৯টার (বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা) কিছু আগে তাইওয়ানের কাছে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ভূপৃষ্ঠের ৩৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, তাইওয়ানে শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে কিছু ভবন কেঁপে উঠেছে এবং দ্বীপাঞ্চলটির পূর্ব অংশে ভূমিধস হয়েছে।
তাইপেইতে ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পরে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে আফটারশক অনুভূত হতে থাকে।
এর আগে, ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। তাতে ২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়। সূত্র: আল জাজিরা ও দ্য জাপান টাইমস।
তাইওয়ানে ভূমিকম্প : ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার
তাইওয়ানে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। দ্বীপাঞ্চলটিতে গত ২৫ বছরের মধ্যে ঘটা সবচেয়ে শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় ৭ টা ৫৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তাইওয়ানের পাশাপাশি চীন, ফিলিপাইন ও জাপানেও কম্পণ অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন শহরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ পর্যন্ত চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বীপজুড়ে অন্তত ১০০ ভবন ধসে গেছে। ধ্বংস্তূপের নিচে অন্তত ৭৭ জন মানুষ আটকা পড়েছেন।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল তাইওয়ানের হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ভূপৃষ্ঠের ৩৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা। ভূমিকম্পের পর ৯ দশমিক ৮ ফুট উচ্চতার সুনামির সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
দ্বীপভূখণ্ডের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাইওয়ানজুড়ে অন্তত ১০০ ভবন ধসে পড়েছে ভূমিকম্পে। এই ১০০ ভবনের অর্ধেকই হুয়ালিয়েন শহরের। দুর্যোগ কেটে যাওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন জরুরি কর্মীরা।
তাইওয়ানের ভূকম্পণ পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা সংস্থা তাইপে সিসমোলজি সেন্টারের পরিচালক উ শিয়েন ফু বিবিসিকে বলেছেন, গত ২৫ বছরের মধ্যে তাইওয়ানে এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।
এর আগে, ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। তাতে ২ হাজার ৪০০ মানুষের মৃত্যু হয়।
এক চার্জে ১২০০ কিলোমিটার, দাম শুরু ৩.৪৭ লাখ থেকে
বিশ্বের গাড়ি শিল্পে বৈদ্যুতিক গাড়ি (Electric Car) বড় এক মাত্রা যোগ করেছে। এই গাড়ি পরিবেশবান্ধব। অন্যদিকে এটি জ্বালানি-সাশ্রয়ী। এই গাড়ির জ্বালানি খরচ প্রচলিত গাড়ির পাঁচ ভাগের একভাগ মাত্র। এত সুবিধা থাকার পরও যত এটি জনপ্রিয় হওয়ার কথা ছিল, ততটা হচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ এর চার্জিং সমস্যা।
তবে বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জ নিয়ে ভয়ের দিন শেষ হতে চলেছে। চীনের গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানি ফার্স্ট অটো ওয়ার্কার্স (এফএডব্লিউ) এমনই এক বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে এসেছে এক চার্জেই যা চলতে পারবে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার। খবর মিলেছে ফাস্ট অটো ওয়ার্কার্স অর্থাৎ এফএডব্লিউ বেস্টুন ব্র্যান্ডের অধীনে Xiaoma ছোট বৈদ্যুতি হ্যাচব্যাগ চালু করেছে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন রিপোর্ট সূত্রে খবর মিলেছে এই মাস থেকে গাড়িটির প্রাক বিক্রয় শুরু হবে। এমনও খবর সামনে আসছে যে প্রাথমিকভাবে এই গাড়িটি Wuling Hongguang MINI EV এর সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করবে। যা এই Bestune Xiaoma দাম রাখা হয়েছে আনুমানিক ৩.৪৭ লক্ষ থেকে ৫.৭৮ লক্ষ টাকা।
প্রসঙ্গত, এই বছরের শুরু থেকেই সাংহায় অটো শোতে Bestune Xiaoma উন্মোচিত করেছিল। এর হার্ড টপ এবং কনভার্টেবল উভয়ই সংস্করণ প্রদর্শন করা হয়েছিল। তবে জানা গেছে বর্তমানে শুধুমাত্র হার্ডটপ ভেরিয়েন্ট বিক্রি করা হচ্ছে।
গাড়িটিতে একটি ৭ ইঞ্চি টাচস্ক্রিন ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম দেওয়া হয়েছে। ড্যাশবোর্ডেও রয়েছে একটি আকর্ষণীয় ডুয়াল টোন থিম। এতে ইভি ও রেঞ্জ এক্সটেন্ডার ডেডিকেটেড চ্যাসিস রয়েছে। বর্গাকার হেডল্যাম্প ঐ গাড়ির পিছনে টেলল্যাম্প লক্ষ্যণীয়।
জানা যাচ্ছে, এই মাইক্রো ইভি পিছনের এক্সেল এর ওপর অবস্থিত একটি সিঙ্গেল ২০ কিলোওয়াট বৈদ্যুতিক মোটর দ্বারা চালিত হয়। গাড়িটি লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি দিয়ে সজ্জিত। তবে পাওয়ার ট্রেন সম্পর্কে এর থেকে বেশি বিস্তারিত তথ্য মেলেনি। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গাড়িটিতে দেওয়া হয়েছে এয়ার ব্যাগ। গাড়িতে তিন দরজার কনফিগারেশন রয়েছে। V আর্কিটেকচার সমর্থিত এই গাড়ির আরও আপডেট অতি শীঘ্রই পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কেন এত সোনা কিনছে চীন!
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রচুর পরিমাণে স্বর্ণ কিনেছে৷ ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ ও গাজার সংঘাতের পাশাপাশি চীনের এ পদক্ষেপের কারণে বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে৷
ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে সুদের হার কমানোর চেষ্টা ও চীনের স্বর্ণ জমা করার কারণে এ সপ্তাহে প্রথমবারের মতো মূল্যবান এ ধাতুটির দাম দুই হাজার ২১২ ইউরো ছাড়িয়েছে৷ বিনিয়োগকারীরা বৈশ্বিক অস্থিরতা ও মুদ্রাস্ফীতির সময় স্বর্ণকে একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসাবে বিবেচনা করেন৷ তাই করোনা পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত মুদ্রাস্ফীতি, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেনে চলমান সংঘাত স্বর্ণের সাম্প্রতিক মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে৷
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, পিপলস ব্যাংক অফ চায়নার (পিবিসি) এই পদক্ষেপে উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও প্রভাবিত হয়েছে৷ তারাও স্বর্ণের রিজার্ভ বাড়াতে আগ্রহী হয়ে উঠছে৷
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের মতে, পিবিসি সবশেষ ১৬ মাস ধরে তার স্বর্ণের রিজার্ভ বাড়িয়েছে৷ ২০২৩ সালে অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তুলনায় পিবিসি বেশি স্বর্ণ কিনেছে৷ সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে চীন ২২৫ মেট্রিক টন স্বর্ণ কিনেছে৷ যা বিশ্বের অন্য সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কেনা এক হাজার ৩৭ টনের প্রায় এক চতুর্থাংশ৷ এ মুহূর্তে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে প্রায় দুই হাজার ২৫৭ টন স্বর্ণ মজুদ আছে৷
পিবিসির পাশাপাশি, চীনের সাধারণ নাগরিকেরাও স্বর্ণের মুদ্রা, বার ও গহনা কিনছেন৷ ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের প্রধান মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিস্ট জন রিড গত মাসে ব্লুমবার্গ টিভিকে বলেন, বছরের শুরু থেকেই আমরা চীনকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ কিনতে দেখেছি৷ চীনের অভ্যন্তরীণ সাংহাই গোল্ড এক্সচেঞ্জে রেকর্ড পরিমাণ বেচাকেনা দেখেছি৷
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য চীন মার্কিন ডলারের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল৷ বিশ্বের সংরক্ষিত মুদ্রা হিসাবে, বেশিরভাগ পণ্যের দাম ডলারে হয় ও বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি বাণিজ্য মার্কিন ডলার ব্যবহার করে পরিচালিত হয়৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য গত ৩০ বছরে চীন বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করেছে, যার বেশিরভাগই ডলার৷ একই পরিস্থিতি ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) গোষ্ঠীর অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ৷ এ দেশগুলোর অর্থনীতি ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করতে প্রস্তুত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ব্রিকস ভবিষ্যতে একটি অভিন্ন মুদ্রা চালু করার কথাও ভাবছে৷ যা বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ মুদ্রা হিসাবে পরিচিত মার্কিন ডলারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে৷
ওয়াশিংটন তার বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান বজায় রাখতে ডলারকে কিভাবে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে তা নিয়ে চীনসহ ব্রিকস এর সদস্য দেশগুলো উদ্বিগ্ন৷ ডলারে বিনিময়ের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক কম খরচে ঋণ নিতে পারে৷ উদাহরণস্বরূপ, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সময় ওয়াশিংটন এই মুদ্রাকে কূটনীতির হাতিয়ার হিসাবেও ব্যবহার করতে পারে৷ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক রিজার্ভ জব্দ করাসহ মস্কোর উপর বেশ কয়েক দফা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷
মার্কিন চাপের মুখে, বেশিরভাগ রাশিয়ান ব্যাংককে সুইফট পেমেন্ট সিস্টেম থেকে বের করে দেওয়া হয়৷ সুইফট পেমেন্ট সিস্টেম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সহজেই লেনদেন করা যায়৷ এছাড়াও ভবিষ্যতে চীন যদি তার সামরিক শক্তি আরও কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় বা ওয়াশিংটনের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়ায় , তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একইরকম নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারে বলে চিন্তিত চীনের রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ৷
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, তার দেশ প্রয়োজনে বলপূর্বক তাইওয়ানকে পুনরায় দখল করতে পারে৷ গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিকে বেইজিং তার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে৷
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বর্ণ কেনার এই ধারা আরও কয়েক বছর ধরে চলমান থাকবে৷ এ প্রক্রিয়াটিকে ডলারের বিকল্প তৈরির একটি সংকেত হিসেবে দেখছেন তিনি৷
ঈদের তারিখ ঘোষণা করল মালয়েশিয়া
এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। দেশটিতে বুধবার (১০ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) রাত ৮টায় কিপার অব দ্য গ্রেট সিল অব দ্য কিংস, তান শ্রী সৈয়দ দানিয়াল সৈয়দ আহমদের ঈদ উদযাপন সম্পর্কিত এ ঘোষণা দেশটির রেডিও ও টেলিভিশনেও সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
সৈয়দ দানিয়াল সৈয়দ আহমদে বলেন, সারাদেশে ২৯টি স্থানে চাঁদ দেখার ফলাফলের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতরের (হারি রায়া আদিলফিত্রী) তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামা সূত্রে জানা যায়, ইয়াং ডি পারতুয়ান আগাংয়ের (রাজা) এবং প্রধানমন্ত্রী চাঁদ দেখা কমিটির সাথে একমত পোষণ করেছেন। তাই মালয়েশিয়ায় বুধবার পবিত্র উদুল ফিতর পালন করা হবে।
এদিকে, বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখতে বৈঠকে বসছে ‘জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি’। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে এ বৈঠক শুর হয়।
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও চাঁদ দেখা গেলে তা ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬ ও ০২-৪১০৫০৯১৭ টেলিফোন নম্বরে ফোন করে এবং ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১ নম্বরে ফ্যাক্স করে বা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানোর অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
ধ্বংস, মৃত্যু আর ক্ষুধার মধ্যেই গাজাবাসীর ঈদ
ঈদ মানে উৎসব। আর ঈদ মানেই নতুন জামা, সকালের নামাজ, স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করা হলেও গাজাবাসীর দিনটি কাটবে স্বজন হারানোর বেদনা, বোমায় বিধ্বস্ত মসজিদের দুঃসহ স্মৃতির মধ্যে। ক্ষুধা, বাবা-মা, ভাই-বোনের মৃত্যুর শঙ্কা এই উপত্যকার মানুষের পিছু ছাড়ছে না।
গাজাবাসীরা রাস্তায় নেমে তাকবির পাঠ করে মাহে রমজানের সমাপ্তি এবং ঈদুল ফিতরকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাস্তুচ্যুতও স্বজন হারানো ফিলিস্তিনিদের অনেকে ঈদ ঘিরে টুকটাক কেনাকাটা করেছেন। ঈদের আগে হাজারো ফিলিস্তিনি গাজার কিছু অংশে বাজারগুলোতে ভিড় জমান।
সাধারণত ঈদ বলতে পরিবারের সদস্যদের জমায়েত এবং এই উৎসব পালন করতে বিশেষ ধরনের খাবার তৈরি করাকে বোঝায়। কিন্তু এ দুটিরই অনুপস্থিতি ও চলমান যুদ্ধের কারণে শিশুদের শুধুমাত্র তাদের আগের স্মৃতি ধারণ করেই থাকতে হবে। পুরো গাজা ভূখণ্ড জুড়ে সতের লাখ বাস্তুচ্যুত লোক কঠোর পরিস্থিতিতে বাস করছে এবং খাদ্য ও পানির তীব্র সংকটে তারা ত্রাণ সহায়তার উপর নির্ভর করে।
গাজা ভূখণ্ডে যত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদের মধ্যে এক শতাংশ শিশু অনাথ হয়েছে অথবা তাদের দেখাশোনা করার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক কেউ নেই বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ।
সংস্থাটি ধারণা, গাজা ভূখণ্ডে অন্তত ১৭ হাজার শিশু সঙ্গীহীন অবস্থায় রয়েছে অথবা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাবা -মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একা হয়ে পড়েছে।
ফিলিস্তিনি সংগীতশিল্পী মুসাব আল ঘামরি বলেন, ঈদের দিনটি আমরা হারাতে দিতে পারি না। বোমাবর্ষণ, ভয়, মৃত্যুর মধ্যেও ঈদের উদযাপনে শিশুদের আনন্দ দিতে চাই।
এদিকে ফিলিস্তিনিদের সামর্থ্য ও অবিচলতার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে টেলিগ্রামে বিবৃতি দিয়েছে হামাস। এতে সংগঠনটি বলেছে, পশ্চিম তীর, জেরুজালেম, অধিকৃত (ঐতিহাসিক) ফিলিস্তিনে এবং সারা বিশ্বের বাস্তুচ্যুতি শিবিরে থাকা জনগণ আমাদের সঙ্গে এবং গাজার জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে।
এতে বলা হয়েছে, ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে আমরা আরব ও ইসলামিক দেশগুলোকে অভিনন্দন জানাই। আমরা আশা করি, ফিলিস্তিনিদের জন্য এবং ইসরায়েলি দখলদারত্বের অবসানের লক্ষ্যে প্রকৃত সমর্থন বাড়তে থাকবে।
লায়ান ও তার ১৮ মাস বয়সী বোন সিয়ার। পরিবারের বাকি সদস্যরা গাজায় অক্টোবরের বোমা হামলা থেকে বাঁচতে শহরের আল আহলি হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলো। সে সময় তারা নিহত হয়। লায়ান সেই রাতে তার পরিবারের ৩৫ সদস্যকে হারায়। তাদের মধ্যে বাবা–মা ও নিজের পাঁচ ভাই বোন ও ছিলো।
তাদের পরিবারে একমাত্র তারাই এখন বেঁচে রয়েছে।
এগার বছর বয়সী লায়ান বলে, এই ঈদ অন্য কোন ঈদের মতো নয় কারণ যুদ্ধ চলছে। আমরা আমাদের পরিবার হারিয়েছি। আমাদের পরিবার হাসপাতালে পৌঁছানোর মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে দুইটা ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের ওপর আঘাত করে। আমি জেগে উঠে দেখলাম, আমার পরিবারের সব সদস্যরা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ৪৩ হাজারের বেশি শিশু বাস করে যাদের একজন বা বাবা-মা উভয়ই নেই।
গাজাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, গাজায় দুর্ভোগের কারণে অনেক অস্ট্রেলীয় মুসলিমের ঈদ দুঃখে কাটবে। এটি অনেকের জন্য কষ্টদায়ক এবং আতঙ্কের সময়। আমি আশা করি, আপনারা পরিবার ও বন্ধুদের মধ্যে কিছু সান্ত্বনা এবং শক্তি এবং বিশ্বাসের অভিব্যক্তি খুঁজে পাবেন।
এদিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডেনিস ফ্রান্সিস গাজায় অকল্পনীয় চ্যালেঞ্জের বিষয়টি স্বীকার করে ঈদবার্তায় সমবেদনা ও সংহতির আহ্বান জানান।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামি সংগঠন হামাস। এতে এক হাজার ১৩৯ জনের প্রাণহানি ঘটে। এ সময় ২৫০ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে হামাস। হামলার জবাবে গাজায় নজরবিহীন হামলা চালাতে শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এ পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৩৬০ ফিলিস্তিনির প্রাণ নিয়েছে তারা। আহত হয়েছেন অন্তত ৭৫ হাজার ৯৯৩ জন।
সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে জাপান-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক
হোয়াইট হাউসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনা হুমকি মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হতে পারে এ সাক্ষাতে৷
মঙ্গলবার রাতে হোয়াইট হাউসে জাপানের সরকারপ্রধানকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট৷ এর মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের যুক্তরাষ্ট্র সফর শুরু করলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা৷ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীন এবং উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে পাওয়া হুমকি মোকাবিলায় জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করবেন দেশ দুটির দুই শীর্ষ নেতা৷ ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৬০ সালের পর সামরিক খাতে এবারই ওয়াশিংটন ও টোকিওর মধ্যে বড় ধরনের অগ্রগতি দেখা যাবে৷
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান জানিয়েছেন, এই দুই নেতা আমাদের সামরিক বাহিনীর সমন্বয় ও একীকরণের বিষয়ে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়ানোর ঘোষণা দেবেন বলে আশা করছি৷
কিশিদার সফরে যা থাকছে স্ত্রী ইউকোকে নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছেন কিশিদা৷ তাই হোয়াইট হাউসে তাদের স্বাগত জানানোর সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে দেখা গেছে ফার্স্ট লেডি জিলকেও৷
বুধবার রাষ্ট্রীয় নৈশভোজের আগে জিল বাইডেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের দেশগুলো এমন একটি বিশ্বের অংশীদার যেখানে আমরা ধ্বংসের বদলে সৃষ্টি, রক্তপাতের পরিবর্তে শান্তি এবং স্বৈরাচারের বদলে গণতন্ত্রকে বেছে নিই৷
বুধবার দেশ দুটির মধ্যে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে৷ এরপর বৈঠকে বসবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী৷ বৈঠক শেষে রোজ গার্ডেনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসবেন দুই নেতা৷
বৃহস্পতিবার জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং ফিলিপাইনসের মধ্যে একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবেন জো বাইডেন৷ সেখানে উপস্থিত থাকবেন ফিলিপাইনসের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস৷ প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের পর দ্বিতীয় জাপানি নেতা হিসাবে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেবেন কিশিদা৷ এরপর তিনি যোগ দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে বিশেষ নৈশভোজে৷ গত বছরের আগস্টে সবশেষ যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন কিশিদা৷ সেবার সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল৷
গত মাসে জাপানের নিপ্পন স্টিলের কাছে ইউএস স্টিল বিক্রির বিরোধিতা করেছিলেন বাইডেন৷ এ ঘটনায় কিশিদার সঙ্গে তার সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল৷ যা এখন সম্পূর্ণ বদলে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।