আজ রাতে গান শোনাবেন ড. মাহফুজুর রহমান
ক’বছর ধরে ঈদকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনায় থাকেন ড. মাহফুজুর রহমানের সংগীতানুষ্ঠান। বরাবরের মতো এবারও শ্রোতাদের জন্য একক সংগীতানুষ্ঠান নিয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি।
বুধবার (২১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় এটিএন বাংলা চ্যানেলে প্রচার হবে ‘তোমাকেই চাই’ সংগীতানুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানে ১১টি মৌলিক গান নিয়ে হাজির হবেন চ্যানেলটির কর্ণধার মাহফুজুর রহমান।
জানা গেছে, গানগুলোর কথা ও সুর করেছেন রাজেশ ঘোষ, মান্নান মোহাম্মদ। গানগুলোর ভিডিও দেশের বিভিন্ন মনোরম লোকেশন এবং এটিএন বাংলার স্টুডিওতে ধারণ করা হয়েছে।
গানগুলোর শিরোনাম হলো- ‘বাঁচতে পারবো না’, ‘তোমাকেই চাই’, ‘খুব বেশি ভালোবাসি’, ‘এ বুকে শুধু তুমি’, ‘কেন দূরে থাকো’, ‘খুব সহজে, ভাবি আমি যতবার’, ‘সুখের রঙ’, ‘তুমি আমার’, ‘ভেবেছিলে তুমি’ ও ‘চাঁদ রুপসী’।
এসআর/
মন্তব্য করুন
কেন এত জনপ্রিয় ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি’ গানটি
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। ঈদ আসলেই টিভি চ্যানেল থেকে শুরু করে সব জায়গায় নতুন নতুন কনটেন্ট দেখা যায়। তবে সবার প্রিয় এই উৎসবটি এলেই সবার কানে বাজতে থাকে ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি’ গানটি। এটি শোনেননি, এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। ছোট থেকে বড় প্রায় সব বয়সের মানুষই গানটির সঙ্গে এখন পরিচিত। গানটির এত জনপ্রিয়তা থাকলেও এটি কেন জনপ্রিয় এবং এর শুরু কীভাবে―তা হয়তো অজানা অনেকের।
২০০৯ সাল, অর্থাৎ দীর্ঘ পনেরো বছর আগে বেসরকারি একটি মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য গানটি লিখেন প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন কর্মকর্তা আনিকা মাহজাবিন। ২০১১ সালে অবশ্য প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে দেন তিনি। তবে ওই সময় তার লেখা গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেন তরুণ প্রজন্মের সংগীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ এবং এতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন সংগীতশিল্পী মিলন মাহমুদ।
‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি’ গানটি বিজ্ঞাপনচিত্রের থিম সং হলেও গান হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে এটি। প্রকাশের প্রায় দেড় দশক হলেও এখনো এর কদর একদমই কমেনি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আবেগের সঙ্গে মিশে গেছে গানটি। প্রতিবছরই ঈদযাত্রায় বাড়ি ফেরা মানুষের মুখে মুখে শোনা যায় গানটির কথা। আবার যেসব মানুষ জীবিকার প্রয়োজনে পরিবারের সদস্য ছেড়ে কর্মস্থলে ঈদ করেন, তাদেরও অনেক অনুভূতির মিশেল পাওয়া যায় গানটির কথায়।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে গানটি নিয়ে শ্রোতাদের উন্মাদনার ব্যাপারে এর গীতিকার আনিকা মাহজাবিন বলেন, আমাদের সময়ের কথা ভেবে খুবই ভালো লাগে। গানটির কথার সঙ্গে এর সুর ও কণ্ঠের জন্যও ভালোবেসে হৃদয়ে জায়গা দিয়েছেন মানুষ।
২০০৯ সালের ঘটনা। ঈদের খুব বেশি বাকি নেই তখন। ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে একটি বিজ্ঞাপনচিত্র করতে হবে। আনিকা মাহজাবিন অতীত মনে করে বলেন, খন্দকার আশরাফুল হক সরোজ বলেন, কিছু একটা করতে হবে। তখন লিখে ফেলি কথাগুলো ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি, আমার পথ দেব পাড়ি, কাছে যাব ফিরে বারবার’।
এরপর গানটি হাবিব ওয়াহিদ সুর করেন। তার ধানমন্ডির হোম স্টুডিওতে গানটির কথাগুলো পান সংগীতশিল্পী মিলন মাহমুদ। তিনি বলেন, গানটির সুর হওয়ার পর হাবিব নিজেই গাইছিল। আমি বললাম, তোমার কণ্ঠেই ভালো হচ্ছে। তখন হাবিব বলল, আপনি শুধু ভয়েসটা দিয়ে দেখেন, তারপর দেখেন কী ঘটে। ভয়েস দেয়ার পর তো অনুভূতিই পাল্টে গেল। এরপর গ্রামীণফোনের কাছে পছন্দ হয় গানটি। যা দিয়ে পরবর্তীতে বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ করেন কিসলু গোলাম হায়দার। এরপর গানটির ভিডিওচিত্র তৈরি করেন রম্য খান। যা বিভিন্ন রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট ও টেলিভিশনে দেখানো হয়েছিল।
‘স্বপ্ন বাড়ি যাবে’ প্রকাশের পর ব্যাপক সাড়া ফেললে এর সাত বছর পর ২০১৬ সালে ‘স্বপ্ন বাড়ি যাবে-২’ তৈরি করা হয়। এটিও বিজ্ঞাপনের থিম সং ছিল। যার সুর ও সংগীতায়োজন করেন হাবিব ওয়াহিদ। রাসেল মাহমুদের লেখায় গানটিতে কণ্ঠ দেন সংগীতশিল্পী মিথুন চক্র।
এটিও প্রকাশের পর ব্যাপক সাড়া ফেলে। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন, ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি ২’ গানটি হাবিব ওয়াহিদের বা মিলন মাহমুদের। আসলে তা নয়, এটি গেয়েছেন মিঠুন চক্র। দুটি গানের শিরোনাম একই হলেও কথা একদমই আলাদা। এর গীতিকারও আলাদা। কিন্তু দুটি গানেরই সুরে কিছুটা মিল থাকায় দ্বিধায় পড়তে হয় দর্শক-শ্রোতাদের। আর ২০২২ সাল থেকে ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি ২’ গান নিয়েই নিয়মিত বিজ্ঞাপনচিত্র করছে মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানটি।
জুটি বাঁধলেন হৃদয় খান-ন্যান্সিকন্যা রোদেলা
হৃদয় খানের সঙ্গে বহুবার জুটি বেঁধেছেন সঙ্গীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি। মায়ের পর এবার এই গায়কের সঙ্গে জুটি বাঁধলেন ন্যান্সিকন্যা রোদেলা। ইতোমধ্যে সঙ্গীতাঙ্গনে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছেন তিনি।
এবার ‘হোক বদনাম’ শিরোনামের একটি গানে হৃদয়ের সঙ্গে দেখা যাবে রোদেলাকে। এসএ হক অলীকের কথায় গানটির সুর ও সংগীতায়োজনও করেছেন গায়ক নিজেই। ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে গানটি।
গানটি নিয়ে হৃদয় বলেন, রোদেলা খুব ট্যালেন্টেড একজন গায়িকা। আমার মনে হয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে ভালোই করতে থাকবে। ‘হোক বদনাম’ গানটি সে অসাধারণ গেয়েছেন। আমার বিশ্বাস শ্রোতাদের ভালো লাগবে গানটি।
রোদেলা বলেন, হৃদয় আঙ্কেলের সঙ্গে প্রথম জুটি বেঁধে গান করলাম। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। কারণ আমার মা তার সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক গানই গেয়েছে। আমার পছন্দের তালিকাতেও রয়েছে তাদের গান। এবার আমি নিজেই গান করলাম তার সঙ্গে। আশা করছি দর্শক-শ্রোতাদের ভালো লাগবে।
এদিকে হৃদয়-রোদেলার গানটি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ন্যান্সিও। কারণ মেয়ের আগে হৃদয়ের সঙ্গে একাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি নিজেও। এবার এই গায়কের সঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন ন্যান্সিকন্যা।
‘বিশ্বে মেয়েদের গানের দল হিসেবে হয়তো আমরাই প্রথম’
পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মহিলা লোকগানের দল ‘মাদল’। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছে বাংলাদেশে। কাজসহ নানা বিষয় নিয়ে দলটি মুখোমুখি হয়েছিল আরটিভি অনলাইনের।
‘মাদল’-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বর্তমান দলনেতা শিখা ভট্টাচার্য্য বলেন, ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী আয়োজিত ‘বর্ষবরণ উৎসব ১৪৩১’ দেখতে এসেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো অন্যান্যবার এলে কিংবদন্তি গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর ভাইকে পাই। এবার এসে তাকে পেলাম না। তিনি আমাদের মাঝে আর নেই। তবে খুব মনে পড়ছে, তার সাথে কাটানো মুহূর্তের কথা। আমাদেরকে বোনের মতো স্নেহ করার কথা। এমন মনে হতো যে, আমরা যেন বাপের বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। আর তিনি ভাই হয়ে আমাদের দেখভাল করছেন। কী খাব, কী পরব, কী করলে আমাদের ভালো লাগবে, সবই ছিল তার মূল কাজ। এখন তার স্ত্রীও তার মতো করে আমাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। অনুষ্ঠানে আসবার জন্য আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। তাইতো এসেছি প্রিয় বাংলাদেশে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বে মেয়েদের গানের দল হিসেবে হয়তো আমরাই প্রথম। কারণ, অনেক দল হয়েছে। কিন্তু টিকে থাকেনি। আমরা সেই ২০০২ থেকে এখন অবধি আছি। কাজ করে যাচ্ছি। সবার ভালোবাসা পাচ্ছি।
লোকগান পরিবেশনের পাশাপাশি বাংলাদেশে নতুন গান করার ইচ্ছাও পোষণ করলেন তিনি। বললেন, বাংলাদেশ লোকসঙ্গীতের রত্নভাণ্ডার। এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তবে লোকগানের পাশাপাশি বাংলাদেশে কেউ যদি মনে করে, আমাদের দিয়ে, মাদলকে দিয়ে কোনো গান করাবে, তবে অবশ্যই আমরা সেই সুযোগটা নেব। এ ক্ষেত্রে আমাদের একটা চাওয়া, গানের কথা-সুর অবশ্যই পছন্দের হতে হবে।
বাংলাদেশের আতিথেয়তায় আপ্লুত মন্তব্য করে শিখা ভট্টাচার্য্য বলেন, বাংলাদেশে আসার কথা উঠলেই দিন গুনতে থাকি কবে যাব। কারণ, এখানে এলে মনে হয় বাড়িতেই আছি। দারুণ আতিথেয়তা, দারুণ! ভাষায় প্রকাশ করে যার সবটুকু বোঝানো যাবে না।
শিখা ভট্টাচার্য্য ছাড়াও দলে রয়েছেন আরও ৫ জন নারী সদস্য। যারা হলেন শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী, মালা চক্রবর্তী, টুপসী চ্যাটার্জী, পলাশপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য ও সোনিয়া ঘোষ সেন। এ ছাড়াও রয়েছেন ৬ জন যন্ত্রশিল্পী।
বৈশাখের ‘মেলায় যাইরে’ গান তৈরির পেছনের গল্প
পহেলা বৈশাখ এলেই চায়ের দোকান থেকে শুরু করে যেকোন আড্ডায় বাজতে শোনা যায় ‘মেলায় যাইরে মেলায় যাইরে’ গানটি। গানটি ১৯৯০ সালে জনপ্রিয় ব্যান্ড ফিডব্যাকের একটি অ্যালবামের শিরোনাম সংগীত হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছিল। গান তৈরির হিসেবে এবার ৩৪ বছর হতে চলছে। গানের বয়স বাড়লেও এর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও।
বৈশাখের এই গানের সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন বরেণ্য সংগীতশিল্পী মাকসুদুল হক। ১৯৯০ সালে গানটি যখন প্রকাশ পায় তখন তিনি যুক্ত ছিলো জনপ্রিয় ব্যান্ড ফিডব্যাকের সঙ্গে। ১৯৯৬ সালে ফিডব্যাক ছেড়ে ‘মাকসুদ ও ঢাকা’ ব্যান্ড গড়ে তোলেন মাকসুদুল হক। কীভাবে গানটি তৈরি হয়েছিল, সেই গল্প শুনিয়েছিলেন গানটির স্রষ্টা মাকসুদ।
মাকসুদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, গানটি লিখি ১৯৮৮ সালে । প্রথমত গানটি আমি একবারে লিখতে পারিনি। আমার সময় লেগেছিল দুই মাস। লেখার পর সাত-আটবার সংশোধন করেছি। এরপর সুর করেছি। স্টেজে আমরা গানটা পারফর্ম করাও শুরু করি। গানটি রেকর্ডিং একদিনে হয়নি। অনেক সময় লেগেছে। আমরা সেই সময় ডিজিটালে রেকর্ডিং করেছি। সেজন্যই সময় বেশি লেগেছিল। ঢাক, ঢোল, মন্দিরার শব্দ লাইভে বাজানো সম্ভব নয়। ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের কথা কাটাকাটি কত কিছু যে হয়েছে। রেকর্ডিং স্টুডিওতে গিয়েও বেগ পেতে হয়েছে অনেক। পুরো গান তৈরি হতে প্রায় এক থেকে দেড় বছর সময় লেগেছিল।
গানের জন্মকথা প্রসঙ্গে মাকসুদ দেশের এক পত্রিকায় তার লেখায় উল্লেখ করেছিলেন, কত সময় ব্যয় করে এর কথা লিখেছি, তার সঠিক হিসাব-নিকাশ হয়তো এখন দেওয়া সম্ভব নয়। এটুকু মনে আছে, গানে সেই চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছি, যা প্রতি বৈশাখে আমাদের চোখে পড়ে। অনেক শব্দের কাটিকুটি শেষে বেরিয়ে এসেছিল কিছু ছন্দোবদ্ধ কথা। লেখা শেষে নিজেই তাতে সুর বসিয়েছি। এরপর ফিডব্যাকে সদস্যদের সঙ্গে বসেছি কম্পোজিশন নিয়ে। বাদ্য বাদনেও অনেকটা সময় ব্যয় করতে হয়েছে। এরপর কণ্ঠে তুলি নিয়েছি গান। গেয়েছি মনপ্রাণ উজাড় করে, লেগেছে বাঙালির ঘরে ঘরে এ কি মাতন দোলা, লেগেছে সুরেরই তালে তালে হৃদয়ে মাতন দোলা; বছর ঘুরে এলো আরেক প্রভাতে, ফিরে এলো সুরেরই মঞ্জরি; পলাশ শিমুলগাছে লেগেছে আগুন, এ বুঝি বৈশাখ এলেই শুনি, মেলায় যাইরে, মেলায় যাইরে...। স্টুডিওতে গিয়ে রেকর্ড করা পর্যন্ত একটি গানের পেছনে কত সময় ব্যয় করতে হয়, তার লেখাজোখা থাকে না। কারণ, সংগীত কোনো কাজ নয়, একধরনের সাধনা। যারা গান করেন, তারা ভালো করেই জানেন, প্রতিটি সৃষ্টির পেছনে কতটা শ্রম-ঘাম ঝরাতে হয়। যা হোক, “মেলা” গানটি রেকর্ড করার পর আমি, ফোয়াদ নাসের বাবু, পিয়ারু খান, লাবু রহমান, সেকেন্দার আহমেদ খোকা—প্রত্যেকেই অন্য রকম এক সৃষ্টির স্বাদ পেয়েছিলাম।
১৯৮৮ সালে চট্টগাম মেডিকেল কলেজ হলে ফিডক্যাকের প্রথম কনসার্টে ‘মেলায় যাইরে মেলায় যাইরে’ গানটি প্রথম গাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মাকসুদ বলেন, সেই কনসার্টে আমরা প্রথম এই গান গাই। একেবারে নতুন গান। কিন্তু এটা শোনার পর ডাক্তার ও ছাত্র সবাই একসঙ্গে নেচেছে। সবার অনুরোধে সেদিন এই গান আমাদের দুবার গাইতে হয়েছিল।
নব্বই দশকে যখন গানটি তুমুল জনপ্রিয় তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখ করে এই জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী বলেন, ১৯৯২ সালে তো ল্যান্ডফোন ছিল । এক ভদ্রমহিলা বাসার ল্যান্ডফোনের নাম্বারে বারবার ফোন করেছিলেন আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য। যখন ফোন করতেন আমাকে তিনি বাসায় পেতেন না। আমার স্ত্রী এটা বলার পর একদিন আমি সেই ভদ্রমহিলার সঙ্গে ফোনে কথা বললাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, আপনার কাছে এই গান কি আমি জানি না। তবে আমার কাছে এই গান অনেক কিছু। আমার কোলে তিন মাস বয়সী শিশু এখন। তাকে কিছুতেই দুধ খাওয়ানো যেত না। অনেক কষ্ট হতো। একদিন আপনার গানটা ঘরে বাজছিল তখন আমার বাচ্চা হঠাৎ করেই দুধ খাওয়া শুরু করল। এখন এই গান না শুনলে আমার বাচ্চা দুধ খায় না। এই কথা শোনার পর আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি চলে এসেছিল। এখন মনে হয়, এটুকু ভালো কাজের জন্য ঈশ্বর আমাকে দিয়ে গানটা করিয়েছিলেন। সবার এসব ভালোবাসার আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, ওটা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয় যে ‘মেলায় যাইরে’ কত হাজার লোক তালি দিল, নাচল।
আভরাল-শাম্মীর গানচিত্র ‘তুমি আমার কে’
আভরাল সাহির কণ্ঠশিল্পীর পাশাপাশি এ সময়ের আলোচিত সুরকার ও সংগীতায়োজকদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন।
অন্যদিকে, শাম্মী বাবলী রবীন্দ্রভারতী ও শান্তিনিকেতন থেকে সংগীতে নিয়েছেন উচ্চশিক্ষা। তারা এবার সোমেশ্বর অলির কথায় জুটি বেঁধে গেয়েছেন ‘তুমি আমার কে’ শিরোনামের গান। গানটি অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সুলতান এন্টারটেইনমেন্ট থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে।
আভরাল ও শাম্মি বাবলীর দ্বৈত এই গানটির কাব্যমালা সাজিয়েছেন সোমেশ্বর অলি। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন আভরাল সাহির নিজেই।
কক্সবাজারের মনোরম লোকেশনে চিত্রায়ন করে অনেকটাই ভিন্ন আঙ্গিকে গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন সময়ের আলোচিত ভিডিও নির্মাতা মাহিন আওলাদ। ভিডিওতে দর্শক দেখতে পাবেন আভরাল সাহির ও মডেল অভিনেত্রী জেবা জান্নাতের রসায়ন।
নতুন এই গান নিয়ে আভরাল বলেন, ‘তুমি আমার কে’ গানটি চমৎকার একটি রোমান্টিক গান। আর গানের সঙ্গে মিল রেখেই দারুণ ভিডিও নির্মাণ করছেন মাহিন ভাই। আশা করছি গানটি সবার ভালো লাগবে।
‘অ্যালবাম মুক্তির সময়ই আমার নাম বদলে যায়’
জেনস সুমন, নব্বই দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনে প্রবেশ করেন তিনি। প্রথম অ্যালবাম ‘আর্শীবাদ’। এরপর একে একে আরও কিছু অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। তবে তার পরিচিতি পঞ্চম অ্যালবাম ‘একটা চাদর হবে’ দিয়ে। অ্যালবামের শিরোনাম সঙ্গীতটি শ্রোতাদের মুখে মুখে ছড়িয়ে যায়।
সম্প্রতি ‘আসমান জমিন’ শিরোনামে নতুন গান মুক্তি পেয়েছে তার। এর মধ্যে দিয়ে প্রায় ১৬ বছর পর ফিরলেন তিনি। দেশের একটি গণমাধ্যমকে গান ও গানের বাইরের বিষয় নিয়ে আলাপচারিতার মাঝেই তিনি জানান, তার নাম গালিব আহসান মেহেদি।
জেনস সুমন বলেন, আমার প্রথম অ্যালবামের নাম আশীর্বাদ। অ্যালবাম মুক্তির সময়ই আমার নাম বদলে যায়। আমি নিজেও জানতাম না। জেনস সুমন নামে আমার অ্যালবাম মুক্তি পেল। আমার নাম গালিব আহসান মেহেদি, ডাক নাম সুমন। সারগামের বাদল ভাই বললেন, তোমার কণ্ঠ জেমসের মতো। তাই জেনস সুমন দিয়েছি।
জেনস সুমন ও জেমস নিয়ে শ্রোতামহলে একটা কানাঘুষা সবসময়ই ছিল। তা-ই যেন উঠে এলো সুমনের কথায়।
তিনি বলেন, ২০০২ সালে মুক্তি পেল আমার পঞ্চম অ্যালবাম ‘একটা চাদর হবে’। এই অ্যালবামের শিরোনাম গানটি ছড়িয়ে পড়ল। বুঝলাম সব ধরনের মানুষ গানটা শুনছে। ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই আমাকে বলত আমার কণ্ঠ জেমস ভাইয়ের মতো। এই অ্যালবামের পর সেটা আরও ব্যাপকভাবে শুনতে লাগলাম। অনেকেই সে সময় আমাকে বলেছিল আমি জেমস ভাইয়ের বিকল্প। কিন্তু আসলে কেউ কারও বিকল্প হতে পারে না।
মিউজিক ভিডিওতে তোরসা
শাহ আবদুল করিম ও হাসন রাজার ভাটির দেশ থেকে ইট-পাথরের ঢাকা, প্রেম-বিচ্ছেদের সুখ কিংবা বেদনা থেকে রাজপথের মিছিল- সবকিছুর মেলবন্ধন ঘটায় যে মানুষ, সেই মানুষের গান গাওয়ার সংকল্প তুহিন কান্তি দাসের। প্রথমবারের মতো এই সঙ্গীতশিল্পী নিয়ে এলেন একক অ্যালবাম। এর নাম রেখেছেন ‘সন্ধ্যা নামিলো শ্যাম’।
অ্যালবামটিতে মোট চারটি গান। এগুলো হলো ‘সন্ধ্যা নামিল শ্যাম’, ‘আসমানেরও চাঁদ’, ‘দরদিয়া’ ও ‘হারিয়ে টের পাই’। তার মধ্যে ‘সন্ধ্যা নামিল শ্যাম’ গানটি সম্প্রতি ভিডিও আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
গানের ভিডিওতে মডেল হয়েছেন ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ-২১৯’ মুকুট জয়ী রাফাহ নানজিবা তোরসা। তার সঙ্গে ছিলেন খালিদ মাহমুদ সাদ। ফরিদপুরের বিভিন্ন নানন্দিক লোকেশনে ভিডিও নির্মাণ করেছেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। এরই মধ্যে গান-ভিডিও শ্রোতামহলে বেশ সাড়া ফেলেছে।
এ প্রসঙ্গে মডেল তোরসা বলেন, মিস ওয়ার্ল্ড হওয়ার আগে বেশকিছু মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছিলাম। তারপর অনেক প্রস্তাব এসেছিল কিন্তু করিনি। ‘সন্ধ্যা নামিল শ্যাম’ গানের নির্মাণ পরিকল্পনা, গান সবকিছু বেশ ভালো লাগে, তাই আগ্রহ নিয়ে কাজটি করেছি। গানটি প্রকাশের পর সবাই বেশ প্রশংসা করছে। আশা করছি, সব শ্রেণির গান-ভিডিও ভালো লাগবে।