মদ্যপ হয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে : বাঁধন
ব্যবসায়ি মাশরুর সিদ্দিকীর সঙ্গে ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। প্রথম দুই বছর ভালোই চলছিল তাদের দাম্পত্যজীবন। দুজনের যৌথ ভালোবাসায় জন্ম নেয় কন্যা সন্তান সায়রা। কিন্তু তিন বছরের মাথায় মাশরুর-বাঁধনের সংসারে লাগে ভাঙনের ঢেউ।
২০১৪ সালের আগস্টে তারা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। গত পাঁচ বছর ধরে মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে রয়েছেন বাঁধন। সম্প্রতি বাঁধনের স্বামী মাশরুর সিদ্দকী নতুন করে বিয়ে করেছেন। এবার মাশরুর তার মেয়েকে কানাডায় নিজের কাছে রাখতে চান। কিন্তু বাঁধন চান মেয়ে তার কাছেই থাকুক। চলতি বছরের ৩ আগস্ট পারিবারিক আদালতে মামলা করেছেন অভিনেত্রী বাঁধন।
বিবাহবিচ্ছেদ ও স্বামীর সঙ্গে বৈরি সম্পর্কের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে অভিনেত্রী বাঁধন আরটিভি অনলাইনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। আলাপচারিতার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হল।
বিবাহবিচ্ছেদ প্রসঙ্গে জানতে চাই?
আমাদের বিয়ে হয়েছিল ২০১০ সালে। বিয়ের পর আমাদের একটি সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু দুই বছরের মাথায় তার সঙ্গে সম্পর্কটা আর ভালো থাকে না। ২০১৪ সালে আমি সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসি। সে আমাকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠায়। বিবাহবিচ্ছেদ তখনও সম্পন্ন হয়নি। একদিন মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি নিয়ে আমাদের বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে এসে মারামারি করে। গেট ভাঙার শব্দে এলাকার লোকজন চলে আসলে সে পালিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে আমি কোথাও কোনো অভিযোগ করিনি। কিন্তু সে হয়তো ভেবেছে, আমি যদি মামলা করি? এই শঙ্কা থেকেই এর কয়েক দিন পরেই আমার বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকার চাঁদাবাজি মামলা করে। আমি নাকি তার কাছে চাঁদা চেয়েছি! মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিষয়টি নিয়ে আমি কোনো অভিযোগ করিনি।
আপনাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে কবে?
২০১৪ সালের আগস্ট মাসে বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু বিচ্ছেদের চূড়ান্ত কাগজ এখনো তুলিনি। তার কাছ থেকে দেনমোহরের টাকা, ভরনপোষণের খরচ কিছুই চাইনি আমি। এর মধ্যে মেয়েটা স্কুলে ভর্তি হয়, সে বাবার শূণ্যতা অনুভব করে। তখন মেয়ের কথা চিন্তা করে ওর বাবার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি। আমরা একসঙ্গে থাকা যায় কিনা এটা নিয়ে ভাবতে শুরু করি। গত বছর মেয়েকে নিয়ে আমরা মালয়েশিয়াতে ঘুরতেও যাই। এই ভ্রমণের সময় মেয়েকে নিয়ে আমরা একসঙ্গে থাকতে পারি কিনা এই বিষয়ে কথাও বলেছি। মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে অন্য একজনের মাধ্যমে জানতে পারি সে আরেকটি বিয়ে করেছে। তার বিয়ে নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। যেহেতু আমরা একসঙ্গে থাকছি না; তখন অন্য আরেকজনকে বিয়ে করতেই পারে।
হঠাৎ কেন মামলা করলেন?
আমার কাছ থেকে আমার সন্তানকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা জানতে পেরে মামলা করার চিন্তা করেছি। এ বছরের আগস্টে মেয়েকে ওর বাবা তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে তার বর্তমান স্ত্রী আমাকে ফোন করে বলে, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সায়রাকে আমরা কানাডা নিয়ে যাবো। সেখানেই সে বড় হবে। মেয়ের ভালো চিন্তা যদি করো তবে মেয়েকে অবশ্যই যেতে দিবে।’
আপনি কি বললেন?
আমি বললাম, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আপনি কে? আমার মেয়ে কোথায় থাকবে সেটা আমি ঠিক করবো। তখন সায়রার বাবা আমাকে জানায়, তারা সায়রাকে কানাডা নিয়ে যাবে। সন্তান হারানোর শঙ্কা থেকেই মামলা করেছি। আমি সন্তানকে আমার কাছে রাখতে চাই। বাবার সঙ্গে মেয়ের যোগাযোগ থাকুক সেটা নিয়েও আমার আপত্তি নাই। বাবার বাসায় কানাডাতে ঘুরতে যেতে পারে। কিন্তু সেখানে স্থায়ীভাবে থাকুক এটা চাই না।
বিষয়টি তো এখন আদালত মীমাংসা করবে
আদালতের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। মানুষ যখন তার অধিকার হারায় তখনই তো আদালতের কাছে যায়। আদালত আমার অসহায়ত্বটুকু বুঝতে পারবেন। একজন মা হিসেবে আমি শুধু সন্তানের অধিকার চাই। সন্তানকে নিয়ে আমার জীবন কাটাতে চাই।
আপনার স্বামী কি কোনো রকম শারীরিক নির্যাতন করেছে?
আমাকে নানা রকম অপবাদ দিয়েছে। আমি পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছি। এমন অপবাদও শুনতে হয়েছে। অনেক বিষয়ই সম্মানের কথা চিন্তা করে সামনে আনতে চাইনি। আমাদের বিয়ে হয়েছে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে। সাত বছরে বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেই জানতে চেয়েছেন; বেশ কয়েকজন সাংবাদিক জানতে চেয়েছেন। আমি অনুরোধ করেছি যেন বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি না হয়। সেলিব্রেটিদের কিছু হলে সেটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয় বেশি। মেয়ের কথা ভেবে চাইনি, এটা নিয়ে আলোচনা হোক।
এম
মন্তব্য করুন