• ঢাকা সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
logo
মেহেরপুরের ২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ বুধবার, প্রচার-প্রচারণা শেষ 
উপজেলা নির্বাচন : মন্ত্রীর ভাইয়ের হুমকিতে তোলপাড়  
মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর বড় ভাই ও মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল হোসেনের হুমকিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এক প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে দলেরই আরেক প্রার্থীর এজেন্ট থাকবে না বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি। ভোটকেন্দ্রে ওই প্রার্থীর কোনো এজেন্ট থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি। জনপ্রশাসনমন্ত্রী কোনো প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান না নিলেও তার ভাইয়ের এ বক্তব্য মন্ত্রীকে বিব্রত করেছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।  নেটিজেনদের মাধ্যমে পাওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের একটি নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখছেন ইকবাল হোসেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা এবং আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল ইসলাম সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী।  তার পক্ষে অবস্থান নিয়ে ইকবাল হোসেন বলেন, ৮ তারিখের নির্বাচনে শুধুমাত্র আনারুল ইসলামের (মোটরসাইকেল প্রতীক) ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট থাকতে পারবে না। এই আশরাফপুর গ্রামে কোনো এজেন্ট থাকবে না। শুধু আনারুল ভাইয়ের মার্কায় সিল মারা হবে। আর কোনো মার্কায় সিল মারতে দেওয়া হবে না। বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যা ৬টায় সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়নের আশরাফপুর গ্রামের ৭নং ওয়ার্ড স্কুলপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এক সভার আয়োজন করে। এতে ইকবাল হোসেন তার ২ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের বক্তব্যে এসব কথা বলেন।  নির্বাচনী সভায় ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘আনারুল ভাইসহ আরও চারজন প্রার্থী আছেন। আনারুল ভাই যদি নির্বাচনে না দাঁড়াতো তাহলে আমি ভোট করতে আসতাম না। আনারুল ভাই একজন যোগ্য প্রার্থী। উপজেলা চেয়ারম্যান এমন একজনকে করতে হবে, যে টোটাল উপজেলা আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে পারবেন। যে ব্যক্তি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে পারবে, যে নিজের জমি বেচে আওয়ামী লীগকে টিকাতে পারবে সেই ধরনের লোক আমরা উপজেলাতে চাই। আনারুল ভাই ছাড়া এই ধরনের কোনো লোক নেই। আর কোনো প্রার্থী নেই। তাই আজকে সেই ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মতো ওই রকম ভোট চাই আনারুল ভাইয়ের জন্য। একচেটিয়া ভোট হবে শুধু মোটরসাইকেলে। প্রত্যেকটি সেন্টারে মোটরসাইকেল জিতবে। আমরা শহরের লোকজন বুঝেছি যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে। আনারুল ভাইকে আমরা প্রতিটি সেন্টারে ব্যাপক ভোটে বিজয়ী করবো। এই আশরাফপুর গ্রামে কোনো এজেন্ট থাকবে না। শুধু আনারুল ভাইয়ের মার্কা মোটরসাইকেল মার্কায় সিল মারতে হবে। অন্য কোনো মার্কায় সিল মারতে দেওয়া হবে না।’ এ দিকে ইকবাল হোসেনের এ বক্তব্য নেটিজেনদের কাছে ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। তিনি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের বড় ভাই। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগের গ্রুপ রাজনীতির হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর পক্ষের প্রার্থী হলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহীন ও আমদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল ইসলাম। এ ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান এবং জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি হাসেম আলী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।  নেতাকর্মীরা জানান, জনপ্রশাসনমন্ত্রীর পক্ষের প্রার্থী অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহীন ও আনারুল ইসলামের মধ্য থেকে একজনকে সমর্থন দেওয়ার দাবি ছিল নেতাকর্মীদের কাছ থেকে। কোনো প্রার্থীর পক্ষে মন্ত্রী, এমপি ও তাদের স্বজনরা অবস্থান না নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কঠোরতা থাকায় জনপ্রশাসনমন্ত্রী নীরবতা পালন করেছেন। এরমধ্যে তার আপন ভাইয়ের এমন বক্তব্য মন্ত্রীকে বিব্রত করেছে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। ইকবাল হোসেনের বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহীন বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর ভাই ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি যদি বক্তব্য দেন তাহলে উপজেলা নির্বাচন জনগণের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এগুলো নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আকারে অভিযোগ জানানো হবে। জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন বলেন, আমদহ এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম ওই এলাকায় খুব জনপ্রিয় নেতা। আমি এ কারণে অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যাবে না বলে কথা বলতে গিয়ে এমন কথা মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। বিষয়টি ওইভাবে মনে করার কিছু নেই। তবে লিখিত অভিযোগ কিংবা ভিডিও ক্লিপ হাতে না আসা পর্যন্ত কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি এ নির্বাচনের রির্টার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা জেলা নির্বাচন অফিসার ওয়ালিউল্লাহ। 
মেহেরপুরে মিলছে না স্বস্তি, বাড়ছে তাপপ্রবাহ 
তীব্র তাপপ্রবাহে মেহেরপুরে স্কুল ছুটি দেওয়ায় স্বস্তি
মেহেরপুরে তীব্র তাপপ্রবাহ, ব্যাহত হচ্ছে ফসল ঘরে তোলার কাজ 
মেহেরপুরে গরমে বেড়েছে শরবতের চাহিদা, যত্রতত্র দোকান
দ্রুত সময়ের মধ্যে মুজিবনগরে স্থলবন্দর হবে : জনপ্রশাসনমন্ত্রী 
ঐতিহাসিক মুজিবনগরে স্থলবন্দরের কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, স্থলবন্দরের জন্য আমাদের এপারে যেমনি সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে ওই দিকেও (ভারতের অংশে) রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে।  বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক মুজিবনগর আম্রকাননে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, একটি স্থলবন্দর হতে গেলে দুই অংশের (বাংলাদেশ-ভারত) রাস্তাঘাট ঠিক করতে হয়। সেক্ষেত্রে আমরাও বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা মুজিবনগর-দর্শনা সড়কটি প্রশস্ত করেছি। এখান থেকে অন্যান্য সংযোগ সড়কগুলোর ডিপিপি কার্যক্রম চলমান আছে। স্থলবন্দরের জন্য দুদেশেরই কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, দ্বিপাক্ষিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে শিগগিরই স্থলবন্দর চালু হবে।’ এর আগে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জনপ্রশাসনম্ত্রী ও মেহেরপুর জলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন। এরপর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন তিনি। 
‘৮ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল’
৮ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক মুজিবনগর আম্রকাননে মুজিবনগর দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ৮ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া কেউ যদি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সেই মুক্তিযোদ্ধার সনদও বাতিল করা হবে। শিগগিরই  মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের নির্মাণকাজ শুরু করা হবে। এর আগে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মন্ত্রী।  মুজিবনগরের উন্নয়নের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য মুজিবনগরকে আন্তর্জাতিক মানের করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনসাপেক্ষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হবে।  এ দিকে সকাল সাড়ে ৯টায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা।  বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন।  এরপরে আম্রকাননে জাঁকজমকপূর্ণ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, আনসার, বিএনসিসি ও ছাত্রছাত্রীদের একাধিক দল কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন।  সকাল ১০টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা। সেখানে বক্তৃতা করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। 
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মুজিবনগর দিবসের সূচনা
আজ ১৭ এপ্রিল। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মেহেরপুরের মুজিবনগর মুজিবনগর আম্রকাননে পালিত হচ্ছে দিনটি। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকল ৬টার সময় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা করেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম ও মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার দত্ত্ব। এ ছাড়াও সকাল ৯টার সময় শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনসহ আওয়ামী লীগের কেদ্রীয় নেতৃবৃন্দ।  পরে কুচকাওয়াজ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, গার্ড অব অনার ও গীতিনাট্য পরিবেশন করা হবে। শেখ হাসিনা মঞ্চে শুরু হবে বিশাল জনসভা। যেখানে সভাপতিত্ব করবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ।
মেহেরপুরে মুজিবনগর দিবসে বিশেষ আয়োজন 
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে যে নামটি ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে, তা হলো মুজিবনগর দিবস। এ দিন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের নেতৃত্বে ছিল এই সরকার। একাত্তরের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের ঐতিহাসিক বৈদ্যনাথতলা তথা মুজিবনগর আম্রকাননে এ সরকারের শপথ হয়েছিল। যার মাধ্যমে পাল্টে গিয়েছিল যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি। সেই দিনটি স্মরণীয় করে রাখা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে এবার জাকজমকপূর্ণ বড় আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। মুজিবনগরকে বলা হয় স্বাধীনতার সূর্যোদয় ভূমি। যে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়েছিল সাত কোটি বাঙালির হৃদয়ে। তাই মুজিবনগর আর স্বাধীনতা এক সুতোয় গাঁথা রয়েছে বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।  সরেজমিনে মুজিবনগর কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, বৈদ্যনাথতলা আমবাগানে যেখানে একাত্তরে প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করেছিলেন, সেখানে শেখ হাসিনা মঞ্চে চলছে সাজসজ্জার কাজ। এ মঞ্চে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। দর্শনার্থীদের কাছে মুজিবনগরকে তুলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত স্থাপনাগুলো ধুয়েমুছে করা হচ্ছে পরিষ্কার। প্রবেশ পথগুলোতে রঙের আঁচড় দিয়ে ফুটিয়ে তোলার কাজও শেষ পর্যায়ে। মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ, আম্রকানন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স পেয়েছে এক নতুন রূপ।  মূলত জেলা প্রশাসন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দিবসটি ঘিরে বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে। জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে থাকছে, সকাল ৯টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন। জাকজমকপূর্ণ কুজকাওয়াজ। এতে অংশ নেবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউট, গালর্স গাইড এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা।  সকাল ১০টায় গীতিনাট্য সোনালি স্বপ্নের দেশ উপস্থাপন করবে আনসার ও ভিডিপি অর্কেস্ট্রা দল। একাত্তরের শপথের পর গার্ড অব অনার প্রদানকারী হিসেবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছেন ১২ আনসার সদস্য। স্বাধীনতা যুদ্ধে আনসার সদস্যদের আত্মত্যাগের স্মৃতি সমুন্নত রাখতে মুজিবনগর দিবসে আনসার ভিডিপির এই কর্মসূচি থাকে প্রতি বছরই।  এ দিকে সন্ধ্যা ৬টায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কেন্দ্রের সামনে আয়োজন করা হযেছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। দেশ বরেণ্য শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করবেন এ মঞ্চে। এ ছাড়াও আতশবাজি উৎসব আর রঙিন আলোর ঝলকানি থাকছে সন্ধ্যার পর থেকে। এ দিকে সকাল ১০টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে আলোচনার সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন।  সঞ্চালনায় থাকবেন আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক।  জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী এবং প্রথম সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা রিমিন হোসেন সিমি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হকসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন এ আলোচনা সভায়।  আয়োজন সম্পর্কে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ইতিহাসের অত্যন্ত গৌরবময় ঘটনার দিন মুজিবনগর দিবস পালনে এবারও নানা আয়োজন করা হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর অনুষ্ঠান আয়োজনে ছেদ পড়লেও এবার অত্যন্ত জাকজমকতার সঙ্গে হচ্ছে সব আয়োজন। যার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন মেহেরপুরসহ আশেপাশের জেলার মানুষ।  ৫০ হাজার মানুষের সমাগম হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।  দিবসটি আয়োজনের সকল প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত জানিয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, গরমে মানুষ যাতে কষ্ট না পান তার জন্য পানি পানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া অস্থায়ী টয়লেট, মেডিকেল টিমসহ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।  জাতীয় এ অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।  এ দিকে অনুষ্ঠান ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে জেলা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেরপুর পুলিশ সুপার এস এম নাজমুল হক বলেন, মেটাল ডিটেকটিভ দিয়ে তল্লাশি এবং আর্চওয়ে গেট স্থাপন করা হয়েছে। পুরো এলাকার নিরাপত্তা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। বাইরের জেলা থেকেও আনা হয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ফোর্স। এ ছাড়াও থাকছে র‌্যাবের কয়েকটি দলের টহল।  স্থানীয়রা জানান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর বাঙালির বিজয়ের গৌরবগাঁথা বীরত্ব মিশে রয়েছে একাত্তরের ১৭ এপ্রিল শপথের মধ্যে। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আরও সমুন্নত হবে এমনটাই প্রত্যাশা মেহেরপুরবাসীর। 
সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় ২ বাইসাইকেল আরোহী নিহত
মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে মেহেরপুর সদর উপজেলার চাঁদবিল নামকস্থানে ফ্রেশ কোম্পানির সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় দুই বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।  সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র হাসান আলী (২১)। তিনি সদর উপজেলার চাঁদবিল গ্রামের লিটন আলীর ছেলে। নিহত অপর একজনের নাম ও ঠিকানা এখন পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।  এ ঘটনায় ট্রাকচালক বাবুল আলীকে (৩৭) আটক করেছে পুলিশ। তিনি মাগুরা জেলার শালিখা গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে। তিনি ফ্রেশের সিমেন্ট কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন।  এ বিষয়ে মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আব্দুল করিম জানান, সকালে দুই যুবক বাইসাইকেল নিয়ে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের চাঁদবিল গ্রাম থেকে মেহেরপুরের দিকে আসছিলেন। এ সময় ফ্রেশ কোম্পানির সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক মেহেরপুরের দিকে আসছিল। চাঁদবিল মাঠের মধ্যে গিয়ে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইসাইকেল আরোহীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন ওই দুজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের দুটি দল ঘটনাস্থলে আসে। সেখান থেকে ট্রাকচালক বাবুলকে আটক করে পুলিশ। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহ উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে সড়ক পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় পুলিশ।  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের ওই চালক দুর্ঘটনার আগে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। সে কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগেও একই সড়কে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি দুর্ঘটনা ঘটেছে ভোর থেকে সকালের মধ্যে। দুর্ঘটনাগুলোর অন্যতম কারণ চালকের ঘুমিয়ে যাওয়া, এমন অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। একজন চালক টানা ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে ক্লান্ত হয়ে ভোরের দিকে ঘুম চোখে গাড়ি চালানোর বিষয়টিকে দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে করেন তারা।  বিষয়টি নিয়ে পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। তা না হলে এ দুর্ঘটনা আরও বাড়বে বলেও মনে করেন তারা।   
মেহেরপুরে ২ মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ১
মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপিতে ২ মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে হুরমত আলী (৫০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের আমঝুপি বীজ খামারের নিকট এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হুরমত আলী (৫০) মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। মরদেহ উদ্ধার করা মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুর সদর থানার ওসি কনি মিয়া। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত হুরমত আলী সার ও বিষ কেনার জন্য মোটরসাইকেলযোগে মেহেরপুর শহরে আসছিলেন। আমঝুপি বীজ খামারের নিকট এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দিলে রাস্তার পাশে পড়ে যান তিনি।  পরে স্থানীয়রা খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।