• ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মেহেরপুরে মুজিবনগর দিবসে বিশেষ আয়োজন 

মেহেরপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৫
মেহেরপুরে মুজিবনগর দিবসে বিশেষ আয়োজন 
ছবি : আরটিভি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে যে নামটি ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে, তা হলো মুজিবনগর দিবস। এ দিন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের নেতৃত্বে ছিল এই সরকার।

একাত্তরের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের ঐতিহাসিক বৈদ্যনাথতলা তথা মুজিবনগর আম্রকাননে এ সরকারের শপথ হয়েছিল। যার মাধ্যমে পাল্টে গিয়েছিল যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি। সেই দিনটি স্মরণীয় করে রাখা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে এবার জাকজমকপূর্ণ বড় আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।

মুজিবনগরকে বলা হয় স্বাধীনতার সূর্যোদয় ভূমি। যে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়েছিল সাত কোটি বাঙালির হৃদয়ে। তাই মুজিবনগর আর স্বাধীনতা এক সুতোয় গাঁথা রয়েছে বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

সরেজমিনে মুজিবনগর কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, বৈদ্যনাথতলা আমবাগানে যেখানে একাত্তরে প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করেছিলেন, সেখানে শেখ হাসিনা মঞ্চে চলছে সাজসজ্জার কাজ। এ মঞ্চে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নেবেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। দর্শনার্থীদের কাছে মুজিবনগরকে তুলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত স্থাপনাগুলো ধুয়েমুছে করা হচ্ছে পরিষ্কার। প্রবেশ পথগুলোতে রঙের আঁচড় দিয়ে ফুটিয়ে তোলার কাজও শেষ পর্যায়ে। মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ, আম্রকানন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স পেয়েছে এক নতুন রূপ।

মূলত জেলা প্রশাসন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দিবসটি ঘিরে বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে। জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে থাকছে, সকাল ৯টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন। জাকজমকপূর্ণ কুজকাওয়াজ। এতে অংশ নেবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, বিএনসিসি, স্কাউট, গালর্স গাইড এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা।

সকাল ১০টায় গীতিনাট্য সোনালি স্বপ্নের দেশ উপস্থাপন করবে আনসার ও ভিডিপি অর্কেস্ট্রা দল। একাত্তরের শপথের পর গার্ড অব অনার প্রদানকারী হিসেবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছেন ১২ আনসার সদস্য। স্বাধীনতা যুদ্ধে আনসার সদস্যদের আত্মত্যাগের স্মৃতি সমুন্নত রাখতে মুজিবনগর দিবসে আনসার ভিডিপির এই কর্মসূচি থাকে প্রতি বছরই।

এ দিকে সন্ধ্যা ৬টায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কেন্দ্রের সামনে আয়োজন করা হযেছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। দেশ বরেণ্য শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করবেন এ মঞ্চে। এ ছাড়াও আতশবাজি উৎসব আর রঙিন আলোর ঝলকানি থাকছে সন্ধ্যার পর থেকে।

এ দিকে সকাল ১০টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে আলোচনার সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন।

সঞ্চালনায় থাকবেন আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী এবং প্রথম সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা রিমিন হোসেন সিমি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হকসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন এ আলোচনা সভায়।

আয়োজন সম্পর্কে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ইতিহাসের অত্যন্ত গৌরবময় ঘটনার দিন মুজিবনগর দিবস পালনে এবারও নানা আয়োজন করা হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর অনুষ্ঠান আয়োজনে ছেদ পড়লেও এবার অত্যন্ত জাকজমকতার সঙ্গে হচ্ছে সব আয়োজন। যার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন মেহেরপুরসহ আশেপাশের জেলার মানুষ।

৫০ হাজার মানুষের সমাগম হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

দিবসটি আয়োজনের সকল প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত জানিয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, গরমে মানুষ যাতে কষ্ট না পান তার জন্য পানি পানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া অস্থায়ী টয়লেট, মেডিকেল টিমসহ নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।

জাতীয় এ অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ দিকে অনুষ্ঠান ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে জেলা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেরপুর পুলিশ সুপার এস এম নাজমুল হক বলেন, মেটাল ডিটেকটিভ দিয়ে তল্লাশি এবং আর্চওয়ে গেট স্থাপন করা হয়েছে। পুরো এলাকার নিরাপত্তা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। বাইরের জেলা থেকেও আনা হয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ফোর্স। এ ছাড়াও থাকছে র‌্যাবের কয়েকটি দলের টহল।

স্থানীয়রা জানান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর বাঙালির বিজয়ের গৌরবগাঁথা বীরত্ব মিশে রয়েছে একাত্তরের ১৭ এপ্রিল শপথের মধ্যে। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আরও সমুন্নত হবে এমনটাই প্রত্যাশা মেহেরপুরবাসীর।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রিয়াদে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মুজিবনগর দিবসের সূচনা
মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
মুজিবনগর দিবসে উপজেলায় ছুটি, থাকছে নানা কর্মসূচি
X
Fresh