ফেনীতে ভুয়া এনএসআই সদস্য আটক
ফেনীতে সাইফুল করিম (৪৫) নামের এক ভুয়া এনএসআই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২২ মে) শহরের জেনারেল হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে একটি ভুয়া পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। ওই পরিচয়পত্রে তার নাম লেখা হয় মেজর সাইফুল ইসলাম রাজ। এতে পদবি লেখা ছিল এনএসআইয়ের অতিরিক্ত পরিচালক।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃত এ প্রতারকের বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায়।
মন্তব্য করুন
প্রতিবন্ধী সন্তানকে বিষ খাইয়ে হাসপাতালে নিলেন বাবা-মা, অতঃপর...
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আড়াই বছরের প্রতিবন্ধী সন্তানকে বিষ (কীটনাশক) খাইয়ে বাবা-মা হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া হয়েছে। এমন লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীমঙ্গলের ভূনবীর ইউনিয়নের রাজপাড়া গ্রামে।
শুক্রবার (১৭ মে) রাতে নিজ সন্তানকে ওই বাবা-মা হত্যা করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, ফারিয়া আক্তার নামের ওই শিশুর বাবার নাম রাশেদ মিয়া ও মা একই গ্রামের ওয়াসিত মিয়ার মেয়ে শাপলা বেগম। রাশেদ ওই গ্রামের ফয়জল মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, ফারিয়া নামে আড়াই বছরের সন্তান জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিল। সে চলাফেরা করতে পারত না। শুধু বিছানায় শুয়ে থাকত। এতে শিশুর মা-বাবা ধৈর্যহারা হয়ে পড়েন। তারা প্রায় সময় ফারিয়াকে অবহেলা করে ঘরের বাইরেও ফেলে রাখতেন। শুক্রবার বিকালে ফারিয়ার মুখে কীটনাশক ঢেলে দেন ওই দম্পতি। পরে নিজেরাই ফারিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মেয়েটি মারা যায়। মেয়ের মরদেহ বাড়িতে এনে দাফনের চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু ইতোমধ্যে বিষ খাওয়ানোর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ফারিয়ার বাবা-মা ও নানি পালিয়ে যান। ঘর থেকে পুলিশ ফারিয়ার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
এ ঘটনায় ফারিয়ার নানা ওয়াসিত মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
এদিকে বিষ প্রয়োগের কারণে ফারিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিকেল অফিসার আব্দুর রউফ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শ্রীমঙ্গল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী সন্তান হওয়ার কারণে আড়াই বছরের ফারিয়াকে তার মা-বাবা কীটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলেছেন বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
কিশোরের পায়ুপথে ব্রাশ ঢুকিয়ে নির্যাতন, হাসপাতালে ভর্তি
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় তানভির আহমেদ নয়ন (১৫) নামে এক কিশোরকে পায়ুপথে টয়লেট পরিষ্কারের ব্রাশ ঢুকিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত ওই কিশোর বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নির্যাতিত নয়ন ছাগলনাইয়া বাজারের একটি দোকানের কর্মচারী। সে ওই উপজেলার উত্তর জশপুর গ্রামের বাসিন্দা।
সোমবার (২০ মে) সকালে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কিশোরের ভাই আবদুর রহমান।
তিনি বলেন, শনিবার কর্মস্থল থেকে যোহরের নামাজ পড়তে বের হয় নয়ন। নামাজ শেষে ফেরার সময় আহমেদ শপিং সেন্টারে নিচে অপরিচিত এক ব্যক্তি মাথায় বস্তা তুলে দিতে তার নিকট সহযোগিতা চান। এ সময় সহযোগিতা করতে সে ওই সেন্টারের দোতলায় ওঠার সময় পেছন থেকে আরও একজন অপরিচিত ব্যক্তি তার পিছু নেয়। পরে তারা দু’জন মিলে নয়নকে ওই সেন্টারের ৩য় তলায় তুলে হাত-পা বেঁধে যৌন নির্যাতন করে। বাথরুম পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত ব্রাশ জোর করে তার পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেয়।
ভুক্তভোগী কিশোরের ভাই আরও বলেন, এক পর্যায়ে ওই ব্রাশটি ভেঙে একটি অংশ কিশোরের পায়ু পথে থেকে যায়। এতে ব্যাপক রক্তক্ষরণ শুরু হলে তারা পালিয়ে যায়। দীর্ঘ ২ ঘণ্টা বাথরুমে পড়ে থাকে। নানা চেষ্টার পর হাতের বাঁধন খুলে তার দোকানের মালিককে কল দেয়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে অজ্ঞান অবস্থায় প্রথমে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে তার পায়ুপথ থেকে ব্রাশের ভেঙে যাওয়া অংশ বের করা হয়। এ বিষয়ে নয়ন সুস্থ্য হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
ছাগলনাইয়া থানার ওসি হাসান ইমাম জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ফেসবুকে এমপি আনারের মেয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়ে নিখোঁজের ৮ দিন পর কলকাতার একটি এলাকায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আনোয়ারুল আজীম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
বুধবার (২২ মে) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ স্ট্যাটাস দেন তিনি।
স্ট্যাটাসে ফেরদৌস ডরিন লেখেন, ‘আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, ধৈর্য ধরো বিচার হবে।’
এর আগে দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ডরিন বলেন, ‘আমার বাবাকে হত্যা করে আমাকে এতিম করে দিলো, আমি আমার বাবার হত্যাকারীদের দেখতে চাই, তাদের ফাঁসি চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে সন্দেহ করছি না। তবে আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে তাদের আমি দেখতে চাই।’
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিবঙ্গে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৬ মে দিল্লি যাওয়ার কথা বলে নিখোঁজ হন তিনি। আজ বুধবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধাননগরের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে নিউটাউনের টেকনোসিটি থানার পুলিশ আনারের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
‘জীবনযুদ্ধে আমি পরাজিত’ স্ট্যাটাস দিয়ে শিক্ষকের আত্মহত্যা
‘মাইগ্রেনের কাছে হেরে গেলাম। জীবনযুদ্ধে আমি পরাজিত’, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমনই একটা স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মান্না দে (৩২)।
বুধবার (২২ মে) সদর থানার চন্দ্র দিঘলিয়া ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা গেছে, শিক্ষক মান্না দে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার থানা পাড়া এলাকার বাবুল কুমার দের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১ সেশনের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। এরপর কর্মজীবনে তিনি গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিকস টেকনোলজির ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টর পদে যোগ দেন।
মঙ্গলবার রাতে মান্না দে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি লেখেন, ‘প্রতিনিয়ত মস্তিষ্কের নিউরনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত। মাইগ্রেন এক অভিশাপের নাম। মাইগ্রেনের কাছে হেরে গেলাম। জীবনযুদ্ধে আমি পরাজিত।’
গোপালগঞ্জ সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, দরজা ভেঙে দিঘলিয়া ভাড়া বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা মান্না দের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আপাতত মনে হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
সেপটিক ট্যাংক থেকে ৪০ হাজার ডলার উদ্ধার
৪০ হাজার মার্কিন ডলার চুরি করে পালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না চোরের। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানা পুলিশ ওই চোরকে আটক করেছে। এ সময় উদ্ধার করা হয় চুরি যাওয়া ডলার।
শুক্রবার (২৪ মে) সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভাঙ্গা পৌরসভার রায়পাড়া সদরদী গ্রামের মৃত আলতাফ কাজীর ছেলে মেহেদী হাসান তামিমকে (২৭) আটক করেছে।
এ সময় তামিমের দেওয়া তথ্যমতে, তার বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে ডলারগুলো উদ্ধার করে। এ ঘটনায় একটি চুরি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার এসআই মনির হোসেন বলেন, ‘মেহেদী হাসান তামিম ঢাকায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতেন। গত ২২ মে বসুন্ধরা গ্রুপের ইঞ্জিনিয়ার এস এম তৌহিদুজ্জামানের বাসায় বিদ্যুতের কাজ করতে যায় তামিম। কাজ করার এক ফাঁকে ইঞ্জিনিয়ারের ছোট ভাই অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। তাকে পাঠানোর জন্য বাসায় রাখা ছিল ৪০ হাজার (ইউএস) ডলার। যা বাংলা টাকায় প্রায় ৪৭ লাখ টাকা।’
তামিম কাজ করার ফাঁকে কৌশলে ৪০ হাজার ডলার নিয়ে গ্রামের বাড়ি ভাঙ্গায় পালিয়ে আসেন। পরে তৌহিদুজ্জামানের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে তামিমের বাড়ি রায়পাড়া অভিযান চালিয়ে মেহেদী হাসান তামিমকে আটক করা হয়।
তার দেওয়া তথ্যমতে বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ৩৬ হাজার ২০০ ডলার উদ্ধার করা হয়। আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাবার লাশের এক টুকরো মাংস চাইলেন ডরিন
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেছেন, ‘আমার বাবার লাশের এক টুকরো মাংস চাই। যে মাংসের টুকরো ছুঁয়ে দেখতে পারি। সে মাংসের টুকরোকেই বাবা মনে করে জানাজা করাতে চাই।’
শুক্রবার (২৪ মে) বিকেল ৫টার দিকে কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ডে এক মানববন্ধনে কাঁদতে কাঁদতে এসব কথা বলেন তিনি।
কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে নৃশংসভাবে হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও হত্যার পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজন করা হয় এ মানববন্ধনের।
মানববন্ধন চলাকালে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কে আধাঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বাবা হারানোর ব্যথা-কষ্ট বোঝেন। তিনি আমার বাবা হারানোর বেদনা বুঝবেন। তার বাবার হত্যার বিচার করেছেন, আমার বাবা হত্যার বিচারও করবেন। হত্যার পরিকল্পনাকারীকে ধরার পরই খতিয়ে দেখা যাবে আসলে সে এত বড় অপকর্ম কেন ঘটালো। এর বিচার অবশ্যই হবে।’
মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও কথা বলেছি। আমরা আইনের আশ্রয় নেব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আছেন, আওয়ামী লীগের দলীয় সর্বোচ্চ অভিভাবকরা আছেন। তারা আমাদের পরামর্শ দেবেন এবং তারা অবশ্যই তাদের দলীয় এমপি হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। কালীগঞ্জের মানুষের সুখে দুঃখে যিনি সবসময় পাশে থেকেছেন সেই মানুষটির হত্যার বিচার আমরা চাই। আমরা কোনো শৃঙ্খলাহানি করতে চাই না।’
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নব-নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান মতি, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসেনসহ আওয়ামী লীগের সকল ইউনিটের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী।
গাছটি হতে পারে মৃত্যুর কারণ, জন্মাচ্ছে বাড়ির আশেপাশেই
হঠাৎ দেখলে বড় আকারের ধনেগাছ বলে ভুল হতে পারে। উচ্চতা দুই থেকে তিন ফুট। চিকন সবুজ পাতার ফাঁকে ছোট ছোট সাদা ফুলে আকর্ষণীয় দেখায় গাছগুলোকে। ত্রিভুজের মতো ছড়িয়ে থাকে অসংখ্য শাখা। বাড়ির আঙিনা, রাস্তার দুই ধার কিংবা ফসলের মাঠে জন্মানো এই গাছ হতে পারে মৃত্যুর কারণ। অথচ এ ব্যাপারে জানেন না অধিকাংশ মানুষ।
দেখতে সুন্দর হলেও ছোট ছোট এই গাছ অত্যন্ত ভয়ংকর। দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষি জমির আইল, পরিত্যক্ত কৃষি ও অকৃষি জমিতে ছড়িয়ে পড়া এই উদ্ভিদের নাম পার্থেনিয়াম। এটি মূলত বিষাক্ত এক আগ্রাসী আগাছা। এটি গায়ে লাগলে হতে পারে দুরারোগ্য চর্মরোগ। ফুলের রেনু শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করলে হতে পারে শ্বাসকষ্ট। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি জটিল হয়ে মৃত্যুর কারণও হতে পারে। পার্থেনিয়াম ভক্ষণকারী গবাদিপশুও পড়তে পারে মৃত্যুঝুঁকিতে।
মেহেরপুর জেলার বিস্তৃত এলাকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে পার্থেনিয়াম। এতে মানুষ ও গবাদিপশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন বেড়েছে, তেমনি ফসল উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে জীব ও উদ্ভিদ বৈচিত্র্য। এ সম্পর্কে না জানায় জেলার প্রায় সব রাস্তার দুই ধারে নির্বিঘ্নে বেড়ে উঠেছে মৃত্যুদূত পার্থেনিয়াম।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, এটি একটি বিষাক্ত আগাছা। এটি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে, উৎপাদন কমিয়ে দেয় এমনকি ত্বকের কাটা জায়গায় লাগলে চর্মরোগ দেখা দেয়। গরু-ছাগল খেলে তাদের পেটের পীড়া ও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সাউদ কবির বলেন, পার্থেনিয়াম আমাদের শ্বাসনালী ও চর্মতে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা কিছু চিকিৎসা দিয়ে থাকি। পার্থেনিয়ামের পার্শপ্রতিক্রিয়ায় চুলকানো বা অ্যালার্জি থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালযয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবরিনা নাজ বলেন, উদ্ভিদটি অত্যন্ত দ্রুত বিস্তার লাভ করতে পারে। জীবদ্দশায় একটি গাছ থেকে ১ লাখ বীজ উৎপাদন করতে পারে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে গবেষণা ও পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আগ্রাসী আগাছা পার্থেনিয়াম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলে মত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের। তাই এ ব্যাপারে তারা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষাক্ত আগাছা পার্থেনিয়ামের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি এবং বাতাসের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়ায়। আগাছাটি জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও কৃষির জন্য নীরব ঘাতক। পৃথিবীর অনেক দেশেই পার্থেনিয়াম থেকে বায়োগ্যাস, বায়োফার্টিলাইজার ও আগাছা নাশক তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই উদ্ভিদের ব্যাপারে মানুষ সচেতন নন।