আসছে ঈদ, নদীতে মাছ না থাকায় হতাশ জেলেরা
ইলিশের ভরা মৌসুমেও হাসি নেই বরগুনার পাথরঘাটার জেলেদের মুখে। একদিকে বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় নদী বিষখালী-বলেশ্বর নদীতে নেই ইলিশ। আরেক দিকে ডাঙায় এনজিওর ঋণের চাপ। এ নিয়ে ঈদের আনন্দ সবার হৃদয়ে কড়া নাড়লেও জেলেদের রাজ্যের বিষাদ। নদ-নদীতে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পাওয়ায় ঋণের জালে বন্দি হয়ে আছে ঈদের আনন্দ। শিশুদের গায়ে নতুন জামা উঠবে কিনা তা নিয়েই দুশ্চিন্তা। এ দিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ব্যয় বেড়েছে জেলেদের। এ কারণে ঋণের জালে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন তারা।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলায় মোট জেলে রয়েছেন প্রায় ২৫ হাজার। এর মধ্যে সরকারি নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ১৬ হাজার ৮২০ জন। মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে প্রতি মাসে প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলের মধ্যে ১৬ হাজার ২২৮ জনের পরিবারকে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা হয় জেলে মনির, ইলিয়াস, বেল্লাল হোসেন, ছরোয়ারের সঙ্গে। তারা বলেন, এক দিকে আবরোধ অন্যদিকে সাগরে নিম্নচাপ। এ দুয়ে মিলে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। অবরোধে মাছ ধরতে পারি না আবার নিম্নচাপের মধ্যে সাগরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকারে গিয়েও খালি হাতে ফিরে আসতে হয়। এর মধ্যে কিভাবে আমরা ছেলে মেয়েদের নিয়ে ঈদ করবো ভেবে পাচ্ছি না। আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে ইলিশ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি মাছ ধরা ছাড়া অন্য কোনো কাজ জানি না। তাই অন্য কাজ করতে চাইলে কেউ কাজ দিচ্ছে না। অশিক্ষিত হওয়ায় পেশার পরিবর্তন করতে পারছি না। আমাদের জালেতো ইলিশ ছাড়া অন্য কোনো প্রকার মাছ ধরা পরে না। আমরা এখন দাদনের জন্য ট্রলার মালিকের কাছে গেলেও তারাও তাড়িয়ে দেন। এ বছরের ঈদ জেলেদের জন্য নয়।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, জৈষ্ঠ্যের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয় ইলিশের মৌসুম। কিন্তু এ বছর সেই শুরু থেকেই সাগর থেকে জেলেরা ইলিশ শূন্য হাতে ফিরে আসছেন। এবার ঈদকে সামনে রেখে ১০ থেকে ১২ দিন আগেই সাগরে পাঠানো হয়েছে ট্রলার। ইতোমধ্যে যে ট্রলার এসেছে তার মধ্যে দু-একটি ট্রলারে কিছু মাছ পেলেও অধিকাংশ ট্রলার বাজার সদয়ের খরচই উঠাতে পারবে না।
এ প্রসঙ্গে পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপুর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, জেলেদের জন্য কোনো চাল বরাদ্দ নেই। ঈদ উপলক্ষে কিন্তু তাদের জেলে কার্ড থেকে ঈদের আগে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন