হত্যা মামলার আসামিকে শিশু প্রমাণের পায়তারা
ফেনীতে হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা ১৯ বছর বয়সী এক আসামিকে জন্মতারিখ পরিবর্তন করে শিশু প্রমাণের পায়তারা করা হচ্ছে। ওই আসামির নাম শুভ, সে ফেনী জেলার সদর উপজেলার মাথিয়ারা এলাকার সেলিমের ছেলে।
সম্প্রতি দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের বারাহিগুনী এলাকায় প্রবাসী আতাউর রহমানের স্ত্রী মমতাজ বেগম পারুলকে (৫৬) পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শুভ ২০১৬ সালে পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী এলাকায় জামাল একাডেমী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাশ করে। এরপর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে বিদ্যালয় থেকে তাকে দেয়া প্রত্যয়নপত্রে জন্মতারিখ ২১.০৪.২০০৪ইং উল্লেখ করা হয়।
২০১১ সালের ১১ জানুয়ারিতে ভর্তি হওয়ার পর পাঁচগাছিয়া এ জেড খাঁন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের রেজিষ্ট্রারেও তার জন্মতারিখ ২১.০৪.২০০৪ইং লিপিবদ্ধ রয়েছে।
অথচ, গত ডিসেম্বরে মমতাজ বেগম পারুল হত্যাকান্ডে তার সংশ্লিষ্টতার পর তার জন্মতারিখ পরিবর্তন করা হয়। পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইস্যু হওয়া নতুন জন্মনিবন্ধনে তার জন্মতারিখ ২১.০৪.২০০৬ইং দেখানো হয়েছে।
অপর একটি সূত্র জানায়, নতুন জন্মনিবন্ধন উপস্থাপন করে গত মঙ্গলবার আদালতে শুভ'র জামিন আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট অপরাজিতা দাস ওই আবেদন না মঞ্জুর করেন।
এর আগে বারাহিগুনী দরবার শরীফ এলাকার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া লক্ষ্মীপুর জেলার টুমচর গ্রামের মাঈন উদ্দিনের ছেলে মোবারক হোসেনের দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী শুভকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১৭ ডিসেম্বর (সোমবার) জবানবন্দিতে দস্যুতার ঘটনায় বাধা দেয়ায় শুভ ছাড়াও ফিরোজ নামে আরও একজন ওই হত্যাকান্ড ঘটায় বলে মোবারক উল্লেখ করে।
মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী এম. শাহজাহান সাজু জানান, আদালতের অনুগ্রহ পেতে আসামি শুভকে শিশু প্রমাণ করতে তার বয়স কমানো হয়েছে। বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দাগনভূঞা থানার ওসি (তদন্ত) মো. রাসেল মিয়া জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। জন্মতারিখ বিতর্কের বিষয়টি আদালতে প্রমাণসাপেক্ষ বিষয়।
প্রসঙ্গত, ১৩ ডিসেম্বর রাতে পারুলকে নিজ ঘরে ঢুকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর ঘরের আলমারি, শোকজ এবং ওয়ারড্রপ ভেঙ্গে স্বর্নালংকার এবং মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত পারেুলের ছোট ছেলে মাহমুদুল হাসান তন্ময় বাদি হয়ে দাগনভূঞা থানায় মামলা দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন