বিদেশফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে পুলিশে হস্তান্তরে নির্দেশ
বিদেশফেরত প্রত্যেক যাত্রীকেই পুলিশের হাতে হস্তান্তর করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে সিভিল অ্যাভিয়েশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন হাবিবের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে এ রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী আকন্দ।
রিটে বিদেশ থেকে আসা সব ব্যক্তিকে কমপক্ষে ১৪ দিন বা ততোধিক সময় বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ প্রদানের আবেদন করা হয়।
এসএস
মন্তব্য করুন
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বারের দায়িত্ব নিচ্ছেন ব্যারিস্টার খোকন
পুনর্নিবাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নেওয়া দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই সুপ্রিম কোর্ট বারের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে যাচ্ছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নীল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে নির্বাচিত ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের দক্ষিণ (১ নম্বর হল রুমে) হলে নবনির্বাচিত সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন ও তার সমর্থকরা এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান। পরে ব্যারিস্টার খোকন নিজে সংবাদ সম্মেলন করে বারের দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন বলে জানান।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. গিয়াস উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়ালি উর রহমান খান, সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মেহেদী, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা ও অ্যাডভোকেট এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজা।
এর আগে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের নতুন বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে গত ২৭ মার্চ চিঠি দিয়েছিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ফোরামের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ও মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল স্বাক্ষরিত ওই চিঠির অনুলিপিটি দলের মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের (দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত) কাছে পাঠানো হয়।
গত ৬ ও ৭ মার্চ দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এবারের বার নির্বাচনে ১৪টি পদের বিপরীতে সভাপতিসহ চারটি পদে বিজয়ী হয় বিএনপি-জামায়াতপন্থি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য নীল প্যানেল। অন্যদিকে সম্পাদকসহ ১০টি পদে জয় পায় আওয়ামী লীগপন্থি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সাদা প্যানেল।
নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল থেকে (নীল প্যানেল হিসেবে পরিচিত) সভাপতি পদে বিজয়ী হন এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। এছাড়া সদস্য পদে নির্বাচিত হন সৈয়দ ফজলে এলাহী, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম শফিক।
মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ এই চারজনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পাঠানো ২৭ মার্চের চিঠিতে বলা হয়, বিগত দুই বছরের মতো এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা নজিরবিহীনভাবে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করেছে। এমনকি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দুজন প্রার্থী প্রথমে নাহিদ সুলতানা যুথী ও পরে শাহ মঞ্জুরুল হককে তথাকথিত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের অব্যবহিত পরে সমিতির অডিটোরিয়ামে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদের মারধর ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ওই ঘটনা আওয়ামী লীগের দুজন সম্পাদক পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও সরকারের একজন বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ও আরও তিনজন আইনজীবী ফোরামের নেতাকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ মামলায় ওসমান চৌধুরী, সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুসকে (কাজল) গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তারা দুই সপ্তাহের মতো কারাভোগ করেছেন। তাদের কারাগারে রেখে গত ১০ মার্চ লুট হয়ে যাওয়া ব্যালট পেপার গণনার নাটক সাজিয়ে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদের নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে।
চিঠিতে এরপর বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে ২৪ মার্চ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এবং সম্পাদকদের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পর গত ৯ মার্চ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ন্যায়সংগত যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের (খোকনসহ চারজন) এ মর্মে জানানো যাচ্ছে যে, আপনারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ এর মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। দলের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলীয় এ সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে পালন করবেন।
ধর্ষণ মামলায় জামিন পেলেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় করা ধর্ষণ মামলায় জামিন পেয়েছেন হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালত এ জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানির সময় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক। আদালতে তার পক্ষে জামিন আবেদন করে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রকিবউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। পরে ওই রিসোর্ট ভাঙচুর করে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেন তার অনুসারীরা। একই বছরের ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।
এ ঘটনার ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন তার সঙ্গে থাকা ওই নারী। একই বছরের ৩ নভেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ।
ইমতিয়াজ রাব্বিকে হলে সিট ফেরত দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বিকে আবাসিক হলের সিট ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে ইমতিয়াজের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জরুল হক।
এর আগে, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বির হলের সিট বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে ইমতিয়াজ রাব্বিকে হলে সিট ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। ইমতিয়াজ হোসেনের পক্ষে ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ এ রিট দায়ের করেছেন।বুয়েটের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেনের হলের সিট বাতিল করে। এ ঘটনার সার্বিক বিষয় তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়। গত ৩০ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বুয়েট প্রশাসন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বুয়েটে মধ্যরাতে প্রবেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ছয় দফা দাবিতে সকাল থেকেই বিক্ষোভ কর সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বন্ধ থাকে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও বহিরাগত কিছু নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালান। ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন; যিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তাই তাকে বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও তার সহযোগীদেরও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। পরে অবশ্য ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বির রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আদেশ দেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে।
বর্ষবরণে শ্লীলতাহানি : ৯ বছরেও শেষ হয়নি বিচার
২০১৫ সালে বর্ষবরণ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়। তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে পুলিশ।
এ ঘটনায় করা মামলায় সাত আসামিকে খুঁজে না পেয়ে পরের বছর কামাল নামে এক ব্যবসায়ীকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরের বছরের জুন মাসে আসামি কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন নির্ধারণ করেন আদালত। কিন্তু অভিযোগ গঠনের প্রায় ছয় বছর পরও ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও তারা সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসছেন না। সাক্ষীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় আলোচিত মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম ঝুলে রয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনার প্রায় দুই বছর পর কামাল নামে একজনকে আসামি করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলাটিতে ৯ জনের সাক্ষী নেওয়ার পর সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৩১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। এ দিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত ১৩ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন।
এদিন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মামলাটি রায় ঘোষণা থেকে উত্তোলন করে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৫ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণে নতুন দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, আগামী পহেলা বৈশাখের আগে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ব্যবসায়ী কামালকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৯ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অন্য সাতজনকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেওয়া হবে। এ মামলায় ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বাংলা নববর্ষের উৎসবে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় করা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। তবে মামলাটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী বাদ পড়ায় আমরা রায় ঘোষণা থেকে উত্তোলন করে আবার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আবেদন করি। আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলাটির পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ঠিক করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলাটিতে কিছু পুলিশ সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আসেননি। তাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সমন জারি করা হবে। তারা সাক্ষ্য দিলে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হবে। আশা করছি, দ্রুতসময়ের মধ্যে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল টিএসসিতে নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এসময় সেই নারীদের বাঁচাতে গেলে নিপীড়কদের আঘাতে হাত ভাঙে তৎকালীন ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি লিটন নন্দী। আহত হন ছাত্র ইউনিয়নের আরও দুই নেতা। পরে ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বারবার অভিযোগ করলেও পুলিশ প্রথমে স্বীকার করেনি। পরে ফুটেজ দেখে ঘটনার সত্যতা পায় পুলিশ।
বড় মেয়েকে নিয়ে গোপনে বাংলাদেশ ছাড়লেন সেই জাপানি মা
কাউকে কিছু না বলে গোপনে বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়লেন সেই জাপানি মা নাকানো এরিকো। গত ৯ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে জাপানে চলে যান। এমনটিই অভিযোগ জাপানি শিশুদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের।
দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে শরীফ বলেন, আদালতের স্থিতাবস্থা থাকার পরও নাকানো এরিকো আদেশ অমান্য করেছেন। বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন।
জানা যায়, হাইকোর্ট গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাপানি শিশু জেসমিন মালিকা (বড়) ও তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে, এ মর্মে রায় দেন। একই সাথে বলেন, মেজ মেয়ে লাইলা লিনা তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে। তবে এই রায়ের ওপর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ৯ এপ্রিল স্থিতাবস্থা জারি করেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন ১৫ এপ্রিল। কিন্তু তার আগেই ৯ এপ্রিল বিকেলে নাকানো এরিকো বড় মেয়েকে নিয়ে চুপিসারে চলে যান জাপানে।
‘আদেশ অমান্য করার’ এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ। তার সেই আবেদনের ওপর সোমবার (১৫ এপ্রিল) চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। আদালত আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।
এ ব্যাপারে শিশুদের বাবা ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তা স্বত্বেও বড় সন্তানকে নিয়ে নাকানো এরিকো চলে গেছেন। এ কারণে আমরা আদালত অবমাননার আবেদন করেছি।
ভিপি নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে চট্টগ্রাম আদালতে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবিরের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে ২০২২ সালের ১৪ জুন নুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহরিয়ার ইয়াসির আরাফাত তানিম।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে সিআইডির চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল করিম তদন্ত করে গত ৬ ফেব্রুয়ারি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে আসামির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (১), ২৯ (১) ও ৩১ ধারায় অপরাধ আমলে নিতে আবেদন করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সিআইডির দাখিল করা প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আজ (সোমবার) নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছিল, আসামি নুরুল হম নুর ২০২২ সালের ১ জুন বাংলাদেশ ছাত্র যুব অধিকার পরিষদের ব্যানারে সমাবেশ করেন। এতে নুর নিজেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে গুন্ডালীগ বলে আখ্যায়িত করেন। একই সমাবেশে নুর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুনি এবং তৎকালীন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে চট্টগ্রামের আরেক গুন্ডা, উন্মাদ বলে মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ বাড়াল
শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জামিনের মেয়াদ আরও বাড়িয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে গিয়ে ড. ইউনূস স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে আদালত আগামী ২৩ মে পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এই মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের আরও তিন শীর্ষ কর্মকর্তার জামিনের মেয়াদ একই সময়ের জন্য বৃদ্ধি করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ আউয়াল।
তারা হলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও এস এম মিজানুর রহমান।
এর আগে, গত ৩ মার্চ এই মামলায় তাদের জামিনের মেয়াদ বাড়ান আদালত। সেদিন পরবর্তী শুনানির জন্য ১৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয়। এরপর গত বছরের ৬ জুন মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। একই বছরের ২২ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় ৯ নভেম্বর। গত ২৪ ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। পরে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন আদালত।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শ্রম আইন ২০০৬ ও শ্রম বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেওয়া হয়নি। গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেওয়া হয়নি।