• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘নিজেই ঘাতক লালন করেছি’

হোসাইন তারেক

  ০৫ অক্টোবর ২০১৬, ১২:৩৪

সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী নার্গিস এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বেঁচে থাকবে কি বাবা-মায়ের নাড়িছেঁড়া ধন? এমন প্রশ্ন এখন সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত খাদিজা আক্তার নার্গিসের পরিবারের।

নার্গিস সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের হাউসা গ্রামের মাসুক মিয়ার মেয়ে। তার বাড়িতেই লজিং থাকত ঘাতক বদরুল। যার চাপাতির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত নার্গিসের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ।

দীর্ঘদিন নিজ পরিবারে বেড়ে ওঠা বদরুলের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে নার্গিস। হামলাকারী তার পরিবারের লজিং মাস্টার ছিলো। জানালেন, নার্গিসের চাচা আবদুল বাসেত।

তিনি বলেন, দুধকলা দিয়ে নার্গিসের ঘাতককে লালন করেছি। যাকে নিজের ঘরে রেখে লালন করেছি সে আমাদের বুকের ধনকে কুপিয়েছে।

নার্গিসের চাচা জানান, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার আগ থেকে বদরুল আমাদের বাড়িতে লজিং থাকত। সেখানে থাকা অবস্থায় নার্গিসকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে। বারবারই নার্গিস প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

বাসেত আরো জানান, ৫ বছর নার্গিসের বাড়িতে লজিংমাস্টার ছিলো বদরুল। এরপর থেকে সে তাকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করে আসছে। এ কারণে বদরুলকে বের করে দেয়া হয়। এরপরও মেয়েটির পিছু ছাড়েনি।

তিনি বলেন, তার ভাতিজি সহজ-সরল ছিলো। বদরুল তাকে সবসময় বিরক্ত করত। বিরক্ত না করতে অনেকবার বলা হলেও সে কথা শোনেনি।

এর আগে ২০১২ সালে নার্গিসকে উত্যক্ত করার কারণে বদরুলকে গণপিটুনি দেয় তার স্বজনরা। কিন্তু তারপরও থামেনি সে। আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে বদরুল নার্গিসের পরিবার ও কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা করে।

তিনি বলেন, বুঝতে পারিনি বদরুল এমন করতে পারে। জানলে কখনো মেয়েকে একা পরীক্ষা দিতে পাঠাতাম না। পরিবারের কেউ সঙ্গে থাকলে এ ঘটনা ঘটতো না।

নার্গিসের ওপর হামলার ঘটনা ভিডিও করলেও কেউ সাহায্যে এগিয়ে না আসায় ক্ষোভ জানান আবদুল বাসেত। বলেন, এতো মানুষ ছিলো কেউ আমার ভাতিজিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। কেউ যদি এগিয়ে আসতো আজ আমাদের মেয়ের এমন অবস্থা হতো না।

বদরুলের কি শাস্তি চান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সরকারের কাছে সঠিক বিচার চাই। সে যেন কোনোভাবে ছাড়া না পায়।

সোমবার বিকেলে সিলেট এমসি কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে ফেরার সময় নার্গিসকে কুপিয়ে জখম করে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বদরুল আলম। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার শেষে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টার আগে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। জানালেন, স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক রেজাউস সাত্তার।

সিলেট এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা বদরুলের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। তারা নার্গিসের ওপর হামলাকারীর ফাঁসির দাবি জানান।


এইচটি/ জেএইচ/ এসজেড

মন্তব্য করুন

daraz
  • অপরাধ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদির আবারও কারাদণ্ড
প্রাক্তন ও বর্তমান প্রেমিককে নিয়ে অভিনেত্রীর পার্টি
X
Fresh