গায়ক ইলিয়াসের বিরুদ্ধে নায়িকা সুবাহ’র মামলা
বিয়ের এক মাস না পেরুতেই তরুণ প্রজন্মের সুপরিচিত গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তারই স্ত্রী অভিনেত্রী সুবাহ শাহ হুমায়রা। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজধানীর বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে এ বিষয়ে বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আজম মিয়া আরটিভি নিউজকে বলেন, যৌতুক চেয়ে মারধরের অভিযোগে সোমবার (৩ জানুয়ারি) দিনগত রাতে গায়ক ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন নায়িকা সুবাহ, মামলা নং-০১। মামলাটির তদন্ত কাজ চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
বিস্তারিত আসছে....
মন্তব্য করুন
সার্টিফিকেট জালিয়াতি, যা বললেন কারিগরির সাবেক চেয়ারম্যান
কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের হাজার-হাজার সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় ওএসডি হওয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর এ বিষয়ে কারাগারে থাকা নিজ স্ত্রীকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ দাবি করেন। এদিন সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় তাকে তলব করে প্রায় ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আপনার স্ত্রী বিনা অপরাধে জেল খাটছে বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আলী আকবর বলেন, আমার স্ত্রী কোনো ভুল করেছে কি না আমি জানি না। আমি তার বিষয়ে কিছুই জানি না। গোয়েন্দা সংস্থা তার কাছে কী তথ্য পেয়েছে সেটিও জানি না। আমি মনে করি বিনা অপরাধেই সে জেল খাটছে।
তাহলে আপনাকে ওএসডি করা হয়েছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিডিয়ায় একটি সংবাদ চলে আসছে এবং ডিবির কাছে তথ্য আছে, সেজন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে আমরা লজ্জিত ও দুঃখিত।
কী পরিমাণ সার্টিফিকেট বাণিজ্য হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিডিয়াতে শুনতে পেয়েছি পাঁচ কি সাড়ে পাঁচ হাজার। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
সার্টিফিকেট বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা বের করেছে, এর বেশি কিছু জানি না। সার্টিফিকেটের কাগজ ওয়েবসাইটে পাইনি।
২০ লাখ টাকা ঘুসের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এর তদন্ত চলছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের হাজার-হাজার সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় ওএসডি হয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তার স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আসা গাঁজার চকলেট-কেক জব্দ, গ্রেপ্তার ৩
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডাকযোগে দেশে আসা কোটি টাকা টাকা মূল্যের গাঁজার চকলেট-কেক জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএনসি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএনসির মহাপরিচালক (ডিজি) মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. রাসেল মিয়া (২০), রমজান মিয়া (২১) ও মো. ইমরান ওরফে রাজ (২০)।
মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী জানান, রোববার (২১ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় খেলনা বাক্সের একটি পার্সেল আসে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পার্সেলটি জব্দ করা হয়। পার্সেলের ভেতরে ছয়টি প্যাকেটে ছিল টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ (আমেরিকার তৈরি), যার ওজন এক কেজি ৩০০ গ্রাম। এছাড়াও ছিল আমেরিকায় তৈরি গাঁজার ৯টি চকলেট ও গাঁজার ১০টি কেক। যার বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা। পার্সেলে একটি ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল। তবে ঠিকানাটা ছিল ভুল। তাই মোবাইল নম্বর ধরে অভিযান চালায় ডিএনসি। পরে সাভারের আশুলিয়ায় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, পার্সেলে থাকা মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে প্রথমে রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, পার্সেলটি তিনি ডেলিভারি নেবেন। পরে তার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে রিসিভ করার কথা ছিল রমজান মিয়ার। পরে আশুলিয়ার আমতলা এলাকা থেকে রমজানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রমজান জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাকে টাকার বিনিময়ে পার্সেলটি রিসিভ করতে বলেন মো. ইমরান ওরফে রাজ। এরপর আমতলা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় রাজকে। রমজান ও ইমরান দুজন বন্ধু।
মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী জানান, যে প্যাকেটে মাদকগুলো আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছিল সেগুলো ছিল বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেট। এটা করার কারণ যাতে কেউ বুঝতে না পারে এসব প্যাকেটে মাদক রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বিদেশ থেকে গাঁজার কেক, কুশ ও চকলেট এনে রাজধানীরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছিল।
ডিএনসি ডিজি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় এসব মাদক বৈধ কিংবা অবৈধ সেটি বিষয় না। বাংলাদেশে এই মাদক অবৈধ, তাই বাংলাদেশে এই মাদক পাঠানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশে এটা অবৈধ জেনেই তারা বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেটে মাদক পাঠিয়েছে। এই পার্সেলটি যে কোনো আমেরিকান নাগরিক পাঠিয়েছেন বিষয়টি এমন নয়। ওখানে বসবাসরত অন্য কোনো দেশের নাগরিকও পাঠাতে পারেন।
বেনজীরের সম্পদ: অনুসন্ধান প্রতিবেদন নিয়ে দুদককে হাইকোর্টের যে নির্দেশ
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সম্পদের অনুসন্ধানের অগ্রগতির রিপোর্ট দুই মাসের মধ্যে দাখিল করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
এর আগে সোমবার বেনজীর আহমেদের সম্পদ অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাউদ্দিন রিগ্যান।
এর আগে বেনজির আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
সম্প্রতি ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। দৈনিকটির দাবি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় আসেন পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।
এই সংবাদে বলা হয়, বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি। অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদ বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: বিচার মেলেনি ১১ বছরেও
দেশের ইতিহাসে বড় হৃদয় বিদারক ঘটনা সাভারের রানা প্লাজা ধস। এই ট্র্যাজেডির ১১ বছর পূর্ণ হলো আজ ২৪ এপ্রিল। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে ১০ তলা রানা প্লাজা ভবন ধসে নিহত হন এক হাজার ১৩৬ জন শ্রমিক। আহত হন দুই হাজারের বেশি মানুষ। জীবিত উদ্ধার করা হয় দুই হাজার ৪৩৮ জনকে। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয় এই শিল্প দুর্ঘটনা।
কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছরেও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত হয়নি। যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাননি নিহত শ্রমিকদের স্বজন ও আহত শ্রমিকরা।
এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়। হত্যা মামলার ৫৯৪ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৮৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এত দিনেও বিচার শেষ না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। বর্তমানে শ্রমিক মৃত্যুর এই মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। অপরদিকে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা আইনে দায়ের করা মামলাটিও হাইকোর্টে স্থগিত হয়ে আছে। ফলে, আইনি জটিলতার কারণে এগোচ্ছে না এই মামলার কার্যক্রম।
শ্রমিক মৃত্যুর হত্যা মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করে আসামিপক্ষ। হাইকোর্টে পাঁচ বছর মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকে। পরে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর গত বছরের ৩১ জানুয়ারি মামলার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত এক বছর তিন মাসে এ মামলায় অভিযোগপত্রের ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমল সমদ্দার মামলাটি সম্পর্কে জানান, মামলাটিতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে। এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিলে আসামিরা সেই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যান। শুরু থেকে মামলাটি বিভিন্নভাবে সময় নষ্ট হয়েছে। অন্যান্য আইনগত বাধা পেরিয়ে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে এসেছে। কিন্তু সাক্ষীরা ঠিকমতো হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
মামলায় কারাগারে থাকা রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্ট জামিন দেয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে জামিন স্থগিতের আবেদন জানায়। ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এ বছরের ১৫ জানুয়ারি সোহেল রানার জামিন স্থগিত করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৪ বিচারপতির বেঞ্চ।
আইন না মেনে ভবন নির্মাণের অভিযোগে ওই সময় সোহেল রানাসহ ১৩ জনকে আসামি করে সাভার মডেল থানায় আরেকটি মামলা করেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তৎকালীন (রাজউক) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল আহমেদ। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর সোহেল রানাসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার সাক্ষী করা হয় ১৩০ জনকে।
জানতে চাইলে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল গণমাধ্যমকে বলেন, গত বছরের ১৯ নভেম্বর ঢাকার সাবেক জেলা ও দায়রা জজের বিচারক এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার আদালত বিচারিক ক্ষমতা বলে হত্যা মামলার পাশাপাশি ইমারত নির্মাণ আইনের মামলাটিও নিয়ে যান। যাতে একইসঙ্গে দ্রুত এই দুই মামলার বিচারকাজ শেষ হয়। তবে উচ্চ আদালতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি। মামলাটির এখনো কোনো অগ্রগতি নেই। এই মামলায় ১৬ আসামির মধ্যে সবাই জামিনে আছেন।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনের দুই মামলায় আট বছর আগে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ। তিনি বলেন, মামলা দুইটির বিচার শেষ না হওয়ায় আসামি সোহেল রানা কারামুক্ত হতে পারছেন না। তার মতে আসামি সোহেল রানা বিচারহীনভাবে কারাগারে আটক রয়েছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, রানা প্লাজা নির্মাণে ছয় তলার অনুমোদন থাকলেও আট তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। এ কারণে ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মফিদুল ইসলাম।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ এস এম জিয়াউর রহমানের আদালতে বিচারাধীন। এ মামলায় মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছেন আদালত। সর্বশেষ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক এম এ মফিদুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। তবে তার জেরা শেষ না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান রয়েছে। আগামী ২৮ এপ্রিল জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।
রানা প্লাজা ধসের মামলাকে একটি দুর্ঘটনার মামলা উল্লেখ করে এ বিষয়ে আসামি রানার আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, এই মামলায় রানা গত ১১ বছর ধরে জেলহাজতে রয়েছে। বাকি সবাই জামিনে পেলেও রানা জামিন পাচ্ছেন না। মামলার রায়ে যা হওয়ার তাই হবে। এভাবে বিনা বিচারের ১১ বছর জেলে থাকা মানবিক দিক থেকে অন্যায়। তাই আদালতের উচিত হয়তো মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করা, নয়তো আসামিকে জামিন দেয়া। আশা করছি এ মামলার রায়ে রানাসহ অন্যান্য আসামিরা খালাস পাবেন।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম শেষে মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করছি।
এ মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক, মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার মেয়র রেফায়েত উল্লাহ, কাউন্সিলর মোহাম্মাদ আলী খান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামাল, আমিনুল ইসলাম, নিউওয়েব স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মাহবুবুল আলম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, নান্টু কন্ট্রাকটার এবং রেজাউল ইসলাম।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় তিন মামলার বাইরে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলাটিই কেবল নিষ্পত্তি হয়েছে।
২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট এ মামলার রায় ঘোষণা ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর তৎকালীন বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস। রায়ে সোহেল রানাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় তার মা মর্জিনা বেগমকেও তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রানা প্লাজা ধসে হাজারের বেশি শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় আজও কাঁদছেন তাদের স্বজনরা। পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন অসংখ্য শ্রমিক। এ ঘটনার ১১ বছরেও ভবন মালিক সোহেল রানাসহ দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
রানা প্লাজার সামনে অঝরে কাঁদছিলেন ৭০ বছর বয়সী সাফিয়া বেওয়া। রানা প্লাজা ধসে মেজ ছেলে লাল মিয়াকে হারিয়েছেন তিনি। লাল মিয়া কাজ করতেন ভবনটির তৃতীয় তলায়।
এ ঘটনায় বিচার না হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে নেতারা বলছেন 'রানা প্লাজা ধসের পর থেকেই আমরা বেশ কয়েকটি দাবি তুলে আসছি। গত ১১ বছরেও আমাদের দাবিগুলো পূরণ হয়নি। এত বছর পর আমরা একই দাবি জানাচ্ছি।'
গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনা একটি হত্যাকাণ্ড। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এটা শুধু আমাদের দাবি নয়, এটা সবার দাবি।' এ ঘটনায় আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, ‘১১ বছরেও আমাদের কোনো দাবি পূরণ করা হয়নি। এ বিষয়ে রাষ্ট্রের সুদৃষ্টি আশা করছি।
ঢাবিতে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুমে’ অচেতন শিক্ষার্থী, তদন্ত কমিটি গঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুম’ কর্মসূচি চলাকালে অতিরিক্ত গরমে এক শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে বিজয় একাত্তর হলে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নিয়ামুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
‘গেস্টরুম’ কর্মসূচিতে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, নিয়ামুল ইসলামকে ‘গেস্টরুমে’ অনেকক্ষণ ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন ছাত্রলীগের ‘বড় ভাইয়েরা’। প্রচণ্ড গরমে শারীরিক অস্বস্তির কথা জানান নিয়ামুল। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাতে কর্ণপাত করেননি। একপর্যায়ে নিয়ামুল অচেতন হয়ে পড়ে যান। পরে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে গণরুমে নিয়ে যান। সহপাঠীরা নিয়ামুলের মাথায় পানি দেন। এ ঘটনা যেন জানাজানি না হয়, সে জন্য তাকে হাসপাতালে নিতে নিষেধ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
তবে নিয়ামুল এখন সুস্থ আছেন। তিনি বলেন, ‘গরমের কারণে আমি ‘গেস্টরুমে’ মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম। তখন বন্ধুরা আমাকে ধরাধরি করে গণরুমে নিয়ে এসে মাথায় পানি দেয়। এখন আমি সুস্থ আছি।’
এ বিষয়ে বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কিছু ছেলেপেলে এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিল। তখন একটা ছেলে একটু মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তখন বন্ধুরা তাকে ডাবের পানি খাইয়ে তার কক্ষে রেখে আসে। তাকে হাসপাতালেও নিতে হয়নি, কোথাও নেওয়া হয়নি, কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিও ছিল না।’
এদিকে এ ঘটনা তদন্তে বুধবার তিন সদস্যের কমিটি করেছে বিজয় একাত্তর হল প্রশাসন। হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ শাহ মিরানকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষক মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন ও আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসান।
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
টিপু-প্রীতি হত্যা: অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে গুলি করে হত্যা মামলায় ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালত শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রফিক উদ্দীন বাচ্চু।
এর আগে গত ৫ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার আদালতে ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, আন্ডার ওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহম্মেদ মন্টু, ফ্রিডম মানিক ওরফে জাফর, প্রধান সমন্বয়কারী সুমন সিকদার মুসা, শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ, শামীম হোসাইন, তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবু, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে ‘ঘাতক’ সোহেল, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, মাহবুবুর রহমান টিটু, নাসির উদ্দিন মানিক, মশিউর রহমান ইকরাম, ইয়াসির আরাফাত সৈকত, আবুল হোসেন মোহাম্মদ আরফান উল্লাহ ইমাম খান, সেকান্দার শিকদার আকাশ, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম মাতবর, আবু সালেহ শিকদার, কিলার নাসির, ওমর ফারুক, মোহাম্মদ মারুফ খান, ইশতিয়াক আহম্মেদ জিতু, ইমরান হোসেন জিতু, রাকিবুর রহমান রাকিব, মোরশেদুল আলম পলাশ, রিফাত হোসেন, সোহেল রানা, ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, সামসুল হায়দার উচ্ছল ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল।
গত বছরের ২০ জুন ৩৩ জনের নামে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। এরপর মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হওয়ায় পরবর্তী বিচারের জন্য এ আদালতে আসে।
আসামিদের মধ্যে মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আসামিদের মধ্যে ১৯ জন কারাগারে, ৭ জন জামিনে ও ৭ জন পলাতক রয়েছেন।
২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন।
এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ হত্যাকাণ্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে টিপুর স্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার ২০২ উত্তর শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে পৌঁছামাত্র অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা হামলা করেন।
পরীক্ষার আগে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নের সমাধান হতো ঢাবির হলে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চক্রের মূলহোতা অসিম গাইনের হয়ে ঢাবির জগন্নাথ হলে বসে প্রশ্নের সমাধান করতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের দুই আবাসিক শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্র। পরীক্ষা শুরুর আগেই এসব সমাধান করা প্রশ্ন পৌঁছে যেত পরীক্ষার্থীদের হাতে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবিপ্রধান বলেন, গত রোববার ঢাবির ক্যাম্পাস থেকে জ্যোতির্ময় ও সুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। তাদের দুই দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে বুধবার (২৪ এপ্রিল) মাদারীপুর থেকে পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন, পঙ্কজ গাইন ও লাভলী মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে মনিষ ও পংকজ পুলিশ হেফাজতে দুই দিনের রিমান্ডে রয়েছে। আর লাভলীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
তিনি বলেন, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এ পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। দুটি ঘটনায় পৃথক মামলা করেন সংশ্লিষ্টরা। এরমধ্যে রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
পরীক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে হারুন অর রশীদ জানান, পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র পেয়েছেন তারা। প্রশ্ন প্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময় সমাধান করিয়ে নেন চক্রের হোতা অসিম গাইন। এ প্রস্তাবে জ্যোতির্ময় ও সুজনসহ সাতজন জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময়গুহ ঠাকুরতা ভবনের ২২৪ রুমে বসে প্রশ্নের সমাধান করে পাঠান। চাকরির বয়স শেষের দিকে এমন পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করে তাদের সঙ্গে দুই-তিন মাস আগ থেকেই যোগাযোগ শুরু করে চক্রটি। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতো। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগেই প্রশ্নের উত্তর পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতো অসিম। তাদের সমাধান করে দেওয়া প্রশ্নের মধ্যে ৭২ থেকে ৭৫টি সঠিক থাকতো।
তিনি বলেন, মাদারীপুরের রাজৈর এলাকার অসিম গাইন চক্রের হোতা। তিনি আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। এতে অল্পদিনে কয়েক শ’ কোটি টাকা আয় করেছেন। এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব থাকা অসিমের মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা ও ডিশের ব্যবসা রয়েছে। যেখানে তিনি প্রশ্ন ফাঁস করে আয় করা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমানে পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।