• ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
কুবিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা শিক্ষকদের
ক্ষতিপূরণের দাবিতে ৯ বাস আটক করেছেন জাবি শিক্ষার্থীরা
ক্ষতিপূরণের দাবিতে ইতিহাস পরিবহনের ৯টি বাস আটক করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একদল শিক্ষার্থী।  শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন এলাকায় বসে বাসগুলো আটক করা হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন সড়কের একপাশে ইতিহাস পরিবহনের ৯টি বাস সারি সারি রাখা হয়েছে।  শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার সকাল সোয়া ৯টার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী ইতিহাস পরিবহনের একটি বাস হঠাৎ ব্রেক (হার্ড ব্রেক) করায় পেছন থেকে ধাক্কা দেয় সাভার পরিবহনের আরেকটি বাস। ঠিক তার পেছনে থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর প্রাইভেট কার সাভার পরিবহনের বাসটিতে ধাক্কা দেয়। এতে জাবি শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে ভুক্তভোগী ক্যাম্পাসে তার বন্ধুদের জানালে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের এক পাশে ইতিহাস পরিবহনের ৯টি বাস আটক করেন। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের ছাত্রী। ভুক্তভোগী বলেন, ‘এতবড় একটি ঘটনা ঘটার পর পেছনে কেউ মারা গেল নাকি বেঁচে আছে সেটি না দেখে বাসটি দ্রুত টান দিয়ে চলে যায়। এরপর আমার প্রাইভেট কারের চালক ইতিহাস পরিবহনের বাসে উঠে কেন এমন হার্ড ব্রেক করল জানতে চাইলে বাসচালক এবং সহযোগী খারাপ ব্যবহার করেন ও হুমকি দিয়ে বাস থেকে নামিয়ে দেন। আমরা সড়কে চলাচলের নিরাপত্তা চাই।’ ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার বন্ধুদের দাবি, সড়কে চলাচলের নিরাপত্তা এবং প্রাইভেট কারের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ইতিহাস পরিবহন কর্তৃপক্ষের। তারপর তারা বাসগুলো ছাড়বেন। এ বিষয়ে ইতিহাস পরিবহনের আটককৃত একটি বাসের চালক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমাদের (ইতিহাস) একটি বাস হার্ড ব্রেক করছে, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কার ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু সেই বাস আটক না করে আমাদের বাসগুলো আটক করে রেখেছে। আমাদের যিনি চেকার আছেন তাকে বিষয়টি জানিয়েছি।’ ইতিহাস পরিবহনের ভিআইপি চেকার মো. জসিম বলেন, ‘যে বাসটি হার্ড ব্রেক করেছে সেটার নাম্বার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দিয়েছেন। আমরা ওই নির্দিষ্ট বাসটি শনাক্ত করার জন্য রোডে যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে বলেছি। ওই বাসের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধান করব বলে ক্যাম্পাসে এসেছি। আমাদের একটি বাস আটক রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য ছাত্রদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘জানতে পেরেছি, ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি মেরামত করে দেওয়ার জন্য ইতিহাস পরিবহনের মালিকপক্ষ রাজি হয়েছে। গাড়িটি এখন গ্যারেজে আছে। ক্ষতিপূরণ দিলে শিক্ষার্থীরা বাস ছেড়ে দেবে বলে জানিয়েছে। এ ঘটনায় আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।’
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
গুচ্ছ পরীক্ষায় ‘এ’ ইউনিটে শাবিপ্রবিতে উপস্থিতি ৮৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সেবায় ববি ছাত্রলীগ 
চুয়েট বন্ধ ৯ মে পর্যন্ত, খোলা থাকবে হল
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে প্রস্তুত হাবিপ্রবি 
দেশের ২৪টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামীকাল ২৭ এপ্রিল শনিবার থেকে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান বিভাগ) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং একইদিন আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রয়িং) পরীক্ষা বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) প্রশাসন। চলমান তাপপ্রবাহ বিবেচনায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সুবিধার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে বেশ কিছু সেবামূলক উদ্যোগ। এর মধ্যে রয়েছে- ১। চলমান তাপপ্রবাহসহ যেকোন জরুরি স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি মোকাবেলায় হাবিপ্রবি মেডিকেল সেন্টার ও অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং প্রতিটি কেন্দ্রে একজন ডাক্তারসহ ফাস্ট এইড মেডিসিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও সদর হাসপাতালের ডাক্তারগণের সমন্বয়ে মেডিকেল টিম থাকবে। ২। আগত পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিশ্রাম নেয়ার জন্য প্রতিটি একাডেমিক ভবনের সামনে বসার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৩। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য শনিবার সরকারি কলেজ মোড় থেকে তিনটি বাস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসবে। আগামী ৩ মে ‘বি’ ইউনিট ও ১০ মে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা (সকাল ১১টা হতে দুপুর ১২টা) অনুষ্ঠিত হবে। এ দুদিন সকালে সরকারি কলেজ মোড় থেকে তিনটি বাস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসবে।   ৪। মেয়ে পরীক্ষার্থী ও মহিলা অভিভাবকদের জন্য ছাত্রী হল ও টিএসসিতে ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছেলে পরীক্ষার্থী ও পুরুষ অভিভাবকদের জন্য ছাত্র হল ও মসজিদে ওয়াসরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৫। অসুস্থ, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি এর সমন্বয়ে টিম কাজ করবে।  ৬। প্রতিটি একাডেমিক ভবনের সামনে সিটপ্ল্যানসহ বিস্তারিত ম্যাপ টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।  ৭। নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসের সকল গুরুত্বপূর্ণ জায়গা সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সে¦চ্ছাসেবক সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।  গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা যেন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে সে ব্যাপারে আন্তরিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এ বছর হাবিপ্রবি কেন্দে্র পরীক্ষা দেবেন ১২ হাজার ৩৪১ জন ভর্তিচ্ছু। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৬ হাজার ৬১৬ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৪ হাজার ৭৩৯ জন ও ‘সি’ ইউনিটে ৯৮৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন। সারাদেশে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন মোট ৩ লাখ ৫ হাজার ৩৪৬ জন পরীক্ষার্থী।
উত্তপ্ত চুয়েট / হল না ছাড়ার ঘোষণা চুয়েট শিক্ষার্থীদের, অবরুদ্ধ উপাচার্য
বিক্ষোভের মুখে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদেরকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এমন নির্দেশ আরও বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে শিক্ষার্থীদের। জবাবে প্রশাসনিক ভবনের মূল দরজায় তালা দিয়ে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে জানা গেছে, তালাবদ্ধ ভবনে আটকে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার।  বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে নিচে অবস্থান নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল পৌনে পাঁচটায় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে তারা জানান, দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। কোনভাবেই হল ছাড়বেন না। এসময় আবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব দাবির বিষয়ে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেসবের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা একমত হননি। তাই আন্দোলন চলছে। কিন্তু প্রশাসন আলোচনায় না বসে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করবেন না। এর আগে আজ বেলা দেড়টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ বিকেল পাঁচটার মধ্যে ছাত্রদের এবং আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ছাড়তে হবে। এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বারবার আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আশানুরূপভাবে সাড়া দেননি। তাই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হল না ছাড়লে কী হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’ অবরুদ্ধ অবস্থাতেই মুঠোফোনে যোগাযোগ হয় সহ-উপাচার্য মো. জামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়া হয়েছে। আমরা ভেতরে আছি। শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে হবে। যেহেতু ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেহেতু আলোচনার আর পরিবেশ নেই।’ এদিকে হল ছাড়ার নির্দেশে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বরে থাকা ও মূল ফটকে রাখা শাহ আমানত পরিবহনের দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে পুরো ক্যাম্পাসে। প্রসঙ্গত, গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় নিহত হন পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১)। আহত হন জাকারিয়া হিমু (২১)। চুয়েটের কাছাকাছি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি যাত্রীবাসী বাস। দুর্ঘটনার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যা সাতটায় প্রথম দফায় সড়ক অবরোধ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস। পাশাপাশি আরও দুটি বাস ভাঙচুর করা হয়। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রাত নয়টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীর। পরে সেদিন রাত তিনটায় নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হয়। এরপর গত বুধবার প্রায় ১৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। আজও সড়ক বন্ধ।  
আন্দোলনের জেরে চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ
সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের চলা অবরোধ ও বিক্ষোভের চার দিনের মাথায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।  জানা গেছে, বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্রদের আর শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা এবং জব্দ থাকা ২টি বাসের একটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক রেজাউল বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি একাডেমিক সভায় চুয়েট বন্ধ ঘোষণা করেছেন উপাচার্য। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বাসে আগুন দেওয়ার পর ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। এর আগে, ২৩ এপ্রিল বাসের ধাক্কায় চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। 
তরুণদেরকে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।  বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন তিনি।  সদ্য গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তোমরা শুধু চাকরির পেছনে ছুটবে না, উদ্যোক্তা হবে। তোমরা স্বাস্থ্য বিজ্ঞানবিষয়ক বিভিন্ন কর্মমুখী প্রোগ্রামে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছো, সেই হিসেবে তোমাদের কর্মক্ষেত্র তুলনামূলকভাবে সম্প্রসারিত এবং অবারিত। তোমরা তরুণদের জন্য চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করবে। মনে রাখবে এ ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে এক বন্ধুর ও অমসৃণ পথে তোমাদের নতুন যাত্রা শুরু হলো। বিষয়ভিত্তিক ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে সক্ষমতা ও সম্ভাবনার শতভাগ কাজে লাগিয়ে তোমরা স্বনির্ভর জনসম্পদ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে এবং উন্নত বাংলাদেশ গঠনের অংশীদার হবে।  ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, একটি কঠিন পথ অতিক্রম করে নিয়মানুবর্তিতা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তোমরা সম্মানজনক সনদ অর্জন করেছো। তবে এর চেয়েও কঠিন পথ তোমাদের সামনে রয়েছে। তোমাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অপরিসীম ধৈর্য ও মেধাশক্তি কাজে লাগিয়ে সেই কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে তোমাদের পৌঁছাতে হবে। নিজেদের দক্ষতা এবং যোগ্যতায় কর্মজীবনে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে আরোহণ করতে হবে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদুল আলম বলেন, কর্মক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিতে হবে। তোমাদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে। তোমরা শুধু কাজ করবে না, কর্মদক্ষ মানুষ তৈরিতেও সহায়তা করবে এবং নিজেদের মাধ্যমে বিশ্বে সুনাম অর্জন করবে।  
চতুর্থ দিনেও উত্তাল চুয়েট, সড়ক অবরোধ
বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় চতুর্থ দিনের মতো কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।  বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৯টায় রাস্তায় গাছ ফেলে, ব্যারিকেড দিয়ে ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। এর আগে বুধবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। পরে রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় আসেন চুয়েটের উপাচার্য রফিকুল আলম, সহ-উপাচার্য জামাল উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির প্রমুখ। এ সময় রেজিস্ট্রার শিক্ষার্থীদের দাবি মানা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জানান। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের মেনে নেওয়া দাবি রাতের মধ্যে লিখিত আকারে প্রকাশের শর্তে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করে কাপ্তাই সড়ক ছেড়ে দেন। তবে সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আজ সকাল ৮টা থেকে আবারও সড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসন তাদের কিছু দাবি মেনে নিলেও সব দাবির সঙ্গে একমত হতে পারেনি।  এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকরা আমাদের কিছু দাবি মেনে নিয়েছেন বলে মৌখিকভাবে বলেছেন। বিষয়টি আমরা আজ রাতের মধ্যে লিখিতভাবে দেখতে চাই। নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাস মালিক সমিতি দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এ ছাড়া আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫টি বাস ও ৪টি অ্যাম্বুলেন্সের দাবি জানালেও তারা আমাদের ১টি বাস ও ১টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের বিষয়ে জানিয়েছে। শাহ আমানত ও এ বি ট্রাভেলসের বাস এ সড়কে চলবে না বলে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু এদের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি আমরা মানবিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুমন দের বরখাস্ত এবং পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিলাম। সে বিষয়েও আমরা কোনো ধারণা পাইনি। আশিকুল ইসলাম আরও বলেন, পণ্যবাহী ট্রাকের কথা বিবেচনা করে এবং প্রশাসনের মেনে নেওয়া দাবি রাতের মধ্যে লিখিত আকারে প্রকাশ করার শর্তে আমরা রাতে রাস্তা ছেড়ে দিই। আমাদের বাকি দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে আজ সকাল ১০টা থেকে আমরা আবারও রাস্তায় অবস্থান নিয়েছি। সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। উল্লেখ্য, গত সোমবার আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে বাসের ধাক্কায় মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। এ ছাড়া আহত হন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। 
ঢাবিতে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুমে’ অচেতন শিক্ষার্থী, তদন্ত কমিটি গঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের ‘গেস্টরুম’ কর্মসূচি চলাকালে অতিরিক্ত গরমে এক শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে বিজয় একাত্তর হলে এ ঘটনা ঘটে।  ভুক্তভোগী নিয়ামুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। ‘গেস্টরুম’ কর্মসূচিতে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, নিয়ামুল ইসলামকে ‘গেস্টরুমে’ অনেকক্ষণ ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন ছাত্রলীগের ‘বড় ভাইয়েরা’। প্রচণ্ড গরমে শারীরিক অস্বস্তির কথা জানান নিয়ামুল। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাতে কর্ণপাত করেননি। একপর্যায়ে নিয়ামুল অচেতন হয়ে পড়ে যান। পরে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে গণরুমে নিয়ে যান। সহপাঠীরা নিয়ামুলের মাথায় পানি দেন। এ ঘটনা যেন জানাজানি না হয়, সে জন্য তাকে হাসপাতালে নিতে নিষেধ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে নিয়ামুল এখন সুস্থ আছেন। তিনি বলেন, ‘গরমের কারণে আমি ‘গেস্টরুমে’ মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম। তখন বন্ধুরা আমাকে ধরাধরি করে গণরুমে নিয়ে এসে মাথায় পানি দেয়। এখন আমি সুস্থ আছি।’ এ বিষয়ে বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কিছু ছেলেপেলে এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিল। তখন একটা ছেলে একটু মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তখন বন্ধুরা তাকে ডাবের পানি খাইয়ে তার কক্ষে রেখে আসে। তাকে হাসপাতালেও নিতে হয়নি, কোথাও নেওয়া হয়নি, কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিও ছিল না।’ এদিকে এ ঘটনা তদন্তে বুধবার তিন সদস্যের কমিটি করেছে বিজয় একাত্তর হল প্রশাসন। হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ শাহ মিরানকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষক মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন ও আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসান। এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  
চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঘাতক বাসচালক গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঘাতক শাহ আমানত বাসের চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।   বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷  তার নাম তাজুল ইসলাম (৪৮)। চালক গ্রেপ্তারের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করা হলে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।  তবে বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, ঘাতক বাস চালককে গোপন সংবাদে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তাকে এবং বাসের হেল্পারকে বিবাদী করে সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই মামলায় চালককে আইনি প্রক্রিয়া শেষে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে। এ দিকে এই ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল ৯ দফা দাবির কথা বলা হলেও তার সঙ্গে আরও এক দফা দাবি যোগ করেছেন তারা। আন্দোলন নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে এমন দাবিতে সুমন দে নামে চুয়েটের এক শিক্ষকেরও অপসারণ দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দেওয়া এই দশ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।