• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাবার ক্ষমতায় ইতালির তিন ক্লাবে নাম লিখিয়েছিলেন গাদ্দাফির ছেলে

স্পোর্টস ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ২৪ মে ২০২১, ১৩:৩৬
Al-Saadi Gaddafi, rtv online
বারা মুয়াম্মার গাদ্দাফির সঙ্গে আল সাদি

২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ান গোলরক্ষক জেইলকো কালাচ স্বাগত জানান সিরি আ’ ক্লাব পেরুগিয়ার নতুন সদস্যকে। যিনি ছিলেন অন্যদের তুলনায় আলাদা। তার নাম আল সাদি গাদ্দাফি। লিবিয়ার সামরিক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির তৃতীয় সন্তান। ফুটবলের স্বপ্ন সত্যি করতে ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।

বাবার ক্ষমতা ও টাকার জোরেই ইতালিয়ান লিগের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে সমর্থ হয়েছিলেন লিবিয়ায় ফুটবল খেলা আল সাদি।

পেরুগিয়ার অন্য সতীর্থদের সঙ্গে না মিশলেও কালাচের সঙ্গে বেশ ভালোই সম্পর্ক ছিল সাদির।

বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘অনুশীলনের পর আমরা বসা ছিলাম। এক পর্যায়ে আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, তুমি কে? তোমার সঙ্গে কেনো বিশেষ আচরণ করা হচ্ছে?’

লেস্টার সিটি ও এসি মিলানের মতো দলের গোলরক্ষকের দায়িত্বপালন করা জেইলকো কালাচ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন ৫৪টি ম্যাচ। গোলরক্ষক কোচ হিসেবে কাজ করছেন দেশটির বিভিন্ন ক্লাবে।

‘প্রায় দুই ঘণ্টার পর আমার রুমের দরজা নক করা হলো। বডিগার্ড এসে জানালো, সাদি আমাকে তার রুমে ডেকেছেন। আমি ভেবেছিলাম এখানেই আমার জীবন শেষ। তার সঙ্গে কথা হলো। এর পর জানালেন, আমিই প্রথম ব্যক্তি যে তার সঙ্গ মিশতে চেয়েছি। তারপর দুইজনই বেশ ঘনিষ্ট হয়ে যাই।’

খেলোয়াড় হিসেবে তেমন সুবিধা না করতে পারলেও বেশ পরিশ্রমী ছিলেন সাদি। চেষ্টাও করেছেন দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে।

‘অনুশীলনের সময় পা লাত্থি লাগলেও তিনি কিছু মনে করতেন না। অন্যদের মতোই নিজেকে ভাবতে চাইতেন। তবে খেলোয়াড়রা এতটাও বোকা নন। সবই জানতেন পার্কিংয়ে বডিগার্ডরা অপেক্ষা করছেন।’

২০১১ সালে লিবায়ার বিপ্লবীরা স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে হত্যা করে। ৮ সন্তানের মধ্যে মুত্তাসিম, সাইফ আল আরব ও খামিশকে বাবার সঙ্গেই মেরে ফেলা হয়। মুহাম্মদ, সাইফ আল ইসলাম, হানিবাল ও আয়েশা অবস্থান করছেন বিভিন্ন দেশে। অন্যদিকে আল সাদি রয়েছেন লিবিয়ার কারাগারে।

গাদ্দাফির বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ ছিল। পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার-জুলুমের অভিযোগ তোলা হয়।

পরিবার থেকে দূরে থাকা অবস্থায় আল সাদি নিজেকে স্বাধীন মনে করতেন।

জেইলকো কালাচ, ‘লিবিয়ায় না থাকা তার জন্য ছিল স্বাধীনতা। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে জীবন যাপন করতে চাইতেন তিনি।’

সাধারণের মতো চাইলেও কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করতেন ১৯৭৪ সালে জন্ম নেয়া সাদি। পেরুগিয়ার জার্সিতে ক্যারিয়ারে প্রথম ও একমাত্র ম্যাচে খেলেছিলেন জুভেন্টাসের বিপক্ষে। ওই ম্যাচের শেষ দিকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন।

‘অভিষেকের পর সাধারণত সবাইকে খাওয়ানো প্রচলন ছিল। তবে সাদি দলের সবার জন্য মার্সিডিজ গাড়ি কিনে দিতে চেয়েছিলেন।’ যোগ করেন কালাচ।

পেরুগিয়ায় ২০০৩/০৪ মৌসুম কাটিয়ে চলে যান উদিনেসে। ইতালির এই দলেও মাত্র ১টি ম্যাচই খেলতে পেরেছিলেন। ২০০৬/০৭ মৌসুমে সাম্পাদোরিয়ায় যোগ দিলেও মাঠে নামা হয়নি তার। ফিরে যান দেশে।

এর আগে ২০০০ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত আল আহলি ত্রিপলি ও আল ইত্তিহাদ ত্রিপলির জার্সিতে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল সাদির। কথিত আছে এই দুই দলের হয়ে খেলার সময় স্বেচ্ছাচারীতাও করতে দেখা যায় তাকে।

অন্যদিকে ২০০০ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত লিবিয়া জাতীয় দলের হয়ে ১৮টি ম্যাচেও খেলেছিলেন তিনি। দায়িত্বপালন করেছেন অধিনায়ক হিসেবে। অবসরের পর দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের দায়িত্বও নিয়েছিলেন। দেশটির স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডারও ছিলেন আল সাদি গাদ্দাফি।

thinking about Al-Saadi Gaddafi, Muammar's son and, briefly, Serie A footballer pic.twitter.com/m39kGT8k20

— torii (@toriimacdaddy) December 3, 2020

ওয়াই

আরটিভি’র সর্বশেষ নিউজ পেতে ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন...

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh