• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo

মানুষের চামড়ার জাদুঘর!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৪ মে ২০২৪, ২১:৪৩

শখের তোলা নাকি আশি টাকা। তাই হয়তো মানুষ তার এক জীবনে হাজারো রকমের শখ পূরণের চেষ্টা করে থাকে। সেই শখের বসে অদ্ভুত সব কাণ্ড করতেও পিছপা হয় না মানুষ। শখ পূরণে কেউ করেন হারিয়ে যাওয়া পুরনো তৈজসপত্র সংগ্রহ, আবার কেউ করেন পুরনো মুদ্রা, ডাকটিকিট সংগ্রহ। সে রকমই এক অদ্ভুতুরে ব্যক্তির দেখা মিলেছিল জাপানের টোকিওতে। মানুষের চামড়া সংগ্রহ করা ছিল যার প্রধান শখ।

সূর্যোয়ের এই দেশটির রাজধানী টোকিওতে অবস্থিত জিকেই ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন। এই ইউনিভার্সিটিতে গবেষকরা নানান বিষয় নিয়ে গবেষণা করে থাকেন।

টোকিওর এই ইউনিভার্সিটিতে দেখা যায় অদ্ভুত এক জাদুঘর। সেই জাদুঘরে সারি সারি সাজানো রয়েছে মানুষের চামড়া। কোন চামড়ায় আঁকা ট্যাটু আবার কোন চামড়ায় রয়েছে বাহারি উল্কি।

এখন প্রশ্ন হলো জাদুঘরে এসব চামড়া এলো কীভাবে?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে যে মানুষটির নাম পাওয়া যায়, তিনি টোকিওর ইম্পেরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. ফুকুশি মাসাইচি।

ডা. মাসাইচি ১৮৭৮ সালের ৩০ জানুয়ারি জাপানের ইয়ামগাছিতে জন্মগ্রহণ করেন। ইউনিভার্সিটি অব টোকিও থেকে মেডিসিনে পড়ালেখা শেষ করে উচ্চ ডিগ্রি নিতে জার্মানিতে পাড়ি জমান এরপর দেশে ফিরে তিনি জাপানি প্যাথলজিক্যাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।

ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি তাকে বেশ আকৃষ্ট করতো রোগীর শরীরে আকা উল্কি বা ট্যাটু। সেই আকৃষ্টতা থেকেই তিনি চাইলেন সেসব সংগ্রহ করতে। যেই কথা সেই কাজ।

নেমে পড়লেন উল্কি বা ট্যাটু আঁকা চামড়া সংগ্রহ করতে। হাসপাতালে কোনো মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য এলেও সেই মৃতদেহের উল্কি আঁকা অংশটুকু সংগ্রহ করতেন তিনি। তার এই চামড়া সংগ্রহের খবর শুনে অনেকেই মরণোত্তর চামড়া দান করে যেতেন সংরক্ষণের জন্য। গবেষণার জন্য অনেকের কাছে টাকা দিয়েও চামড়া বুকিং দিতেন মাসাইচি।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রায় দুই হাজার মানুষের চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। তবে দুঃখের বিষয় বেশির ভাগ চামড়াই হারিয়ে ফেলেন মাসাইচি। ১৯৪৫ সালের বিমান হামলায় লাগেজ ভর্তি চামড়া নিয়ে শিকাগোতে যাওয়ার সময় অনেক চামড়া হারিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত ১০৫ জন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন চামড়া সংগ্রহে আছে টোকিওর সেই ইউনিভার্সিটিতে।

ডা. মাসাইচির চিকিৎসক হিসেবে যতটা না পরিচিতি ছিল তার চেয়ে বেশি ছিল এসব চামড়া সংগ্রহের জন্য। তাই যেকোনো ধরনের ট্যাটু প্রতিযোগিতায় তিনি সবার আগে আমন্ত্রণ পেতেন। তার সংগ্রহ করা চামড়াগুলো এখনো সংগ্রহে আছে সেই জাদুঘরে, তবে তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়।


মন্তব্য করুন

  • বিশেষ প্রতিবেদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
স্পিকারের সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
জাপানি নাগরিক ‘অজ্ঞান পার্টির’ কবলে পড়েননি: ডিএমপি
শেখ হাসিনাকে ‌‌‘ইকেবানা’ উপহার পাঠালেন বাবা হারানো জাপানি কন্যা
নতুন অর্থবছরে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত