• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
মহাব্যস্ত ব্যাংকপাড়া, লাইন লাগছে বুথেও
আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি। সে হিসেবে শেষ কার্যদিবস আগামীকাল মঙ্গলবার। উৎসবের মহেন্দ্রক্ষণ ঘনিয়ে আসায় মহাব্যস্ততার মধ্য দিয়ে পার করছে ব্যাংকপাড়া। গ্রাহকদের লম্বা লাইন চোখে পড়ছে প্রায় প্রতিটি ব্যাংকে। স্বাভাবিকের তুলনায় অত্যধিক বেশি গ্রাহকের চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তারা। টাকা তোলার জন্য ভিড় হচ্ছে এটিএম বুথগুলোতেও। সোমবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর ব্যাংকপাড়াখ্যাত মতিঝিল ও দিলকুশা, দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাংকগুলোর প্রতিটি শাখাতেই সকাল থেকে ক্যাশ ও জমা কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন দেখা গেছে। নতুন নোট বিনিময়ের পাশাপাশি চালানপত্র, ডিপোজিটসহ বিভিন্ন সেবার বিল জমা দেওয়ার লাইনও ছিল। তবে টাকা জমার চেয়ে উত্তোলনের জন্যই ভিড় ছিল বেশি।  এ সময় কথা হয় মেহেদি হাসান নামে সোনালী ব্যাংকের এক গ্রাহকের সঙ্গে। তিনি জানান, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৩০ জন কর্মরত আছেন। তাদের আজ বেতন-বোনাস দিতে হবে। এজন্য টাকা উত্তোলনের জন্য এসেছেন। রায়হান হক নামে আরেক গ্রাহক জানান, এখনও ঈদের কেনাকাটা হয়নি। আজ রাতে পরিবার নিয়ে কেনাকাটার ইচ্ছে আছে, এজন্য টাকা তুলতে এসেছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর বাংলাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা না গেলে বুধবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে ঈদ উদযাপিত হবে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল)।  
০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৩৬

চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হচ্ছে চাল, লাগছে না আমদানি
গত বছর বাংলাদেশে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ কোটি ৭৭ লাখ টন। এর বিপরীতে চালের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ টন। কৃষি বিভাগ বলছে, এভাবে ২০১৮ সাল থেকেই বাংলাদেশে চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণ চাল উৎপাদন হচ্ছে। চলতি বছরে উৎপাদনের এই ধারাহিকতা রক্ষা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন, বিগত বছরেও চাল আমদানির প্রয়োজন হয়নি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানির তথ্য বলছে গত বছরের জুলাই থেকে এই বছরের ৭ মার্চ পর্যন্ত কোনো চাল আমদানি করা হয়নি।    ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিগত মৌসুমগুলোয় উৎপাদন ভালো হওয়ায় এই আমন মৌসুমের সংগ্রহ পর্যন্ত চাল আমদানির প্রয়োজন নেই। এর পাশাপাশি ডলার সংকটের কারণেও চাল আমদানি না করে খাদ্য পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায়, সেদিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ২০২১-২২ অর্থবছরে সাড়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করা হলেও এরপর এখনও কোনো চাল আমদানি করা হয়নি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুসারে মাথাপিছু ১৫২ কেজি চালের প্রয়োজনীয়তা ধরে নিয়ে আমাদের বার্ষিক চালের চাহিদা নিরূপণ করা যায়। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ আছে। তাতে বার্ষিক খাদ্যচাহিদা দাঁড়ায় ২ কোটি ৫৮ লাখ টন চাল। এর সঙ্গে বীজ ও অপচয় এবং পশুখাদ্য বাবদ ১৫ শতাংশ যোগ করে মোট চালের প্রয়োজন দাঁড়ায় ২ কোটি ৯৬ লাখ টন বা প্রায় ৩ কোটি টন। দৈনিক চালের চাহিদা আরেও বেশি বিবেচনায় নিয়ে মাথাপিছু দৈনিক আধা কেজি বা বার্ষিক জনপ্রতি ১৮২ দশমিক ৫ কেজি হিসেবে চালের চাহিদা দাঁড়ায় ৩ কোটি ১০ লাখ ২৫ হাজার টন। বীজ, অপচয় ও পশুখাদ্য হিসেবে আরও ১৫ শতাংশ যোগ করা হলে মোট চাহিদা দাঁড়ায় ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার টন। এর বিপরীতে চালের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ টন। বর্তমানে মজুত আছে ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৬০৯ মেট্রিক টন।    বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিস্টিটিউটের (বিআরআরআই) পলিসি গবেষণার প্রজেকশন অনুযায়ী, ২০৩০ সালে বাংলাদেশে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টন, ২০৪১ সালে ৫ কোটি ৪১ লাখ টন এবং ২০৫০ সালে ৬ কোটি ৯ লাখ টন চালের প্রযোজন হবে। বিআরআরআই’র মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর জানিয়েছেন, ২০৩০ সালে ৪২ লাখ টন, ২০৪০ সালে ৫৩ লাখ টন এবং ২০৫০ সালে ৬৫ লাখ টন চালে উদ্বৃত্ত থাকবে। এই বাড়তি উৎপাদন আমাদের যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় বাফার স্টক হিসেবে কাজ করবে।  বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাথাপিছু দৈনিক চাল গ্রহণের পরিমাণ ৩২৮ দশমিক ৯ গ্রাম হয়েছে। শহরাঞ্চলে মাথাপিছু চাল গ্রহণের পরিমাণ ২৮৪ দশমিক ৭ গ্রাম, যা জাতীয় গড় থেকে ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। ১৭ কোটির মানুষের প্রতিদিনের হিসাব ধরে বছরে প্রয়োজন হয় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টন চাল। শুধু ভাত হিসেবে এ চাল মানুষ গ্রহণ করে। এর বাইরে বিভিন্ন পোলট্রি ফিড, বীজসহ অন্যান্য প্রয়োজনে চাল ব্যবহার হয় ১ কোটি টন। সবমিলে প্রয়োজন ৩ কোটি ৬০ লাখ টন। কিন্তু গত বছরে উৎপাদন হয়েছে ৪ কোটি ১৩ লাখ টন।    বিআরআরআই’র কর্মকর্তারা বলছেন, বিআরআরআই ইতোমধ্যে রাইস ভিশন ২০৫০ প্রণয়ন করেছে, যাতে ২০৩০, ২০৪১ এবং ২০৫০ সালে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বিপরীতে চালের উৎপাদন প্রক্ষেপণ করা হয়েছে এবং তা অর্জনে ব্রি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কৌশলপত্র প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি হারে আমাদের ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে যা নিশ্চিত করে যে আমরা খাদ্যে উদ্বৃত্ত।  তাহলে এত চাল কোথায় যায়, আমদানি কেন করতে হয়? প্রশ্ন উঠেছে এরপরও কেন সরকারকে চাল আমদানি করতে হয়। এ বিষয়ে ধান বিজ্ঞানীরা বলছেন, দেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রয়েছে। তাদের তথ্য আদমশুমারিতে যুক্ত হয়নি। এরা যে ভাত খায়, সে চাল আমাদের দেশেই উৎপাদিত হয়। আবার চালের একটি অংশ বীজের জন্য রাখতে হয়। নানা কারণে চালের অপচয় হয়। ব্যক্তিগতভাবে অনেক কৃষক নিরাপত্তার জন্য বাড়িতে চাল মজুত করেন, যেটি হিসাবেও নেই। ব্যবসায়ীদের কাছেও মজুত থাকে।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চালের হিউম্যান কনজাম্পশন (সরাসরি ভাত) ছাড়াও নন-হিউম্যান কনজাম্পশন (অন্যান্য কাজে) আছে। হিউম্যান কনজাম্পশন হিসাবে উদ্বৃত্ত ঠিকই আছে। তবে নন-হিউম্যান কনজাম্পশনও বাড়ছে। ১৫ থেকে ২০ শতাংশ চাল নন-হিউম্যান কনজাম্পশনে ব্যয় হয়ে যায়। অর্থাৎ মানুষের ভাত গ্রহণ ছাড়াও অন্যান্য কাজে চালের ব্যবহার আছে।  কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১১৫টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এতে আগের চেয়ে ফলন ও উৎপাদন বাড়ছে। অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় আনা হচ্ছে। 
১১ মার্চ ২০২৪, ২৩:৫২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়