• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে বুয়েটে পরীক্ষা বর্জন
ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।  রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বুয়েটের ২০তম ব্যাচের এক হাজার ২১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এক হাজার ২১৪ জনই টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেননি। এর মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসে পুনরায় ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান কতোটা সুদৃঢ় তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর আগে, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থী ও শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়ে রোববার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সমাবেশে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, বুয়েটে নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীর, জেএমবি ও ছাত্র শিবিরের ক্যাডাররা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নানানভাবে শিক্ষার্থীদের দাওয়াত দিচ্ছে, টাঙ্গুয়ার হাওরে শিবির দেশবিরোধী মিটিং করছে। তাই বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত একটি নাটক। এই নাটক বন্ধ করে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালু করতে হবে। সমাবেশে বুয়েটের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির আবাসিক হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল ঘোষণার প্রতিবাদ জানায় ছাত্রলীগ। সেই সঙ্গে রাব্বির সিট ফেরত দিতে বুয়েট প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্র সংগঠনটি। সমাবেশ শেষে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর তারা বুয়েট ত্যাগ করেন।
৩১ মার্চ ২০২৪, ২১:১৩

ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলন নিয়ে বিএনপিতে দ্বন্দ্ব!
বিএনপি নেতাকর্মীদের ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রচারণার পরও দলীয়ভাবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছে না বিএনপি। দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন, বিএনপি এখনও দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরে যথাসময়ে এ বিষয়ে দলের অবস্থান বা প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির মধ্যে নেতৃত্বের যে সংকট চলছে ভারতবিরোধী ইস্যুতে তা প্রকট হয়েছে। একইসঙ্গে দলটিতে যে মতের পার্থক্য রয়েছে তা-ও স্পষ্ট হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের কিছুদিন পরই আওয়ামী লীগবিরোধী কয়েকটি দলের তৎপরতায় শুরু হয় ‘ইন্ডিয়া আউট’ বা ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এটি ছড়িয়ে পড়ে। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ও সামাজিকমাধ্যমে প্রচারণা চালাতে দেখা যায়। গত ২০শে মার্চ বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নিজের ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে এই আন্দোলনে সংহতি জানান। গত সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে এই ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের’ বিষয়টি নিয়ে ও আলোচনা হয়। এতে রুহুল কবির রিজভীর ওই কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আলোচনা করা হয়। ভারতীয় পণ্য বর্জনে রিজভীর সংহতি জানিয়ে দেওয়া বক্তব্য ব্যক্তিগত বলে স্থায়ী কমিটিতে জানানো হয়েছে। দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন, এই আন্দোলন বা কর্মসূচি বিএনপি আহ্বান করেনি। অন্যান্য বিভিন্ন জায়গা থেকে এই আহ্বান করা হয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মানুষ যখন মার্কেটে যায় তারা একটা কোয়ালিটি কাপড় দেখে। সেটা মেইড ইন বাংলাদেশ, মেইড ইন ইনডিয়া নাকি চায়না এটা দেখে না। ইনডিয়ান কাপড় কেনে এমন ও না। এটার কথা স্পেসিফিক করা যাবে না। এটা একটা রাজনৈতিক আবেগ। তবে দলীয়ভাবে এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’ এ বিষয়ে মঙ্গলবার থেকে দলটির আরো কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সাড়া দেননি তারা। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেতারা কেন স্ত্রীদের ভারতীয় শাড়ি পোড়াচ্ছেন না এমন প্রশ্ন তোলেন। ভারতবিরোধী ইস্যুতে বিএনপি এখনও দলীয় সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য নিয়ে দলের মধ্যেই যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তাতে এই বিষয়টিকে নেতৃত্বের সংকট বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বিএনপির মধ্যে নেতৃত্বের সংকট চলছে। ফলে এটি যুগ্ম মহাসচিবের ব্যক্তিগত বক্তব্য নাকি কতখানি বিএনপির সিদ্ধান্ত তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। রাজনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘এই কর্মসূচি নিয়ে দেখা যাচ্ছে বিএনপির দলের মধ্যেই দ্বন্দ্ব আছে। রিজভীর চাদর পোড়ানোর মধ্য দিয়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। আরেক দল বলছে ভারতকে আমরা অসন্তুষ্ট করব না। কারণ, তাহলে ক্ষমতায় আসা যাবে না। আবার আরেকদল ভাবছে তাদের অফিসিয়াল স্ট্যান্ড গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্বের জন্য ফাইট করবো। সুতরাং দলের মধ্যেই এরকম একটা দ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে বলে আমার মনে হয়।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে যে লিডারশিপের ক্রাইসিস চলছে। কে মহাসচিব হবে সেটা একটা বিষয়। আরেকটা বিষয় নির্বাচনে যেহেতু পশ্চিমা দেশের সাপোর্ট তা সেভাবে ফলপ্রসূ হয়নি। তাই অ্যান্টি ভারত সেন্টিমেন্ট সামনে নিয়ে এসে সেটাকে কাজে লাগিয়ে তারা সাফল্য পেতে চায়।’ ভারতবিরোধী এই কর্মসূচির কোনো প্রভাব নেই বরং বিএনপি এতে যুক্ত হলে আওয়ামী লীগকে সাহায্য করবে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তিনি বলেন, ‘এটার কোন ইমপ্যাক্ট নেই। স্যাংশন বা বয়কট কোন কাজে দেয় না। বরং তারাই উপকৃত হয়। এটা যেমন আওয়ামী লীগকেই হেল্প করবে।’ বিএনপির ভারতবিরোধী অবস্থান রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। কোনো কোনো সময় প্রকাশ্যে বিরোধিতা করলেও আবার সতর্ক অবস্থানে চলে যায় দলটি। বিএনপি বরাবরই আওয়ামী লীগকে ভারতের সমর্থনপুষ্ট হিসেবে প্রচার করলেও ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর ভারতের সাথে সম্পর্কন্নোয়নের বেশ চেষ্টা করেছিল। এরপর, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিএনপিকে ভারত ইস্যুতে সরব হতে দেখা যায়। পরের বছরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে বিএনপি ভারতের সমালোচনা করে। এর আগে ২০১২ সালের অক্টোবরে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে ভারত সরকারের আমন্ত্রণে দিল্লি সফর করেছিলেন। এরপর থেকে জেলে যাওয়া পর্যন্ত বিএনপি নেত্রী ভারতের বিরোধীতা বা সমালোচনা করে কোনো বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর নিয়ে বিএনপির রক্ষণশীল অবস্থান থাকলেও সে সময় এই বন্দর ভারতকে ব্যবহার করতে দেয়ার ব্যাপারে চুক্তির পর দলটি সতর্কভাবে লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে তাদের বক্তব্য দেয়। ২০১৩ সালে ভারতের তখনকার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর ঢাকা সফরের সময় বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে দলটির সাথে ভারতের সম্পর্কের আরো অবনতি হয়। পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের সময় তার সাথে হোটেলে গিয়ে দেখা করেন খালেদা জিয়া। সর্বশেষ ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের প্রতিবাদে যে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছিলো সেটিও বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে দিল্লির দূরত্ব আরও বাড়িয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
২৮ মার্চ ২০২৪, ২০:২২

বিএনপির ভারত বর্জন কর্মসূচির কারণ জানালেন নাছিম
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যাতে আরও বেড়ে যায়, সেজন্যই ভারতীয় পণ্য বর্জনের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি কখনোই দেশের মানুষের ভালো চায় না। মানুষ শান্তিতে থাকুক তারা এটা চায় না। তারা শেখ হাসিনার সরকারের বিরোধিতার নামে দেশের মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে তুলছে। তারই নতুন সংস্কার ভারত বিরোধিতা। নিত্যপণ্যের দাম যাতে আরও বৃদ্ধি পায়, সেজন্যই তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের কর্মসূচি শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই তারা দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড করছে, মানুষের স্বার্থে আঘাত লাগে এমন কাজ করছে আর ভারত বিরোধিতা তাদের তেমনই কর্মসূচি। স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চলনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্মল চ্যাটার্জী।
২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭:২২

রাসুল (সা.) রোজা অবস্থায় যেসব কাজ বর্জন করতে বলেছেন
সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান। এ মাসে রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে। রোজাদারকে আল্লাহ নিজ হাতে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। আর বেশ কিছু কাজ আছে যেগুলো রোজা অবস্থায় তো বটেই সবসময় করতে নিষেধ করেছেন স্বয়ং রাসুল (সা.)। সেগুলো হচ্ছে- অনর্থক ও নির্লজ্জ কথা-কাজ, গালাগাল, পরনিন্দা, চোগলখুরি ও প্রতারণা। রাসুল (সা.) বলেন, শুধু পানাহার পরিহারের নাম রোজা নয়, বরং অনর্থক ও অশ্লীলতা পরিহারের নাম হচ্ছে সিয়াম। অতএব যদি তোমাকে কেউ গালি দেয় কিংবা তোমার সঙ্গে কোনো মূর্খতাসুলভ কাজ করে, তাহলে তুমি বলবে, আমি সায়েম, আমি রোজাদার। (সহিহ ইবনে খুজায়মা, হাদিস : ১৯৯৬; সহিহুল জামে, হাদিস : ৫৩৭৬) মহানবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ পরিহার করল না, তার পানাহার পরিহারে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩) গিবত ভয়াবহ পাপ। মহান আল্লাহ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে করো।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২) রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা কি জানো গিবত কী? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলুল্লাহ (সা.) বেশি অবগত। তিনি বলেন, তোমার কোনো ভাইয়ের এমন কোনো বিষয় উল্লেখ করা, যা সে অপছন্দ করে। বলা হলো, (এ ব্যাপারে) আপনার অভিমত কী যে আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে? তিনি বলেন, তুমি যা বলো, তা যদি তোমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে, তাহলে তুমি তার গিবত করলে। আর যদি তার মধ্যে না থাকে তাহলে তুমি তার প্রতি অপবাদ দিলে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৪) মহানবী (সা.) বলেছেন, মিরাজের রাতে আমি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরি, যা দ্বারা তারা অনবরত তাদের মুখমণ্ডল ও বক্ষদেশে আঁচড় কাটছে। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা হে জিবরিল! তিনি বলেন, এরা ওই সব লোক, যারা মানুষের গোশত খেত (গিবত করত) এবং তাদের মান-সম্মানে আঘাত হানত। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৮) চোগলখুরি হচ্ছে বিবাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্যজনকে বলা। এটা বড় পাপ। রাসুল (সা.) বলেন, চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৮১) অন্য একটি হাদিসে এসেছে, একদা নবী করিম (সা.) দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বলেন, এই দুই ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। অথচ তাদের বড় কোনো পাপের কারণে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। তাদের একজন পেশাব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করত না। আর অপরজন চোগলখুরি করে বেড়াত। (বুখারি, হাদিস : ২১১) প্রতারণা মুসলমানের কাজ নয়। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পকর্ম, কৃষিকাজসহ সর্বপ্রকার আচার-ব্যবহার, পরামর্শ-উপদেশ ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ধোঁকা-প্রতারণা ও প্রবঞ্চনা পরিত্যাগ করা অপরিহার্য। কেননা এটা বড় গোনাহের কাজ। প্রতারক উম্মতে মুহাম্মদির অন্তর্ভুক্ত নয়।  রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের (মুসলমানদের) ধোঁকা দেয়, সে আমাদের  দলভুক্ত নয়। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৩১০)
২৫ মার্চ ২০২৪, ১৯:০২

দাম বাড়লে আমরা বেশি কিনি, অন্যরা বর্জন করে : সমাজকল্যাণমন্ত্রী
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কোনো জিনিসের দাম বাড়লে সেই জিনিস লোকে কম কিনে বা বর্জন করে। আর আমাদের দেশে দাম বাড়লে সেই জিনিস কিনে কিনে বাসায় জমায়। তখন আমরাই বাড়িতে ছোটখাটো মজুতদার হয়ে যাই।  বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেপুরে শেখ রাসেল পৌর মিলনায়তনে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ এবং যুব মহিলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. দীপু মনি বলেন, কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তারা তরমুজের দাম বাড়িয়ে দেয়। আমরা যদি ঠিক করি যে, আমরা সাত দিন কিংবা ১০ দিন সারাদেশে একটা মানুষও তরমুজ খাব না। ওই তরমুজ ব্যবসায়ীর সব তরমুজ পচে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা কী করি? দাম বাড়লে আরও বেশি কিনি। যত বেশি কিনি সেই অসাধু ব্যবসায়ীরা আরও বেশি দাম বাড়ায়।  সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার মানেই হচ্ছে মানুষের সরকার, জনমানুষের সরকার, জনবান্ধব সরকার। এটি ঠিক যে আজকে আমরা দেখছি, রোজার মধ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী যারা নিত্যপণ্যের জিনিসের দাম বাড়িয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়ার চেষ্টা করছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে সরকার দাম বেঁধে দিচ্ছে। এই সময়ে মানুষ যাতে একটু স্বস্তিতে থাকে সেজন্য সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিযে যাচ্ছে। কিছু কিছু ব্যবসায়ী তারপরও ঝামেলা করছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীরা সবসময় মানুষের পাশে থাকেন। কেননা, বঙ্গবন্ধু মানুষের আদর্শের রাজনীতি করতেন। তিনি দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কীভাবে এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি মিলবে। কীভাবে এদেশের মানুষ ভালো থাকবে-সুখে থাকবে সেই চেষ্টা করতেন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই কাজটি করছেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন। দীপু মনি বলেন, এই বাংলাদেশে যেভাবে দারিদ্র ছিল, যেভাবে হতদরিদ্র ছিল। এখন দেখুন দারিদ্রের হার অর্ধেকের অনেক বেশি নেমে গিয়েছে। বর্তমানে দারিদ্রের হার ৪১ ভাগ থেকে ১৮ ভাগে নেমে এসেছে। হতদরিদ্রের সংখ্যা ২১ ভাগ থেকে এখন ৫ দশমিক ৬ ভাগে নেমে এসেছে। আর সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনা একজন মায়ের মন দিয়ে তিনি দেশটা চালান। একজন মা যেমন শত প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও তার সন্তানের ভালোর জন্য তার পথ থেকে কেউ বিচ্যুত করতে পারে না, ঠিক তেমনি শেখ হাসিনা তার দেশের মানুষের জন্য কল্যাণের জন্য শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এগিয়ে চলেছেন দৃঢ় পায়ে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। গুলি, বোম, গ্রেনেড মারা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং বাংলার মানুষের দোয়াতে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। তার বেঁচে থাকাটা যে আমাদের জন্য কত নেয়ামত সেটি আমরা যদি চিন্তা করি যে, ১৫ বছর আগে আমরা কোথায় ছিলাম আর এখন কোথায় আছি। বাগমারা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কোহিনুর বানুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক পিএম সফিকুল ইসলাম, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন, জাকিরুল ইসলাম সান্টু, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক প্রভাষক মাহবুবুর রহমান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার মিতা,জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপাশা খাতুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।   
২০ মার্চ ২০২৪, ১৮:০৫

নির্বাচন বর্জন সংস্কৃতি বিএনপির জন্য বুমেরাং হবে
গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন যেকোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান হাতিয়ার। কারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই তারা জনগণের একেবারে কাছাকাছি যায়, নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করে এবং নেতৃত্ব বিচার করে। শুধু যেসব রাজনৈতিক দল বা তাদের নেতৃত্ব বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা বদলের চিন্তা করে, তারাই নির্বাচন অপছন্দ করে কিংবা নির্বাচনের ধার ধারে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আপাতত সেরকম পরিস্থিতি নেই। সহজ করে বললে সেরকম, বিপ্লবী রাজনৈতিক দল নেই, যারা বিপ্লব করে সরকার পরিবর্তন করতে পারবে বা ক্ষমতায় যেতে পারবে।  বাংলাদেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন করে ক্ষমতার পালা বদলের চিন্তায় বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি সে রকমই একটি রাজনৈতিক দল। যদিও তাদের জন্ম ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে। যারা তিন দফায় বেশ কয়েক বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলো। তাদের প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাত ধরে দলটি প্রথমে ক্ষমতায় বসে। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ক্ষমতা দখলের অপসংস্কৃতি শুরু হয়েছিল। এতে জিয়াউর রহমানের মদদ ছিলো বলে তথ্য প্রমাণ রয়েছে। ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতাগ্রহণের পর একাধিক ক্যু হয়। এরমধ্যে ৭ নভেম্বরের ক্যু পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন জেনারেল জিয়াউর রহমান।  জিয়া নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে হ্যাঁ-না ভোট চালু করেন। অর্থাৎ তিনি এটা ভালো ভাবেই বুঝেছিলেন যে, এদেশের মানুষকে ভুলিয়ে ভালিয়ে রাখতে হলে এবং তাদের মন জয় করতে হলে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনের বিকল্প কিছু নেই। ১৯৮২ সালে সামরিক শাসক জেনারেল এইচ এম এরশাদ যখন ক্ষমতা দখল করলেন, তিনিও একই কায়দায় নির্বাচন ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখলেন। তার বিরুদ্ধে বার বার আন্দোলনের পরও তিনিও নির্বাচনের উপর আস্থা রেখেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয় গণঅভ্যুত্থানের মুখে।  ১৯৯০-এর পট পরিবর্তনের পর ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি। দেশে সূচনা হয় সংসদীয় গণতন্ত্রের। তারপর থেকে নির্বাচনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে। যদিও বিএনপি ১৯৯৫ সালে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে জনআন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একতরফা নির্বাচন করে শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করতে বাধ্য হয়।  ১৯৯৬ সালের ক্ষমতায় আসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালে শেখ হাসিনার সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর করে। সেই নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে বিএনপি-জামায়াত জোট। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট তাদের মেয়াদের শেষ দিকে প্রধান বিচারপতির বয়স বাড়িয়ে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার পাঁয়তারা করলে শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। শেষ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গড়িমসি করলে দেশে এক-এগারো পরিস্থিতির তৈরি হয়। প্রায় আড়াই বছর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশ পরিচালনার পর ২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে।   এরপর আদালত কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হয়ে গেলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা চালু হয়। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই। তিনটি নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। পরে আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার পর বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। একই সঙ্গে তারা নির্বাচন বর্জন এবং প্রতিহত করতে জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে। কিন্তু তাদের আন্দোলন আমলে না নিয়েই সরকার সংবিধান অনুযায়ী ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে।   ২০১৮ সালেও একইভাবে বিএনপি-জামায়াত জোট প্রথমে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত দলের নিবন্ধন রক্ষা করতে বিএনপি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচন যায়। এই নির্বাচন নিয়েও নানান বিতর্ক আছে। নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি ও তাদের জোট শরিকরা সরকার পতনের আন্দোলন করে। শেষদিকে এসে ২০২২ ও ২০২৩ সালে বিএনপি দেশজুড়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম বাড়ায়। দলটি জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সভা-সমাবেশ করে। এতে করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণ ফিরে আসে। দল চাঙ্গা হতে থাকে। মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ভেবেছিলেন দল নির্বাচনে অংশ নেবে। কিন্তু শেষ দিকে এসে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে শক্ত অবস্থান নেয় এবং নির্বাচন বর্জন করে।     নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় বিএনপি রাজনৈতিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেই মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা এবং মামলা-মোকদ্দমাসহ নানা কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সাহস, শক্তি সবই হারিয়েছেন। বিএনপির নেতৃত্বের একাংশ এখনও বলছে, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না তারা। আরেক অংশ এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করেন সংগঠন টিকিয়ে রাখতে হলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।  রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপিকে এই অবস্থান ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বদলাতে হবে। কারণ দলীয় নিবন্ধন টিকিয়ে রাখতে হলে ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো বিকল্প বিএনপির সামনে থাকবে না। লেখার শুরুতেই বলেছিলাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে নির্বাচন হচ্ছে মোক্ষম হাতিয়ার। কিন্তু বিএনপির নেতৃত্ব সংকট এবং সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপার থেকে নাজিল হওয়া নির্বাচন বিরোধী নির্দেশের কারণে বিএনপি নির্বাচনী রাজনীতি থেকে যোজন যোজন দূরে চলে যাচ্ছে। আর নির্বাচন থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে দলের নেতাকর্মীদের হতাশা ক্রমশ বাড়ছে।   বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সর্বশেষ মামলায় জামিন পেয়েছেন বুধবার। স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও জামিন পেয়েছেন একই মামলায়। তাদের দুই জনের বিরুদ্ধে যথাক্রমে ১১ ও ১০টি মামলা ছিলো। এখন সবগুলো মামলায় তারা জামিন পেলেন। তাদের কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকলো না। এতদিন ধরে বিএনপি যে নেতৃত্ব শূন্যতায় ছিলো সেই সংকট দূর হবে বলে ধারণা করা যায়। আগামী উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি যদি ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত না নিতে পারে তাহলে তাদেরকে সেই ভুলের খেসারত দিতে হবে।  শেষ করতে চাই পাকিস্তানের নির্বাচনী ফলাফলের প্রসঙ্গ দিয়ে। পিটিআই সভাপতি ইমরান খানকে জেলে পুরে, একাধিক মামলায় সাজা দিয়ে সরকার কোণঠাসা করে রেখেছিল। এমনকি পিটিআই এর নির্বাচনী প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছিল সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা স্বতন্ত্র নির্বাচন করে ১০১টি আসনে জয় পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বিএনপি নেতৃত্ব যদি এখান থেকে কিছু রাজনৈতিক শিক্ষা নিতে পারে তাহলে তাদের দলের জন্য এবং তাদের অনুসারীদের জন্য ভবিষ্যতে হয়তো ইতিবাচক ফল আসবে। লেখক : সাংবাদিক 
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:০৬

‘ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি’
ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশবিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় দলের (এপিপিজি) ভাইস চেয়ার ও ইন্দো-ব্রিটিশবিষয়ক এপিপিজি’র চেয়ার বীরেন্দ্র শর্মা এমপির নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যের ক্রস পার্টি একটি পার্লামেন্টারি প্রতিনিধিদল রোববার (২৮ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সবসময় জনগণের ম্যান্ডেটের পরিবর্তে অন্য শক্তির সহায়তায় ক্ষমতায় যেতে চায়। যখনই নির্বাচনের সময় আসে, তখনই তারা (বিএনপি) অন্য কোনো শক্তির সন্ধান করে যারা তাদের ক্ষমতায় বসাতে পারে। বিএনপি সবসময় যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা নিশ্চিত করতে চায়। গত ৭ জানুয়ারি এবং ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি তারা কোনো নিশ্চয়তা না পায় যে কেউ তাদের ক্ষমতায় আনবে, তাহলে তারা নির্বাচন বয়কট করবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছিল, কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার নিশ্চয়তা না পাওয়ায় নির্বাচনের দিনে নির্বাচন বয়কট করেছিল। বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তারা কখনও ক্ষমতায় আসেনি। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনটি ছিল অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক এবং এর সুষ্ঠুতা নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেনি। যেখানে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছিল মাত্র ৩০টি আসন এবং আওয়ামী লীগ পায় এককভাবে ২৩৩টি আসন।  তিনি বলেন, সেনানিবাসে সামরিক স্বৈরশাসকের হাতে বিএনপির জন্ম। ওই ব্যক্তি (জিয়াউর রহমান) হ্যাঁ/না ভোট এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে কলুষিত করেছেন। দীর্ঘ ২৯ বছর অগণতান্ত্রিক শক্তি বাংলাদেশ শাসন করেছে। সেসময়ে দেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। ফলে, দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি। দলকে এগিয়ে নেওয়ার মতো কোনো নেতৃত্ব বিএনপির নেই উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপির লোকেরা শুধু লন্ডন থেকে নির্দেশ পাচ্ছে। এর ফলে ২০০৮ সালের পর বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করার জন্য বিএনপি কর্তৃক অগ্নিসংযোগ ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো সত্ত্বেও জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় এবং তাদের ভোট দেয়। জনগণ বিএনপির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। সূত্র : বাসস
২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৮

নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি আত্মহত্যা করেছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী 
‘নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি আত্মহত্যা করেছে’ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, বিএনপির মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তারা এখন উপলব্ধি করছে যে নির্বাচন বর্জন করা তাদের জন্য আত্মহত্যার শামিল হয়েছে। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) পুরান ঢাকার বকশিবাজারের নবকুমার ইনস্টিটিউটে গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শহীদ মতিউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, বিএনপি গত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে উপলব্ধি করছে যে তাদের চরম ভুল হয়েছে। তাদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। আজ পুরো পৃথিবী নতুনভাবে নির্বাচিত হওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। এতে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে, তাই আবোল-তাবোল বকছে।  তিনি বলেন, আমার যখন ২০০৯ সালের সরকার গঠন করি, এরপর যখন উপজেলা নির্বাচন হয় তখন কিন্তু প্রতীক ছিল না। প্রতীক দেওয়ার বিধান পরে চালু হয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচন বরাবরই প্রতীকবিহীন হয়েছে। আমরা আগের সেই পদ্ধতির কথাই বলেছি। সেখানে সবাই উপস্থিত থাকবে এবং যে যার মতো নির্বাচন করবে। যারা বিজয়ী হবেন, তারা উপজেলা চেয়ারম্যান হবেন। এটা নতুন কিছু না। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতীকবিহীন নির্বাচন করার বিষয়টি আমাদের মধ্যে বহু আগে থেকে আলোচনায় ছিল। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রায় দুই বছর ধরে এটি আলোচনার মধ্যে ছিল। সর্বশেষ গত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:০৪

আ.লীগের সচেতন নেতাকর্মীরাও ভোট বর্জন করেছে : গয়েশ্বর
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সচেতন নেতাকর্মীরাও ভোট বর্জন করেছেন বলে দাবি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের। জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত মিলাদ মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ দাবি করেন। গয়েশ্বর বলেন, ভোট প্রতিহত নয়, তারেক রহমান বিএনপির পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের ৯০ শতাংশ ভোটার সেদিন ভোট দিতে যাননি। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সচেতন ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে যাননি। অর্থাৎ দেশের ৯০ ভাগ জনগণের নেতা এখন তারেক রহমান। পক্ষান্তরে ১০ ভাগ মানুষের নেতা শেখ হাসিনা। বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ বহাল রেখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের এমপিরা শপথ নিয়েছেন। এখন দেশে শপথবদ্ধ ৬৪৮ জন এমপি রয়েছেন। এটি সংবিধানের লঙ্ঘন।  আলোচনাসভায় ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন মাস্টার, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবুসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:২৯

বিএনপির ভোট বর্জন প্রসঙ্গে যা বললেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেছেন, জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দলটি কিছুদিন আগেই ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারল। সেই মানুষগুলোর কি বেঁচে থাকার অধিকার ছিল না? বিএনপি কেন নির্বাচনে আসল না? কেউ না করেছিলেন নির্বাচনে আসতে?  সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকার কালাচাঁদপুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে এই নির্বাচন এমপি হওয়ার নির্বাচন নয়। যারা ভোট বর্জন করেছে, জনগণকে ভোট বর্জন করতে উৎসাহিত করেছে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে এবং নির্বাচনের বিপক্ষে কাজ করেছে তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করার নির্বাচন। তিনি বলেন, মানুষ নির্বাচনে এসেছে এবং ভোট দিয়েছে। সঠিক যদি ক্যালকুলেশন করা হয় তাহলে ৪২ শতাংশ নয় আরও বেশি ভোট পড়েছে এই নির্বাচনে। বিএনপির অগ্নি-সন্ত্রাস ও হরতাল-অবরোধের পরেও মানুষ নির্বাচনমুখী ছিল। নির্বাচন হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা আগামী পাঁচ বছরেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখব।  তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অগ্নি সন্ত্রাস, হুমকি-ধামকি দেওয়ার পরও জনগণ এবার অংশগ্রহণ করেছে এবং বিপুল ভোটে ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছে। দেশীয় বা আন্তর্জাতিকভাবে যে চক্রান্তগুলো করা হয়েছিল সেগুলোর জবাব দিয়েছি আমরা এই নির্বাচনের মাধ্যমে। যারা নির্বাচনকে বানচাল করতে চেয়েছিল তারা কিন্তু আজকে পরাজিত হয়েছে। তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি দেশে বা সমাজে শান্তি বিরাজের জন্য শক্তিশালী ও সাহসী একজন নেতা দরকার হয়, আমাদের সেই নেতা আছে বলেই আমরা আজ শান্তি উপভোগ করছি। সেই নেতার নাম বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আমরা তার জন্য দোয়া করব, তার হাতকে শক্তিশালী করব। তিনি বলেন, আমরা বুঝতে পারি না যখন সহজে কিছু পেয়ে যাই। যখন এই শান্তি আর থাকবে না তখন আমরা বুঝব যে আমরা কি হারালাম। গত ১৫ বছরে যদি শেখ হাসিনার মতো শক্তিশালী একজন নেতা যদি হাল ধরে না থাকতেন, যদি কোন অঘটন ঘটতো তখন আমরা হারে হারে টের পেতাম। কিন্তু তিনি আছেন তাই আমরা বুঝতে পারছি না। তাই আমাদের নিজেদের স্বার্থে, শান্তির স্বার্থে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে, তার পাশে থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, আপনারা ঢাকা-১৭ আসনের মানুষ আমাকে উপনির্বাচনেও সংসদ সদস্য করেছেন। এবারের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে আমাকে নির্বাচিত করেছেন, এজন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন, সেই সুবাদে প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। আজকে মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে আমরা আগামী পাঁচ বছর কি কি করব সে বিষয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:৫৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়