হাসপাতালে খালেদা জিয়া
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সিটিস্ক্যান করানোর জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছেছেন। মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন এবং ১০টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছান তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে চিকিৎসক দলের সদস্য ছাড়াও দলটির মহসাচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন রয়েছেন।
দ্বিতীয় দফা করোনা পজিটিভ হওয়ার পর গত দুইদিন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমে কোনো তথ্য দেননি তার চিকিৎসকরা।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে খালেদা জিয়ার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তার বাসায় যান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। রাত পৌনে দুইটার দিকে খালেদা জিয়ার বাসা থেকে বের হন তারা।
এসআর/
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির
আগামী ৮ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কোনো ধাপেই অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সোমবার রাত ১০টায় শুরু করে গভীর রাতে শেষ হয় বৈঠকটি। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে এক বিকট স্বৈরাচারের অভ্যুদয় হয়েছে। আওয়ামী দখলদার শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হয়ে দেড় দশক ধরে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করেছে। এদের আমলে কখনোই জাতীয় ও স্থানীয় সরকার কোনো নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। জনগণের ভোটের তোয়াক্কা না করে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীদেরই আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন বিজয়ী ঘোষণা করে। প্রতিটি নির্বাচনের আগে জনগণকে প্রতারিত করার জন্য নতুন নতুন রণকৌশল গ্রহণ করে দখলদার শাসকগোষ্ঠী।
এতে আরও বলা হয়, প্রাণবন্ত গণতন্ত্রে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ কখনোই রপ্ত করেনি। তাদের অধীনে সব জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলের প্রার্থীদের বিভিন্নভাবে হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া এবং নির্বাচনি প্রচারণায় হামলা ও শারীরিক আক্রমণসহ পথে পথে বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেককে মনোনয়নপত্র জমা দিতেও দেওয়া হয়নি।
আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করতে গিয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে ভরে রাখে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে কারান্তরীণ করা হয়, এদের অনেকেই এখনও কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গুম-খুন অব্যাহত থাকে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল— বিএনপি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং প্রশাসন ও পুলিশের প্রকাশ্য একপেশে ভূমিকার জন্য ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে। এখনও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি এবং বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতি আরও অবনতিশীল হওয়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, আগের সিদ্ধান্তই বহাল আছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে আগের মতোই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীতে সমাবেশ করার ঘোষণা বিএনপির
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী ও যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদ হারুনসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৬ এপ্রিল (শুক্রবার) সমাবেশ ও মিছিল করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
রাজধানীর নয়াপল্টনে ওইদিন দুপুর আড়াইটায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২০ এপ্রিল) মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য (ভারপ্রাপ্ত দপ্তর) সাইদুর রহমান মিন্টু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম এবং সঞ্চালনায় থাকবেন সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে যথাসময়ে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে আহ্বান জানানো হয়।
‘আ.লীগ সরকার তলে তলে দেশবিরোধী কাজ করছে’
তলে তলে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ও জনগণবিরোধী কাজ করেই যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার (২১ এপ্রিল) বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন। এদিন দুপুরে জামিনে মুক্তি পান হাবিবুর রহমান হাবিব।
রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তাদের বক্তব্যে বলেছেন, অনেক কিছু তলে তলে ঘটে। তলে তলে তারা (সরকার) দেশ ও জনগণবিরোধী কাজ করেই যাচ্ছেন।
হাবিবুর রহমান হাবিবের সাজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আদালত হাবিবুর রহমান হাবিবকে নতজানু হতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি (হাবিব) যা বলেছেন, তা সত্য ও বিশ্বাস করে বলেছেন। সেই বলাটাই ছিল খালেদা জিয়াকে নিয়ে তার পক্ষে হাবিবুর রহমান হাবিবের দৃঢ় অবস্থান। তিনি শাস্তি ও নির্যাতন বরণ করে নিয়েছেন। তবুও তিনি যা বলেছেন, সেখান থেকে ন্যূনতম বিচ্যুত হননি। আজ রাজনীতির যে নৈতিকতার ঘাটতি, কথার সঙ্গে কাজের যে ঘাটতি-সেখান থেকে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হাবিবুর রহমান হাবিব তৈরি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আজ যিনি মুক্তি পেয়েছেন তিনি এরশাদবিরোধী আন্দোলনের এক কিংবদন্তিতুল্য ছাত্রনেতা। যিনি তৎকালীন যে সংগঠনে ছিলেন, সেই সংগঠনে তাকে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনুরোধ করেছিলেন আন্দোলন থেকে বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য। সেদিন তিনি নীতি ও নৈতিকতার যে বলিষ্ঠতা দেখিয়েছেন, আর নৈতিকতার যে আদর্শ স্থাপন করেছিলেন-সেখান থেকে তিনি বিচ্যুত হয়নি। সেদিন তিনি যদি সরে যেতেন তাহলে এরশাদের পতন সম্ভব হতো না।
‘সরকারের জুলুম বন্ধ না হলে দেশ চরম নৈরাজ্যে নিপতিত হবে’
দখলদার আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম বন্ধ না হলে দেশ চরম নৈরাজ্যে নিপতিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (২১ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, নেতা-কর্মীদের জামিন নামঞ্জুর ও জেল হাজতে প্রেরণ এই ডামি সরকারের চলমান অপকর্মেরই নিরবচ্ছিন্ন অংশ। দখলদার সরকারের এ ধরনের জুলুম বন্ধ না হলে দেশ চরম নৈরাজ্যে নিপতিত হবে। আর তাই সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসন প্রতিরোধে আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণ আরও বেশি বলীয়ান হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, অবৈধ এই সরকার অশুভ উদ্দেশ্যে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান এবং আদালতকে দিয়ে জামিন নামঞ্জুর ও কারান্তরীণ করার নির্মম খেলায় মেতে উঠেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সারা দেশে প্রতিনিয়ত আদালতকে দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা প্রদান এবং জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
এ সময় নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
২ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় উপজেলা পর্যায়ের দুই নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
রোববার (২১ এপ্রিল) দলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পটুয়াখালী সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির রহমান এবং কক্সবাজারের ঈদগাহ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর তাজ জনিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এবার স্থানীয় নির্বাচনও বর্জনের ডাক দিয়েছে বিএনপি। উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নিতে তৃণমূলের নেতাদের প্রতি বার্তাও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন সংগ্রহকারীদের সরে দাঁড়াতে বললেও অনেকে নির্বাচনের মাঠ না ছাড়ায় বহিষ্কার শুরু করেছে বিএনপি।
আবারও রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে আ.লীগ-বিএনপি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আবারও রাজপথে মুখোমুখি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দল দুটি একই দিনে (২৬ এপ্রিল) রাজধানীতে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এতে নতুন করে রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে দুই দলের কর্মসূচির স্থান ও সময় কাছাকাছি হওয়ায় সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত সাত জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর বিএনপি তেমন কোনো বড় আন্দোলন কর্মসূচি দেয়নি। ভোটের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর আগামী ২৬ এপ্রিল রাজধানীতে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ওইদিন বিকেল আড়াইটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণার এক দিন পর রোববার (২১ এপ্রিল) একই দিন একই সময়ে কাছাকাছি স্থানে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
দলটি আগামী শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এই সমাবেশ করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দেশের প্রধান দুটি দলের আবারও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অতীতের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় অনেকে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রায় এক বছর রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ছিল বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। তবে তাদের ডাকা প্রায় প্রতিটি কর্মসূচির দিনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে।
কায়সার কামালকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন ব্যারিস্টার খোকন
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট বারের নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির হল রুমে করা এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আইন সম্পাদক ও ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামালকে একহাত নিয়েছেন ব্যারিস্টার খোকন।
তিনি বলেন, কায়সার কামাল সরকারের এজেন্ট হয়ে বার নির্বাচনে কাজ করেছে। সে একটা অর্বাচীন ও কুলাঙ্গার। সময় এসেছে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার।
এ সময় কায়সার কামালের নৈতিক স্খলনের বিষয়টি বিএনপির স্থায়ী কমিটিকে অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়ে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছি এবং দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।
এর আগে, রোববার (২১ এপ্রিল) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের দপ্তর সম্পাদক মো. জিয়াউর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বিগত ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আপনাকে মনোনীত করে। বিগত দুই বছরের মতো এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা নজিরবিহীনভাবে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করে। এমনকি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দু’জন প্রার্থী, প্রথমে নাহিদ সুলতানা যুথী ও পরে শাহ মজুরুল হককে তথাকথিত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের অব্যবহিত পরে ৮ মার্চ সমিতির অডিটোরিয়ামে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদের মারধর ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
ওই ঘটনা আওয়ামী লীগের দু’জন সম্পাদক পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও সরকারের একজন বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ও আরও তিনজন আইনজীবী ফোরাম নেতাকে আসামি করে গত ৯ মার্চ শাহবাগ থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে।
নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালনকারী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী ও ওই নির্বাচনে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুসকে (কাজল) যথাক্রমে গত ৯ ও ১০ মার্চ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তার করে তাদের ডিবি অফিসে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তারা উভয়েই দুই সপ্তাহ কারাভোগ করেন। তাদের কারাগারে রেখে গত ১০ মার্চ লুট হয়ে যাওয়া ব্যালট পেপার গণনার নাটক সাজিয়ে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাকে সভাপতি পদে ও অ্যাডভোকেট ফাতিমা আকতার, অ্যাডভোকেট মো: শফিকুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ ফজলে এলাহী অভিকে নামকাওয়াস্তে সদস্য পদে বিজয়ী দেখানো হয়।
উপরোক্ত পরিস্থিতি নিয়ে গত ২৪ মার্চ আপনার উপস্থিতিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতা, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সম্পাদকদের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনিসহ বিজয়ী ঘোষিত তিনজন সদস্যকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২০২৫ এর মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে বিগত ২৭ মার্চ তারিখে দেওয়া এক চিঠিতে আহ্বান জানানো হয়।
সংগঠনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সদস্য পদে বিজয়ী ঘোষিত তিনজন ফোরাম সদস্য দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকলেও সংগঠনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আপনি (খোকন) গত ৪ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এছাড়া, আপনি একই দিন সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সক্রিয় উপস্থিতিতে এক মতবিনিময় সভার মাধ্যমে দল থেকে বহিষ্কৃত ও দলছুট কিছু সদস্যকে দিয়ে দল ও এর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে বিষোদগার করিয়েছেন। এছাড়া আপনি আপনার বক্তব্যে আইনজীবী ফোরামের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে অবমাননাকর ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মানবেন না বলে ঘোষণা করেছেন, অবৈধভাবে ঘোষিত আওয়ামী লীগ দলীয় তথাকথিত একজন সম্পাদকের হাতে হাত রেখে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মর্মে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ৬ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি/ সম্পাদকদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে আপনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে আপনার এহেন কার্যক্রমকে দলীয় চরম শৃঙ্খলা পরিপন্থী হিসেবে গণ্য করে সর্বসম্মতভাবে আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।