• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo

কায়সার কামালকে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন ব্যারিস্টার খোকন

আরটিভি নিউজ

  ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:০৯
ব্যারিস্টার খোকন এবং কায়সার কামাল (ফাইল ছবি)

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট বারের নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির হল রুমে করা এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আইন সম্পাদক ও ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামালকে একহাত নিয়েছেন ব্যারিস্টার খোকন।

তিনি বলেন, কায়সার কামাল সরকারের এজেন্ট হয়ে বার নির্বাচনে কাজ করেছে। সে একটা অর্বাচীন ও কুলাঙ্গার। সময় এসেছে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার।

এ সময় কায়সার কামালের নৈতিক স্খলনের বিষয়টি বিএনপির স্থায়ী কমিটিকে অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়ে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছি এবং দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।

এর আগে, রোববার (২১ এপ্রিল) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের দপ্তর সম্পাদক মো. জিয়াউর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বিগত ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আপনাকে মনোনীত করে। বিগত দুই বছরের মতো এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা নজিরবিহীনভাবে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করে। এমনকি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দু’জন প্রার্থী, প্রথমে নাহিদ সুলতানা যুথী ও পরে শাহ মজুরুল হককে তথাকথিত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের অব্যবহিত পরে ৮ মার্চ সমিতির অডিটোরিয়ামে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদের মারধর ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

ওই ঘটনা আওয়ামী লীগের দু’জন সম্পাদক পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও সরকারের একজন বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ও আরও তিনজন আইনজীবী ফোরাম নেতাকে আসামি করে গত ৯ মার্চ শাহবাগ থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে।

নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালনকারী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী ও ওই নির্বাচনে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুসকে (কাজল) যথাক্রমে গত ৯ ও ১০ মার্চ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তার করে তাদের ডিবি অফিসে রিমান্ডে নেওয়া হয়। তারা উভয়েই দুই সপ্তাহ কারাভোগ করেন। তাদের কারাগারে রেখে গত ১০ মার্চ লুট হয়ে যাওয়া ব্যালট পেপার গণনার নাটক সাজিয়ে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাকে সভাপতি পদে ও অ্যাডভোকেট ফাতিমা আকতার, অ্যাডভোকেট মো: শফিকুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ ফজলে এলাহী অভিকে নামকাওয়াস্তে সদস্য পদে বিজয়ী দেখানো হয়।

উপরোক্ত পরিস্থিতি নিয়ে গত ২৪ মার্চ আপনার উপস্থিতিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতা, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সম্পাদকদের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনিসহ বিজয়ী ঘোষিত তিনজন সদস্যকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২০২৫ এর মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে বিগত ২৭ মার্চ তারিখে দেওয়া এক চিঠিতে আহ্বান জানানো হয়।

সংগঠনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সদস্য পদে বিজয়ী ঘোষিত তিনজন ফোরাম সদস্য দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকলেও সংগঠনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আপনি (খোকন) গত ৪ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এছাড়া, আপনি একই দিন সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সক্রিয় উপস্থিতিতে এক মতবিনিময় সভার মাধ্যমে দল থেকে বহিষ্কৃত ও দলছুট কিছু সদস্যকে দিয়ে দল ও এর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে বিষোদগার করিয়েছেন। এছাড়া আপনি আপনার বক্তব্যে আইনজীবী ফোরামের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে অবমাননাকর ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মানবেন না বলে ঘোষণা করেছেন, অবৈধভাবে ঘোষিত আওয়ামী লীগ দলীয় তথাকথিত একজন সম্পাদকের হাতে হাত রেখে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মর্মে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ৬ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি/ সম্পাদকদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে আপনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে আপনার এহেন কার্যক্রমকে দলীয় চরম শৃঙ্খলা পরিপন্থী হিসেবে গণ্য করে সর্বসম্মতভাবে আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আদালতের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেবো: সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি
রাজাকার ছাড়া ৭১ সালের সব নাগরিককে মুক্তিযোদ্ধা ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে রিট
কোটা বহালের রায় বাতিল চেয়ে সরকারের লিভ টু আপিল