• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হত্যাকারী মরদেহ টুকরা করার সময় অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকছিলেন ফাহিমের বোন

কামরুজ্জামান হেলাল, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

  ১৭ জুলাই ২০২০, ২৩:০৯
Fahim's sister was entering the apartment while dismembering the body of the killer
হত্যাকারী মরদেহ টুকরা করার সময় অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকছিলেন ফাহিমের বোন

পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা তরুণ উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ (৩৩) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নিউইয়র্কের পুলিশ। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হচ্ছে। গোয়েন্দারা বলছেন, ফাহিম সালেহর বোন যখন ওই অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকছিলেন, হত্যাকারী তখন মরদেহ টুকরা করছিলেন।

মার্কিন দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমস দুজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম টেরেস ডেভোন হাসপিল। ২১ বছর বয়সী এই তরুণের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ আনা হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানোর কথা রয়েছে।

ম্যানহাটনে নিজের কেনা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ফাহিম সালেহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ইলেকট্রিক করাত দিয়ে তার মরদেহ টুকরা টুকরা করে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরানো ছিল।

গোয়েন্দারা জানান, ফাহিম সালেহর ব্যক্তিগত সহকারী টেরেস তার কয়েক লাখ ডলার চুরি করেছেন। তারপরও সালেহ বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেননি। ডলার ফেরত দিলে তিনি কিছু ডলার তাকে (টেরেস) দিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন।

গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, ফাহিম সালেহকে স্থানীয় সময় সোমবার কোনো এক সময়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী ওই দিন চলে যাওয়ার পরদিন মঙ্গলবার আবার ওই অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসেন। এরপর ইলেকট্রিক করাত দিয়ে মরদেহ টুকরা করে বড় আকারের ব্যাগে ভরে ফেলেন। হত্যার আলামত মুছে ফেলারও চেষ্টা করেন।

এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফাহিম সালেহকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কোপানোর আগে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করে তাকে অচেতন করা হয়েছিল। হত্যাকারী কালো রঙের স্যুট, সাদা শার্ট ও টাই এবং কালো মাস্ক পরে ফাহিম সালেহর পেছন পেছন ওই অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকেছিলেন। এ সময় হত্যাকারীর হাতে একটি ব্যাগও ছিল। লিফটের ভেতর থেকে সংগৃহীত সিকিউরিটি ক্যামেরা থেকে সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হত্যাকারী নিজের উপস্থিতি এড়ানোর জন্য বিশেষ কৌশলে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করেন।

এর আগে নিউইয়র্ক সিটির সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানান, ফাহিম সালেহর গলা ও ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। এতে তার মৃত্যু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এই হত্যাকাণ্ডকে পেশাদার খুনির মতো কাজ বলে উল্লেখ করেছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকারী যখন ফাহিম সালেহর শরীর টুকরা টুকরা করে ব্যাগে ভরছিলেন, তখন তার বোন ওই অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকছিলেন। অ্যাপার্টমেন্টের লবিতে পৌছালে হত্যাকারী বিষয়টি টের পান। তখন অ্যাপার্টমেন্টের পেছনের দরজা ও সিঁড়ি দিয়ে হত্যাকারী বেরিয়ে যান।

ফাহিম সালেহর জন্ম ১৯৮৬ সালে। তার বাবা সালেহউদ্দিন চট্টগ্রামের আর মা নোয়াখালীর মানুষ। ফাহিম পড়াশোনা করেছেন আমেরিকার বেন্টলি ইউনিভার্সিটিতে ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে। তিনি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের অন্যতম উদ্যোক্তা।

২০১৪ সালে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় গিয়ে পাঠাও চালু করে নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন তিনি। ফাহিম নাইজেরিয়া ও কলম্বিয়ায় এমন আরও দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানির মালিক। ইন্দোনেশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশেও তিনি ব্যবসা বিস্তৃত করেছিলেন।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • প্রবাস এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ফেনীতে পোলট্রি খামারি হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ২
তুষি হত্যাকারীর ফাঁসির দাবীতে সহপাঠীদের মানববন্ধন
কলেজছাত্রের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
X
Fresh