কাতারে আরো এক বাংলাদেশির মৃত্যু
কাতারে করোনায় ভাইরাসে আরো এক বাংলাদেশি প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। উনার নাম আবুল কাসেম।বয়স ৫৮ বছর।বাড়ি গাজীপুর। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২ জনে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৮৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এখন পর্যন্ত মোট সংখ্যা ৭৮১ এ পৌঁছেছে। ১১ জন রোগী সুস্থ হওয়ার খবর ঘোষণা করেছে।
কাতার শ্রম ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের অভিযোগ গ্রহণের জন্য নতুন একটি হটলাইন চালু করেছে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের বিষয়ক সহকারী উপ-সচিব মুহম্মদ হাসান আল ওবায়দলি বলেছেন, বিভিন্ন ভাষাতে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন এই পরিষেবা চালু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসীরা এই ৯২৭২৭ নম্বরে মেসেজ করে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের জন্য যোগাযোগ করতে পারবে।
সি
মন্তব্য করুন
তিউনিসিয়ায় নিহত ৮ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে
লিবিয়া থেকে সাগরপথে ইউরোপ যাওয়ার সময় তিউনিসিয়া উপকূলে নৌযানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ অভিবাসী নিহত হয়েছেন। নিহতদের ৮ জন বাংলাদেশি এবং ১ জন পাকিস্তানি নাগরিক। এ ঘটনায় ২৭ বাংলাদেশিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। দূতাবাসের একটি টিম তিউনিসিয়া উপকূল এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে বাংলাদেশিদের মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
নিহতেরা হলেন- মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শেনদিয়া গ্রামের সজল, কদমবাড়ি উত্তরপাড়া গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস, সরমঙ্গল গ্রামের মামুন সেখ, কবিরাজপুর ইউনিয়নের কেশরদিয়া গ্রামের কায়সার, বাজিতপুর নতুন বাজার ইউনিয়নের তেলিকান্দি গ্রামের কাজী মিজানুরের ছেলে কাজি সজীব, সরমঙ্গল গ্রামের মামুন সেখ।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাগদী ইউনিয়নের বড়দিয়া গ্রামের দাদনের ছেলে রিফাত, দিগনগর ইউনিয়নের ফতেহপট্রি গ্রামের রাসেল, গঙ্গারামপুর গোহালা ইউনিয়নের গয়লাকান্দি গ্রামের ইমরুল কায়েস।
এছাড়া মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম গ্রামের মনোরঞ্জন সরকারের ছেলে মনতোষ সরকার মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সেই সঙ্গে পাসপোর্টবিহীন বাংলাদেশি রয়েছেন ৭ জন।
ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি অভিবাসী দল নৌকায় করে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়া থেকে সাগরপথে ইউরোপ যাত্রা করে। যাত্রাপথে নৌকাটি তিউনিসীয় উপকূলে গেলে মধ্যরাত সাড়ে ৪টার দিকে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকাটিতে মোট ৫৩ জন ছিল। দুর্ঘটনার পর চালকসহ ৫৩ জনের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে পাকিস্তানের ৮ জন, সিরিয়ার ৫ জন, মিসরের ৩ জন ও নৌকা চালক রয়েছেন (মিশরীয় নাগরিক)। ওই ঘটনায় নৌকায় থাকা ৯ জন যাত্রী মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
দূতাবাস আরও জানায়, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং আইওএমের সঙ্গে কাজ করছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিক ইলিয়াসের জামিন, দুই অভিযোগ গঠন
তৃতীয়বারের মতো আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক ও ইউটিউবর ইলিয়াস হোসেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিউইয়র্কের কুইন্স ফৌজদারি আদালতে তাকে হাজির করা হলে বিচারক তাকে জামিনের আদেশ দেন।
জানা গেছে, জামিনের সময় ইলিয়াসের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মামলার বাদীকে হয়রানি, জবরদস্তি ও ভীতি সৃষ্টিতে দুটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এ সময় আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন ইলিয়াস।
এর আগে স্থানীয় সময় রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কের অদূরে একটি দ্বীপ এলাকা থেকে ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে জ্যামাইকার ১১৩ প্রেসেন্ট হাজতে নেওয়া হয়।
সম্প্রতি মামলার বাদীর বাড়িতে বোমা হামলার হুমকিসহ আদালত অবমাননার অভিযোগে ইলিয়াসের নামে হুলিয়া (পলাতক আসামিকে হাজিরের নোটিশ) জারি করে পুলিশ। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মিল্টন জ্যাকব ও প্রিমা রব্বনীর করা মামলায় ১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে গেলে তাকে আটক করা হয়। তবে ছেড়ে দেওয়া হয় ছয় ঘণ্টা পর। ১৭ জানুয়ারি আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি। এরপর নিউইয়র্কের কুইন্স কাউন্টি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ইলিয়াসকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য তার বাড়ির দরজা ও শহরের বিভিন্ন স্থানে ‘ধরিয়ে দিন’ পোস্টার লাগায়।
অভিযোগ রয়েছে, ২০ জানুয়ারি দুপুরে মামলার বাদী মিল্টন জ্যাকবকে ফোন করে তার বাড়িতে বোমা নিয়ে আসবেন বলে হুমকি দেন ইলিয়াস। এরপর জ্যাকব মিল্টন ও প্রিমা রব্বনীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও প্রকাশ করেন ইলিয়াস, যা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। তবে, ভিডিওটি মানহানিকর ও ভিত্তিহীন দাবি করে সিভিল ও ক্রিমিনাল আইনে ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মিল্টন ও প্রিমা রব্বনী। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত।
এছাড়া মিতু হত্যা মামলা নিয়ে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার ধানমন্ডি থানায় ইলিয়াস হোসেন ও বাবুল আক্তারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় গত ১৮ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালত তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে একুশের প্রথম প্রহরে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন
বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে মিশিগানে বসবাসরত প্রবাসীরা বাংলাদেশিরা। একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে এ আয়োজনে হ্যামট্রাম্যাক সিটি হল প্রাঙ্গণে সমবেত হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার পর থেকেই সিটি হলের মাঠে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। বিভিন্ন সংগঠনসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের হাতে হাতে এসময় ছিল ফুল। রাত ১২টা ১ মিনিটে হ্যামট্রাম্যাক সিটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন সিটি কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা। পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সিটি অব হ্যামিট্রামিক অফিসিয়ালস, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মিশিগান, মিশিগান স্টেট আওয়ামী লীগ, জালালাবাদ সোসাইটি অব মিশিগান, বাংলা প্রেসক্লাব মিশিগান, বিয়ানীবাজার সমিতি, গোলাপগঞ্জ হেল্পিং হ্যান্ডস ইউএসএ।
পুষ্পস্তবক অর্পণে আরও ছিল সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সমিতি অব মিশিগান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মিশিগান আওয়ামী লীগ, মিশিগান স্টেট যুবলীগ, (সালেক-রুমান), মিশিগান স্টেট যুবলীগ, (রাজেল-গুলজার), মিশিগান স্টেট ছাত্রলীগ (খাজা আফজল) মিশিগান স্টেট ছাত্রলীগ (মামুন)।
সিটি অব হ্যামট্রামিকের পক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেন মুহিত মাহমুদ, সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন জুয়েল হুদা, মৃদুল কান্তি সরকার, মোহাম্মদ আলী অপু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অনামিকা রায়।
মাতৃভাষার গুরুত্ব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরায় অস্ট্রেলিয়ার প্রশংসা
মাতৃভাষার গুরুত্ব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরায় বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরি (এসিটি) সরকারের মন্ত্রীসহ বহুভাষা ও সংস্কৃতির ব্যক্তিরা। এ উদ্যোগ সকল জাতির ভাষা, আত্মপরিচয় ও নিজস্ব সংস্কৃতির স্বীকৃতি লাভে সহায়ক হবে।
অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বহু ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে আজ পালিত হয় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এসময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার আল্লামা সিদ্দীকী বলেন, পৃথিবীর সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের ভাষা এখন ঝুঁকির সম্মুখীন। গত দুই শতাব্দীতে প্রায় দু’হাজার ভাষা বিলুপ্ত হয়েছে। যেকোনো ভাষার প্রতিটি শব্দ গভীর মর্মার্থ বহন করে। ভাষা হলো প্রতিটি জাতির সংস্কৃতি, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে ধরে রাখার মাধ্যম। যে কোন ভাষা বিলোপ হলে মানুষের অতীত স্মৃতি, সংগ্রামের ইতিহাস এবং আবিষ্কৃত নতুন প্রযুক্তিসহ সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক হারিয়ে যায়। বাংলাদেশের হাইকমিশনার বিশ্বের প্রতিটি ভাষা সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত দীর্ঘ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্ভীক নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন তিনি।
রাজধানী ক্যানবেরায় প্রভাত ফেরীসহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন এসিটি সরকারের পরিবেশ মন্ত্রী রেবেকা ভাসারতি, বহু সংস্কৃতি বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী পিটার কেইন, অস্ট্রেলিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ড. সিসো প্রামানোসহ কূটনৈতিক, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ভাষা-ভাষীদের প্রতিনিধি, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী ও অভিবাসীগণ এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
অংশগ্রহণকারীরা অস্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া এসিটি সরকারের পরিবেশ মন্ত্রী, ছায়ামন্ত্রী এবং অস্ট্রেলিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন।
সকাল ৮ টায় হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এসময় দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। সন্ধ্যায় দেড় শতাধিক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ও অভিবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে বাংলাদেশ হাইকমিশনে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় হাইকমিশনারসহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা শেষে ভাষা শহিদদের স্মরণে ও বাংলাদেশকে উপজীব্য করে স্থানীয় বাংলাদেশি শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া নিজ নিজ ধর্মমত ও প্রথা মোতাবেক ভাষা শহিদদের উদ্দেশ্যে মৌন প্রার্থনা এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
রিয়াদে রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত
সৌদি আরবের রিয়াদে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বুধবার দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও সৌদি অফিশিয়ালদের নিয়ে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
এতে বিশেষ অতিথি জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মোহাম্মদ আল জারকানি ও কূটনৈতিক কোরের ডীন জিবুতির রাষ্ট্রদূত দায়া আদদীন সাঈদ বামাখারামা বক্তব্য প্রদান করেন।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টফি ফারনড, সৌদি আরবের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হানি মানসি এবং ওআইসির রাজনৈতিক বিষয়ক সহকারী মহাসচিব ইউসেফ আল দুবেহ বক্তব্য প্রদান করেন।
রাষ্ট্রদূত ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে মাতৃভাষা বাংলা রক্ষা করার বিষয়ে বাঙালি জাতির অবদানের কথা বিদেশীদের কাছে তুলে ধরে তিনি বলেন, দিবসটি পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষা রক্ষার দাবীতে সংগ্রাম ও ভাষার অধিকার আদায়ের এক উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত।
ভাষা আন্দোলনে ও মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা বর্ণনা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দ্রুতই পৃথিবী থেকে বিভিন্ন ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে, সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বাংলাদেশ সরকার মাতৃভাষা রক্ষার্থে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন। মাতৃভাষা রক্ষায় দেশ কাল ভেদে পৃথিবীর সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
২১ শে ফেব্রুয়ারি-কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতিতে অবদান রাখায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নৃত্য পরিবেশন করে। এসময় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একটি তথ্যচিত্র ও ১২টি ভাষায় একুশে ফেব্রুয়ারির গান পরিবেশন করা হয়।
এছাড়া “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ভাষা আন্দোলন” শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। দূতাবাসের কাউন্সেলর মো. বেলাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রিয়াদস্থ ব্যবসায়ী এম আর মাহবুব, প্রফেসর মো. নুরুন্নবী, শাহজাহান চঞ্চল।
এছাড়া ও মিশন উপপ্রধান মো. আবুল হাসান মৃধা বক্তব্য রাখেন।
ইতালিতে পালিত হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৪’
ইতালির রোমস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪’ পালন করেছে। দিবসের বিশেষ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দূতাবাস চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় দূতাবাসের আয়োজনে দূতাবাস প্রাংগণে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে সব শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম তার বক্তব্যে মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রকাশ করেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে, ভাষা সংগ্রামের পথ ধরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এ দিবস পৃথিবীর সব দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টায় ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থিত আইজাক রবিন পার্কে স্থাপিত স্থায়ী শহীদ মিনারে বাংলাদেশ দূতাবাস, রোম-এর উদ্যোগে পুষ্পাঞ্জলী অর্পণের আয়োজন করা হয়। ভাষা শহীদদের সম্মানে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে মহিমান্বিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রয়াসে ইতালীয় সরকারের সহায়তায় রবিন পার্কে ২০১১ সালে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়। প্রথমেই রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ইতালিস্থ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীরাও একে একে দলবদ্ধভাবে শৃংখলার সঙ্গে এ সময় ফুল দিয়ে তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সকলের সামনে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্যায়ে দিবসটি উপলক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। ভাষা শহিদদের রুহের মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
মালয়েশিয়ায় ৭৫ বাংলাদেশিসহ ৯০ অভিবাসী গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়ায় ৭৫ বাংলাদেশিসহ মোট ৯০ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। স্থানীয় সময় বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মেলাকা রাজ্যের ইমিগ্রেশন বিভাগ দিবাগত রাতে কোটা লাকসামানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব অভিবাসীদের আটক করে। মালয়েশিয়ান ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি বার্নামা এই তথ্য দিয়েছে।
আটককৃতদের মধ্যে বাংলাদেশের ৭৫ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১০ জন, মিয়ানমারের ৪ জন ও পাকিস্তানের একজন নাগরিক রয়েছে।
মেলাকা ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক অনির্বাণ ফাউজি মোহম্মদ আইনি বলেন, বুধবার মধ্যরাতে অভিযানটি শুরু হয়ে চলে তিন ঘণ্টা। এ সময় ১১৭ জন অভিবাসীর কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এদের মধ্যে ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়া, বৈধ কাগজপত্র না থাকা ও অন্যান্য কয়েকটি অপরাধে ৯০ জনকে আটক করা হয়।
এক বিবৃতিতে ওই কর্মকর্তা বলেন, জনসাধারণের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানটি চালানো হয়। অভিযান চলাকালে কিছু শ্রমিক পালিয়ে গেছেন। কেউ কেউ ধরা পড়ার ভয়ে পাঁচ মিটার গভীর নর্দমায় ঝাঁপ দেন। তাছাড়া রাতে এলাকাটি তুলনামূলক অন্ধকার হওয়ায় অনেকেই পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ধরা পড়া শ্রমিকদের নিয়োগকারীকে শনাক্ত করতে তদন্ত হচ্ছে। নিয়োগকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।