মালয়েশিয়ায় বিধি ভঙ্গ করে ঈদ জামাত: আটক ৪৮ বাংলাদেশি রিমান্ডে
মালয়েশিয়ায় স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম (এসওপি) অমান্য করে ঈদের নামাজে অংশ নেয়ায় ৪৮ বাংলাদেশিকে চারদিনের রিমান্ডে নিয়েছে দেশটির পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার ৪৮ বাংলাদেশিকে আটক করা হয় মঙ্গলবার।
বুধবার (২১ জুলাই) সকাল ১০টায় অভিযুক্তদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ তাদের রিমান্ড আবেদন করলে বুকিত মেরতাজম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী রেজিস্ট্রার হাসলিজা রাজাক এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় পেনাং রাজ্যের জুরু তামান পেলাংগি মসজিদে নামাজ আদায় করতে যান। কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১০০ মানুষকে নামাজ আদায়ের জন্য অনুমতি ছিল। কিন্তু অনুমতি নেই এমন দুই শতাধিক মানুষ মসজিদের বাইরে ঈদের নামাজ আদায় করে, যাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি। সেই ২০০ জনকে খুঁজছে পুলিশ।
এসএস
মন্তব্য করুন
পর্তুগালে বাংলাদেশি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমের স্থাপত্য প্রদর্শনী
সম্প্রতি প্রকাশিত টাইমস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ জনের ব্যক্তির মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশী নারী স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম। তার স্থাপত্য প্রদর্শনী চলছে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের সেন্ট্রো কুলতুরাল বেলেমে।
বাংলাদেশের স্থাপত্য, নির্মাণ উপকরণ ও মানুষের স্থানান্তর’ শীর্ষক এই স্থাপত্য প্রদর্শনীটি বুধবার (১৭ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় উদ্বোধন করা হয়। প্রদর্শনীটি ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে জানান আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে জনজীবনে যে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে তার সমাধানে স্থাপত্য শিল্পের উদ্ভাবন ইউরোপীয়ানদের কাছে তোলে ধরাই প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য বলে ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।
স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম তার বলেন, ‘এটা আমার জন্য একটি ভিন্ন অনুভূতির বিষয়। কেননা বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে এর মাধ্যমে ভিন্নভাবে জানতে পারছে এবং ইউরোপের একটি দেশের রাজধানীতে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা আমার জন্য সবচেয়ে বড় গর্বের বিষয়।’
উল্লেখ্য মেরিনা তাবাসসুম ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মিত ভূগর্ভস্থ স্বাধীনতা জাদুঘর নির্মাণে দু’জন নকশাবিদের মধ্যে তিনি একজন। এছাড়াও ঢাকার বাইতুর রউফ মসজিদ, কম্পোর্ট রিভেরি, অবকাশ বাড়ি, যশোরের পানিগ্রাম ইকো রিসোর্ট এবং বাংলাদেশের উপকূলবর্তী চরসমূহের জন্য খুদি বাড়ি নির্মাণে ভূমিকা রাখেন।
‘পরিবারের লোকজনও আমাদের শুধু টাকার গাছ মনে করে’
বাংলাদেশের মত নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার একটি অন্যতম উপায় প্রবাসী আয়। অথচ বিদেশের মাটিতে রক্ত জল করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এই সব প্রবাসীরা দেশ, সমাজ এমনকি পরিবারের কাছেও অবহেলিত থেকে যান।
শ্রীলঙ্কার কথা মনে আছে, ২০২২ সালে দেশটি নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ যে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল তার মূল কারণ ছিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে চলে যাওয়া। তখন শ্রীলঙ্কা সরকার অর্থনীতি বাঁচাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা শ্রীলঙ্কানদের দেশে বেশি বেশি বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর অনুরোধ করেছিলেন। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার সময় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়েও জোর আলোচনা শুরু হয়। যা এখনও আমাদের দেশে দারুণ সংবেদনশীল একটি বিষয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নানা সূচকে এগিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কার ওই পরিণতি সকলকে বিস্মিত করেছিল। যে অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা দেশের ঝুঁকির দিকগুলো এবং সে ঝুঁকি মোকাবেলায় কোন কোন খাতে কাজ করতে হবে তা তুলে ধরেছিলেন। তাদের সেই আলোচনায় গুরুত্বের সঙ্গে উঠে আসে প্রবাসী আয় বাড়ানোর বিষয়টি।
দীর্ঘ আট বছর সৌদি আরবে প্রবাস জীবন শেষে ঈদুল ফিতরের দুই দিন আগে দেশে এসেছেন সাতক্ষীরার হাফেজ মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম। যিনি ২০১৭ সালে দালালের মাধ্যমে প্রায় সাত লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরবে যান। বাংলাকে তিনি শুনিয়েছেন তার দীর্ঘ প্রবাস জীবনে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাওয়ার গল্প। মালির কাজ নিয়ে সৌদি আরব গেলেও সেখানে গিয়ে মোমিনুল সেই কাজ পাননি। বরং তার কফিল (যে মালিক তাকে ভিসা দিয়েছিলেন) তাকে ছেড়ে দিয়ে নিজের মত কাজ খুঁজে নিতে বলেন।
উপরন্তু কফিল প্রতিমাসে তার কাছ থেকে ৩০০ রিয়াল চেয়ে বসে। অবশ্যই দিতে হবে, নতুবা কাজ ছেড়ে পালিয়ে গেছে অভিযোগে মিথ্যা মামলার হুমকি দেন।
মোমিনুল বলেন, প্রথম তিন মাস তেমন কোনো কাজ পাইনি। খেয়ে-না খেয়ে ছিলাম, কখনো রাস্তায় রাস্তায় থাকতে হয়েছে, কেউ খোঁজ নেয়নি। দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে অল্প কিছু কাজ করতাম। সাগরে মাছ ধরার জাল বোনার কাজ পেয়েছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ সময় বসে থেকে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি বিধায় কাজ ছেড়ে দেই। কিন্তু কফিলকে প্রতিমাসে তিনশ রিয়াল দিতেই হতো। তিনমাস অনেক কষ্ট করার পর পরিচিত এক চাচার মাধ্যমে একটি বেকারিতে কাজ পাই। তখন মাসে ১৫০০ রিয়াল বেতন পেতাম।
এদিকে ছয় মাস পর কফিল মোমিনুলের কাছে চারশ রিয়াল দাবি করেন। বাধ্য হয়ে তা দিতে রাজি হন এই যুবক। কিন্তু দুই মাস যেতে না যেতেই কফিল মোমিনুলের কাছে পাঁচশ রিয়াল দাবি করে বসেন। আমি তখন তাকে অনুরোধ করি, মাত্র ১৫০০ রিয়াল বেতন পাই। ৫০০ তাকে দিলে আমার তো কিছু থাকে না। বাড়িতে ঋণ শোধের চাপও বাড়ছিল। কিন্তু কফিল টাকা কম নিতে রাজি না। পরে আমি রেগে গিয়ে তাকে বলি আমি আর কোনো টাকাই দিব না। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেই। ফোনে তার নম্বর ব্লক করি। তখন কফিল আমার নামে মামলা করে দেয়।
মামলার কারণে পুলিশের ভয়ে থাকতেন মোমিনুল। লুকিয়ে কাজ করতেন। নিজের কাগজপত্র বৈধ করতে বহুবার চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু কেউ তাকে সাহায্য করেনি।
জানান, আট বছরের প্রবাস জীবনে তিনবার গ্রেপ্তারও হয়েছে। দুই-একদিন কারাগারে থাকার পর মোটা অংকের অর্থ দিয়ে মুক্তি মিলেছে। অর্থ উপার্জনের জন্য অমানুষিক পরিশ্রম করেছি। ৪০ ডিগ্রির উপরের তাপমাত্রায় রাতে ১২ ঘণ্টা বেকারিতে কাজ করার পর দিনে আবার পার্টটাইম কাজ করতাম। আল্লাহর রহমতে এক সময় আয় বাড়ে। ঋণ শোধ করে ভবিষ্যতের জন্য বাড়িতে টাকা পাঠাতে শুরু করি।
এই আট বছরে একবারও দেশে আসেননি মোমিনুল। কারণ, তার বৈধ কাগজপত্র ছিল না। মোমিনুল যখন প্রবাস জীবনে খানিকটা গুছিয়ে নিয়েছেন তখন হানা দেয় করোনা মহামারি। যদিও করোনা মহামারি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে জানান তিনি। বলেন, ওই সময়ে সম্পূর্ণ লকডাউন ছিল ১৫ দিন। তাছাড়া, কাজ চলেছে। আর বেকারির কাজ তো বন্ধ করার উপায়ও নেই। তাই তার উপার্জনে তেমন প্রভাব পড়েনি। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিত্যপণ্যের দাম দুই-তিনগুণ বেড়ে যায়। আয় না বাড়ায় তাকে তাই খানিকটা চাপে পড়তে হয়। কেউ কেউ তখন কুলিয়ে উঠতে না পেরে দেশে চলে আসে বলে জানান তিনি।
বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের আগে সৌদি আরবে আটার দাম ছিল হাফ রিয়াল। যুদ্ধ শুরুর পর তা দুই রিয়াল পর্যন্ত উঠে যায়। এরকম সব পণ্যের দামই কম-বেশি বেড়ে যায়। যে দাম আর খুব একটা কমেনি। আট বছরের প্রবাস জীবন শেষে মোমিনুল একেবারেই দেশে চলে এসেছেন।
যেহেতু তার কাগজপত্র বৈধ নয়, তাই ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। তাকে প্রশ্ন করেছিলাম দেশে এখন কী করবেন? তিনি জানান, আরেকটু সময় নিয়ে, একটু ভেবেচিন্তে কোনো একটা ব্যবসা শুরু করবেন। এজন্য পুঁজি দরকার। কতটা পুঁজি নিয়ে এসেছেন জানতে চাইলে তিনি খানিকটা আক্ষেপের সুরে বলেন, কিছু পুঁজি নিয়ে এসেছি। তবে পরিবার যদি সহযোগিতা করতো তবে আরো বেশি সঞ্চয় হতো। মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আমার পরিবার। সবাই শুধু টাকা চায়। আমাদের কথা কেউ ভাবে না। সবাই মনে করে প্রবাসীরা টাকার গাছ। আমরা যে কত কষ্ট করে টাকা কামাই পরিবার সেটা দেখে না।
চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে পারলে আমরা হিরো, না পারলে আমরা ভিলেন। আমাদের ভালো-মন্দের খোঁজ কেউ রাখে না।
একই রকম কথা শোনান জনি মন্ডল। ঢাকায় মোটর মেকানিকের কাজ করা এই তরুণ গাড়ির গ্যারেজের কাজ নিয়ে ২০২১ সালের শেষ দিকে করোনা মহামারি যখন বিদায় নিতে শুরু করেছে তখন সৌদি আরব যান। জনি বলেন, শুরুতে ভালোই ছিলাম। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর চাল, তেল, আটাসহ সব নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। তাদের আয় বাড়েনি। এই টাকায় তারা চলতে পারছেন না। বাড়িতে ঠিকমত টাকা পাঠাতে পারেন না। পরিবার থেকেও তখন চাপ আসে। বেশিরভাগ মানুষ তো ঋণ করে বিদেশে আসে। প্রত্যেক বছর আকামা করতেই ১০ হাজার রিয়াল লেগে যায়। অনেকে পোষাতে না পেরে তাই দেশে চলে গেছেন।
কাতার প্রবাসী সুমন আহমেদ অবশ্য খানিকটা ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছেন। প্রায় নয় বছর ধরে তিনি কাতারে আছেন, সেখানে সেলসে কাজ করেন। নিজের আয়, কাজের পরিবেশ নিয়ে তিনি বেশ সন্তুষ্ট। দুই সন্তানের জনক সুমন আহমেদ দুইবার দেশে থেকে ঘুরে এসেছেন। তার আয়ে পরিবার বেশ স্বচ্ছন্দে চলছে। ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ও করতে পারছেন।
তিনি বলেন, করোনা মহামারী, ইউক্রেন যুদ্ধ বা গাজা যুদ্ধের কারণে আমাদের কাজের পরিবেশে পরিবর্তন হয়নি। আয়ও একই আছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছিল। তবে এখন তা অনেকটাই কমে এসেছে। আগের মত না হলেও নাগালের বাইরে নয়।
নিজের প্রবাস জীবন নিয়ে এক ধরনের সন্তুষ্টি দেখা গেছে সুমন আহমেদের কথায়। তবে সবাই তার মতো ভাগ্যবান নন। বরং বেশিরভাগ প্রবাসীকেই প্রবাসে কষ্টকর এক জীবন পাড়ি দিতে হয়। দেশের জন্য, পরিবারের জন্য শত কষ্ট সহ্য করেও তারা কাজ করে যান। দেশের জন্য শুধু রেমিটেন্স যোদ্ধা আর পরিবারের জন্য টাকা ছাপানোর মেশিন হয়ে নয় বরং সবার কাছে সম্মান আশা করেন তারা।
দুবাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু
দুবাইয়ে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে ট্রলির চাপায় হামানিয়া প্রধান বাবু (২৫) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত ১২টা (বাংলাদেশ সময় ২টার দিকে) শহরের দারাইয়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তার ভাই মো. দাখেল প্রধান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কচুয়া উপজেলার তেগুরিয়া গ্রামের আবু তাহের প্রধানিয়ার ছেলে বাবু। তিনি বিতারা ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিন বছর আগে জীবিকার তাগিদে দুবাইয়ে পাড়ি জমান বাবু।
তার মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাবুর লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে পরিবার।
‘বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রণোদনা ৩ শতাংশ বিবেচনা করা হবে’
বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
প্রণোদনা ৩ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব বিবেচনার জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে উত্থাপন করা হবে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, বৈধ পথে বাংলাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ সুরক্ষিত থাকবে এবং এই অর্থ থেকে সরকারি প্রণোদনাসহ সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মাধ্যমের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি মুনাফা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক আয়োজিত রেমিট্যান্স মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা বৈধ পথে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠাবেন, তাদের জন্য ‘রেমিট্যান্স এওয়ার্ড’ প্রবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধির যে প্রস্তাব রেমিট্যান্স প্রেরণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তা বিবেচনার জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে উত্থাপন করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে ও তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে যুক্তরাজ্যে সোনালী ব্যাংক চালু করে যুক্তরাজ্য থেকে বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর সূচনা করেন।
রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ২ দশমিক ৫ প্রণোদনা ও সিআইপি মর্যাদাসহ প্রবাসীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাইকমিশন থেকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ ও বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।
পূর্ব লন্ডনে বাঙালি-অধ্যুষিত এলাকায় স্থানীয় সময় শুক্রবার বাংলাদেশ হাইকমিশনের এই বিশেষ মেলায় রেমিট্যান্স প্রেরণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ-সুবিধা ও প্রণোদনা সম্পর্কে দর্শকদের অবহিত করে মেলায় অংশ নেওয়া প্রধান ১৪টি প্রতিষ্ঠান।
মালয়েশিয়ায় ১৩২ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যে অভিযান চালিয়ে ১৩২ বাংলাদেশিসহ ২০৬ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতদের বয়স ১৮ থেকে ৬১ বছরের মধ্যে।
গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে পাসির গুদাংয়ের একটি নির্মাণ স্থলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (২৭ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে জোহর ইমিগ্রেশনের পরিচালক বাহারউদ্দিন তাহির এ তথ্য জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, অভিবাসন বিভাগ পাসির গুদাং এলাকার একটি নির্মাণস্থলে অভিযান চালিয়ে মোট ৫৩০ জন বিদেশি ও স্থানীয় ব্যক্তির কাগজপত্র পরীক্ষা করে। এর পর সেখান থেকে ২০৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩২ জন বাংলাদেশি, ৫৩ জন চীনা, ১০ জন মিয়ানমার, ৬ জন পাকিস্তানি, ৩ জন ইন্দোনেশিয়ান, ২ জন ভিয়েতনামিজ এবং একজন স্থানীয় রয়েছেন। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৬১ বছর। তাদের বিরুদ্ধে মালয় অভিবাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৯৫৯/৬৩ সালের ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ধারা ৬(১)(সি) এবং ধারা ১৫(১) সি) এর অধীনে বৈধ ভ্রমণ নথিপত্র ছাড়াই দেশে প্রবেশ করায় তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৯৩৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও অভিবাসন বিভাগের বিবৃতিতে জানানো হয়।
বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন সম্পর্কে প্রবাসীদের জানানোর আহবান
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, সংগ্রাম ও রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে প্রবাসী বাংলাদেশি ও নতুন প্রজন্মকে আরো ভালোভাবে জানানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক I
একই সাথে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ যে অসাধারণ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে তা দেশে-বিদেশে তুলে ধরার জন্যও তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলস সিটিতে ৭ম আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন l
অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, জাতির দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারাজীবন সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং তার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে l
তিনি বলেন, জাতির পিতার এই সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ প্রবাসীদের ও নতুন প্রজন্মকে আরো ভালোভাবে অবহিত করা আমাদের সকলের কর্তব্য l
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই অসাধারণ সাফল্য তুলে ধরা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মানে আমাদের সকলকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সকালে শুরু হয় দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান। পরে জাতির পিতার জীবন, সংগ্রাম ও রাজনৈতিক দর্শনের ওপর অনুষ্ঠিত হয় সিরিজ আলোচনা।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন সম্মেলনের সম্মানিত অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, লস এঞ্জেলেসস্থ বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল সামিয়া আঞ্জুম, ক্যালিফোর্নিয়ার প্যারিস সিটি মেয়র মাইকেল ভার্গাস, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মুহাম্মদ ফজলুর রহমান এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক নজরুল আলম l
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ড. নুরুন নবী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রানা হাসান মাহমুদ l
সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ওপর নির্মিত একাধিক তথ্যচিত্র প্রদর্শন, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
আরব আমিরাত জুড়ে আবারও বৃষ্টির আভাস
সম্প্রতি ভয়াবহ বৃষ্টি ও বন্যার রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও সংযুক্ত আরব আমিরাত জুড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের বার্তা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে পাহাড় বেষ্টিত ও নিচু এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের জন্য। আগামী ২ ও ৩ মে এই বৃষ্টিপাত হতে পারে।
দেশটির শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ন্যাশনাল সেন্টার অফ মেটিওরোলজি (এনসিএম)।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ হাবীব বলেন, গত রোববার আমরা আরব আমিরাতের আল আইন প্রদেশের উত্তরে আল শোয়াইব এলাকায় শিলাবৃষ্টি দেখেছি। পূর্বাঞ্চলেও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে যা অভ্যন্তরীণ ও পশ্চিমাঞ্চলে প্রসারিত হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এর আগের বৃষ্টি বলয়ের তুলনায় এবার একই পরিস্থিতি হবে না। এবারের বৃষ্টিপাতের ধরণ হবে কিছুটা আলাদা। রয়েছে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা। ২ মে আকাশে মেঘ দেখা যাবে, সেইসঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে। তবে ৩ মে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্মুখীন হতে হবে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার রাত নাগাদ প্রতিকূল আবহাওয়া দেশটির পশ্চিম দিক থেকে শুরু হতে পারে। বৃহস্পতিবার দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে মেঘ ঘনীভূত হতে পারে। এই সময়ে তাপমাত্রাও উল্লেখযোগ্য হারে কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কখন আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে সে বিষয়ে আলোকপাত করে ড. আহমেদ বলেন, ‘শুক্রবার-শনিবার নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হবে। তারপরে মেঘের পরিমাণ ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে, সাধারণভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে।’