কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি নিহত
কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৩ মে) বিকেলে রাজধানী অটোয়া থেকে টরন্টো যাওয়ার পথে ৪০১ হাইওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
নিহতরা হলেন- বাংলাদেশি কানাডিয়ান মনিরুজ্জামান বিজয়, তার শাশুড়ি এবং প্রিমিয়াম সুইটসের অন্যতম কারিগর লিয়াকত হোসেন।
মনিরুজ্জামান বিজয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সানিব্রুক হসপিটালে মারা যান। বাকি দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
উল্লেখ্য, মনিরুজ্জামান বিজয় বাংলাদেশ ও কানাডার প্রসিদ্ধ প্রিমিয়াম সুইটসের কর্ণধার এবং বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব কানাডার প্রেসিডেন্ট এইচ এম ইকবালের ছোটভাই।
এসএস
মন্তব্য করুন
নিজের ডেকে আনা পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল বাংলাদেশি তরুণের
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিও। সাহায্য চেয়ে কল করেছিলেন পুলিশকে; ফোনে বলেছিলেন যে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু, পুলিশ আসতেই উল্টে যায় পরিস্থিতি। নিজের ডেকে আনা পুলিশের গুলিতেই প্রাণ যায় ১৯ বছর বয়সী তরুণের।
ঘটনাটি ঘটেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ওজোন পার্কে, ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের অবস্থিত ফ্রান্সিস রোজারিওর বাড়িতে; স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরের দিকে ৯১১ নম্বর থেকে ফোন আসে তাদের কাছে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে উইন রোজারিও নামে ওই তরুণ জানান, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।
এরপর ওজোন পার্কের ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের বাড়িটিতে দুপুর দেড়টার দিকে যায় পুলিশ। বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় উঠে ভেতরে উইন রোজারিওকে দেখতে পায় তারা। এ সময় তাকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ সদস্যরা। এ অবস্থায় ওই তরুণ নিজের হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তাদের দিকে তেড়ে এলে সরাসরি গুলি করা হয় তাকে। পরে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলে উইনকে মৃত ঘোষণা করেন সেখানকার চিকিৎসক।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনলেও পুলিশের দাবি, উইন রোজারিও মাদকাসক্ত এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন। আত্মরক্ষার্তেই গুলি করতে বাধ্য হয়েছেন তাদের সদস্যরা।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের চিফ অব পেট্রোল জন চেল জানান, বাংলাদেশি ওই তরুণ নিজের হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তেড়ে আসছিলেন পুলিশ সদস্যদের দিকে। এ কারণে তাকে গুলি করা হয়েছে।
উইনকে কয়টি গুলি করেছে পুলিশ সেটি এখনও জানা যায়নি। তবে জন চেল জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি শরীরে থাকা ক্যামেরায় রেকর্ড আছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে এবং বিশদভাবে তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিকে নিহত তরুণের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিওর প্রশ্ন, ‘আমার ছেলে নিজেই যেহেতু বলেছে সে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন, তাহলে কেন গুলি করে মারতে হলো তাকে?’
এ ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশির মৃত্যু নিয়ে পুলিশের বক্তব্যে ভাইয়ের বিরোধিতা
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিও। বুধবার (২৭ মার্চ) নিউইয়র্কের কুইন্সে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এ বাংলাদেশি অভিবাসী।
এ ঘটনায় রোজারিও পুলিশ জানিয়েছিল, ৯১১ নম্বরে কল করে এক মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ব্যক্তির কথা জানানো হয়। সেখানে পৌঁছানোর পরে, পুলিশ কর্মকর্তারা ছুরি হাতে উইনকে দেখতে পান। পুলিশ প্রথমে টেজার দিয়ে তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার মা অপ্রত্যাশিতভাবে এর মধ্যে এসে পড়লে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে প্রাণঘাতী গুলি চালানো হয়।
এবার পুলিশের বক্তব্যের বিরোধিতা করে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের ভাই উৎস বলেছেন, কর্মকর্তারা যখন গুলি চালান, তখন তাদের মা উইনকে ধরে রেখেছিলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ অপ্রয়োজনীয় ছিল। দুজন সশস্ত্র কর্মকর্তাকে দেখেও উইন মারাত্মক হুমকিস্বরূপ কোনো পরিস্থিতি তৈরি করেনি।
তাদের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও জানান, তার পরিবার ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্কে এসেছিল এবং উইনের স্বপ্ন ছিল মার্কিন সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া। তবে পরিবারের গ্রিন কার্ড পেতে বিলম্বের কারণে তার পরিকল্পনা আটকে যায়, যা গত বছর অনুমোদিত হয়েছিল বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের সময় পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে নানা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। তবে পুলিশের যথেষ্ট সংবেদনশীলতার অভাব রয়েছে এবং পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে যাচ্ছে বলেছেন সমালোচকেরা।
মালয়েশিয়া থেকে দলে দলে দেশে ফিরছেন প্রবাসীরা
মালয়েশিয়া সরকারের ‘অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচি’ ঘোষণার পর নামমাত্র জরিমানা দিয়ে প্রতিদিনই দেশে ফিরছেন শত শত অভিবাসী। কাগজপত্র বিহীন দেশে ফেরা এসব প্রবাসীদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশী। তারা দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন দেশে ফেরার প্রত্যাশায়। এসময় প্রবাসীদের বেশিরভাগই নি:শ্ব অবস্থায় দেশে ফিরছেন।
ধারনা করা হচ্ছে নানা জটিলতায় মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরতে পারে প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশী যার প্রভাব পড়তে পারে রেমিটেন্স প্রেরণেও।
অভিবাসন বিভাগের তথ্য বলছে ১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির অধীনে প্রথম ২০ দিনে এখনও পর্যন্ত নিজ নিজ দেশে ফিরেছে ১১ হাজার ৯৪৩ জন অভিবাসী এর মধ্যে ২ হাজার ৫৩০ জনই বাংলাদেশী। এখনও প্রতিদিনই অভিবাসন বিভাগে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে। অভিবাসন বিভাগের অনলাইন এ্যাপয়েন্টমেন্ট এর জন্যও অপেক্ষা করছে হাজারো মানুষ। মার্চ থেকে শুরু হয়ে এ কর্মসূচি চলবে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
অভিবাসন বিভাগ ধারনা করছে, বিভিন্ন দেশের ৩ থেকে ৪ লক্ষ কাগজপত্র বিহীন অবৈধ অভিবাসী এই কর্মসূচির আওতায় শাস্তি ছাড়াই নিজ নিজ দেশে ফিরবে।
ঘোষণা অনুযায়ী দেশে ফিরতে হলে সরাসরি এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে অভিবাসন বিভাগের। সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে ওয়ানওয়ে টিকিট ও পাসপোর্ট। যাদের পাসপোর্ট নেই তাদেরকে নিজ নিজ হাইকমিশন থেকে সংগ্রহ করতে হবে ট্রাভেল পারমিট।
অভিবাসন বিভাগ ৫০০ রিঙ্গিত জরিমানা দিয়ে বিশেষ পাস দিলে পরবর্তী ১৪ দিনের মধ্যে নিজ দেশে ফিরতে হবে ঐ প্রবাসীকে।
দেশে ফেরা প্রবাসীদের এই তালিকায় বাংলাদেশীদের সংখ্যা বেশ লম্বা হবে বলে মনে করেন, কমিউনিটি নেতা রাশেদ বাদল। তিনি বলেন, দেশে ফেরা ছাড়া আসলে এসব কর্মীদের আর কোন উপায় নেই। যারা দেশে ফিরছেন তাদের বেশিরভাগই কর্মহীন কিংবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। অনেকেই সাম্প্রতিক সময়ে কলিং ভিসায় এসে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না পেয়ে প্রতারণার শিকারও হয়েছেন। এভাবে দেশে ফেরাদের সংখ্যা বাড়লে তার প্রভাবে রেমিটেন্স প্রেরণেও পড়বে বলে মনে করেন, তিনি।
দেশে ফেরার অপেক্ষায় থাকা নরসিংদী প্রবাসী সুমন মিয়া বলেন, ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ায় এসেছি। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত ভিসা করতে পারিনি। বিভিন্ন স্থানে টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকারও হয়েছি। এখন ভিসার পাশাপাশি কাজেরও সমস্যা হচ্ছে। তাই দেশে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সুমন মিয়া’র মতো অনেকেই আছেন যারা নানা জটিলতায় ভিসা করতে পারিনি। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার কর্মী ছাটাইও করছে। এছাড়া ফ্রি ভিসার নামে কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়ে এসেছেন অনেক নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। যারা এসব কর্মীদের প্রতিশ্রুতি মতো কাজ দিতে পারেনি। এসব কর্মীদের অনেকেই মালয়েশিয়া সরকারের এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশে ফিরছে।
দেশে ফেরার তালিকায় রয়েছে ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ ভিসায় মালয়েশিয়ায় আসা বাংলাদেশীরাও। বিশেষ করে ২০২৩ সালে বৈধকরণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার প্রতিশ্রুতিতে যারা ভ্রমণ ভিসায় মালয়েশিয়ায় এসেছেন তারা কেউই ভিসা করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে তাদেরকে ফিরতে হচ্ছে দেশে।
এনিয়ে সম্প্রতি এক বক্তব্যে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামিম আহসান বলেন, মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাগজপত্র বিহীন রয়েছে এমন বাংলাদেশীদের দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। আর যাদের অবহেলায় কর্মীরা বৈধভাবে এসে প্রতারিত হয়েছে তাদের ব্যাপারেও হাইকমিশন বাড়তি সতর্ক থাকবে বলেও মন্তব্য করেন, তিনি।
টিকটক ট্রলে দুর্বিষহ যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি নারীদের জীবন
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় একটি যোগাযোগমাধ্যম টিকটক। বিশেষ করে রক্ষণশীল পরিবারের নারীরা এটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলে থাকেন। তাদের বেশিরভাগ মতামতই নারীবাদকেন্দ্রিক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশি নারীদের স্বাধীন মত প্রকাশের ঠিক এই ব্যাপারটিই পছন্দ নয় হাসান সাঈদ নামে ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশি এক তরুণের। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নারীদের অনলাইনে বুলিং করায় মত্ত সে। তার ভয়াবহ বুলিংয়ের শিকার হয়ে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে প্রবাসী বহু নারীর জীবন।
যুক্তরাজ্যে এমন বেশ কয়েকজন নারীর সন্ধান পেয়েছে বিবিসি। হাসানের ট্রলের শিকার ওই নারীদের অনেকে সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, তাদের মানসিক অবস্থা এতটাই বিপর্যস্ত যে মাঝেমধ্যেই আত্মহত্যার চিন্তা নাড়া দিয়ে উঠছে মাথায়।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পুলিশ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী ওই নারীরা। সুযোগে ক্রমেই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে প্যারিসের উপকণ্ঠে বসবাসরত বাংলাদেশি ওই তরুণ। এমনকি অনেক নারীকে ধর্ষণ ও হত্যারও হুমকি দিচ্ছে সে।
যুক্তরাজ্যের ইয়র্কশায়ারে বসবাস করেন সুলতানা (ছদ্মনাম)। তিনি জানান, নারীবিদ্বেষ ও বাজে সম্পর্কের বিষয়ে টিকটকে আওয়াজ তোলেন তিনি। ২০২১ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রলের শিকার হন তিনি। মূলত ট্রলের শিকার হওয়া তার এক বন্ধুর পক্ষে কথা বলার পর তিনিও হাসানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন।
হাসানের ট্রল এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে সামাজিকভাবে হেয় হয়ে মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েন সুলতানা। নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছিল, মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। আমি কান্না করেছি। খেতে পারিনি, ঘুমাতে পারিনি। মনে হচ্ছিল, এখানে আর থাকতে চাই না।’
তিনি বলতে থাকেন, ‘আমি কাজে ছিলাম। এ সময় আমার কয়েকজন টিকটক ফলোয়ার আমাকে খুদে বার্তা পাঠান। তারা জিজ্ঞাসা করছিলেন, আমি হাসানের সেই ভিডিওগুলো দেখেছি কি না। সেই ভিডিও ও পোস্টগুলোতে লোকজন কমেন্ট করছিল। আমাকে নিয়ে তারা হাসাহাসি করছিল। এ ধরনের নিপীড়ন দুই বছর ধরে চলে। এটা এমন এক অভিজ্ঞতা, যা তিনি কখনো ভুলতে পারব না।’
সুলতানা বলেন, ‘আমার মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। সুস্থ হতে থেরাপি নিয়েছি। ট্রলের ঘটনাগুলো আমার অসুস্থতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি তা আমাকে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিস-অর্ডারের দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
ভুক্তভোগীরা বলেন, নারীদের স্বাধীন মতামত প্রকাশ পছন্দ করেন না রক্ষণশীল অনেক পুরুষ। নারীদের যেকোনোভাবে থামিয়ে দিতে চান তারা। এ জন্য অনলাইন বুলিংকে বেছে নেয় তারা। হাসান সাঈদ নামে প্যারিস প্রবাসী ওই যুবক ওই দলভুক্ত একজন।
হাসান মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তার শিকারদের ব্যক্তিগত ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলো গ্রিন স্ক্রিনে নিয়ে ট্রল ভিডিও তৈরি করেন। পরবর্তীতে টিকটক লাইভে এসে ভুক্তভোগী নারীদের চেহারা ও অন্যান্য বিষয়ে মজা করেন। নারীদের ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিও দেন তিনি।
হাসানের আরেক শিকার মাসুমা নামে যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের এক নারী। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি তিনি টিকটিকে রান্নার ভিডিও বানান এবং অনলাইনে একটি দোকান চালান। একদিন এমন একটি লাইভ চলার সময় হাসান সেখানে উপস্থিত হন এবং তাকে তার অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানাতে বলেন। মাসুমা তাতে রাজি না হলে হাসান তাকে ‘ফাঁসিতে ঝোলানোর’ হুমকি দেন।
এরপর মাসুমা একটি ভিডিও শেয়ার করে অন্যদের এ যুবকের বিষয়ে জানান এবং তার একাউন্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করার আহ্বান জানান। তাতে হাসান আরো রেগে যান এবং তাকে নিয়ে আজেবাজে ভিডিও বানানো শুরু করেন। একটি ভিডিওতে মাসুমাকে দেখিয়ে বলেন যে তিনি একজন যৌনকর্মী।
মাসুমার অনুসারীরা রিপোর্ট করলে টিকটিক থেকে তার ওই ভিডিও সরিয়ে ফেলা হয়। তবে ওই ঘটনা জীবনের বড় এক ক্ষতি করে গেছে বলে মনে করেন এ তরুণী।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু নারীরাই নয়, হাসানের অনলাইন বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন পুরুষরাও। এসব ট্রলের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা বিভিন্নভাবে প্রতিকার পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এমনই একজন কামরুল ইসলাম। হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসব বুলিং বন্ধ করার আহ্বান জানান এ ভুক্তভোগী। এতে উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুলের পুরো পরিবার নিয়ে ট্রল শুরু করেন হাসান।
এসব ভিডিও সরাতে পরে কামরুল টিকটক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তারা তাকে সাফ জানিয়ে দেন, এসব তাদের কমিউনিটি গাইডলাইন লঙ্ঘন করেনি। তাই ভিডিওগুলো সরানো হবে না।
কামরুল এরপর পুলিশের কাছেও অভিযোগ করেন। এতেও ট্রল না থামায় তিনি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্যারিসে যুক্তরাজ্যের দূতাবাসে যোগাযোগ করেন।
দূতাবাস ফরাসি আইনজীবী ম্যাথিউ ক্রোইজেতের সঙ্গে কামরুলের যোগাযোগ করিয়ে দেয়। কামরুলের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে প্যারিসের সরকারি কৌঁসুলির দপ্তরে অভিযোগ করেন এ আইনজীবী। কিন্তু এ মামলার কোনো রায় এখনো হয়নি।
মামলার হালনাগাদ তথ্য জানতে প্যারিসের কেন্দ্রীয় পুলিশ স্টেশন ও আদালতে যোগাযোগ করে বিবিসি। কিন্তু এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত কোনো প্রতিউত্তর পাওয়া যায়নি।
নিউইয়র্ক টাইমস হয়ে উঠবে নিউইয়র্ক সময় : এরিক এডামস
জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির কণ্ঠস্বর হতে যাত্রা শুরু করেছে নতুন সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘নিউইয়র্ক সময়।’
গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিসব উপলক্ষে উদ্বোধনী সংখ্যা প্রকাশ হলেও ২ এপ্রিল অনুষ্ঠানিকভাবে পত্রিকাটির উদ্বোধন করেন নিউইয়র্ক নগরীর বর্তমান অভিবাবক সিটি মেয়র এরিক এডামস।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মেয়র এরিক এডামসকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান আইবিটিভি ইউএসএ’র সিইও ও নিউইয়র্ক সময়ের সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিলা হোসেন। পরে উডসাইডের গুলশান টেরেসে ফিতা কেটে পত্রিকার উদ্বোধন করেন এরিক এডামস।
এসময় তিনি বলনে, নিউইয়র্কের বাঙ্গালি কমিউনিটি দিন দিন আরও বড় হচ্ছে। ব্রঙ্কস, কুইন্স, ব্রুকলিনে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। আরও শক্তিশালী হচ্ছে কমিউনিটি।
এরিক এডামস বলেন, আইবিটিভি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ‘নিউইয়র্ক সময়’ নামে সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রকাশ করেছে। এটা কমিউনিটির উন্নয়ন, শক্তি এবং সামর্থের বহিঃপ্রকাশ। আশাকরি বাঙ্গালি কমিউনিটির ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ হয়ে উঠবে ‘নিউইয়র্ক সময়’। এখন থেকে প্রতি শুক্রবার নিউইয়র্কবাসীর হাতে পৌঁছাবে নিউইয়র্ক সময়।
পত্রিকাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খানস টিউটোরিয়ালের চেয়ারম্যান নাঈমা খান ও সিইও ডা. ইভান খান, ডেমোক্রেটিক পার্টির কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাশার, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আজাদ, মিনা সুইটসের চেয়ারম্যান রিফাতী ফারুকসহ কমিউনিটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
‘আরটিভি আলোকিত কোরআন ইউএসএ’ গ্রান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে পবিত্র কোরআন নিয়ে রয়েছে এক অকৃত্রিম অনুভূতি। প্রবাসী বাঙালি মুসলিমরাও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রবাসী মুসলিম সম্প্রদায়ের সব বয়সী মানুষ নিয়মিত কোরআন চর্চা করে থাকেন। তাদের সে কোরআন চর্চা ও তেলাওয়াতকে আরও প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে ‘সুন্দর জীবনের জন্য কোরআন’ এই শিরোনামে নর্থ আমেরিকায় বসবাসরতদের নিয়ে প্রথমবারের মতো আরটিভিতে পহেলা রমজান থেকে শুরু হয়েছিল পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা ‘আরটিভি আলোকিত কোরআন ইউএসএ-২০২৪।’
নর্থ আমেরিকায় বসবাসরতদের মধ্য থেকে হাজার হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছিল এই প্রতিযোগিতায়। সেখান থেকে নানান ধাপে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৭০ জন প্রতিযোগী নিয়ে শুরু হয়েছিল প্রতিযোগিতা। সাতটি রাউন্ডে প্রতিযোগীরা তাদের সেরাটা উপস্থাপন করে দর্শকের মন জয় করেছেন। সেই সঙ্গে গ্র্যান্ড ফিনালেতে সেরা ৫ প্রতিযোগী তাদের তেলাওয়াত করে শোনান এবং বিচারকদের দেওয়া সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মো. নাঈম কিবরিয়া সাহেদ।
এ ছাড়া ফার্স্ট রানার-আপ হয়েছেন মুহতাসিম আহমেদ, সেকেন্ড রানার-আপ হয়েছেন সাফওয়ান ইসলাম, চতুর্থ হয়েছেন সারাবান তহুরা ভূঁইয়া এবং পঞ্চম হয়েছেন হাফেজ হাবিবুল ইসলাম।
পুরো অনুষ্ঠানটি নিউ ইয়র্কের আবদুল্লাহ বেনকুইট হলে ধারণ করা হয়।
আয়োজনটিতে টাইটেল স্পন্সর হিসেবে ছিল গোল্ডেন এজ ও সাপ্তাহিক আজকাল। পাওয়ার্ড বাই স্পন্সর- আশা হোম কেয়ার। প্লাটিনাম স্পন্সর- ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, ব্যাকডাইস। গোল্ড স্পন্সর- মঈন চৌধুরী (এ্যাটর্নী অ্যাট ল), জিএফবি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ও খলিল’স ফুড। সাপোর্টেড বাই- বাংলা ট্রাভেলস, ফয়সাল আহমেদ, শেলটন টোবাকেএনপিজি রিয়েল স্টেট, স্পেকট্রম, শাহিন কবির ও আব্দুল্লাহ বেনকুইট হল।
প্রবাসীদের নানা সেবা নিয়ে কাজ করছে এক্সপ্যাট সার্ভিসেস
মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানামুখী সেবা নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে ‘এক্সপ্যাট সার্ভিসেস লিমিটেড’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এ বছরের ৫ জানুয়ারি কুয়ালালামপুরের সাউথগেট কমার্শিয়াল সেন্টারে ভার্চুয়ালি এর উদ্বোধন করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
শুরুতেই কল সেন্টার দিয়ে কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে যুক্ত হয়েছে বিদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা সার্ভিস ও পাসপোর্ট নেই এমন প্রবাসীদের জন্য ট্রাভেল পারমিট যা এর আগে সরাসরি হাইকমিশন থেকে সংগ্রহ করতে হতো প্রবাসীদের। তবে এক্সপ্যাট গ্রুপের সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ প্রবাসীদের বহুল প্রতীক্ষিত ই-পাসপোর্ট সেবা যা এখনও শুরুর অপেক্ষায়।
শুক্রবার প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং ও ব্রান্ডিং পরিচালক অভিনেতা এস এম আরমান পারভেজ বলেন, ই-পাসপোর্ট চালুর সব প্রক্রিয়া শেষ, অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক যাত্রার। এ মাসের ১৮ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে এ সেবা চালু হবে।
তিনি বলেন, এক্সপ্যাট সার্ভিস প্রবাসীদের জন্য জালান চান সো লিনে (সিটি সেন্টারের পাশে ) প্রায় ১৪ হাজার বর্গফুট প্রশস্থ অন স্টপ সার্ভিস নিয়ে আসছে, যেখানে একই সঙ্গে সব সেবা যুক্ত থাকবে। ৪৫টি কাউন্টারের মাধ্যমে চলবে এ সেবা। কোন প্রবাসী পাসপোর্ট করতে চাইলে ব্যাংক ড্রাফ্ট থেকে শুরু করে ফরম পূরণ পর্যন্ত সকল কাজেই সহযোগিতা করবে এখানকার কর্মীরা।
উল্লেখ্য, আউটসোর্সিং কোম্পানি ESL কুয়ালালামপুরের বাইরে একাধিক রাজ্যে হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে মোবাইল টিমের মাধ্যমে সেবা প্রদান করবে। ESL পরিচালিত ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারটির সার্বিক কার্যক্রম প্রত্যক্ষভাবে ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় সরাসরি হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এবং সিসিটিভি-এর মাধ্যমে তা হাইকমিশন থেকে সরাসরি মনিটরিং করার ব্যবস্থা রয়েছে। উন্নত দেশসমূহের আদলে এ ধরনের আয়োজন প্রবাসে সেবা সহজতর ও দ্রুততর করবে এবং সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন আনবে বলে প্রত্যাশা প্রবাসীদের।