ফাইজারের টিকা নিয়ে নরওয়েতে ২৩ জনের মৃত্যু
মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজার-বায়োনটেকের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে নরওয়েতে ২৩ জন নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ফাইজার-বায়োনটেক কোম্পানির টিকা গ্রহণের পর যে ২৩ জন নরওয়ের নাগরিক মারা গেছেন তাদের ১৩ জনের বয়স ৮০ বছরের বেশি। নরওয়ের মেডিসিন এজেন্সি বলছে, ধারণা করা হচ্ছে ফাইজার-বায়োনটেক কোম্পানির এই টিকা বয়স্ক মানুষের জন্য মারাত্মক রকমের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
এজেন্সির মেডিক্যাল ডিরেক্টর স্ট্রেইনার ম্যাডসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, এই ঘটনার পর এখন ডাক্তারদের বিবেচনায় নিতে হবে যে, কাকে টিকা দেয়া হবে আর কাকে দেয়া হবে না।
আরও পড়ুন...
অবশেষে উহানে পৌঁছালো ‘হু’র বিশেষজ্ঞ দল
'১৪ কোটি ভ্যাকসিন রাখার সক্ষমতা রয়েছে স্বাস্থ্যখাতের'
এমকে
মন্তব্য করুন
অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বদলানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের সুন্নতে খৎনা, অ্যান্ডোসকপিসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচারকালে অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগে বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। ফলে এ নিয়ে ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ সব মহলে। এবার তাই অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগে রোগীর মৃত্যু ও আকস্মিক জটিলতা প্রতিরোধের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৭ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব জসীম উদ্দীন হায়দার স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা জারি হয়েছে, যেখানে অ্যানেস্থেসিয়ায় ব্যবহৃত ওষুধ বদলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ওষুধের মান নিশ্চিত করতেও জোর দেওয়া হয়েছে এ নির্দেশনায়।
‘অ্যানেস্থেসিয়াজনিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং অ্যানেস্থেসিয়া ব্যবহারে ওষুধের গুণগতমান নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক এ চিঠিতে বলা হয়, অ্যানেস্থেসিয়ায় ব্যবহৃত ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাতে হ্যালোথেনের বিকল্প নির্ধারণ করতে হবে। সেইসঙ্গে অ্যানেস্থেসিয়ার অপপ্রয়োগ প্রতিরোধ করতে সুপারিশ করা হলো এবং এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার কক্ষে ইনহেলেশনাল অ্যানেস্থেটিক হিসেবে হ্যালোথেনের পরিবর্তে আইসোফ্লুরেন অথবা সেভোফ্লুরেন ব্যবহার করতে হবে।
সেইসঙ্গে দেশের সব হাসপাতালে বিদ্যমান হ্যালোথেন ভেপোরাইজার পরিবর্তন করে আইসোফ্লুরেন, সেভোফ্লুরেন এবং ভেপোরাইজার প্রতিস্থাপন করতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের প্রাক্কলন করতে হবে। অর্থাৎ এ বিষয়ে খরচের পরিমাণ জানাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া হ্যালোথেন কেনা-বিক্রি এবং ব্যবহার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে হ্যালোথেন ভেপোরাইজারের বদলে আইসোফ্লুরেন ভেপোরাইজার প্রতিস্থাপনের জন্য চাহিদা মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং নতুন অ্যানেস্থেসিয়া মেশিন কেনার বেলায় স্পেসিফিকেশন নির্ধারণে স্পষ্টভাবে ভেপোরাইজারের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
নির্দেশনাটির অনুলিপি ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষা-সেবা-গবেষণায় প্রাধান্য দেবে বিএসএমএমইউ : নতুন উপাচার্য
বিএসএমএমইউর ইতিহাসে অবিশ্বাস্য এক সংবর্ধনার আয়োজন। শাহবাগ মোড় থেকে বি-ব্লকের প্রধান ফটক পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুল ছিটিয়ে ও ঢোলের বাদ্যে বরণ করে নেন নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নুরুল হককে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ১২তম উপাচার্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। এর আগে তিনি জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক ছিলেন এবং সেই সময়ে মানুষের অন্ধত্ব নিবারণে অনেকগুলো মৌলিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনেরও অভিজ্ঞতা রয়েছে দেশ সেরা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া এই উপাচার্যের।
এ ছাড়াও তিনি ঢাকা মেডিকেল ও মিটফোর্ড হাসপাতালের অধ্যাপক ছিলেন দীর্ঘদিন। ন্যাশনাল আই কেয়ারের লাইন ডিরেক্টর ছিলেন, এরপর ডিরেক্টর ছিলেন আরও পাঁচ বছর। সবশেষে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আড়াই বছর। তার একইসঙ্গে ক্লিনিক্যাল অভিজ্ঞতা এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেশনেরও অভিজ্ঞতা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মিল্টন হলে দায়িত্ব গ্রহণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ডা. দীন মোহাম্মদের কর্মপরিকল্পনা, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমিকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, বিএসএমএমইউতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সবাইকে নিয়ে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিশ্বমানের আধুনিক ও স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, কারো অন্যায় আবদার গ্রহণযোগ্য হবে না, দেওয়া হবে না প্রশ্রয়। দায়িত্বশীল প্রত্যেককেই রাখা হবে নজরদারিতে। প্রয়োজনে সরিয়ে দেয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ডা. দীন মোহাম্মদ তার কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, আমার চাওয়া হলো আদর্শ শিক্ষক তৈরি করা। যারাই এখান থেকে শিক্ষক হয়ে বের হবেন, তারা যেন আদর্শ শিক্ষক হয়, তারা যেন তাদের দায়িত্বের প্রতি কমিটেড হয়, সেই ধরনের শিক্ষকই আমরা তৈরি করতে চাই। এরসঙ্গে খুবই ওতপ্রোতভাবে জড়িত হলো গবেষণা। মেডিকেল প্রফেশন কখনোই সামনের দিকে এগোবে না যদি মানসম্মত গবেষণা না থাকে। যতদিন আমি ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করব ততদিন গবেষণার দিকটাও আমি প্রাধান্য দেবো। এক কথায় চিকিৎসা শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা ও গবেষণা এ তিন বিষয় প্রাধান্য দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এটা যেহেতু জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, আমি চাই এটি একটি গৌরবোজ্জ্বল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, কোনোকিছুর প্রভাবমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত একটি প্রশাসন হবে, এখানে বিশ্বমানের স্বাস্থ্য সেবা হবে। আমি চাই মানুষ যেন এখানে এসে বঞ্চিত না হয়, চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারিত না হয়। এ বিষয়গুলো অবশ্যই আমি নিশ্চিত করবো।
এ ছাড়াও নিজেকে শেখ হাসিনার প্রতিনিধি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সর্বশক্তি নিয়োগ করে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করে যাবো।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১১ মার্চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। তাতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের অনুমোদনক্রমে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯৮’ এর ১২ ধারা অনুসারে অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হককে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে নিয়োগ করা হলো। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার বছরের জন্য তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত হলেন। ভিসি পদে তিনি তার অবসর অব্যাবহিত পূর্ব পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি পাব্নে। তিনি বিধি অনুযায়ী উপাচার্যের পদ-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। ভিসি হিসেবে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯৬' এর ১৪ ধারা অনুযায়ী তার দায়িত্বাবলি পালন করবেন। রাষ্ট্রপতি ও আচার্য প্রয়োজনে যেকোনও সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ ২৯ মার্চ থেকে কার্যকর হবে।
বিএসএমএমইউ’র বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বিশিষ্ট চোখ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক। চোখের চিকিৎসক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ সম্মাননা ডা. আলীম মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন তিনি। আগামী ২৮ মার্চ অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের মেয়াদ শেষ হবে। অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক আন্তর্জাতিক মানের চক্ষু বিশেষজ্ঞ। পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। তার জন্মস্থান কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী এলাকায়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের আশ্বাসে আন্দোলনরত পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেন পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
ইন্টার্ন চিকিৎসক ও পোস্ট-গ্রাজুয়েট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, আমাদের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বহুদিনের দাবি ছিল বেতন বৃদ্ধির। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক, এই বাজারে এতো অল্প টাকায় চলা সম্ভব না। এই দাবির সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই আমি সম্মতি দিয়েছি। আমি তাদের কথা শুনেছি, কয়েকবার তাদের সঙ্গে বসেছি। হাসপাতালকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এরাই সবচেয়ে বেশি কাজ করেন।
তিনি বলেন, তাদের কাজে যোগ দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ঈদের পরেই আমরা বলতে পারব কবে তাদের বেতন বাড়বে। তবে ঈদের আগে আমরা বকেয়া ভাতাটা দিয়ে দেব এবং বন্ধ থাকা ১২ ইনস্টিটিউটের ভাতা চালু হবে।
চার দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই দুই ঘরানার চিকিৎসকেরা ধর্মঘট পালন করে আসছিলেন। এতে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়। ভোগান্তিতে পড়েন রোগীরা।
২৩ মার্চ থেকে সারাদেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তারা এই কর্মবিরতি আহ্বান করেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন বাড়িয়ে ৩০ হাজার এবং পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের বেতন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা তাদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া চিকিৎসা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, বিভিন্ন বকেয়া ভাতা প্রদানের দাবিও রয়েছে।
নাবালকেরা সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যানটিস এই বিলে সই করেছেন। ২০২৫-এর ১ জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হবে। সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিকমাধ্যম নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে আমেরিকায়। সম্প্রতি বাইডেন সরকার সেখানে টিকটক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে।
তারই মধ্যে ফ্লোরিডার গভর্নর সোমবার জানিয়ে দিলেন, নাবালকেরা যাতে সামাজিকমাধ্যম আর ব্যবহার করতে না পারে, তা নিয়ে একটি আইনে তিনি সই করেছেন। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হবে। ১৩ বছর না হলে আর সামাজিকমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না।
আইনে বলা হয়েছে, ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করা যাবে না। ১৪ এবং ১৫ বছরের বালক-বালিকারা অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবে, কিন্তু তার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি নিতে হবে।
ফ্লোরিডার স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, সামাজিকমাধ্যমের এই যুগে এই আইন বাবা-মাকে বাচ্চা বড় করতে সাহায্য করবে। বস্তুত, অনেকদিন ধরেই ফ্লোরিডায় এই বিলটি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। রাজ্যের স্পিকার পল রেনার চেয়েছিলেন, ১৬ বছরের নিচে কোনো নাবালক সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না। সেই প্রস্তাব খারিজ হলেও তার কাছাকাছি একটি প্রস্তাব শেষপর্যন্ত আইনের চেহারা পেয়েছে।
এদিন রেনার বলেছেন, সামাজিকমাধ্যম ভরে আছে পেডোফিল এবং পাচারকারীতে। তারা সামাজিকমাধ্যমকে ব্যবহার করে নাবালকদের উত্তেজিত করে এবং অন্ধকার জগতের দিকে টেনে নিয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, তার মতে, সামাজিকমাধ্যম বাড়ন্ত শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এটা এক ধরনের নেশা তৈরি করে, যা বাচ্চাদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। এই বিলটি নিয়ে বিতর্কের সময় দুইটি বিষয় সামনে এসেছিল। একদিকে শিশু-সুরক্ষা, অন্যদিকে বাকস্বাধীনতা। সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারের অধিকার এভাবে ছিনিয়ে নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত বলা হয়েছে, শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাকেই সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে।
‘ঈদের পর তৃণমূল স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে আমি মাঠে নামব’
ঈদের পর থেকে তৃণমূল স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে আমি আবারও মাঠে নেমে পড়ব বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
শনিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এক আলোচনাসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদের পর থেকে তৃণমূল স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে আমি আবারও মাঠে নেমে পড়ব। প্রয়োজনে প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে চলে যাব। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষের জন্য সহজলভ্য করতে যা যা করার দরকার আমি তাই করব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, জনগণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা। সেই কাজ করতে মুখে আমাদের বড় বড় কথা বললেই হবে না, কাজ করে দেখাতে হবে। এ জন্য আমরা যেন মুখে কথা কম বলে কাজ করেই আমাদের সক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে পারি সে লক্ষ্যেই মাঠে নেমে পড়তে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কথা কম বলে অসুস্থ মানুষের সেবায় কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে হবে আমাদের। বঙ্গবন্ধু এই দেশকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। তিনি ২৩ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন বাংলাদেশ একদিন স্বাধীন হবে সেই জন্য। তার দীর্ঘদিনের স্বপ্নের দেশ স্বাধীন হয়েছে। তিনি কিন্তু দেশকে তার স্বপ্নের মতো করে সাজানোর সুযোগ পাননি। তিনি মাত্র তিন বছরের মতো সময় ক্ষমতায় ছিলেন।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হলেও দেশে তেমন কোনো সম্পদ বা অর্থ ছিল না। সেই দুর্ভিক্ষ পীড়িত দেশের দায়িত্ব নিয়ে এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে তিনি কাজ শুরু করেননি। স্বাস্থ্যখাতের সব ভালো উদ্যোগগুলো তিনিই শুরু করে দিয়েছিলেন। তিনি যেভাবে শুরু করেছিলেন দেশের বিভিন্ন কুচক্রী মহলের কারণে সেগুলো সেভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। এখন জননেত্রী শেখ হাসিনা বাবার কাজগুলো এক এক করে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।’
আরও ১৫ জনের করোনা শনাক্ত
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ১৫ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৯ জন।
শনিবার (৩০ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৭১টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৭৯ হাজার ৫৪৮টি।
ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৬ হাজার ৮১৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার পাঁচ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ আইসোলেশনে আসেনি এবং আইসোলেশন থেকে কেউ ছাড়পত্র পায়নি। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ৯৫৫ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৭০৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ২৪৯ জন।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৩ জনের।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর দেশে প্রথম একজনের করোনায় মৃত্যু হয়।
ঈদের ছুটি / স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ নির্দেশনা
আসন্ন ঈদের ছুটিতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতালগুলোতে কর্মরতদের জন্য ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার (৩১ মার্চ) অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, চলতি বছর শবে কদর, ঈদুল ফিতর, বাংলা নববর্ষ ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে দীর্ঘ ছুটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ছুটিকালীন এই সময়ে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নলিখিত নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ছুটিকালীন কর্মস্থলে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে জনবলকে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া যেতে পারে।
২. প্রতিষ্ঠান প্রধান নিরবচ্ছিন্ন জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম ও জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে অনুকূলিতভাবে ছুটি মঞ্জুর করবেন।
৩. প্রতিষ্ঠান সিভিল সার্জন, বিভাগীয় পরিচালক-কে অবহিত করে শুধু মাত্র ঈদের ছুটিকালীন নিজ জেলার মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জনবল সমন্বয় করতে পারবেন।
৪. জরুরি বিভাগে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
৫. জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, ইমারজেন্সি ওটি সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।
৬. অন্তঃবিভাগে ইউনিট প্রধানরা প্রতিদিন কাজের তদারকি করবেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো জরুরি ল্যাব, এক্স-রে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।
৭. ছুটি শুরু হবার পূবেই ছুটির সময়ের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, আই ভি ফ্লুয়িড কেমিক্যাল রি-এজেন্ট, সার্জিক্যাল সামগ্রী মজুদ ও তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে স্টোর কিপার অথবা ছুটিকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফ অবশ্যই নিজ জেলা ও উপজেলার অবস্থান করবেন।
৮. অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।
৯. ছুটিকালীন হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আগাম পত্র দিতে হবে।
১০. প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা ছুটিকালীন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করবেন হবে এবং ঈদের দিন কুশল বিনিময় করবেন।
১১. প্রতিষ্ঠান প্রধান ছুটি নিলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাবেন এবং দায়িত্ব গ্রহণকারী কর্মকার্তা সকল দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।
১২. প্রতিষ্ঠান প্রধান ঈদের দিন রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন তদারকি করবেন এবং রোগীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।