• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বঙ্গবন্ধুর জীবন-কর্ম নিয়ে প্রবন্ধ সম্পাদনা কমিটিতে বিএনপিপন্থী শিক্ষক !

জবি সংবাদদাতা, আরটিভি নিউজ

  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:৫৬
বঙ্গবন্ধুর জীবন-কর্ম নিয়ে প্রবন্ধ সম্পাদনা কমিটিতে বিএনপিপন্থী শিক্ষক !

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের তত্বাবধানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রবন্ধ প্রকাশের উদ্যেগ নেয়া হয়েছে।

এজন্য অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামীকে প্রধান সম্পাদক করে ৭ সদস্যের কমিটি গঠনের মাধ্যমে গত ৩১শে আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫তম একাডেমিক কাউন্সিলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কোন যাচাই-বাছাই ছাড়াই অনুমোদন দেন একাডেমিক কাউন্সিল।

জানা যায়, প্রবন্ধ রচনা কমিটির সহযোগী সম্পাদক হিসেবে রাখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি পন্থি বিএনপির শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মেজবাহ-উল-আজম সওদাগরকে।

অনুসন্ধানে জানা যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮ জন বিএনপি পন্থী শিক্ষকদের মধ্যে তিনি অন্যতম। কমিটির প্রধান সম্পাদক অরুণকুমার গোস্বামীর নিজ বিভাগের শিক্ষক এবং সুসম্পর্ক থাকায় তাকে কমিটিতে রেখেছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।

তবে অরুন কুমার গোস্বামীর সাথে কথা বললে এ বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, অনুষদের অন্তর্ভুক্ত বিভাগের চেয়ারম্যানদেন অনুমোদন সাপেক্ষে তাকে কমিটিতে রাখা হয়।

তবে অধ্যাপক মোঃ মেজবাহ-উল-আজম সওদাগরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, প্রধান সম্পাদককে কমিটি থেকে আমার নাম বাদ দিতে বলেছি।

একাডেমিক কাউন্সিলের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, গত ১০/০৩/২১ তারিখ সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহের চেয়ারম্যানবৃন্দের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ কর্তৃক মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে একটি মানসম্পন্ন প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশনার জন্য নিম্নবর্ণিতভাবে এডিটোরিয়াল বোর্ড গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এতে প্রধান সম্পাদক হিসেবে আছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. অরুণকুমার গোস্বামী , সহযোগী সম্পাদক হিসেবে আছেন সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারজানা জামান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর এবং সদস্য হিসেবে আছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শিপ্রা সরকার ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ড. শাহ মোঃ নিসতার জাহান কবির।

এমন বিব্রতকর বিষয়টি নিয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মাঝে এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, একজন বিএনপি পন্থী শিক্ষক কিভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রবন্ধ সম্পাদনায় যুক্ত হতে পারে। তারা আশংকা করছেন, কোন তৃতীয় পক্ষ এর মধ্য দিয়ে ফায়দা নিতে চাচ্ছে কিনা। মদদ দাতাদের চিহ্নিত করতে হবে।

এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সাদা দলের শিক্ষক থাকলেও এখন তাদের খুঁজে পাওয়া দুস্কর। এখন সবাই দল ভারী করার জন্য সাদা দলের শিক্ষকদেরও দলে টানছেন। নীল দলের বিভাজনকে তারা ব্যবহার করছেন। সাদা দলের শিক্ষকরা নীল দলে যোগ দিচ্ছেন । এভাবে উভয়পক্ষের সুবিধাও নিচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির একজন সদস্য বলেন, এ ঘটনায় আমরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছি। একজন সিনিয়র শিক্ষক কিভাবে এত বড় ভুল করেন।একাডেমিক কাউন্সিলে পাশ করার আগে কোন চিন্তা করেন নি। তিনি জেনেও এমন ভুল করেছেন, এটা বেশ দুঃখজনক।

এবিষয় নিয়ে অরুণ কুমার গোস্বামীকে প্রশ্ন করলে তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।

এদিকে ইউজিসির পোস্ট ডক রিসার্চ ফেলো ও বঙ্গবন্ধু গবেষক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস বলেন, এতোজন শিক্ষকের সামনে এত বড় একটা বিষয় একাডেমিক কাউন্সিলে পাশ হয়ে গেল , এটা বিস্ময়কর। আড়ালে কোন পক্ষ স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।

এ বিষয় নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলে মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে একটি মানসম্পন্ন প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশনার জন্য সবার সম্মতিতে পাশ হয়েছিল। তখন কেউ এই বিষয়ে কথা বলেন নি। যখন আমি বিষয়টি জেনেছি তখন তার নাম বাদ দিয়েছি।

এমন সংবেদনশীল একটা বিষয় কিভাবে একাডেমিক কাউন্সিলে পাশ হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই প্রস্তাব ডিন অফিস থেকেই যাচাই-বাছাই হয়ে এসেছে । আমরা যখন এই প্রস্তাব একাডেমিক কাউন্সিলে তুলি তখন কোন শিক্ষক এই বিষয়ে অবগত করে নাই । পরে এই বিষয় অবগত হওয়ার সাথে সাথেই তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে ।

এমএন

মন্তব্য করুন

daraz
  • ক্যাম্পাস এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
৭৩ নেতাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার
‘দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করলেও বিএনপি করে না’
ন্যায্য অধিকার আদায়ে শেরে বাংলার অবদান ভুলবার নয় : ফখরুল
ওলামা দলের নতুন কমিটিতে স্থান পেলেন যারা
X
Fresh