• ঢাকা সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জাবিতে তৃতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ 

জাবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:২৪
ছবি : আরটিভি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সম্প্রতি বহিরাগত এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, অছাত্রদের আবাসিক হল থেকে বের করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ ও মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে ফটকের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ সময় দুই ঘণ্টা প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখেন তারা। সকালে অফিসে যোগদান করতে আসা কর্মকতার্তা-কর্মচারীদের এ সময় ভবনের বাইরে অপেক্ষা করে থাকতে দেখা যায়। পরে বেলা ১১টায় অবরোধ তুলে নেন তারা।

আন্দোলনকারীদের অন্য দাবিগুলো হলো- ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের বিচার নিষ্পত্তি করাসহ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা, নিপীড়কদের সহায়তাকারী প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের অপরাধ তদন্ত করা এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে জড়িত ব্যক্তিদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এ সময় ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঁচটি দাবি উত্থাপন করছি। কিন্তু এর সন্তোষজনক ও দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাইনি। প্রশাসনের এ নির্লিপ্ততা চোখে আঙুল দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার জন্যই আমাদের এই অবরোধ কর্মসূচি ও মৌন প্রতিবাদ। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিবেকবান মানুষদের বিবেক জাগ্রত হবে। এ সমস্যা সমাধান না হলে আমরা আশংকা করছি, ভর্তি পরীক্ষা হয়তো ঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। প্রশাসন অনতিবিলম্বে এর সমাধান না করলে আমরা ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।’

জানার্লিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম বলেন, চলমান আন্দোলনের আজ ১২তম দিনে আমরা মুখে কালো কাপড় ধারণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, সংস্কৃতি, গবেষেণা কার্যক্রম চলমান রেখেই আমরা আমাদের দাবি আদায় করতে চাই। আমি প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই আগামী সপ্তাহে ভর্তি পরীক্ষার জনসমাগমে হাজার হাজার মানুষের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত আছে কিনা; প্রক্টর ও প্রশাসনিক টিম প্রস্তুত আছেন কিনা। আমরা ধর্ষণের ঘটনার সর্বোচ্চ বিচার ও পদক্ষেপ আশা করছি। প্রশাসন যদি আমাদের সহযোগিতা চায় তাদের সহযগিতায় আমরা এগিয়ে আসব। এই প্রশাসন যদি ব্যর্থ হয়, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, প্রশাসনের কারণে যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান দেশবাসীর কাছে ক্ষুন্ন হয়েছে, প্রশাসনে থাকা দায়িত্বশীল ও জড়িত সেই শিক্ষকদের অপসারণের মাধ্যমে সেই সম্মান ফিরিয়ে আনতে হবে। অছাত্রদের বের না করে বরং প্রশাসন নিয়মিত শিক্ষার্থীদের হয়রানি করছে। সিন্ডিকেটের গৃহীত সিদ্ধান্ত না মেনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের অবমাননা করেছেন। আমরা আজ কালো কাপড় মুখে বেধে প্রতিবাদ করছি। দাবি না মানলে সামনে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।

নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব মাহফুজুল ইসলাম মেঘ বলেন, প্রশাসন জরুরি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। আইওয়াশের জন্য তারা যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তা বাস্তবায়িত না হলে আমাদের আন্দোলন চলবে।

আজকে মৌন মিছিল পরবর্তী আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি জানিয়ে দেয়া হবে।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. এনামউল্ল্যা, গণিত বিভাগের অধ্যাপক মুহম্মদ নজরুল ইসলাম, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, প্রাণরসান ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ প্রমুখ।

এর আগে, বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি হিসাবে ৫ দফা দাবিতে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, মৌন মিছিল এবং মোমবাতি প্রজ্বলন করেছে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ।

মোমবাতি প্রজ্বলন শেষে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষন, শিক্ষকের নিপীড়ন, যৌন নিপীড়ন এবং অছাত্রদের হলে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ করছি। আজকে আমাদের প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ছিল চলচিত্র প্রদর্শন, মোমবাতি প্রজ্বলন। আমরা দেখতে পাচ্ছি এই প্রশাসন আমাদের দাবিগুলো মানতেছে না, তারা যেরকম স্বেচ্ছাচারী আচরণ করতেছে তাতে মনে হচ্ছে তারা স্বৈরাচারী হয়ে উঠছে দিনকে দিন। আজ এই সুত্রে মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে আমরা বলতে চাই আজকে যে বিশেষ দিন রয়েছে স্বৈরাচার বিরোধী দিবস সেই দিবসের সঙ্গে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করছি।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানি বলেন ও অধ্যাপক খো. লুৎফুল এলাহী প্রমুখ।


মন্তব্য করুন

daraz
  • শিক্ষা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জাবির ডিন নির্বাচন ১৫ মে
জাবিতে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের মানববন্ধন
জাবিতে হলের তালা ভেঙে কক্ষ দখলের চেষ্টা, শিক্ষার্থীকে মারধর
ভুল চিকিৎসায় সাবেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু, জাবিতে মানববন্ধন
X
Fresh