বইমেলায় ইশতিয়াকের দুই বই
অমর একুশে বই মেলায় এসেছে কথা সাহিত্যিক, নাট্যকার, গীতিকার ও পরিচালক ইশতিয়াক আহমেদের নতুন উপন্যাস, 'সুটকেস'। পাশাপাশি 'মনা ভাইয়ের ঝামেলা সমগ্র' নামে আরও একটি বই প্রকাশিত হয়েছে তার।
দুটির বইয়েরই প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ এবং প্রকাশ করেছে অনিন্দ্য প্রকাশ। মেলার প্যাভিলিয়ন ৫-এ বই দুটি পাওয়া যাচ্ছে।
ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, 'আমাদের জীবন সুটকেসের মতোই। জানা থাকেনা কী আছে এর ভেতরে। কতটা বিস্ময় আছে কিংবা কতটা অভাব বা প্রাচুর্য। একটা সুটকেস আর কিছু মানুষের জীবন মিলেমিশে একাকার এ উপন্যাসে।
তিনি আরও বলেন, সুটকেস উপন্যাসের ভেতরে প্রবেশ করলে তাদের জীবনের গল্প পাওয়া যাবে। যে গল্পগুলো নতুন নয়। আপনার, আমার অথবা আমাদের জানাশোনা কোনো পুরাতন গল্পই...।'
এফএ
মন্তব্য করুন
ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল সাহিত্য পুরস্কার পেলেন সোহেল অটল
প্রতি বছর লেখকদের সাহিত্য পুরস্কার প্রদানের ধারা চালু করেছে সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল। এ বছর গল্প-উপন্যাস ক্যাটাগরিতে সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন সাংবাদিক ও লেখক সোহেল অটল। তার লেখা কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের জীবনীগ্রন্থ ‘আকবর ফিফটি নট আউট’ এর জন্য এই সাহিত্য পুরস্কার পেলেন।
রোববার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংগঠনের দ্বিবাষিক সম্মেলনে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি মামুন ফরাজীসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে এ সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
পুরস্কার গ্রহণ করে সাংবাদিক ও সাহিত্যিক সোহেল অটল বলেন, ‘পুরস্কার প্রাপ্তি আনন্দের। লেখকের জন্য প্রেরণাদায়ক। ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল এবং জুরি বোডের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
এ বছর শিশু সাহিত্য, অনুবাদ, গল্প-উপন্যাস ও কবিতা ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন সাহিত্যিককে ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল সাহিত্য পুরস্কার দেয়া হয়। জুরি বোড প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দেশের খ্যাতনামা ঔপন্যানিক সেলিনা হোসেন।
দাউদকান্দি সাহিত্য সংসদ আয়োজিত স্বরচিত কবিতা পাঠ
দাউদকান্দি সাহিত্য সংসদের আয়োজনে স্বরচিত কবিতা পাঠ ও সাহিত্য বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুরে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক কবি আলী আশরাফ খানের সভাপতিত্বে এবং দাউদকান্দি সাহিত্য সংসদের প্রতিষ্ঠাতা ও সদস্য সচীব সাংবাদিক শরীফ প্রধানের সঞ্চালনায় কবিতা পাঠের আসরটি সম্পন্ন হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে কবিতা পাঠ করেন ছড়াকার খন্দকার আল মামুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ভয়েস আর্টিস্ট এসএম মিজান, গীতিকার ইউসুফ নাছির কবিতা পাঠ করেন। অন্যান্যের মধ্যে কবিতা পাঠ করেন, মোহাম্মদ শাহআলম সরকার, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মো: কামরুল হাসান, মোহাম্মাদ আবু জাফর, রোকশানা আক্তার ও মহিউদ্দিন।
স্বরচিত কবিতাগুলোর মধ্যে ছিলো, স্রস্টার দয়া ও মহিমার বর্ননা, তীব্রতাপদাহ, দাউদকান্দি আমার জন্ম ভূমি, আমি মুসলীম, কিশোর গেং, সমসাময়িক বিষয়, প্রেম ও প্রকৃতি নিয়ে। কবিতা পাঠ শেষে কামরুল হাসানের একক ও যৌথ লেখা ৩টি কবিতার বই কবি আলী আশরাফ খানকে উপহার দেন।
রবী ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ
আজ পঁচিশে বৈশাখ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী। ১৮৬১ সালের (বঙ্গাব্দ ১২৬৮) এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বকবি।
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মা সারদা সুন্দরী দেবী। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ (৭ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতায় পৈত্রিক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
রবীন্দ্রনাথ একাধারে ছিলেন কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী-গল্পকার। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত ও পাঠ্য সূচিতে সংযোজিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
বিশ্বকবি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর কবিগুরু সেখানেই বসবাস করেন। ১৯০৫ সালে জড়িয়ে পড়েন বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন ‘শ্রীনিকেতন’ নামে সংস্থা। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বিশ্বভারতী’।
১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পাবনা, নাটোরে ও উড়িষ্যায় জমিদারিগুলো তদারকি শুরু করেন। শিলাইদহে তিনি দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন। এখানে জমিদার বাড়িতে রচনা করেন অসংখ্য কবিতা ও গান। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান।
রবী ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার দেওয়া বাণীতে বলেন, ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনবোধের প্রধান পাথেয় ছিল মনুষ্যত্বের বিকাশ, মানবমুক্তি ও মানবপ্রেম। রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য অঙ্গনের এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিনাট্যকার ও প্রবন্ধকার। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সাহিত্যের মাধ্যমে তিনি গেয়েছেন মানবতার জয়গান। শুধু সাহিত্য সাধনা নয়, পূর্ববঙ্গের জমিদারি পরিচালনার পাশাপাশি দরিদ্র প্রজাসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি ও মানবিক বিকাশের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেওয়া বাণীতে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। তার হাতেই বাংলা কবিতা, গান, ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতি নাট্য, নৃত্য নাট্য পূর্ণতা পেয়েছে। বাংলা সাহিত্য স্থান করে নিয়েছে বিশ্বসভায়। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি, যিনি এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ শান্তি ও মানবতার কবি। বিশ্বমানবতার সংকটে তিনি সবসময় গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন। রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনা বিজ্ঞানভিত্তিক, যা আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তার (রবীন্দ্রনাথের) রচনা আলোক শিখা হয়ে বাঙালিকে দেখিয়েছে মুক্তির পথ। বাঙালির সুখে-দুঃখে তার গান যেমন দিশা দিয়েছে, বাঙালির জাতীয় সংকটেও তার গান হয়ে উঠেছে একান্ত সহায়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান হয়ে উঠেছিল মুক্তিকামী বাঙালির চেতনা সঞ্চারী বিজয় মন্ত্র।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার পতিসরে, কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ী, সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সকাল ১১টায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান মালা উদ্বোধন করবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ছায়ানটের রবীন্দ্র-উৎসব ২৫ ও ২৬ বৈশাখ (৮ ও ৯ মে) ছায়ানট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে।
কবি জিয়া হকের ছড়া ‘আম্মু আমার’
আম্মু আমার জবাফুলের মতো
লজ্জাতে লাল চক্ষু অবনত
গন্ধ বিলায় যেন গোলাপ-রানি
আম্মু আমার ঠান্ডা কলের পানি।
আম্মু আমার নীল আকাশের দিল
আতরমাখা জোসনা কী স্বপ্নীল
হাসনাহেনার ডালে জোনাক পোকা
আম্মু আমার শিউলি থোকা থোকা।
সন্ধ্যা নদীর ইলিশ ধরা দিন
আম্মু আমার একের ভেতর তিন
কাঠগোলাপের মতোই সাদাসিধা
আম্মু আমার ছেলের সুখে ফিদা।
বউ কথা কও কোকিল পাখির সুর
আম্মু আমার ছন্দ সমুদ্দুর
ফসল ভরা মাঠের পরে মাঠ
আম্মু আমার শাহজাদি সম্রাট।
একজীবনে সুখের ডালি ভরা
আম্মু আমার গান কবিতা ছড়া
চোখ জুড়ানো পাগল করা ছবি
আম্মু আমার দীপ্ত আলোর রবি।
নোবেলজয়ী লেখক এলিস মুনরো আর নেই
সাহিত্যে নোবেলজয়ী কানাডিয়ান লেখক এলিস মুনরো মারা গেছেন।
সোমবার (১৩ মে) রাতে কানাডার অন্টারিওর পোর্ট হোপে নিজবাড়িতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। মুনরোর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার পরিবার ও প্রকাশক। খবর বিবিসির।
১৯৩১ সালের ১০ জুলাই কানাডার অন্টারিও প্রদেশের উইংহ্যাম এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন মুনরো। তার বাবা ছিলেন খামার মালিক আর মা স্কুল শিক্ষক।
মুনরো একজন কানাডিয়ান ছোটগল্প লেখক ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। পুরস্কারের ঘোষণায় মুনরোকে ‘সমকালীন ছোটগল্পের মাস্টার’ অভিহিত করেছিল নোবেল কমিটি। কমিটির মন্তব্য, তিনি খুব সুন্দর করে গুছিয়ে গল্প বলতে পারেন। তার গল্পের বিষয়বস্তু সুস্পষ্ট ও বাস্তববাদী।
১৯৫০ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় মুনরোর প্রথম গল্প ‘দ্য ডাইমেনশন অব আ শ্যাডো।’ তখন তিনি ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সেখানেই পরিচয় হয় জেমসের সঙ্গে। পরবর্তীতে ১৯৫১ সালে তারা বিয়ে করেন। সংসার করার পাশাপাশি লেখালেখি চালিয়ে গেছেন এলিস মুনরো। জেমসের সঙ্গে তার দুই দশকের সংসার ভেঙে যায় ১৯৭২ সালে। এর আগে তিন কন্যাসন্তানের মা হন তিনি। চার বছর পর আবার বিয়ে করেন জেরাল্ড ফ্রেমলিনকে। তখন থেকে গড়ে প্রায় চার বছরে তার একটি করে বই বেরিয়েছে। তার বেশির ভাগ গল্পে উঠে এসেছে কানাডার গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ।
মুনরো গভর্নর জেনালের অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনবার। ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত ‘ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস’, ১৯৭৮ সালে ‘হু ডু ইউ থিংক ইউ আর’ এবং ১৯৮৬ সালে দ্য প্রোগ্রেস অব লাভ বইয়ের জন্য। তিনি কানাডার সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছেন। আর সাহিত্যে নোবেলের পর সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৯ সালে। দ্য বেয়ার কাম ওভার দ্য মাউন্টেন বইয়ের জন্য তিনি বুকার পুরস্কার পান। তার এই বই অবলম্বনে পরিচালক সারাহ পলি তৈরি করেন সিনেমা ‘অ্যাওয়ে ফ্রম হার।’
মুনরোর প্রকাশিত অন্যান্য ছোটগল্পের সংকলনের মধ্যে আছে ‘লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইম্যান’, ‘সামথিং আই হ্যাভ বিন মিনিং টু টেল ইউ’, ‘দ্য মুনস অব জুপিটার’, ‘ফ্রেন্ড অব মাই ইয়োথ’, ‘ওপেন সিক্রেটস’, ‘দ্য লাভ অব আ গুড উইম্যান’, ‘হেটশিপ ফ্রেন্সশিপ কোর্টশিপ লাভশিপ ম্যারিজ’, ‘রানঅ্যাওয়ে’, ‘টু মাচ হ্যাপিনেস’ এবং ‘ডিয়ার লাইফ।’
জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকীতে নজরুল একাডেমীর আয়োজন
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের আসন্ন ১২৫তম জন্মবার্ষিকী, নজরুল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ৫৩ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নজরুল একাডেমী দু'দিনব্যাপি অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করেছে।
শুক্রবার (২৪ মে) বিকেলে রাজধানীল মগবাজারের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত প্রথমদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. আনোয়ারুল করিম (লেখক, গবেষক ও প্রোভিসি, নর্দান ইউনিভার্সিটি) এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ একরামুল ইসলাম (ট্রেজারার সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি) উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও আলোচনা করবেন লেখক গবেষক ও কবি হাসান আলীম।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন একাডেমীর সভাপতি,সাবেক রাষ্ট্রদুত ও সচিব মসয়ুদ মান্নান, স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক মিন্টু রহমান।
আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নজরুল একাডেমীর শিল্পী সহ আমন্ত্রিত শিল্পীবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
শনিবার (২৫ মে) সকাল ৮ টায় নজরুল একাডেমীর পক্ষ থেকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা এবং দোয়া পরিচলনা করা হবে।
একইদিন বিকেলে মগবাজারের নজরুল একাডেমী ভবনের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নজরুল একাডেমীর শিল্পীসহ আমন্ত্রিত শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবেন।
যুগে যুগে নজরুল
‘আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুন মহাবিপ্লব হেতু
এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু!
সাত সাতশো নরক-জ্বালা জলে মম ললাটে,
মম ধূম-কুণ্ডুলি করেছে শিবের ত্রিনয়ন ঘর ঘোলাটে!’
ধুমকেতু কবিতায় এভাবেই নিজের ফিরে আসার কথা বলে গেছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ, আমাদের জাতীয় কবির ফিরে আসার দিন। । ১৩০৬ বঙ্গাব্দের আজকের দিনে পৃথিবীর রূপ দেখে ছিলেন কাজী নজরুল, সেই হিসেবে তার ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ।
বাংলা ও বাঙালির অহংকার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের একদিকে অনন্ত প্রেম, অন্যদিকে বিদ্রোহ। কী কবিতায়, কী গানে, উপন্যাসে, গল্পে সর্বত্রই মানবমুক্তি প্রেমময় বাণী ও দ্রোহের বাণী। দুই-ই ঝঙ্কৃত হয়েছে জাতীয় কবি নজরুলের সৃষ্টিতে। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার পাশাপাশি সামাজিক বৈষম্য, শোষণ, বঞ্চনা, কুসংস্কার, হীনম্মন্যতার বিরুদ্ধেও শিখিয়েছেন রুখে দাঁড়াতে।
১৮৯৯ সালের ২৪ মে (বাংলা সন ১৩০৬, তারিখ ১১ই জ্যৈষ্ঠ) মঙ্গলবার কাজী আমিনউল্লাহ্র পুত্র কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয় পত্নী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। নবজাতকের সন্তানের নাম রাখা হয় কাজী নজরুল ইসলাম। ব্রিটিশ ভারতবর্ষের বাংলা প্রেসিডেন্সির চুরুলিয়া গ্রামে (বর্তমান ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার জামুরিয়া ব্লকের চুরুলিয়া গ্রাম) জন্ম নেন তিনি। বাল্যকালে কাজী নজরুল ইসলাম এলাকায় ‘দুখু মিয়া’ নামেই বেশি পরিচিত ছিল।
কাজী নজরুল ইসলাম বিস্ময়কর এক দ্রোহী সত্তার নাম। রবীন্দ্র প্রতিভার দ্যুতি-দীপ্তিতে যখন বাংলা সাহিত্যের ভুবন ছিল আলোকোজ্জ্বল, ঠিক তখনই বিদ্রোহী কবি নজরুলের ধূমকেতুর মতো আবির্ভাব। যিনি রবীন্দ্র বলয়ের প্রভাবমুক্ত হয়ে বাংলা সাহিত্যকে প্রথম দেখিয়েছিলেন নতুন পথের দিশা। সৃষ্টি করেছেন এক স্বতন্ত্র ধারা। অমরত্বের আকাক্সক্ষা নিঃসঙ্কোচে পরিহার করে আজীবন সংগ্রামে, প্রেমে নিজেকে উজাড় করেছেন সার্বজনীনতায়। সবার হৃদয়ের অলিন্দে রবীন্দ্রনাথ আর রবীন্দ্রনাথের উত্তরাধিকার কাজী নজরুল ইসলাম। বাঙালির ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, চেতনা, মননে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বহমান।
প্রেম, দ্রোহ, সংগ্রাম, সাম্য, মৈত্রী, অসাম্প্রদায়িকতা এবং মানবতার প্রতিটি বলয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলামের শুভবোধ ও অনাবিল প্রতীতি। কবি প্রতিবাদের আগুনে যেমন জ্বেলে দিতেন বিদ্রোহী পূর্ণিমা তেমনি প্রেম ও মানবতায় জেগে উঠতেন বারবার। তিনি ছিলেন দ্রোহ, বিপ্লব, বিধ্বংসী চিন্তা-চেতনায় সমৃদ্ধ এক নতুন ধারার কবি। মাত্র বাইশ বছরের সাহিত্য সাধনায় বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখাকে তিনি তাঁর অফুরান সৃজনশৈলীতে সমৃদ্ধ করেছেন। কাব্যধারায় নজরুল সম্পূর্ণ স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই বাংলা সাহিত্যে কিংবদন্তির আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। সৃষ্টি সুখের উল্লাসে পরিণত হয়েছেন কালের অগ্নিবীণায়। জন্মেই তিনি অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে নিখাদ দেশচেতনা নিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন। নিজের দুঃখ-দুর্দশার চাইতেও দেশের পরাধীনতা তাঁকে খুব পীড়া দিয়েছিল। সমাজ বাস্তবতার অমানবিক বৈষম্য, পাশবিক সাম্প্রদায়িকতা, নির্মম শোষণ আর ব্রিটিশের নজিরবিহীন অত্যাচার-অপশাসনের বিরুদ্ধে দ্রোহের শব্দাবলিতে সাহিত্যকে করে তুলেছিলেন এক স্বতন্ত্র শক্তিশালী উচ্চকণ্ঠের মাধ্যম।
১৯২০ থেকে ১৯৪২ পর্যন্ত নজরুলের সাহিত্যকর্মের ব্যাপ্তিকাল। এ স্বল্প পরিসরে তিনি যে সাহিত্যকর্ম উপহার দেন তা কালোত্তীর্ণ। সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিটির মাধ্যমে কবি নজরুল চিরভাস্বর। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম যেন তাঁর কবিতা, গানের কথার মতোই আমাদের কাছে প্রেরণার আধার, চেতনার সূতিকাগার। বিপ্লবে শক্তি জোগাতে, সংগ্রামে এগিয়ে যেতে হতাশাগ্রস্তদের মনে আশার আলো জ্বালান কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি যতদিন থাকবে ততদিন কবি নজরুল চির অমর চির অক্ষয় হয়ে থাকবেন। তাঁর কবিতা ও গানের পঙ্ক্তিমালার ভেতর দিয়ে আজু জাতির ক্রান্তিকালে অশুভবিনাশী শক্তিরূপে তিনি আমাদের মাঝে উপস্থিত হন। সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিটির মাধ্যমে কবি নজরুল আজও চির ভাস্বর, চির অম্লান।