• ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
logo

কবর জিয়ারত যেভাবে করতে হয়

আরটিভি নিউজ

  ১১ মে ২০২৪, ২১:৩৭
কবর জিয়ারত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামের বিধান অনুসারে মৃত ব্যক্তিকে কবরস্থ করাই নিয়ম। কবর মানুষকে মৃত্যু ও পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। পার্থিব জীবনে আল্লাহর অনুগত ও মুখাপেক্ষি হতে উৎসাহ দেয়। মৃত ব্যক্তির জন্য পরকালের প্রথম স্তর কবর। জীবিত মানুষের জন্য শিক্ষালাভের মাধ্যমও কবর। তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) কবর জিয়ারত করতে উৎসাহিত করেছেন।

আলেমরা বলেন, কবর যদি নিজ গ্রাম, এলাকা বা শহরের বাইরে হয়, তবে শুধু কবর জিয়ারতের জন্য কোথাও সফর করবে না, বরং দূর থেকেই দোয়া করবে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) তা করতে নিষেধ করেছেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) কবরস্থানে প্রবেশের সময় দোয়া পাঠ করতেন। সাহাবিদেরকেও পাঠ করতে বলতেন। দোয়া হলো— তোমাদের ওপর সালাম ও শান্তি বর্ষিত হোক, হে মুমিন কবরবাসীরা! তোমাদের কাছে পরকালে নির্ধারিত যেসব বিষয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা তোমাদের কাছে এসে গেছে। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হব। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২১৪৫ ও ২১৪৭)

উসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) মৃতের দাফন শেষ করে সেখানে দাঁড়িয়ে বলতেন, তোমাদের ভাইয়ের জন্য তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো। সে যেন (ঈমানের ওপর) প্রতিষ্ঠিত থাকে, দোয়া করো। কেননা তাকে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩২২১)

কবরবাসীর জন্য সাহাবীরা দোয়া করতেন, ‘আল্লাহুম্মা সাব্বিতহু বিল-কাওলিস সাবিতি ফিল হায়াতিদ দুনিয়া ওয়া ফিল আখিরা।’

অর্থ হলো, হে আল্লাহ! আপনি আপনার সুদৃঢ় বাক্যের (কলেমার) ওপর পার্থিব জীবনে ও পরকালে অবিচল রাখুন।

কোরআনের আয়াত ও বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত কোনো মুসলিম যদি সুন্নত পদ্ধতিতে কবর জিয়ারত করে এবং বিদআত থেকে বিরত থাকে, তখন কবরবাসী তা থেকে উপকৃত হয়। কেননা কবর জিয়ারতের মূল বিষয়টিই হলো কবরবাসীর পাপমুক্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য দোয়া করা।

আর কোরআনে মৃত ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করতে বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা তাদের পরে এসেছে, তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের এবং ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভাইদের ক্ষমা করুন এবং মুমিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তো দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।’ (সুরা : হাশর, আয়াত : ১০)

সযেকোনো মুমিন ব্যক্তির দোয়া দ্বারা কবরবাসী উপকৃত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় সন্তানের দোয়া দ্বারা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জান্নাতে মানুষের মর্যাদা অবশ্যই বৃদ্ধি করা হবে। সে বলবে, এটা (মর্যাদা বৃদ্ধি) কিভাবে হলো? বলা হবে, তোমার জন্য তোমার সন্তানের ক্ষমা প্রার্থনার বদৌলতে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৬৬০)

মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে কবরস্থানে না গিয়েও যে কোনো স্থান থেকেই দোয়া করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি বিষয় ব্যতিক্রম : সদকায়ে জারিয়া, এমন জ্ঞান যা দ্বারা অন্যরা উপকৃত হয়েছে অথবা এমন নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৮৮০)

কবর জিয়ারতের যা খেয়াল রাখবেন—

* কবরবাসীর উদ্দেশে সালাম দেওয়া। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২১৪৫)

* মাসনুন দোয়া পাঠ করা। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২১৪৫)

* দোয়ার সময় কবরের দিকে না ফিরে কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা। তবে হাত উঠিয়ে দোয়া করতে কোনো সমস্যা নেই। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) কবরস্থানে গিয়ে তাদের জন্য হাত তুলে দোয়া করেছেন। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৪৪৯৩)

* কবরের ওপর জুতা পায়ে না হাঁটা। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৫৬৭)

* কবরের ওপর বসা যাবে না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯৭১)

* সরাসরি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত না হলেও বুজুর্গ আলেমরা মৃত ব্যক্তির ইসালে সাওয়াবের জন্য সুরা ইয়াসিন, সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস ইত্যাদি সুরা পাঠ করতে বলেন।

মন্তব্য করুন

  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
‘গুলিসহ ভাইকে কবর দেওয়া হয়েছে’
কবরীর শেষ সিনেমা মুক্তি পাবে যেদিন
এএসপি লিয়াকত আকবরের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার
বাংলাদেশি নির্মাতার সিনেমায় মেল গিবসন