• ঢাকা রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রমজানে মেসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত

আরটিভি নিউজ

  ১০ মার্চ ২০২৪, ১১:৩০
ফাইল ছবি

মেসওয়াক হলো মুসলমানদের দাঁত মাজার উপকরণ যা একটি গাছের ডাল, কাঠ বা শিকড়ও হতে পারে। এটি মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সুন্নাহ পদ্ধতি। একে অনেক ঐতিহাসিকেরা ব্রাশের প্রাথমিক রূপ মনে করেন। কারণ, রাসুল (সা.)-এর যুগে এটিই ছিল দাঁত মাজার একমাত্র মাধ্যম। ইসলামে মেসওয়াক একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে। অযু ও গোসলের পূর্বে মেসওয়াক করা সুন্নত। অন্যান্য সময় মোস্তাহাব। এছাড়া যেকোন ভালো কাজের পূর্বে নবীজি মেসওয়াক করতেন।

রাসুলু (সা.) বলেন, ‘এমনটি কখনও হয়নি, জিবরাইল (আ.) আমার কাছে এসেছেন আর আমাকে মেসওয়াকের আদেশ করেননি। এতে আমার আশঙ্কা হচ্ছিল যে, (বেশি ব্যবহারের ফলে) আমার মুখের অগ্রভাগ ক্ষয় না করে ফেলি।’ (মুসনাদে আহমদ: ২২২৬৯)

হজরত আয়েশা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মেসওয়াক মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যম ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায়।’ (নাসায়ি: ৫)

অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলু (সা.) বলেছেন, ‘যদি আমি আমার উম্মতের ওপর কষ্ট হওয়ার আশঙ্কা না করতাম, তাহলে তাদের প্রত্যেক নামাজের সময় মেসওয়াক করার আদেশ দিতাম।’ (বুখারি: ৮৮৭)

রোজার দিনের যেকোনো সময় মেসওয়াক করা যাবে। হাসান (রহ) বলেন, ‘রোজা অবস্থায় দিনের শেষে মেসওয়াক করতে কোনো অসুবিধা নেই। মেসওয়াক পবিত্রতার মাধ্যম। অতএব দিনের শুরুতে এবং শেষেও মেসওয়াক করো’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক: ৪/২০২)

আল্লামা ইবনে আবেদীন শামি (রহ.) উল্লেখ করেছেন, ‘মেসওয়াকের উপকারিতা সত্তরেরও অধিক। তন্মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপকার হচ্ছে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় আর সর্বোচ্চ উপকার হচ্ছে মেসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হয়।’ (ফতোয়ায়ে শামি: ১/২৩৯)

মেসওয়াকের রয়েছে অনন্য উপকারী উপাদান। যেমন- ট্রাইমিথাইল অ্যামিন, সালভাডোরাইন, অ্যালকালয়েড, ফ্লোরাইড, সিলিকা, সালফার, ভিটামিন সি, ফ্লেভোনয়েডস এবং স্টেরলস পদার্থ। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে মিসওয়াকে। যা শরীরের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয়। মিসওয়াকের আশগুলো খুব নরম এবং মসৃণ হওয়ায় দাঁতের জন্য তা বেশ আরামদায়কও। নিয়মিত মিসওয়াক করলে মুখের ভেতর সৃষ্ট হওয়া ক্ষত বা ঘা দূর দূর হয়। এর আরেকটি উপকার হলো মুখের দুর্গন্ধ দূর করা।

মেসওয়াক কেমন হবে

রাসুল (সা.) জাইতুন ও খেজুর গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করেছেন। তাই এ দুটো হলে উত্তম। এছাড়া তিক্তস্বাদ যুক্ত গাছের ডাল দিয়েও মিসওয়াক করা যাবে। মেসওয়াক নিজ হাতের আঙুলের মতো মোটা ও এক বিঘত পরিমাণ লম্বা হওয়া উচিত। অজুতে হাত ধোয়ার পর কুলি করার পূর্বে মেসওয়াক করা উত্তম।

মেসওয়াকের পদ্ধতি

মিসওয়াক ধরার সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি হলো, ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলি মেসওয়াকের নিচে থাকবে। মধ্যমা ও তর্জনী ওপরে ও বৃদ্ধাঙ্গুলি নিচে রেখে মেসওয়াক ধরা। মুখের ডান দিক থেকে শুরু করা এবং ওপর থেকে নিচে মেসওয়াক করা। আড়াআড়িভাবে না করা।

মেসওয়াকের ক্ষেত্রে যেসব জিনিস থেকে বিরত থাকা জরুরি

আলেমদের পরামর্শ মেনে রোজার বিশেষ ফজিলত অর্জনে টুথপেস্ট, টুথ পাউডার ব্যবহার থেকে বিরত থাকা জরুরি। তবে রমজানে দিনের বেলা টুথপেস্ট বা মাজন ব্যবহার করতে না পারলেও দাঁত ও মুখের যত্ন নেওয়া আবশ্যক। কারণ, দুই দাঁতের মাঝখানে খাবার জমে থাকলে ডেন্টাল ক্যারিজ ও মাড়ির প্রদাহ হওয়ার সম্ভব থাকে। এজন্য রমজান মাসে ইফতার ও সেহরির পর মানসম্মত টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার পরামর্শ দেন ডেন্টিসরা।

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রিয়াদে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত
যেদিন হতে পারে ঈদ
মসজিদুল হারাম ও নববীতে রমজানের শেষ জুমা পড়াবেন যারা
লাইলাতুল কদর অনুসন্ধানের শেষ দশক শুরু
X
Fresh