• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কোরআনে যেসব নারীর প্রশংসা করা হয়েছে

আরটিভি নিউজ

  ০৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:১৫
ফাইল ছবি

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা কয়েকজন নারীর প্রশংসা করেছেন। তাঁদের মধ্যে শুধুমাত্র হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের মা মারিয়াম বিনতে ইমরান কেই পবিত্র কোরআনে নাম ধরে উল্লেখ করা হয়েছে; অন্যদেরকে তাঁদের পারিবারিক সম্পর্কের সূত্রে সম্বোধন করা হয়েছে। তাদের ভিতর ৫ জনের সম্পর্কে জানানো হলো।

মারিয়াম বিনতে ইমরান

হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের মা মারিয়াম বিনতে ইমরান। যিনি ঈমান ও সৎকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে মহান মর্যাদার অধিকারিণী হন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
ضَرَبَ اللّٰہُ مَثَلًا لِّلَّذِیۡنَ کَفَرُوا امۡرَاَتَ نُوۡحٍ وَّامۡرَاَتَ لُوۡطٍ ؕ کَانَتَا تَحۡتَ عَبۡدَیۡنِ مِنۡ عِبَادِنَا صَالِحَیۡنِ فَخَانَتٰہُمَا فَلَمۡ یُغۡنِیَا عَنۡہُمَا مِنَ اللّٰہِ شَیۡئًا وَّقِیۡلَ ادۡخُلَا النَّارَ مَعَ الدّٰخِلِیۡنَ ١۰ وَضَرَبَ اللّٰہُ مَثَلًا لِّلَّذِیۡنَ اٰمَنُوا امۡرَاَتَ فِرۡعَوۡنَ ۘ  اِذۡ قَالَتۡ رَبِّ ابۡنِ لِیۡ عِنۡدَکَ بَیۡتًا فِی الۡجَنَّۃِ وَنَجِّنِیۡ مِنۡ فِرۡعَوۡنَ وَعَمَلِہٖ وَنَجِّنِیۡ مِنَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ۙ ١١ وَمَرۡیَمَ ابۡنَتَ عِمۡرٰنَ الَّتِیۡۤ اَحۡصَنَتۡ فَرۡجَہَا فَنَفَخۡنَا فِیۡہِ مِنۡ رُّوۡحِنَا وَصَدَّقَتۡ بِکَلِمٰتِ رَبِّہَا وَکُتُبِہٖ وَکَانَتۡ مِنَ الۡقٰنِتِیۡنَ ٪ ١٢

যারা কুফরি করে, আল্লাহ্‌ তাদের জন্য দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন নূহের স্ত্রী ও লুতের স্ত্রীর, তারা ছিল আমার বান্দাদের মধ্যে দুই সৎকর্মপরায়ণ বান্দার অধীন। কিন্তু তারা তাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। ফলে নূহ ও লুত তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করতে পারলেন না এবং তাদেরকে বলা হল, তোমরা উভয়ে প্রবেশকারীদের সাথে জাহান্নামে প্রবেশ কর।

আর যারা ঈমান আনে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ ফেরাউনের স্ত্রীর দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন। সে প্রার্থনা করেছিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার জন্য তোমার নিকট জান্নাতে একটি ঘর বানিয়ে দাও আর আমাকে তুমি ফেরাউন ও তার (অন্যায়) কার্যকলাপ থেকে রক্ষা কর, উদ্ধার কর আমাকে যালিম সম্প্রদায় থেকে।’

(আল্লাহ আরও উদাহরণ পেশ করেন) ইমরান কন্যা মারয়াম-এর, যে নিজের সতীত্ব রক্ষা করেছিল, ফলে আমি তাতে আমার রূহ থেকে ফুঁকে দিয়েছিলাম। আর সে তার রবের বাণীসমূহ ও তার কিতাবসমূহের সত্যতা স্বীকার করেছিল এবং সে ছিল অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা তাহরিম, (৬৬), আয়াত, ১০-১২)

আসিয়া বিনতে মুযাহিম

তাদের মধ্যে একজন নিজেকে খোদা ঘোষণা করা দাম্ভিক সম্রাট ফেরাউনের পুণ্যশীলা স্ত্রী আসিয়া বিনতে মুযাহিম। যিনি মূসা আলাইহিস সালামের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে আল্লাহর ওপর নিজের ঈমান এনেছিলেন। যার কারণে ফেরাউন তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। আর এ শাস্তি তিনি হাসতে হাসতে বরণ করে নেন। কোন কোন রেওয়ায়াত অনুসারে আল্লাহ পাক দুনিয়াতেই তাকে জান্নাতের গৃহ প্রদর্শন করেছেন।

ঈমানের প্রশ্নে একজন নারী হয়েও কী করে অত্যাচারী বাদশাহ'র সামনে দৃঢ় থাকা যায় আছিয়া (আ.) এর জীবনী তার উত্তম দৃষ্টান্ত। তার জীবনী থেকে পৃথিবীর সকল নারীর জন্য রয়েছে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিজের সুখ-শান্তি বিসর্জন দেওয়ার এক সুমহান শিক্ষা।

আছিয়া (আ.) কে পবিত্র কুরআনের ২৮ নং সূরার ৭ থেকে ৯ নং আয়াত ও ৬৬ নং সূরার ১১ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।

হাওয়া (আ.)

সমগ্র মানবজাতির মা হাওয়া (আ.) কে আদম (আ.) থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি ছিলেন পৃথিবীর প্রথম মানুষ আদম (আ.) এর স্ত্রী। হাওয়া (আ.) এর জীবন থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষা হচ্ছে বেশি বেশি আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা প্রার্থনা করা। একজন মুমিন আর কাফেরের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো মুমিন সর্বদা আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা প্রার্থনা করে ও তাঁর দয়া চায়। আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) এর জীবনী আল্লাহ তায়ালার অনুপম ক্ষমাশীলতা ও সীমাহীন দয়াশীলতার প্রমাণ বহন করে।

হাওয়া (আ.) কে পবিত্র কুরআনের ৭ নং সূরার ২৩, ২৭ ও ১৮৯ নং আয়াতে, ৩৬ নং সূরার ৬ নং আয়াতে, ৩০ নং সূরার ২০ নং আয়াতে এবং ৪ নং সূরার ১ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।

উম্মে মূসা (আ.)

উম্মে মূসা (আ.) মানে হলো মূসা (আ.) এর মা। তিনি মিসরে ফিরআউনের রাজত্বকালে মূসা (আ.) কে জন্ম দেন যখন ফিরআউন মিসরে জন্ম নেওয়া সকল পুং নবজাতককে হত্যা করার আদেশ জারি করেছিলো। তিনি আল্লাহ তায়ালার আদেশে শিশু মূসা (আ.) কে দরিয়ায় ভাসিয়ে দেন; এবং আল্লাহ তায়ালা পরবর্তীতে তাকে পুনরায় তার মায়ের সাথে মিলিয়ে দেন। উম্মে মূসা (আ.) আল্লাহ তায়ালার উপর অবিচল আস্থা স্থাপনের দিক থেকে পৃথিবীর সকল নারীর জন্য এক মহান আদর্শ। তার জীবন থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো, তৎক্ষণাৎ বুঝে না আসলেও সবসময় আল্লাহ তা'য়ালার পরিকল্পনা মেনে নেওয়া ও তাঁর রহমতের আশা রাখা।

উম্মে মূসা (আ.) কে পবিত্র কুরআনের ২০ নং সূরার ৩৭ থেকে ৪০ নং আয়াতে ও ২৮ নং সূরার ৭ থেকে ১৩ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।

মূসা (আ.) এর স্ত্রী

মূসা (আ.) এর স্ত্রী ছিলেন একজন বুদ্ধিমতী নারী। তিনি জানতেন কী করে একজন অপরিচিত পুরুষের সাথে রক্ষণশীল আচরণ করা যায়। সেসময় মূসা (আ.) একেবারে নিঃস্ব থাকা সত্ত্বেও তিনি তাকে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান যুবক হিসেবে বিবাহ করতে রাজি হয়ে যান। পৃথিবীর সকল নারীর জন্য তার জীবনী থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষাটি হলো, স্বামী হিসেবে একজন পুরুষের চারিত্রিক গুণাবলীকে প্রাধান্য দিতে হয়, তার ধন-সম্পদকে নয়। অপরিচিত পুরুষের সাথে রক্ষণশীল আচরণ করে কী করে নিজের মর্যাদা রক্ষা করা যায় - এটাও তার জীবনীর একটি অন্যতম শিক্ষা।

মূসা (আ.) এর স্ত্রীকে পবিত্র কুরআনের ২৮ নং সূরার ২২ থেকে ২৮ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
এপ্রিলে বেড়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন
ঘোড়াঘাটে হিটস্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
ঠাকুরগাঁওয়ে হিটস্ট্রোকে নারীর মৃত্যু 
প্রতিপক্ষের জালে সাবিনা-মারিয়াদের ১৯ গোল
X
Fresh