• ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সেহরির গুরুত্ব

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ১২ জুন ২০১৭, ১১:৫২

সেহরি আররি শব্দ যা ‘সাহর’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ রাতের শেষাংশ। পরিভাষায় রোজা পালনের জন্য মুমিন বান্দা শেষ রাতে ফজরের পূর্বে যে খাবার গ্রহণ করে থাকেন তাকে সেহরি বলা হয়। রোজা রাখার জন্য এ খাবার গ্রহণ করা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সময় রোজার উদ্দেশ্যে সেহরি খেয়েছেন এবং তার প্রিয় উম্মতকে সেহরি গ্রহণ করতে উৎসাহিত করেছেন। হাদীস শরীফে আছে, রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, তোমরা সেহরি খাও। কেননা, সেহরিতে বরকত রয়েছে। (বুখারী: ১৭৮৯)

অন্য হাদীসে রয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাদের ও ইহুদী-নাসারাদের রোজার পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া। (মুসলিম: ২৬০৪)

সেহরির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, এক ঢুক পানি দিয়ে হলেও সেহরি গ্রহণ করো। (ইবনে হিব্বান: ৩৪৭৬)

সেহরি খাওয়ার ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, সেহরি খাওয়া বরকতময় কাজ। এটা ত্যাগ করো না, যদি এক ঢুক পানি দিয়েও হয় তা গ্রহণ করো। নিশ্চয় আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা সেহরি গ্রহণকারীদের জন্য রহমত বর্ষণ করেন। (মুসনাদে আহমদ: ১১১০১)

সেহরির এ বিধানটি আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে মুমিন বান্দার প্রতি তার এক বিশেষ নিয়ামত। হাদীস শরীফে আছে, ইসলামের প্রাথমিক যুগে নিয়ম ছিলো যদি কোনো মুসলমান এশার পর ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়, কিছু খেয়ে বা না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লেই রোজা শুরু হয়ে যেত। শেষ রাতে সজাগ হলেও আর খাওয়া-দাওয়া বা স্ত্রী সহবাসের কোনো সুযোগ ছিল না। উমর (রা.) একবার এশার পর তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হলেন অন্যদিকে আরেক সাহাবী সিরমা ইবনে কায়েস রা. মাগরীবের পর পর কিছু না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এশার নামাজ আদায় করে নিলেন কিন্তু তিনি জাগ্রত হতে পারলেন না। পরবর্তীতে জেগে খাওয়া-দাওয়া করলেন। ভোরে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে সমাধান জানতে চাইলে আল্লাহ পাক আয়াত নাযিল করলেন, ‘খাও, পান করো ফজরের কালো রেখা থেকে সাদা রেখা স্পষ্ট হওয়া পর্যন্ত।’ (সূরা বাকারা: ১৮৭, তাফসীরে ইবনে কাসীর: ১/৫১১)

তাই সেহরি খাওয়ার এ সুযোগ আল্লাহর বিরাট নিয়ামত ও অনুগ্রহ। তখন থেকে মুমিন-মুসলমানরা শেষ রাতে জেগে সেহরি খেতেন।

এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ ( সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে দিনে রোজা রাখার শক্তি অর্জন করো আর দিনে হালকা ঘুমের মাধ্যমে রাত জেগে ইবাদত করার শক্তি অর্জন করো।’ (ইবনে মাজা: ১৬৯৩)

তাইতো রাসুলুল্লাহ (স.) সাহাবীদেরকে ডেকে বলতেন, ‘তোমরা বরকতময় খাবারের দিকে এগিয়ে আসো।’ (আবূ দাউদ: ২৩৪৬)

সেহরি পেট পূরে খাওয়া জরুরি নয়, বরং যে কোনো খাবার দিয়ে সেহরি গ্রহণ করা যেতে পারে। হাদীস শরীফে রয়েছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিনের জন্য খেজুর কতই না উত্তম সেহরি। (আবূ দাউদ: ২৩৪৭)

অর্থাৎ সেহরি খেতে গিয়ে খুব ভালো মতো না খেলে তা হবে না, এমনটা মনে করা যাবে না। আবার মনে রাখতে হবে এটা সুন্নাত। যদি কেউ সময় মতো জাগতে না পারেন এমনকি ফজরের ওয়াক্ত হয়ে যায়, তাহলে সেহরি গ্রহণ করতে না পারার অজুহাতে রোজা ছেড়ে দেয়াও যাবে না। ঘুম থেকে জেগে সেহরির সময় শেষ হওয়ার পূর্বে যদি একটু পানিও পান করা যায়, তবে তাই করতে হবে এবং তাতে সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।

নির্দিষ্ট সময়ের আগে সেহরি খাওয়া সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ (স.) নিজে দেরি করে সেহরি গ্রহণ করতেন।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh