গরমে স্বস্তি ও সতেজ দেবে শসা-লেবুর পানীয়
প্রচণ্ড গরমে সবাই বিরক্ত। এই গরমে আপনাকে স্বস্তি দিতে পারে শসা-লেবুর ঠাণ্ডা পানীয়। যা কিনা শরীর ঠান্ডা ও সতেজ রাখবে। এটা বানানো খুব সহজ। দেখুন কীভাবে শসা-লেবু পানীয় তৈরি করবেন-
উপকরণ : টুকরা করে কাটা শসা, পুদিনা পাতা কয়েকটি, ২ কাপ স্প্রাইট, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি : শসা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। ছেঁকে রস সংগ্রহ করুন। একটি গভীর পাত্রে লেবুর রস, শসার রস, লবণ, স্প্রাইট, পুদিনা পাতা কুচি একসঙ্গে মেশান। গ্লাসে ঢেলে বরফের কুচি মিশিয়ে পরিবেশন করুন ঠাণ্ডা শসা-লেবুর পানীয়।
এসআর/
মন্তব্য করুন
ঈদের সকালে রাঁধুন সেমাইয়ের মালাই ক্ষীর
ঈদের সকালে আর কিছু থাকুক বা না থাকুক, একবাটি সেমাই তো চাই। সেমাই ছাড়া কি আর ঈদ হয়। এবারের সেমাই একটু ভিন্নভাবে রাঁধতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঈদের সকালে সেমাইয়ের মালাই ক্ষীর রাঁধার রেসিপি।
জেনে নিন রেসিপি-
উপকরণ: দুধ-দেড় লিটার, চিনি-পরিমাণ মতো, মালাই-আধা কাপ, কাজু, কিশমিশ, পেস্তা, কাঠ বাদাম-আধা কাপ, সেমাই-এক কাপ, এলাচ, দারুচিনি-৬/৭, ঘি-২ টেবিল চামচ, জাফরান- সামান্য
প্রণালি:
সর্বপ্রথম বাদামগুলো খোসা ছাড়িয়ে মোটা কুচি করে নিন। এরপর দেড় লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে অর্ধেকের কম পরিমাণ করে রাখুন। এবার প্যানে ঘি দিয়ে গরম করুন। এলাচ দারুচিনি দিয়ে একটু ভাজুন। এবার বাদাম কুচি, কিশমিশ ও সেমাই দিয়ে দিন এবং মৃদু আঁচে হালকা ভাজুন। ঘ্রাণ ছাড়লেই ঘন দুধ দিয়ে দিন।
সেমাই সেদ্ধ হয়ে আসার সাথে সাথে দুধ ঘন হয়ে আসবে। সেমাই সিদ্ধ হয়ে গেলে মালাই দিয়ে দিন, জাফরান দিন। এরপর ভালো করে মিশিয়ে চুলা বন্ধ করে ফেলুন। এরপর ছোট ছোট বাটিতে এই ক্ষীর সাজান। এরপর ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে বাদাম ও কিশমিশ ছিটিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার সেমাইয়ের মালাই ক্ষীর।
ঈদের সকালে সুস্বাদু জর্দার ২ রেসিপি
আর কয়েকদিন পরেই ঈদ-উল-ফিতর। আর ঈদ মানেই রকমারি খাওয়া-দাওয়া। বিরিয়ানি, লাচ্ছা পরোটা, কাবাব এই সব কিছুর পাশাপাশি ঈদের একটি খুব পরিচিত খাবার হলো জর্দা। বলা যায় জর্দা ছাড়া ঈদ কার্যত ভাবাই যায় না। আর যে কোনও উৎসবেই মিষ্টিমুখ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে বসেই খুব সহজে এবং একেবারে কম সময়ে বানাতে পারেন জর্দা। এছাড়া জর্দা কিন্তু সবার খুব পছন্দের একটি খাবার। অনেকেরই জানা নেই, জর্দা রাঁধতে কোন উপকরণ কি পরিমান দিতে হবে। তাই তারা জর্দা রান্না করতে গিয়ে বেশি নরম করে ফেলেন। তারা এই রেসিপি অনুসরণ করে তৈরি করতে পারবেন ঝরঝরে জর্দা সেমাই অথবা জর্দা পোলাও।
জেনে নিন রেসিপি-
১. জর্দা সেমাই
উপকরণ: সেমাই-১ প্যাকেট, চিনি- ২ কাপ, নারকেল কুড়ানো- ১ কাপ, কিমমিশ- ২ টেবিল চামচ, দারুচিনি- ৩ টুকরো, ঘি- ৪ টেবিল চামচ, পানি- ২ কাপ, তেজপাতা- ২টি, লবণ- পরিমাণমতো।
যেভাবে তৈরি করবেন: ঘি গরম করে তাতে সেমাই দিয়ে ভালোভাবে ভেজে নিন। এরপর তাতে মেশান কোড়ানো নারিকেল। কিছুটা সময় ভেজে নিয়ে তাতে পানি দিয়ে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে আরও কিছুক্ষণ রান্না করুন। পানি শুকিয়ে এলে তাতে কিশমিশ, বাদাম, তেজপাতা, দারুচিনি মিনিট দশেক দমে রাখুন। সেমাই ঝরঝরে হয়ে এলে নামিয়ে নিন।
২. শাহি জর্দা পোলাও
উপকরণ: শাহি জর্দা পোলাও তৈরি করতে আপনার যে উপকরণগুলো লাগবে তা হলো, পোলাও চাল ২৫০ গ্রাম, কমলা বা মাল্টার রস ২ কাপ, ঘি ৪ টেবিল চামচ, গুঁড়ো দুধ ৬ টেবিল চামচ, ছোট সবুজ এলাচ ৪টি, মাঝারি সাইজের দারুচিনি ৩টি, লং ২টি, তেজপাতা ৪টি, চিনি ৩ টেবিল চামচ, কিশমিশ ১/২ টেবিল চামচ, কাঠবাদাম ১/২ টেবিল চামচ, কাজুবাদাম ১/২ টেবিল চামচ, কালো ও লাল ছোট মিষ্টি ২০ পিস।
যেভাবে তৈরি করবেন: প্রথমে পোলাওর চালগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার একটি সসপ্যানে পানি দিয়ে তা সিদ্ধ করতে দিন। সিদ্ধ করার সময় এতে দিয়ে দিন কমলা বা মাল্টার রস। এতে পোলাওতে কমলা রং চলে আসবে। আর যদি ন্যাচারাল এই রংটি পছন্দ না করেন, তবে বাজার থেকে কৃত্রিম জর্দা রং কিনে আনতে পারেন। এক চিমটি কৃত্রিম জর্দা রঙে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষি রংটি পেয়ে যাবেন।
এরপর পোলাও চাল প্রায় সিদ্ধ হয়ে এলে এতে দিয়ে দিন চিনি। এই সময় খেয়াল রাখবেন, চাল সিদ্ধ হওয়ার আগে চিনি দিয়ে দিলে চাল ভালো করে সিদ্ধ হওয়ার সুযোগ পায় না। পোলাও চাল সিদ্ধ করার সময় যে পানি দেবেন, তা ফেলে না দিয়ে চালের মধ্যেই শুকিয়ে ফেলতে চেষ্টা করবেন। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, পানি শুকাতে গিয়ে যেন তা পুড়ে না যায়।
পোলাওর চাল সিদ্ধ হয়ে গেলে একটি সসপ্যানে ঘি ঢেলে দিন। এ সময় চুলার আঁচ মিডিয়ামে রাখুন। ঘি গরম হয়ে গেলে তাতে ছোট সবুজ এলাচ ৪টি, মাঝারি সাইজের দারুচিনি ৩টি, লং ২টি, তেজপাতা ৪টি দিয়ে দিন। হালকা সুগন্ধ বের না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এবার সিদ্ধ করা পোলাওর চালগুলো এতে ঢেলে দিন। নেড়েচেড়ে এ পর্যায়ে ঢেলে দিন গুঁড়ো দুধ।
এবার সব উপকরণ ভালো করে মিশে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন আরও ১-২ মিনিট। যখন দেখবেন সসপ্যান থেকে জর্দা পোলাও আলগা হয়ে উঠে চলে আসছে তখন চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন। শাহি জর্দা পোলাও পরিবেশনের আগে এর ওপর ছিটিয়ে দিন কিশমিশ, কাঠ, কাজুবাদাম, কালো ও লাল ছোট মিষ্টি।
ইফতারে বানিয়ে নিতে পারেন টকদইয়ের কাস্টার্ড
সারাদিনের তীব্র গরমে রোজা রাখার পর ইফতারে মেনুতে সবাই চায় স্বাস্থ্য সম্মত খাবার। তাই ইফতারে ঠান্ডা ঠান্ডা ডেজার্ট হলেতো কথাই নেই। আর ডেজার্টের মেন্যুতে দই মানিয়ে যায় খুব সহজেই। সেই দই দিয়ে যদি কাস্টার্ড বানিয়ে নেওয়া যায় তবে কিন্তু মন্দ হয় না। কারও কাছে মিষ্টি দই পছন্দ, আবার অনেকের কাছেই টকদই বেশি পছন্দের। টকদই ব্যবহার করে সহজেই বানিয়ে ফেলা যায় খুবই আকর্ষণীয় মজাদার একটি আইটেম টকদই কাস্টাড। খুব সহজেই চট করেই বানিয়ে নেওয়া যায় এটি। কিন্তু খেতে ভীষণ মজা। চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে তৈরি করতে পারেন এই কাস্টার্ড।
যা যা লাগবে:
টকদই- ২ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক- ১ কাপ, ছোট করে কাটা কয়েক রকমের ফল (যেমনঃ আপেল, কমলা, আম, বেদানা, আঙ্গুর, কলা ইত্যাদি), ভ্যানিলা অথবা ম্যাংগো ফ্লেবারের আইসক্রিম- ১ কাপ
বানাবেন যেভাবে:
প্রথমে একটি পরিষ্কার পাতলা সুতির কাপড়ে টকদই নিয়ে তা থেকে ভালোভাবে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এবার বাটিতে টকদই নিয়ে তাতে কনডেন্সড মিল্ক এবং আইসক্রিম দিয়ে মিশিয়ে নিন। ভালো মত মেশানো হলে তাতে পছন্দ মতো টুকরো করে কেটে রাখা ফলগুলো দিয়ে আবারো ভালো ভাবে মিক্স করে নিন। এবার যেভাবে কাস্টার্ড বানানোর সময় ফ্রুট দেওয়া হয়, সেভাবেও লেয়ার করে সাজিয়ে নিন।
এরপর কমপক্ষে ১ ঘণ্টা ফ্রিজে সেট করার জন্যে রেখে দিন। ঠান্ডা হয়ে এলে উপরে বেদানা কিংবা পছন্দমতো ফল কুঁচি করে ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন এটি। চাইলে বাদামকুচি ও সিরাপও দিতে পারেন। সাজানোটা নির্ভর করছে আপনার পছন্দের উপর। ব্যস, টকদই কাস্টার্ড রেডি হয়ে গেলো! ইফতারে কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজ থেকে বের করে পরিবেশন করুন ঠান্ডা ঠান্ডা প্রাণ জুড়ানো মজাদার কাস্টার্ড।
ঈদের দুপুরে মুখরোচক গরুর ভুনা মাংস
ঈদের প্রস্তুতি ঘরে ঘরে শুরু হয়ে গেছে। এবার ঈদের খাবার কী হবে তা নিয়ে চলছে আয়োজন। ঈদে সাদা পোলা, মুরগি মাংসের পাশাপাশি গরুর মাংস বা খাসির মাংস তো থাকেই। অনেকে চিকেন বিরিয়ানি বা বিফ তেহারিও রান্না করেন। তবে সাদা পোলাও বা গরম ভাতের সঙ্গে গরু বা খাসির মাংস ভুনার মজাই আলাদা। ঈদের গরুর মাংসটা ভিন্নভাবে কষিয়ে রান্না করতে পারেন। তাহলে ঝাঝালো স্বাদও পাওয়া যাবে। এছাড়া ঈদের খাবারে যদি খিচুড়ি রান্না হয় তবে ঝাল ভুনা মাংসতো আরও সুস্বাদু লাগবে। চলুন দেখে নেই ঈদে কীভাবে ভিন্নভাবে গরুর ভুনা রান্না করা যাবে।
যা যা লাগবে:
গরুর মাংস, টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, মরিচের গুঁড়া, হলুদের গুঁড়া, জিরার গুঁড়া, বাদাম বাটা, চিলি ফ্লেকস, সরিষার তেল, টমেটো সস, আস্ত গরম মশলা, গরম মশলা গুড়া, পেয়াজ কুচি, তেল, লবণ
যেভাবে বানাবেন:
প্রথমে গরুর মাংস ভালো করে ধুয়ে নিন। গরুর মাংস ম্যারিনেট করতে ১/৩ কাপ টক দইয়ের সঙ্গে মেশান দেড় টেবিল চামচ আদা বাটা, দেড় টেবিল চামচ রসুন বাটা, স্বাদ মতো মরিচের গুঁড়া, ২ চা চামচ হলুদের গুঁড়া, দেড় চা চামচ জিরার গুঁড়া, ১ চা চামচ বাদাম বাটা, ১ চা চামচ চিলি ফ্লেকস, ২ টেবিল চামচ সরিষার তেল, ২ টেবিল চামচ টমেটো সস ও স্বাদ মতো লবণ দিয়ে মেখে নিন। মাংস ম্যারিনেট করে কিছুক্ষণ রেখে দিন।
এবার চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে দিন। এদে তেল গরম করে নিন। এতে আস্ত গরম মসলা ভাজুন। ১ কাপ পেঁয়াজ কুচি দিয়ে লালচে করে ভাজুন। এবার ম্যারিনেট করা মাংস দিয়ে দিন। ৫/৭ মিনিটের মতো কষিয়ে নিন। ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মাঝারি আঁচে ১০ মিনিট রান্না করুন। মাংস থেকে পানি বের হবে। একটু নেড়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পানি কমে এলে আরও যোগ করুন। তবে কম পানি দিবেন। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে ১ চা চামচ গরম মসলার গুঁড়া ও কয়েকটি আস্ত কাঁচা মরিচ ৫ মিনিট দমে রাখুন। এরপর পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে যাবে গরুর কষা মাংস।
পহেলা বৈশাখে ঘরেই তৈরি করুন উৎসবের আমেজ
আসছে পহেলা বৈশাখ। বাংলা বছরের নতুন দিনটি বরণ করে নেওয়ার জন্য বাঙালির ঘরে ঘরে থাকে বৈশাখী আয়োজন। এবার ঈদুল ফিতরের দুইদিন পরেই পহেলা বৈশাখ। যার কারণে অনেকেই এবার পরিবারের সঙ্গে অনেক বছর পর বৈশাখ উদযাবন করার সুযোগ পাবে। দুইটা উৎসব কাছাকাছি হওয়াতে আনন্দের মাত্রাটা একটু বেশিই বলা যায়। পরিবারের সঙ্গে যেহেতু এবারের বৈশাখ তাই এবারের উৎসবের আনন্দে ঘরেই তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে বৈশাখী আমেজ।
ঘরেই পয়লা বৈশাখের আমেজ তৈরি করবেন যেভাবে:
ভোজন আয়োজন-
বৈশাখ মানেই পান্তা-ইলিশ। তবে ইলিশ খিচুড়িও বৈশাখের ভোজন আয়োজনে যোগ করতে পারে ভিন্ন মাত্রা। তবে পান্তা ভাত হলো বাঙালির জনপ্রিয় খাবার। বাংলাদেশে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা উৎসবের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার সংস্কৃতি চালু ও পরিব্যাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া চলমান গরমের মোকাবিলা করতে বা শরীরকে চাঙা রাখতে পান্তা ভাতের জুড়ি মেলা ভার। তাই জেনে নিন পান্তা ভাতের রকমারি রেসিপি।
১. টক ঝাল পান্তা ভাত
উপকরণ: বাসি ভাত- ১ বাটি, আলু- ১টা, ছোট পেঁয়াজ- ১টা, কাঁচামরিচ ২টা, লবণ- ১ চামচ, সরিষার তেল- ৬ চামচ, গন্ধরাজ লেবু- ১ টুকরো, তেঁতুল-আধা চা চামচ।
প্রণালী: প্রথমে আলু খোসা ছাড়িয়ে সরু সরু করে কেটে ধুয়ে লবণ মাখিয়ে রাখুন। এরপরে একটা ননস্টিক প্যানে ৪ চামচ সরিষার তেল দিয়ে গরম করে আলুর টুকরোগুলো দিয়ে ভেজে তুলে নিন। এরপর পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ কুচি কুচি করে কেটে রাখুন। এবারে বাসি ভাতটা একটা বাটিতে নিয়ে পানি মিশিয়ে একটু পানি রেখে বাকি পানিটা ফেলে দিন। এবারে পানি ভেজানো ভাতের মধ্যে বাকি ২ চামচ সরিষার তেল, কাঁচামরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি, লবণ ও গন্ধরাজ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবারে আলু ভাজার থেকে কিছুটা রেখে দিয়ে সবটা ভাতের সাথে মিশিয়ে নিন। এবারে ভাতের ওপরে বাকি আলু ভাজাগুলো ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
২. ডাল পোড়ার ভর্তা দিয়ে পান্তা
উপকরণ: মুসুর ডাল- ১/২ কাপ, পেঁয়াজ- ১টি বড়, শুকনো মরিচ- ২টি, কাঁচামরিচ- ২টি, লবণ- স্বাদমতো, হলুদ- ১/২ চা চামচ, সরিষার তেল- ৩ টেবিল চামচ।
প্রণালী: মশুর ডাল ভালো করে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন আধ ঘণ্টা। কড়াই গরম করে এক চামচ তেল দিন। পানি ঝরিয়ে মশুর ডাল দিয়ে নাড়াচাড়া করুন যতক্ষণ না ডালের রং বদলে ফ্যাকাসে হয়ে যায়। এতে দেড় কাপ পানি আর হলুদ দিন। আধা সেদ্ধ হলে ভালো করে কাঁটা দিয়ে ঘেঁটে দেবেন। সম্পূর্ণ সেদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত মাঝারি আঁচে রান্না করুন। দরকারে আরও গরম পানি দিতে পারেন। এবার অন্য কড়ায় শুকনো মরিচ পেয়াঁজ হালকা করে ভেজে নিন। ডাল মাখার মতো শুকনো হলে পেয়াঁজ, শুকনো মরিচ, কাঁচা মরিচ, লবণ দিয়ে ভালো করে মেখে পান্তা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। এক্ষেত্রে বাসি ভাতে পানি ঢেলে অন্তত ১২ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন।
৩. চিংড়ি মাছ-মলা দিয়ে পান্তা ভাত
উপকরণ: মাঝারি মাপের নদীর বা পুকুরের চিংড়ি মাছ- ২৫০ গ্রাম (ভাল করে পা, খোসা, পিঠের নোংরা ফেলে ধুয়ে নিন), পেঁয়াজ- ১টি বড়, কাঁচামরিচ- ৩টি, লবণ- স্বাদমতো, হলুদ- ১/২ চা চামচ, সরিষার তেল- ২ টেবিল চামচ।
প্রণালী: মাছে লবণ হলুদ মাখিয়ে রাখুন অন্তত ১৫ মিনিট। এই ফাঁকে পেয়াঁজ আর মরিচ কুচিয়ে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে মাছ দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে ভাজুন পানি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত। তুলে একটু ঠান্ডা করুন। এবার এতে পেঁয়াজ আর কাঁচামরিচ সামান্য লবণ দিয়ে ভালো করে মাখুন। মাছ যাতে একেবারে মিশে যায়। এবার ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা বাসিভাত বের করে তার সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করুন। যেমন স্বাদ, তেমন গরম থেকেও রেহাই পাবেন।
ভর্তার নানা আয়োজন-
১. ডাল ভর্তা: ১ কাপ ডাল, ৫-৬টি কাঁচামরিচ, ৩-৪ কোঁয়া রসুন দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। এবার পরিমাণ মতো সরিষার তেল ও লবণ দিয়ে মেখে নিন ৷
২. কচু ভর্তা: মোটা কচুর সবুজ অংশ কেটে লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। কড়াইতে ২ টেবিল-চামচ সরিষার তেল গরম করে সিদ্ধ কচু দিয়ে, আধা চা-চামচ কালজিরার ফোঁড়ন, ১ টেবিল-চামচ রসুন কুচি ১ টেবিল-চামচ পেঁয়াজ কুচি ৪-৫টি কাঁচা-মরিচ ফালির সঙ্গে সামান্য লবণ দিয়ে হলুদ, মরিচ, ধনে ও জিরা গুঁড়া ছিটিয়ে নেড়েচেড়ে ভর্তা করে নিন।
৩. মরিচ ভর্তা: ৮-১০টি শুকনা মরিচ ভেজে নিন। ২টি পেঁয়াজ কুচি করে নিন। ১ টেবিল-চামচ সরিষার তেল দিয়ে, স্বাদমতো লবণসহ একসাথে মেখে নিন।
শরবত-
পোড়া আমের শরবত: কাঁচা আম ৪টি, পরিমাণমতো চিনি, বিট লবণ, কাঁচা মরিচ, বরফ কুচি, পুদিনা পাতা ও পানি। আমগুলো প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার খোসাসহ মাঝারি আঁচে পুড়িয়ে নিন। চুলা থেকে তুলে ঠান্ডা হলে আমের খোসা ছাড়িয়ে নিন। হাতে চটকে আমের ভেতরের নরম ক্লাথ বের করুন। আমের সঙ্গে সব উপকরণ দিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। তৈরি আপনার পোড়া আমের শরবত। পছন্দমতো স্বচ্ছ গ্লাসে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
কাঁচা আমের জুস: ২টি আম ফালি করে ২ গ্লাস পানি দিয়ে জ্বাল করে নিন। ধনেপাতা ও পুদিনাপাতা কুচি ২ টেবিল-চামচ করে, ১টি কাঁচামরিচ কুচি, স্বাদমতো লবণ, চিনি আর অল্প বিট লবণ মিশিয়ে আরও ২ গ্লাস পানি দিয়ে ব্লেন্ডারে জ্বাল করা আমসহ ব্লেন্ড করে নিন ৷ এবারে একটি প্লেটে গরম ভাতের সাথে সব রকমের ভর্তা ও মাছ দিয়ে পরিবেশন করুন। সাথে পরিবেশন করুন এক গ্লাস কাঁচা আমের জুস।
এ ছাড়াও খাবার টেবিলে গ্রামবাংলার ছোঁয়া আনতে মণ্ডা-মিঠাই, কদমা, বাতাসা মুরলি, নিমকি দিয়ে সার্ভিং ট্রে সাজিয়ে নেওয়া যেতে পারে। যদি স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা চিন্তা করেন কিংবা পরিবারের বয়স্ক কেউ থাকলে দই, চিড়া, খই, মুড়ি আর ফল দিয়েই করতে পারেন ভোজের আয়োজন। আর হাতে সময় থাকলে পিঠাপুলি আর মোয়া আয়োজনে রাখতে পারেন।
ঈদের নাশতায় নেসেস্তার বরফি
হালুয়ার স্বাদ যাদের বেশি পছন্দ, বরফির নাম শুনলে তাদের জিভে জল আসবেই। কিছু বরফি আছে যেগুলো খুব সহজে তৈরি করা যায়। এ তালিকায় ওপরের দিকে থাকবে সুজির বরফির নাম। অল্প কিছু উপকরণে খুব কম সময়ে তৈরি করা যায় এই বরফি। খেতে কিন্তু ভীষণ সুস্বাদু। চলুন জেনে নেওয়া যাক সুজি দিয়ে ভিন্ন স্বাদের নেসেস্তার বরফি তৈরির রেসিপি। ঈদের দিন পায়েসের সঙ্গে অতিথি আপ্যায়নে রাখতে পারেন কালারফুল এই নেসেস্তার বরফি।
জেনে নিন রেসিপি-
উপকরণ:
সুজি ১ কাপ, চিনি পৌনে ১ কাপ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, ভ্যানিলা অ্যাসেন্স কয়েক ফোঁটা, খাওয়ার রং সামান্য, পানি ২ কাপ, কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম ও চিনাবাদাম প্রয়োজনমতো।
প্রণালি:
সুজি পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিন। এক ঘণ্টা পর পাতলা কাপড়ে ছেঁকে নিন। সুজি থেকে পানি আলাদা করুন। এই সুজির পানিতে খাওয়ার রং, ঘি, চিনি দিয়ে নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে এলে বাদাম, কাঠবাদাম কুচি, পেস্তা কুচি ও ভ্যানিলা অ্যাসেন্স দিয়ে পাত্রে ঢেলে দিন। ঠান্ডা হলে বরফি আকারে কেটে নিন।
বৈশাখে পাঁচ পদের ভর্তা
পহেলা বৈশাখে খাবারে বাঙালিয়ানা থাকবে না তা হতেই পারে না। নববর্ষের খাবার মানেই পান্তাভাত। সঙ্গে যদি থাকে বাহারি ভর্তা তাহলে আরও জমে ওঠে। সুস্বাদু কিছু ভর্তার রেসিপি দেওয়া হলো-
টাকি মাছের ভর্তা
উপকরণ : টাকি মাছ (১ কাপ), পেঁয়াজ কুচি (৩ টেবিল চামচ), আদা বাটা (১/২ চা চামচ), রসুন বাটা (১/২ চা চামচ), পেঁয়াজ বাটা (২ টেবিল চামচ), জিরা বাটা (১ চা চামচ) রসুন ছেঁচা (২ টেবিল চামচ), ধনে বাটা (১ চা চামচ), লবণ, হলুদ বাটা (১/২ চা চামচ), মরিচ বাটা (১/২ চা চামচ)।
প্রণালি : মাছ সিদ্ধ করে কাটা বেছে নিন। তেলে পেঁয়াজ হালকা বাদামি রং করে ভেজে বাটা মসলা ও সামান্য পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। কষানো হয়ে গেলে মাছ মেশান ও ভেজে নিন। লবণ দিন। হালকা মাখানো অবস্থায় নামিয়ে ফেলুন। হাতে চেপে গোল করে পরিবেশন করুন টাকি মাছের ভর্তা।
চিংড়ি শুঁটটি ভর্তা
যা লাগবে : চিংড়ি শুঁটকি এক কাপ, পেঁয়াজ কুচি এক কাপ, শুকনা মরিচ ১০টি, কাঁচা মরিচ পাঁচটি, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল দুই টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল দুই টেবিল চামচ।
যেভাবে করবেন : তাওয়ায় চিংড়ি শুঁটকি টেলে নিন। ভালো মতো ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। প্যানে সয়াবিন তেল গরম করে শুকনা মরিচ দিয়ে ভেজে উঠিয়ে নিন। ওই প্যানেই পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নরম হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। ধনিয়া পাতা কুচি ও কাঁচামরিচ দিয়ে নেড়ে নামান। চিংড়ি ভাজা পেঁয়াজ-মরিচ-ধনিয়া পাতা-লবণ একত্রে বেটে সরিষার তেল দিয়ে মেখে নিলেই খাওয়ার জন্য রেডি চিংড়ি শুঁটকি ভর্তা।
ভুনা বেগুন ভর্তা
যা লাগবে : মাঝারি সাইজের বেগুন একটি, পেঁয়াজ কুচি এক-দুই কাপ, রসুন কুচি পাঁচটি, ধনিয়া পাতা কুচি দুই টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল এক টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল এক টেবিল চামচ।
যেভাবে করবেন : বেগুন মৃদু আঁচে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পুড়িয়ে ছিলে নিন। সয়াবিন তেল গরম করে পেঁয়াজ-রসুন-মরিচ কুচি দিয়ে আধা ভাজা করুন। পোড়ানো বেগুন চটকে পাঁচ-ছয় মিনিট নেড়েচেড়ে ভাজুন। লবণ, ধনিয়া পাতা কুচি, সরিষার তেল দিয়ে নেড়েচেড়ে মাখিয়ে নিন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল ভুনা বেগুন ভর্তা।
বরবটি ভর্তা
যা লাগবে : বরবটির টুকরা ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি এক-দুই কাপ, রসুন কুচি চার কোয়া, কাঁচা মরিচ কুচি ছয়টি, ধনিয়া পাতা কুচি দুই টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল দুই টেবিল চামচ।
যেভাবে করবেন : প্যানে এক টেবিল চামচ সরিষার তেল দিন। বরবটি পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ কুচি ও লবণ দিয়ে মৃদু আঁচে টেলে নিন। বরবটি সিদ্ধ হয়ে পানি টেনে গেলে ধনিয়া পাতা কুচি দিয়ে নেড়ে নামান। ঠান্ডা করে ব্লেন্ড করে নিন বা শীল পাটায় বেটে অবশিষ্ট এক টেবিল চামচ সরিষার তেল দিয়ে মেখে নিন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
ইলিশ মাছের মাথার ভর্তা
যা যা লাগবে : ইলিশ মাছের মাথা ১টি পেঁয়াজ (মাঝারি আকারের) ২টি শুকনো মরিচ ৩টি সরষের তেল পরিমাণমতো, পেপার টাওয়েল কয়েকটা।
যেভাবে তৈরি করবেন : ইলিশ মাছের মাথা ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। তার পর তা পেপার টাওয়েল দিয়ে শুকনো করে মুছে নিন। এবার কড়াইতে সরষের তেল বেশি করে নিয়ে তা গরম করে নিন। তেল গরম হলে ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে অল্প করে ভেজে নিন। তেল থেকে তুলে আবারও একটি পেপার টাওয়েল দিয়ে বাড়তি তেলটা শুষে নিন। একটি বড় বাটিতে পানি গরম করে ইলিশ মাছের ভেজে নেওয়া মাথা ভাপিয়ে নিন। বেশ কিছুক্ষণ ভাপানোর পর ইলিশ মাছের মাথা পানি থেকে তুলে নিন। একটি পেঁয়াজ ও শুকনো মরিচ ড্রাই রোস্ট করে ভাপা ইলিশ মাছের মাথার সঙ্গে মিহি করে বেটে নিন। কড়াইতে সরষের তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে লালচে করে ভাজুন। বাকি শুকনো মরিচ দিয়ে দিন। পেঁয়াজ ভাজা হলে ইলিশ মাছের মাথাবাটা দিয়ে দিন। বেশ কিছু সময় কষিয়ে নিন। তেল ছেড়ে এলে আঁচ বাড়িয়ে মাথার মিশ্রণ ভাজতে ভাজতে শুকনো করে ফেলুন। একেবারে শুকনো হলে নামিয়ে ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।