সাবান-শ্যাম্পু ছাড়াই দূর করুন চা-কফির দাগ
প্রিয় কোনো পোশাকে দাগ লাগলে কার না মন খারাপ হয়। দাগ থেকে মুক্তি পেতে সব সময় সাবান-শ্যাম্পু কিংবা ডিটারজেন্ট ব্যবহারের উপায় থাকে না। কখনও কখনও দাগে পোশাক একেবারেই নষ্ট হয়, পোশাকটা পরার মতো অবস্থা থাকে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চা কিংবা কফির দাগের ক্ষেত্রে এমনটা হয়।
তবে চা কিংবা কফির দাগ থেকে সহজে মুক্তি পেতে পারেন। তাও আবার ঘরোয়া উপায়ে।
যা করবেন-
- টুথপেস্ট চা কিংবা কফির দাগ দূর করতে সিদ্ধহস্ত। দাগের জায়গায় প্রায় ১৫ মিনিট টুথপেস্ট লাগিয়ে রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। দাগ উঠে যাবে।
- দাগের শত্রু ভিনিগার। একটি পাত্রে কয়েক কাপ পানি নিন। তাতে ১ চা চামচ ভিনিগার দিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর যেখানে দাগ লেগেছে সেখানে হালকা হালকা স্প্রে করুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দাগ গায়েব হবে।
- ডিম অর্ধেক সিদ্ধ করে করে তার সাদা অংশ দাগের জায়গায় লাগিয়ে আলতো করে ঘষতে থাকুন। মিনিট দু’য়েক রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্যস! কেল্লাফতে।
- পোশাকে চা কিংবা কফির দাগ যেখানে লেগে থাকবে সেখানে এক চামচ বেকিং সোডা দিয়ে ঘষতে থাকুন। তারপর কিছুক্ষণ রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনার পোশাক একদম পরিষ্কার।
সূত্র- সংবাদ প্রতিদিন
জিএ
মন্তব্য করুন
কলায় সারবে একাধিক রোগ, কিন্তু এড়িয়ে চলবেন যারা
সকালের খাবারে দুধ আর কর্নফ্লেক্সের সঙ্গে অনেকেই কলা খেতে পছন্দ করেন। চটজলদি হাতের সামনেও মেলে এই ফল। দামেও সস্তা। সঙ্গে পুষ্টিগুণে ভরপুর। কলায় থাকা মিনারেল, ভিটামিন আর ফাইবার শরীরের জন্য খুব উপকারী। এছাড়া এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। একটি মাঝারি মাপের কলা থেকে শরীরে প্রায় ৪০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম প্রবেশ করে। যা ভালো রাখে হৃদযন্ত্র। তাই প্রতিদিন অবশ্যই একটি করে কলা খান। কলা খেলে শুধু একটি বা দুটি নয়, ৮০ ধরনের রোগ সেরে যায়।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, কলা খুবই উপকারী। তবে অনেক সময় কলা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়ে যায়। কলায় ভিটামিন সি, ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি৬, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, গ্লুটাথিয়ন, ফেনোলিক্স, ডেলফিডিনিন পাওয়া যায়।
জেনে নিন কলার উপকারিতা-
শরীরের শুষ্কতা, হাড়ের রোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য-সহ একাধিক সমস্যা কলা খেয়ে এসব এড়ানো সম্ভব।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, যদি কারও শরীর শুষ্ক থাকে বা সবসময় ক্লান্ত লাগে তাহলে তার কলা খাওয়া উচিত। শরীর ঠান্ডা রাখে।
এ ছাড়া ভালো ঘুম না হওয়া, রাগ, প্রচণ্ড তৃষ্ণা বোধ এবং শরীর জ্বালা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কলা খাওয়া উচিত।
মানসিক অবসাদে ভুগলে কলা খেতে পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
চোখের জন্য কলা খাওয়া খুব উপকারী। মূলত কাঁচাকলার কিছু উপাদান খুবই কাজে লাগে।
কলা ডায়াবেটিকদের জন্য বিপদজ্জনক। সুগার থাকলে কলা এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
কফ জমলে বা হাঁপানিতে ভুগলে কলা খাওয়া উচিত নয়। কারণ এটি কফের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
এই গরমে ফলের রস নাকি স্যালাইন, কোনটি খাবেন
দেশজুড়ে গত কয়েক দিন থেকেই তীব্র দাবদাহ শুরু হয়েছে। এতে বিপর্যস্ত জনজীবন। এদিকে গরমের কারণে সারাদেশে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই সময়ে শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হয়। ফলে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়। শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করে ক্লান্তি দূর করতে পানি এবং পানীয়জাতীয় খাবারের কোনো বিকল্প নেই।
তবে অনেকেই মনে করেন দ্রুত পানিশূন্যতা পূরণে স্যালাইন খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আবার অনেকে ভরসা রাখেন ফলের রসের ওপর। যে কারণে গরমের শুরু থেকেই ওআরএস এবং ফলের রস খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই দুই ধরনের পানীয়ের মধ্যে কোনটা পান করলে শরীরকে সুস্থ-সবল রাখতে পারবেন।
জেনে নিন:
স্যালাইনের উপকারিতা: আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে এসেছে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন বা খাবার স্যালাইন। কোনো কারণে ডিহাইড্রেশন হলে শরীর থেকে পানির পাশাপাশি সোডিয়াম-পটাশিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান দ্রুত গতিতে বাইরে বেরিয়ে যায়। আর সেই সুবাদে আক্রান্তের স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে দেহে পানি এবং অন্যান্য খনিজের ভারসাম্য ফেরানোর কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ওআরএস। তাই সারা পৃথিবীজুড়েই ওআরএস-এর এতটা চাহিদা।
ফলের রসই মহৌষধ : পুষ্টিবিদদের মতে, গরমে তাজা ফলের রস নিয়মিত খাওয়া যেতেই পারে। তাতে যেমন পানির ঘাটতি মিটে যায়, ঠিক তেমনই শরীরে প্রবেশ করবে অত্যন্ত উপকারী সব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শুধু তাই নয়, যে কোনও ফলের রস থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ মেলে। তাই এই গরমে শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত যেকোন ফলের রস পান করা ভালো। তাতেই শরীরে উপকার পাবেন হাতেনাতে।
ফলের রস নাকি স্যালাইন: পুষ্টিবিদরা বলছেন, গরমের এই সময়ে এই দুই পানীয়ই শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই প্রচণ্ড গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে ফলের রস এবং স্যালাইন, এই দুই পানীয়ই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেতে হবে। তবে ডিহাইড্রেশন হলে বা ডায়রিয়ার কবলে পড়লে তখন আর ফলের রসে কাজ হবে না। তখন অবশ্যই নিয়ম মেনে স্যালাইন খেতে হবে।
বাড়িতেই বানান ফলের রস: তবে ফলের রস খেতে চাইলে ঘরেই তাজা ফল থেকে রস করে খাওয়া উচিত। বাজারজাত যেকোনো বোতলবন্দি ফলের রস খেলে কিন্তু কোনো লাভ পাবেন না। কারণ এইসব ফলের রসে চিনি এবং ফ্লেভার মিশ্রিত থাকে যা কিনা শরীরের উপকারের বদলে ক্ষতি করে বেশি।
তার চেয়ে বরং গরমে সুস্থ থাকতে টাটকা ফল কিনে এনে বাড়িতে রস করে খান। তবে ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ বা অন্য কোনও ক্রনিক রোগ থাকলে নিয়মিত ফলের রস খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
তবে ফলের রস আর স্যালাইন যেটাই খান না কেনো, নিয়মমাফিক অবশ্যই প্রতিদিন অন্তত দুই লিটার করে পানি পান করতে ভুলবেন না।
তীব্র গরমে এসি ছাড়াই ঘর হবে শীতল
প্রচণ্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। এ অবস্থায় ঘরে ফিরেও স্বস্তি মিলছে না। একটু শীতলতার খোঁজে মানুষ যেন দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে। যাদের ঘরে এসি আছে, তারা না হয় কিছুটা আরাম পাচ্ছেন। কিন্তু যাদের ঘরে এসি নেই তারা কী করবেন? উপায় আছে। এসি ছাড়াও ঠান্ডা করা যায় ঘর। এই গরমে ঘরের তাপমাত্রা কম রাখার জন্য আপনার বাড়িতে লাগাতে পারেন এই গাছগুলো। যা আপনার ঘরকে এসি ছাড়াই শীতল রাখবে।
জেনে নিন ঘরকে শীতল করবে যে গাছগুলো-
ইংলিশ আইভি: গবেষকদের মতে, এই গাছ মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে ঘরের বাতাসের প্রায় ৬০ শতাংশ টক্সিন এবং ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত দুর্গন্ধ শুষে নিতে পারে। ঘরের শোভা বাড়াতেও কাজ করে এটি। তাই ঘর ঠান্ডা ও দূষণমুক্ত রাখতে ঘরে রাখতে পারেন এই গাছ।
স্নেক প্ল্যান্ট: অ্যালো ভেরার মতো এই গাছের পাতাও জলীয় উপাদানে সমৃদ্ধ। তাই জানলার কাছে রেখে দিলে তা উত্তাপ শোষণ করে নেবে, ঘরের হাওয়াকে করে তুলবে শীতল। এটিতেও অতিরিক্ত জলসেচনের দরকার হয়।
এরিকা পাম: বাড়িতে জায়গার অভাব না থাকলে বসার ঘরে রাখতেই পারেন এরিকা পাম। এটি তাল গাছের তুতো ভাই। এরিকা পাম এক দিকে ঘর ঠান্ডা রাখে, আবার দেখতেও ভাল লাগে। শুধু বাড়ি নয়, এই গাছটি হোটেল, অফিস এবং অন্যান্য উন্মুক্ত স্থানে সাজাতেও ব্যবহৃত হয় এই গাছ।
ঘৃতকুমারী: অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী অতি পরিচিত একটি উদ্ভিদ। বাড়ির ভিতরের তাপ ও অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে অ্যালভেরার গুণাগুণ বহু। মূলত বাংলার বুকে এই গাছ ঘৃতকুমারী নামে পরিচিত। এই গাছের পাতায় রয়েছে বহু ধরনের প্রতিকার।
রবার প্লান্ট: এই গাছের পাতা এমনিতেই বড় হয়। পাশাপাশি যদি সব চেয়ে বড় পাতার শ্রেণি দেখে গাছটি কেনা হয়, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি তা ঘর ঠান্ডা রাখবে। এতে মাঝে মাঝেই একটু পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
যে কারণে হয় হিটস্ট্রোক, প্রতিরোধে যা করবেন
প্রচণ্ড গরমে মানুষের জীবন এখন ওষ্ঠাগত। আর এই পরিস্থিতিতে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এ বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকলে সহজেই সেই পরিস্থিতি সামলানো যায়। হিটস্ট্রোক বা হাইপারথার্মিয়াতে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বাড়তে থাকে। আমাদের শরীর তখন আর এই হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া তাপমাত্রাকে কন্ট্রোল করে শরীরকে ঠান্ডা করতে পারে না। এই সময় শরীরের তাপমাত্রা মাত্র ১০-১৫ মিনিটে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটেরও বেশি হয়ে যায় একে হিটস্ট্রোক বলে। এ সময় শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোক-এ মারা যায়। অনেক সময় ধীরে ধীরে এটি ঘটে থাকে, যদিও হুট করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের দেশেও এই রোগ এখন প্রায়ই দেখা দেয় কারণ প্রতিনিয়তই পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। হিটস্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ ও বাঁচার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।
হিটস্ট্রোক-এর কারণ, লক্ষণ ও এর প্রতিকার-
হিটস্ট্রোক: হিটস্ট্রোক বা সানস্ট্রোক এক ধরনের অসুস্থতা, যা অত্যধিক গরমের কারণে হয়ে থাকে। এই অসুখে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ᱸ ফারেনহাইট-এর বেশি এবং সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছরে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোক-এ মারা যায়। অনেক সময় ধীরে ধীরে এটি ঘটে থাকে, যদিও হুট করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের দেশেও এই রোগ এখন প্রায়ই দেখা দেয় কারণ প্রতিনিয়তই পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে।
হিটস্ট্রোক কয়েকটি কারণে হতে পারে। চলুন কারণগুলো দেখে নেই-
পারিপার্শ্বিক উচ্চ তাপমাত্রা
শরীরে পানিশূন্যতা বা মিনারেলসের অভাব
কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায়, যেমন- ডাই-ইউরেটিক্স, বিটা ব্লকারস, অ্যালকোহল
হার্টের বা স্কিনের অসুখে
লক্ষণ বা উপসর্গ- হিটস্ট্রোকে প্রাথমিক কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে। গরমে হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি ধরতে পারলে অনেক জটিল অবস্থা থেকে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো হিটস্ট্রোক-এ দেখা যায়
শরীরের অত্যধিক তাপমাত্রা
মাথাব্যথা
দুর্বলতা
ঝিমুনি
বমি বমি ভাব
হার্টবিট বেড়ে যাওয়া
তবে রোগীর অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে গেলে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন-
চামড়ার রং লালচে হয়ে যাওয়া
মানসিক ভারসাম্যহীনতা
হাঁটতে অসুবিধা হওয়া
চোখের মণি বড় হওয়া
বমি হওয়া
ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া
খিঁচুনি
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
প্রাথমিক চিকিৎসা-
এই গরমে কড়া রোদ ও ভিড় এড়িয়ে চলুন। যেহেতু এটি একটি জরুরি অবস্থা, তাই এর চিকিৎসাও দ্রুত হওয়া প্রয়োজন। এই রকম পরিস্থিতিতে প্রথমেই যা করা দরকার তা হলো, রোগীর শরীর ঠান্ডা করা এবং খোলা বা ফাঁকা স্থানে নিয়ে যাওয়া। ভারি পোশাক পরে থাকলে সেটা চেইঞ্জ করে পাতলা সুতি কাপড়ের পোশাক পরিয়ে দিন। ঠান্ডা বাতাসের ব্যবস্থা করুন, প্রয়োজন মনে হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিন।
রোগীর সুস্থ হতে কয়েকদিন পর্যন্ত সময় লাগবে সেটা এর তীব্রতা বা ধরনের ওপর নির্ভর করে। যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয় তাহলে হিটস্ট্রোক রোগীর মস্তিষ্ক , পেশী, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গগুলোকেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা শুধুমাত্র শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য কিছু না করে বরং পানি বা লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণের ওপর জোর দিতে বলেন।
প্রতিকার-
হেলদি ও লিকুইড খাবার রাখুন ডায়েটে: আমাদের মধ্যে যারা বাইরে রোদে কাজ করি বা এক ঘন্টার বেশি ব্যায়াম করি তাদের হিটস্ট্রোক এড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশুদ্ধ পানির কোনো বিকল্প নেই। ডাবের পানি, ফ্রেশ জুস, ঠান্ডা শরবত এগুলোও পান করতে পারেন। ভাজাপোড়া, মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। লাইট ও হেলদি ফুড বেছে নিন যাতে হজমে সমস্যা না হয়।
ব্যায়াম ভোরবেলায় করুন: তাপদাহ বিদ্যমান থাকলে ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ অবশ্যই সূর্যোদয়ের আগে বা খুব ভোরে করতে হবে।
অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন: গরমের দিনগুলোতে অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কারণ, অ্যালকোহল বা সুগার ড্রিংকগুলো শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সৃষ্টি করে।
অনেক সময় শরীরে লবণ বা মিনারেলস-এর ঘাটতি দেখা যায়। সেই সময়ের জন্য সবচেয়ে উপকারী হলো ওরস্যালাইন। রোগীর পরিস্থিতি খারাপ হলে মুখে খাওয়া সম্ভব না হলে শিরার মাধ্যমে দেওয়া হয়। কিন্তু হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের ক্ষেত্রে সবসময় এটা নিরাপদ নাও হতে পারে। কারণ, স্যালাইনের সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিন সঙ্গে সঙ্গেই।
শিশু ও বয়স্কদের জন্য টিপস-
সব বয়সী মানুষের ক্ষেত্রে হিটস্ট্রোক এক রকম হলেও, বয়স্ক ও শিশুদের প্রতি আলাদা নজর রাখা জরুরি। খেয়াল রাখতে হবে যেন তাদের শরীরে কোনভাবেই পানিশূন্যতা দেখা না দেয়। যেহেতু ১-২ বছর বয়সী শিশুরা নিজেদের শারীরিক অসুবিধাগুলোর কথা বলতে পারে না। তাই গরমের দিনে তাদের বার বার পানি বা শরবত দিতে হবে। শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়তে দেয়া যাবে না। তাদের খোলামেলা জায়গায় বা প্রচুর বাতাস আছে এরকম জায়গায় রাখতে হবে।
শিশুদের মতো বয়স্কদের জন্যও খোলামেলা স্থান বাছাই করা উচিত। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের শরবত বা মিষ্টি জুস না দিয়ে পানি, ডাবের পানি এগুলো দিতে হবে।
এই গরমে আমি বা আপনি যেকোনো সময়ে হিটস্ট্রোক-এ আক্রান্ত হতে পারি। তৎক্ষণাৎ প্রতিরোধের বা মোকাবেলার উপায়গুলো জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই এই পরিস্থিতি থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারি।
ভিটামিন ডি খাওয়ার উপযুক্ত সময় রাতে নাকি দিনে
শরীরে একটু ক্লান্তি অনুভব হলেই শরীর সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করে থাকি। খাবারের হজম ক্ষমতা বেশি করার জন্য ব্যবহৃত হয় ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি হলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন। তবে এটা খুব সামান্য খাদ্যদ্রব্যের মধ্যেই পাওয়া যায়। আর তাই এটা শুধুমাত্র ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করাটা খুবই কঠিন।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডিটামিন ডি কোনো খাদ্যের সঙ্গে খেলে এর কার্যকারিতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। তাই সারাদিনে একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবারের সঙ্গে ভিটামিন ডি খাওয়া উচিত। তবে এতে ঠিক কতটা ফল পাওয়া যায় তা এখনও পরিষ্কার নয়।
সারা বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ যখন ভিটামিন ডি-র অভাবে ভুগছে তখন বলে রাখা অত্যন্ত জরুরি যে, ভিটামিন ডি হলো অত্যন্ত ভালো একটি নিউট্রিশনার সাপ্লিমেন্ট। যাইহোক না কেন অনেকগুলো বিষয় রয়েছে যা ভিটামিন ডি-র কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে কখন ও কীভাবে আপনি প্রতিদিনের এই ভিটামিনের ডোজটি খাচ্ছেন তাও নির্ভর করে।
জেনে নিন ভিটামিন ডি খাওয়ার সবথেকে ভালো সময় কোনটি-
ভিটামিন ডি হলো এমন একটি পুষ্টিগুণ সম্পর্কিত জিনিস যা অন্যান্য ভিটামিনের তুলনায় কিছু ক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকরী ও সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে আপনার শরীর ও ত্বককে রক্ষা করবে।
প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি গ্রহণ আপনার শরীরের পক্ষে খুবই প্রয়োজনীয়। একটি গবেষণায় জানা গেছে, ভিটামিন ডি শরীরে প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
তবে প্রচুর উপকারী এই ভিটামিনটি খুব কম খাদ্যদ্রব্যেই পাওয়া যায়। তাই এটা আপনার প্রয়োজন মেটাতে খুবই কঠিন যদি না আপনি প্রতিদিন সূর্যের সংস্পর্শে না যেয়ে থাকেন।
যে সমস্ত মানুষদের ত্বকের রং কালো, শরীর মোটা বা ভারি এবং এমন জায়গায় বাস করেন যেখানে সূর্যের আলো খুবই সীমাবদ্ধ। তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি-র অভাব বেশি মাত্রায় দেখা যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমেরিকার ২৯ শতাংশ মানুষ ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভোগেন।
তীব্র রোদে মোটরসাইকেল চালাতে বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহেও থেমে নেই জীবনের ব্যস্ততা। প্রতিদিনই কাজের প্রয়োজনে বের হচ্ছেন হাজারো মানুষ। কেউ পায়ে হেটে, কেউ বাসে বা রিকশায়, গাড়িতে চড়ে গন্তব্যে পৌছাচ্ছেন। এরমধ্যে যাতায়াতের বাহন হিসেবে বেশি ব্যবহার হচ্ছে মোটরসাইকেল। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত পৌঁছানো যায় বলে ব্যস্ত এই শহরে এখন মোটরসাইকেলের জনপ্রিয়তাই বেশি। তবে এই গরমে দীর্ঘসময় মোটরসাইকেল চালালে অস্বস্তি বাড়ে। সেই সঙ্গে মোটরসাইকেলেরও নানা সমস্যা যুক্ত হয়। তাই গরমে মোটরসাইকেল চালাতে কিছু বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচণ্ড গরমে মোটরসাইকেল চালানোর সময় অসতর্ক হলেই হতে পারে বড় ক্ষতি। বিশেষ করে এই গরমে মোটরসাইকেলের কয়েকটি পার্টস যেমন, টায়ার ও ফুয়েল ট্যাংকের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাছাড়া কড়া রোদে মোটরসাইকেল পার্ক করে রাখাও বিপদজ্জনক। হালকা রঙের কাপড় দিয়ে এটি ঢেকে রাখতে হবে।
হাইড্রেটেড থাকুন- মোটরসাইকেল হোক বা সাইকেলে গিয়ারের চাপে গরম লাগবেই। তাই পানি সঙ্গেই রাখুন। ত্বকে সানস্ক্রিন লাগিয়ে মোটরসাইকেল চালান। এই সময় হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। তাই দীর্ঘসময় মোটরসাইকেল নিয়ে রোদে দাড়িয়ে থাকবেন না।
বাইকের কুল্যান্ট- কুল্যান্ট হলো এক ধরণের তরল। যা মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের মধ্যে তাপের ভারসাম্য বজায় রাখে। এটি কুলিং সিস্টেম হিসেবে কাজ করে। অ্যান্টিফ্রিজ ও পানির মিশ্রণে তৈরি এই তরল গরমে মোটরসাইকেলকে সুরক্ষিত রাখে। তাই গরমে মোটরসাইকেলের কুল্যান্টের অবস্থা ঠিক আছে কিনা তা দেখে নিন। প্রয়োজনে সার্ভিসিং করে নিন।
ইলেকট্রিক পার্টস- প্রচণ্ড গরমে মোটরসাইকেলের একাধিক ইলেকট্রিক পার্টসে ক্ষতি হতে পারে। তাই চালানোর সময় অতিরিক্ত ফিউজ সঙ্গে রাখুন। ব্যাটারি ঠিক আছে কিনা দেখে নিন। গরমে ব্যাটারির ওপরও চাপ পড়তে পারে।
টায়ার- তীব্র গরমে টায়ার প্রেশার একটু কম রাখুন। চাকায় বাতাসের বেগ বেশি থাকলে গরমের সময় তা ফেটে যেতে পারে। যারা হাই স্পিডে মোটরসাইকেল চালান তাদের চাকা অত্যাধিক হিট হয়। তাই সাবধানে থাকুন।
ফুয়েল ট্যাংক- তীব্র গরমে মোটরসাইকেলের ফুয়েল ট্যাংক পূর্ণ করা উচিত নয়। কারণ তাপ সৃষ্টি হলে পেট্রোল কিংবা ডিজেল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফুয়েল ট্যাংক ভরা থাকলে জ্বালানি উপচে পড়তে পারে। যা থেকে বড় দুর্ঘটনাও ঘটে। এই সময় ফুয়েল ট্যাংক চার ভাগের তিন ভাগ পূর্ণ করুন।
চেইন লুব্রিকেট- গরমের সময় বাইকের চেইন নিয়মিত পরিষ্কার ও লুব্রিকেট করুন। এতে মোটরসাইকেল আরও মসৃণভাবে চালানো যাবে। লুব্রিকেটিং করার আগে সব মোটরপার্টস অবশ্যই পরিষ্কার করুন।
পোশাক- মোটরসাইকেল চালানোর সময় হালকা পোশাক পরুন। কালার চেঞ্জিং গ্লাস ব্যবহার করুন। এটি চোখে আরাম দেবে। হালকা রঙের সুতি জামা পরতে পারেন। ফুলহাতার জামা পরবেন। এতে ত্বক রোদের তাপে পুড়ে যাবে না।
হেলমেট- মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট ব্যবহার করুন। আপনি নিজে পরবেন এবং আপনার সঙ্গে কেউ থাকলে তাকেও হেলমেট পরাবেন। এতে রোদের তাপ মাথায় পরবে না। বেশি ভারী হেলমেট ব্যবহার না করাই ভালো।
খালি পেটে মিছরি ভেজানো পানির উপকারিতা
গরমে পুড়ছে পুরো দেশ। কোনো কিছুতেই যেন কমছে না গরমের প্রভাব। এই সময় নানা অসুখ হয় শরীরে। সব থেকে ভয়ের হলো হিটস্ট্রোক। কখন যে হবে কেউ বলতে পারে না। তবে এই প্রবল গরমে আপনাকে সুস্থ রাখতে পারে মিছরির পানি।
আগেকার দিনের মানুষরা এই মিছরির পানি খেয়েই সুস্থ থেকেছেন। বাইরে রোদ থেকে ফিরলে সঙ্গে সঙ্গে মিছরি ভেজানো পানি খেতেন। মিছরি আখ এবং খেজুরের রস থেকে তৈরি হয়। তাই এটি খুব স্বাস্থ্যকর। সেই সঙ্গে মিছরি ভেজানো পানি খেতে খুব মজা।
গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে এর আর দ্বিতীয় কোনও জুড়ি নেই। রাতে কয়েক টুকরো মিছরি এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে বা খালি পেটে খেয়ে নিন। দেখবেন সারাদিন এত গরমেও নিজেকে ক্লান্ত মনে হবে না।
যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কম তাদের জন্য এই মিছরি ভেজানো পানি খুব উপাকারী। নিয়মিত এই পানি খেলে সহজে আপনি ক্লান্ত হবেন না। ইমিউনিটি সিস্টেম ভালো হবে। গরমে নাক থেকে রক্ত পড়লে খেতে হবে এক গ্লাস মিছরি ভেজানো পানি। নিয়মিত খেলে আর রক্ত পড়বে না।
হজম শক্তি বাড়ায় মিছরির পানি। দুর্বল লাগলেই খেয়ে নিন এই পানি। সঙ্গে সঙ্গে এনার্জি ফিরে পাবেন।