বিশ্বে প্রাথমিক শিক্ষাবঞ্চিত মেয়ে শিশু সংখ্যা ১৩ কোটি : জাতিসংঘ
বিশ্বের প্রায় ১৩ কোটি নারী শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক দশকে বেশ কিছু দরিদ্র দেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে তেমন উন্নতিই হয়নি।
পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ৬০ কোটিরও বেশি শিশু স্কুলে গেলেও এদের বেশিরভাগই কিছু শিখছে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এই ব্যর্থতাকে 'দারিদ্র্য উসকে দেয়ার বৈশ্বিক সংকট' বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকেরা।
মেয়েদের পড়াশোনার জন্য প্রতিকূল এরকম ১০ টি দেশের তালিকা -
১. দক্ষিণ সুদান : দক্ষিণ সুদান হলো বিশ্বের নবীনতম স্বাধীন দেশ। অনেক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মুখোমুখি হয়েছে দেশটি। ফলে ধ্বংস হয়ে গেছে অসংখ্য স্কুল। এমনকি পরিবারগুলো বাধ্য হয়েছে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে। এই দেশের তিন-চতুর্থাংশ মেয়েরাই প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পার হতে পারে না।
২. মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র: প্রতি ৮০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন মাত্র শিক্ষক রয়েছে আফ্রিকার দরিদ্র এই দেশটিতে।
৩. নাইজার: এই দেশটিতে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সের মেয়েদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ শিক্ষিত।
৪. আফগানিস্তান: দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তান দ্বন্দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত। দেশটিতে তীব্র লিঙ্গ বৈষম্য আছে। সেখানকার স্কুলগুলোতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের পরিমাণ বেশি।
৫. চাঁদ: সামাজিক আর অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে মেয়ে শিশু এবং নারীদের শিক্ষার্জনের ক্ষেত্রে।
৬. মালি: মেয়েদের মাত্র ৩৮ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরোতে সক্ষম হয়।
৭. গিনি: এই দেশটিতে ২৫ বছর বয়সের বেশি নারীরা পড়াশোনায় ১ ঘণ্টারও কম সময় ব্যয় করতে পারে।
৮. বুরকিনা ফাসো: দেশটিতে মেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা ভয়াবহ। এখানে মাত্র ১ শতাংশ মেয়েরা মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করতে পারে।
৯. লাইবেরিয়া: দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীই প্রাথমিক পর্যায়ে স্কুলে যায় না আফ্রিকার গরিব এ দেশে।
১০. ইথিওপিয়া: ১৮ বছর বয়সের আগেই ৫ জনের মধ্যে ২ জন মেয়েরই বিয়ে হয়ে যায়।
গত বছর জাতিসংঘের বক্তব্য অনুযায়ী, বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জন করতে হলে আরো ৬ কোটি ৯০ লাখ শিক্ষকের প্রয়োজন। ক্যাম্পেইন ওয়ানের প্রেসিডেন্ট গেইল স্মিথ মেয়েদের পড়াশোনার এই ব্যর্থতাকে 'দারিদ্র্য উসকে দেওয়ার বৈশ্বিক সংকট' বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় ১৩ কোটিরও বেশি মেয়েরা এখনও স্কুলে যেতে পারছে না। যার কারণে বিশ্ব বঞ্চিত হচ্ছে ১৩ কোটি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উদ্যোক্তা, শিক্ষক আর রাজনীতিবিদের নেতৃত্ব থেকে।
এপি
মন্তব্য করুন