• ঢাকা শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
logo

নগ্ন হয়ে পরিচিতি বাড়াচ্ছেন স্পেনের গ্রামের মানুষ

ডয়েচে ভেলে

  ৩০ জুন ২০২৩, ১৭:৫৬

স্পেনের একটি গ্রামের মানুষ বহির্বিশ্বের নজর আকর্ষণ করতে এক অভিনব পথ বেছে নিয়েছেন৷ ক্যালেন্ডারের জন্য ক্যামেরার সামনে নগ্ন অবস্থায় হাজির হয়েছেন তাঁরা৷ ইতিবাচক সাড়া পেয়ে পরের বছরও সেই কাজ করতে চান গ্রামবাসীরা৷

খুয়ানখো পেরেসের মতো গ্রামের অনেকেই জামাকাপড় খুলেছেন৷ ৬৮ বছর বয়সি মানুষটি আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন৷ এক বছর আগে সেই জায়গায় গ্রামের প্রায় সব মানুষ বিবস্ত্র হয়ে ছবি তুলিয়েছিলেন৷ খুয়ানখো বলেন, অংশ না নিয়ে পারিনি৷ ওরা বলল, মানুষ কম পড়ছে৷ জনসংখ্যা এত কম হওয়ায় অন্য কোনো উপায় ছিল না৷ মাত্র ১৬ জন বাসিন্দা টিকে রয়েছেন৷ গ্রামটিকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে তাঁরা ক্যালেন্ডারের জন্য নিজেদের নগ্ন ছবি তুলিয়েছিলেন৷

স্পেনের রক্ষণশীল দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে এমন ঘটনা বেশ আলোড়ন তুলেছিল৷ আন্তোনিয়া পেরেয়াও সেই শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন৷ সেখানকার মানুষ যে অনেক খোলা মনের অধিকারী ও অগ্রগতির পক্ষে, ৬৪ বছর বয়সী এই নারী তা দেখাতে চান৷ আন্তোনিয়া বলেন, আমাদের ভাবমূর্তি বেশ খারাপ৷ আমরাও বড় জনপদের মানুষের মতো ইমেজ চাই৷ আমরাও তো কর দেই৷ অথচ আমাদের ছোট এই জায়গা যেন কিছুটা অবহেলিত৷

ফটোগ্রাফার দাবিদ কান্তো ও খুয়ানখো রামিরেস গ্রামের বাসিন্দাদের সহজেই বোঝাতে পেরেছিলেন৷ দাবিদ বলেন, গ্রামে মুখে-মুখেই খবর ছড়িয়ে পড়ে৷ প্রতিবেশীরা কী করছে, কত ভালো করছে, মানুষ তা দেখে৷ এভাবে তারা একে অপরের পথ অনুসরণ করে৷

গ্রামের মেয়রের মথায় নগ্ন ক্যালেন্ডারের আইডিয়া আসে৷ তিরিশ বছর বয়সী লুসিয়া নিকোলাস গ্রামের অন্যতম তরুণদের মধ্যে পড়েন৷ তিনি প্রতিবেশীদের সাহস দেখে গর্বিত৷ তিনি মনে করেন, এটা শুধু এক ধরনের মুক্তি নয়৷ আমরা অনেক বদ্ধমূল ধারণাও ভেঙে দিচ্ছি৷ শারীরিক কসরত করা মানুষের ছবি তোলা হয়নি৷ এরা সাধারণ মানুষ৷ এখানে সবাই নিজেকে নিজের মতো করেই দেখাতে পারে৷ আমাদের দেখা অন্যান্য নগ্ন ছবির মতো নয়৷ আমি নিজেও এভাবে ছবি তুলিয়েছি৷

ফটো দারুণ হয়েছে৷ লুসিয়া ও তাঁর সতীর্থরা এই সব ছবির মাধ্যমে অন্য একটি বার্তাও দিতে চেয়েছেন৷ গত শতাব্দীর ষাটের দশক থেকে সেই অঞ্চলে বালু ও মার্বেল পাথর সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ এককালের সুন্দর গ্রাম আজ পাথর ভাঙার বিকট শব্দ, ধুলা ও নোংরার ভারে আক্রান্ত৷

লুসিয়া বলেন, এ ছাড়াও অনেক সম্পদ রয়েছে৷ আমাদের একটা সংস্কৃতিও আছে৷ আমরা সেটাই দেখাতে চাই৷ ওয়াইন সেলার আছে, পাইন গাছ আছে, যেটির বয়স নিশ্চয় আমাদের সবার চেয়ে বেশি৷ আমাদের আশেপাশের সবকিছুর থেকেও আমাদের নিজস্ব মূল্য রয়েছে৷ সেটাই আমরা দেখাতে চাই৷ ইতোমধ্যে সেই ক্যালেন্ডার স্পেনের সীমানার বাইরেও পরিচিতি পেয়েছে৷ কুমড়ো চাষি হিসেবে খুয়ানখো পেরেস তাতে খুশি৷ তিনি নিজের সম্পূর্ণ এক নতুন দিক আবিষ্কার করেছেন৷

খুয়ানখো বলেন, আগে কখনো এমনটা না করলেও আমার আর কোনো সঙ্কোচ নেই৷ পরের বারও অবশ্যই সঙ্গে থাকবো৷ পেনিয়া সাফরা দে আবাখো গ্রামের মানুষ এরই মধ্যে পরের বছরের জন্য নতুন ক্যালেন্ডারের পরিকল্পনা করছেন৷ তখন গ্রামের আরও মানুষ নগ্ন হতে চান৷

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গণমানুষের নেতা থেকে আজ বিশ্বনেতায় পরিণত শেখ হাসিনা : শেখ পরশ
‘মানুষ মূলত জীবনের গল্প পছন্দ করে’
‘কিছুদিন পর মানুষ আমাদের পাগল বলবে’
স্পেনকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান মন্ত্রীর
X
Fresh