চারশ বিদ্রোহী রোহিঙ্গা হত্যা করা হয়েছে : মিয়ানমার সেনাবাহিনী

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা ৪ শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। গেলো ২৩ আগস্ট মধ্যরাতের পর পুলিশ স্টেশন ও সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ হয়। এরপর থেকে সেনাবাহিনী সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। শুক্রবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এটিকে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ‘ভয়ানক রক্তপাত’ বলে উল্লেখ করেছে।

সিঙ্গাপুর ভিত্তিক অনলাইন মিডিয়া দি স্ট্রেইটস টাইম জানায়, সেনাবাহিনী দাবি করেছে তারা রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের ওপর অভিযান চালিয়ে ৩৭০ জন রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যা করেছে।

তারা আরো জানায়, সবশেষ এ অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৩ সদস্য, দু’জন সরকারি কর্মকর্তা ও ১৪ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সবশেষ এই অভিযানে নির্যাতনের মুখে অন্তত ৩৮ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের দিকে এসেছে। তাদের বাড়িঘর সরকারি বাহিনী পুড়িয়ে দিচ্ছে।

প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে মিয়ানমারের নোবেল বিজয়ী অং সান সুচির সরকারের নীতি বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সংখ্যালঘু মুসলিম এই সম্প্রদায়ের সংকট নিরসনে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না সুচি। এমনকি তাদের রাখাইন রাজ্যে নিরাপদে বসবাসের জন্য কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না তিনি।

এধরনের সহিংসতায় জাতিসংঘের হিসেবে ২৭ হাজার ৪’শ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে যা বেসরকারি হিসেবে আরো বেশি। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা বলছে তাদের ওপর মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা হামলা করেছে, তরুণদের হত্যা করছে এবং বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট চালাচ্ছে।

মিয়ানমারে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা অং সাং সুচির জন্যে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার ও নাগরিক স্বীকৃতি কেড়ে নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চলে আসছে।

এমকে